দেখুন, স্পষ্ট কথা আগেই বলে দেওয়া ভালো, এটা একজন ভক্তের লেখা, কাজেই এ লেখায় যদি আপনারা সমালোচনা আশা করেন, আমি অপারগ। খামোকা বাপ-মায়ের প্রেমপত্রের বানান ভুল ধরতে পারব না, গুস্তাখি মাফ করবেন। ‘চন্দ্রবিন্দু’র নতুন অ্যালবাম ‘টালোবাসা’ আমার কাছে, আমাদের মতো অনেকের কাছে সেই উপহার– যার সঙ্গে আমরা আগাপাশতলা ট্রেমে পড়ে গেছি। দেখুন, চন্দ্রবিন্দুর পুরনো গান ও আমি নতুন নতুন করে দেখতে পাই, তাই মাত্র তিনদিন ‘টালোবাসা’ শুনে সব গান এক্ষুনি ধাতস্থ হয়েছে, তা অসম্ভব! এখনও আমার ঘোরই কাটেনি।
আমরা যারা ১২ বছর অপেক্ষা করে আছি, তারাই জানি কত বড় উপহার ২০২৪-এর শেষ আমাদের দিয়ে গেল। প্রেম তো ফুরনোর নয়, এদিকে প্রেমিকাকে দেওয়ার মতো কোটেশন ফুরিয়ে যাচ্ছে, কেলেঙ্কারি ব্যাপারস্যাপার! তা ছাড়া ‘চন্দ্রবিন্দু’র নতুন গানে রাত গভীর হচ্ছে, তা যে কীরকম দেখতে, নিজেকে মনে করিয়ে দেওয়ার এই সুযোগ, আমার অজান্তে কেউ আমার মোজার মধ্যে লুকিয়ে রেখে দিয়েছিল বোধহয়।
দেখুন, স্পষ্ট কথা আগেই বলে দেওয়া ভালো, এটা একজন ভক্তের লেখা, কাজেই এ লেখায় যদি আপনারা সমালোচনা আশা করেন, আমি অপারগ। খামোকা বাপ-মায়ের প্রেমপত্রের বানান ভুল ধরতে পারব না, গুস্তাখি মাফ করবেন। ‘চন্দ্রবিন্দু’র নতুন অ্যালবাম ‘টালোবাসা’ আমার কাছে, আমাদের মতো অনেকের কাছে সেই উপহার– যার সঙ্গে আমরা আগাপাশতলা ট্রেমে পড়ে গেছি। দেখুন, চন্দ্রবিন্দুর পুরনো গান ও আমি নতুন নতুন করে দেখতে পাই, তাই মাত্র তিনদিন ‘টালোবাসা’ শুনে সব গান এক্ষুনি ধাতস্থ হয়েছে, তা অসম্ভব! এখনও আমার ঘোরই কাটেনি।
………………………………………
সেই বলতে না পারা প্রেম, সেই বালিশ ভিজে যাওয়া রাত, কান্নার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাওয়া রাত, দুর্ঘটনাপ্রবণ মনের উচাটন অঘটনের আখ্যান। বাকিরা কিছুই জানে না, কিছুই জানে না বাকিরা। বুকের ভেতরে জানলা, উড়ে যায় উড়ে পাখিরা। একজন মানুষ নিজের প্রথম প্রেমে পড়া মনটাকে যত্ন করে আগলে না রাখলে এই গান বানানো যায় না। আমি এটা জানি, কারণ আমি কখনই দ্বিতীয় প্রেমে পড়িনি। ‘দ্বিতীয় প্রেম’ বলে কিছু হয়ই না, অন্তত আমাদের পৃথিবীতে।
………………………………………
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের শুরুর দিকের নায়করা, বিশেষত যাদের কথা উত্তম পুরুষে লিখতেন, তাদের মধ্যে একটা ভিতু, কিছু না-করতে পারা মানুষ ছিল– সেই মানুষটাকেই যেন দেখতে পাই ‘এক লজেন্সে’ গানে। যদিও এই তাকানো অনেক বেশি তির্যক, কিন্তু তাতে চিরাচরিত চন্দ্রিলীয় মজার কোনও খামতি নেই, বা বলা ভালো, তির্যক বলেই এতে চন্দ্রিলীয় মজা আরও বেড়েছে। আমি সুরের লোক নই, উপলদার ভক্ত। উপলদার গলায় আর সুরে গানটা আলোয় ভরে যায়– এটুকুই টের পাই।
তারপর আসে ‘কুকুর আর প্রজাপতি’, সেই বলতে না পারা প্রেম, সেই বালিশ ভিজে যাওয়া রাত, কান্নার মধ্যে আনন্দ খুঁজে পাওয়া রাত, দুর্ঘটনাপ্রবণ মনের উচাটন অঘটনের আখ্যান। বাকিরা কিছুই জানে না, কিছুই জানে না বাকিরা। বুকের ভেতরে জানলা, উড়ে যায় উড়ে পাখিরা। একজন মানুষ নিজের প্রথম প্রেমে পড়া মনটাকে যত্ন করে আগলে না রাখলে এই গান বানানো যায় না। আমি এটা জানি, কারণ আমি কখনই দ্বিতীয় প্রেমে পড়িনি। ‘দ্বিতীয় প্রেম’ বলে কিছু হয়ই না, অন্তত আমাদের পৃথিবীতে।
দেখুন, পুরো অ্যালবামে দশটা গান আছে, সবক’টা নিয়ে আলাদা করে বলতে গেলে লেখার কলেবর বিশাল বড় হয়ে যাবে। তাই আপনাদের বোর করব না। আপনারা নিজেরাই তাদের আবিষ্কার করবেন, এ জানা কথা। ‘মার’-এর গানের প্রবল প্রত্যক্ষ রাজনীতি ঝাঁকিয়ে দেওয়ার মতো। কিন্তু সেসব কথা ছেড়ে আমি দুটো গান নিয়ে কথা বলে এ লেখা শেষ করব।
বিকেল– আমার মতো ভক্তও চমকে গিয়েছে গানটা শুনে। চন্দ্রিলদা আর উপলদা একসঙ্গে কীরকম সব গান এই ব্যান্ডে বানিয়েছে, তা আমি জানি। সেইসব মনে রেখেই এই গানকে আরও কয়েকটা গানের সঙ্গে উপরের তাকেই রাখব। উপায় নেই, এটা শুধু গান থাকেনি, দৃশ্যের পর দৃশ্য জন্ম দিয়েছে এই গান। এই গানটা ব্যাখ্যা করার ভাষা নেই আমার কাছে, আপনি শুনলে আপনি দেখতে পাচ্ছেন আপনার সামনে ঘটমান নাগরিক বিকেল। ‘পাঁচিল ঘেঁষে ঘাসের শেষে ছুটির ছাই’-এর মতো যখন কথা যখন উপলদার সুরে ধরা দিচ্ছে, মনে হচ্ছে, এর জন্য অপেক্ষার কয়েকটা অতিরক্ত পাকা চুল এর জন্য মেনেই নেওয়া যায়।
‘আমার জানলা দিয়ে’– আবার কিছু রাত কান্নার মতো ঝাপসা কাটবে। তুমি তোমার বুকে বুড়ো গীতবিতান চেপে পার হও রাস্তা। আমার বুক খালি লাগে। আমার যা কিছু পয়া, তার সব কিছু তোমার মতো দেখতে। না, এসব আমি বলছি গানে বুড়ো গীতবিতান ছাড়া আর কোনও এসব কথা অনিন্দ্যদা লেখেনি। কিন্তু আমি লিখলাম,কারণ কিছু কিছু গান আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার অংশ হয়ে যায়।কারণ যে এই গানটা বানাচ্ছে, সে-ও হয়তো নিজের পাঁজরের একটা টুকরো আপনার সামনে খুলে রেখে দিয়েছে। তাই চুপ করে মন বলে, অনিন্দ্যদা যতবার উড়াল নিচ্ছে ততবার গলার কাছে আমার কষ্ট হচ্ছে। গাল ভিজে যাচ্ছে অবাধ্য জলের তাপে। আমরা টেরও পাই না একটু একটু করে এক মহাকাশ দূরত্ব কী করে তৈরি হয়ে যায় দুটো মানুষের মধ্যে?
একটা পাশবালিশ যে কবে এক মহাদেশ হয়ে যায়, আমরা টের পাই না। শুধু বুঝি ফেরার রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি– শুধু ফ্যালফ্যাল করে বেকুবের মতো দেখি– দূরে যায় পুড়ে যায় উড়ে যায়… তোমার আমার ঘর।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved