শশী কাপুরের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত ‘জুনুন ’(১৯৭৯), ‘কলিযুগ’ (১৯৮১), পরে ‘ত্রিকাল’ (১৯৮৫) সমান্তরাল ছবি আর মূলধারার ছবির মধ্যে একটা যোগসূত্র ঘটিয়েছিল। কিন্তু এনএফডিসি-র সামর্থ্য যখন কমছে, সেই সময়ে শ্যাম বেনেগালকে মূলধারার মধ্যেই কিছু ছবি এমনভাবে বানাতে হয়, যার মধ্যে ’৭০ ও ’৮০-র দশকের সেই ভিন্নধর্মী ইমেজ ও সাউন্ডস্কেপ (একধরনের বাচন ও সংগীত) আর বজায় রাখা সম্ভব হয়নি। তপন সিনহা বা রাজেন তরফদারের ছবিতে আমরা এই ধরনটায় পরিচিত ছিলাম, যে ছবি ঠিক মৃণাল সেনের মতো ‘কঠিন আর্ট ফিল্ম’ নয়, আবার ‘কমার্শিয়াল’-ও নয়। যে ছবিতে মূলত একটি সহজবোধ্য বাস্তববাদী গল্প থাকবে, আর্কেটাইপাল চরিত্র বা প্লট বা গানের দৃশ্য থাকবে না, যে গল্পগুলির ‘সামাজিক তাৎপর্য’ থাকবে। এই ধরনের ছবির প্রধান নাম ছিলেন শ্যাম বেনেগাল।
২৩ তারিখ সন্ধেয় যখন শ্যাম বেনেগালের প্রয়াণের খবর পেলাম, তখন মধ্যমগ্রামের একটি প্রেক্ষাগৃহে নাটক দেখছিলাম। এই নাটকটি যখন মঞ্চস্থ হয় বছরে এক-দু’বার, তখনই দেখি। দেখি কারণ, আমি নাট্যটিতে এক ধরনের বিগত মেলোড্রামার স্বাদ পাই, যে ধরনের গল্প আর বলা হয় না ইদানীং। এই নাটকটি নাকি আর মঞ্চস্থ হবে না শুনছিলাম। সেই সময়েই বেনেগালের প্রয়াণের খবরটি আরেক ধরনের বিগত ফর্মের কথা মনে করাল।
এই লেখাটি সে অর্থে শ্যাম বেনেগালের সুদীর্ঘ কর্মজীবনের সারমর্ম তেমন হবে না; বদলে সেই নির্দিষ্ট একটি ফর্মের কথাই বলা হবে, বা বলা ভালো, একটি ধারা নিয়ে। সেই ধারাটিকে বলা হত সমান্তরাল হিন্দি ছবির ধারা, যেরকম ছবি আট ও নয়ের দশকে আমরা মূলত দেখতাম রাষ্ট্রীয় দূরদর্শনে। শ্যাম বেনেগাল, এই নামটি হঠাৎ করেই কিছু ছবির কথা নয়, বরং আমার স্মৃতিতে উসকে দিল কিছু টিভি সিরিজের কথা। ১৯৮৬-র ‘যাত্রা’, ভারতীয় রেলের ওপর। কথা সাগর, কিছু ছোটগল্পের সমাহার। ১৯৮৮ সালে নির্মিত ভারত এক খোঁজ, জওহরলাল নেহরুর ‘ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া’-র ওপর আধারিত। দূরদর্শন সেই সময়ে সমান্তরাল ভারতীয় ছবির নির্মাতাদের অন্যতম ধারক ছিল, যে ‘ধরন’টির দৃশ্যশৈলী, অভিনয়রীতি, অভিনেতাদের তালিকা এমনকী, সাউন্ড ট্র্যাকেরও একরকম ভিন্নতা খুব চেনা হয়ে গিয়েছিল আমাদের। বড়পর্দায় মূলত অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘অ্যাংরি ইয়ং ম্যান’-এর ধারাটি যখন চলছে, স্বাভাবিক কারণেই যে ছবির অভিব্যক্তি ছিল উঁচু পর্দায় বাঁধা মেলোড্রামার, ছোটপর্দায় দেখা এইসব ছবিতে ন্যাচারালিজম বা রিয়ালিজমের প্রাধান্য ছিল। সত্যি বলতে কী, বাঙালি চোখে সেটা যে খুব একটা অচেনা ছিল, তা নয়। তপন সিনহা বা রাজেন তরফদারের ছবিতে আমরা এই ধরনটায় পরিচিত ছিলাম, যে ছবি ঠিক মৃণাল সেনের মতো ‘কঠিন আর্ট ফিল্ম’ নয়, আবার ‘কমার্শিয়াল’-ও নয়। যে ছবিতে মূলত একটি সহজবোধ্য বাস্তববাদী গল্প থাকবে, আর্কেটাইপাল চরিত্র বা প্লট বা গানের দৃশ্য থাকবে না, যে গল্পগুলির ‘সামাজিক তাৎপর্য’ থাকবে। এই ধরনের ছবির প্রধান নাম ছিলেন শ্যাম বেনেগাল।
এই যে ছবিগুলির সঙ্গে কলকাতা থেকে দূরে থাকা একটি বালকের পরিচিতি হচ্ছে দূরদর্শনে, এটা জরুরি। আমি তখন দুর্গাপুর শিল্পশহরে থাকতাম। আটের দশক, শহরে তিনটি হলের দু’টিই মাঝে মাঝে বন্ধ থাকত। কলকাতার মতো গোর্কি সদন বা ম্যাক্সমুলার ভবন নেই, নেই ফিল্ম সোসাইটির নিয়মিত ছবি দেখানোর ব্যবস্থা। সাদা-কালো দূরদর্শনে এই ছবিগুলি ঘরে বসে না দেখতে পেলে হয়তো জানতাম, হিন্দি সিনেমা এক রকমেরই হয়। এরপর নব্বইয়ে কেবল টিভির আগমনের পরেই সরকারি টেলিভিশনে দেখতে পাওয়া এই ধারাটি কোথাও হারিয়ে যাবে! অর্থাৎ, আমার চেয়ে দশ বছরের ছোট একজন সিনেমা নিয়ে উৎসুক বালকের কিন্তু ওই নির্দিষ্ট ধারাটির সঙ্গে ‘নিয়মিত’ পরিচিতি ঘটার আর উপায় থাকবে না। তার নিয়মিত দেখা হিন্দি ছবিগুলির প্রদর্শনের পিছনে রাষ্ট্রীয় ‘পৃষ্ঠপোষকতা’ তেমন ভাবে আর থাকবে না। প্রদর্শনের উল্লেখ করলাম মূলত, প্রযোজনার নয়।
শ্যাম বেনেগালের প্রথম দু’টি ছবি, ‘অঙ্কুর’ (১৯৭৪) এবং ‘নিশান্ত’ (১৯৭৫) বানানো হয়েছিল ‘ব্লেজ ফিল্ম এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রযোজনায়, পরে যেটি ‘ভূমিকা’-রও প্রযোজনা করবে ১৯৭৭ সালে, এবং ১৯৮৩ সালে ‘মান্ডি’। এই ছবিগুলির মুখ্য চরিত্রগুলিতে অভিনয় করবেন শাবানা আজমি এবং স্মিতা পাতিলের মতো অভিনেত্রী, ওম পুরি, নাসিরুদ্দিন শাহর মতো অভিনেতা। বাল্যকালে যাঁরা হয়ে উঠবেন সেইসব তারকা, যাঁদের উপস্থিতি মূলধারার ছবিতে নিয়মিত দেখা গেলেও আমরা জানতাম তাঁরা ‘প্যারালাল সিনেমা’-র পরিচিত মুখ। ১৯৮২ সালের ‘আরোহণ’ একেবারেই পশ্চিমবঙ্গের প্রেক্ষিতে নির্মিত হিন্দি ছবি ছিল।
এই যে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার কথা বারবার বলছি, সেটা সবসময়ে যে ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন, রাষ্ট্রীয় দূরদর্শন বা চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র মতো সংস্থা (বেনেগাল দ্বিতীয় ছবি ‘চরণদাস চোর’-এর প্রযোজক) এই ছবিগুলি প্রযোজনা করেছিল বলে নয়, রাষ্ট্র না থাকলে এইসব ছবি আমরা নিয়মিত দেখতে পেতাম না আটের দশকে। শুধুমাত্র প্রেক্ষাগৃহ যদি ছবি দেখার একমাত্র পরিসর হত, তাহলে অন্তত মেট্রোপলিটন শহরগুলির বাইরে এই সমস্ত ছবি আমাদের কাছে অচেনা থেকে যেত। নয়ের দশক থেকে, বিশ্বায়নের পর, রাষ্ট্রে আর সেই পরিসরটি থাকবে না, যেখানে এইরকম ছবির পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানানো যায়– প্রযোজনা এবং প্রদর্শনের। অথবা যে ধরনের ছবিগুলিতে কাজ করবেন পুনের এফটিআইআই বা ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার কুশীলবরা। মনে রাখতে হবে, ছবি বানানোর আগে, ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৩ অবধি শ্যাম বেনেগাল পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া-তে শিক্ষকতা করেছিলেন, এবং সেই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষও হয়েছিলেন দু’বার। ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন-এর ডিরেক্টর ছিলেন শ্যাম বেনেগাল ১৯৮০ থেকে ১৯৮৬ অবধি।
বেনেগালের কর্মজীবনের একটি উজ্জ্বল মুহূর্ত হয়ে থাকবে ‘ক্রাউড ফান্ডিং’ শব্দটি তৈরি হওয়ার অনেক আগে তার পথপ্রদর্শক হওয়ায়। প্রায় পাঁচ লাখ কৃষকের মাথাপিছু দু’টাকার ডোনেশনে তৈরি ‘মন্থন’ (১৯৭৬) এবং হ্যান্ডলুম কো-অপারেটিভদের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত ‘সুসমান’ (১৯৮৭) ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে।
এরপর এক ধরনের পরিকল্পের পরিবর্তন বেনেগালের কর্মজীবনেও ঘটেছে। শশী কাপুরের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত ‘জুনুন ’(১৯৭৯), ‘কলিযুগ’ (১৯৮১), পরে ‘ত্রিকাল’ (১৯৮৫) সমান্তরাল ছবি আর মূলধারার ছবির মধ্যে একটা যোগসূত্র ঘটিয়েছিল। কিন্তু এনএফডিসি-র সামর্থ্য যখন কমছে, সেই সময়ে শ্যাম বেনেগালকে মূলধারার মধ্যেই কিছু ছবি এমনভাবে বানাতে হয়, যার মধ্যে সাত ও আটের দশকের সেই ভিন্নধর্মী ইমেজ ও সাউন্ডস্কেপ (একধরনের বাচন ও সংগীত) আর বজায় রাখা সম্ভব হয়নি। ‘মাম্মো’ (১৯৯৪), ‘সরদারি বেগম’ (১৯৯৪), ‘জুবেইদা’ (২০০১) ছবিগুলিতে বিগত একটি ভারতের জৌলুস আমরা পাই; আবার ‘দ্য মেকিং অফ মহাত্মা’ (১৯৯৬), ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস: দ্য ফরগটেন হিরো’ এবং তাঁর শেষ ছবি ‘মুজিব: দ্য মেকিং অফ এ নেশন’-এ (২০২৩) ঐতিহাসিক বায়োপিকে সরে যায় বিষয়, যেখানেই অতীত আসে খানিক স্পেকট্যাকলের মতোই। এই ছবিগুলিতেও আগের ছবিগুলির মতো ‘ভিন্নতা’র ইমেজ ও সাউন্ড আমরা আর পাব না।
সমান্তরাল ছবির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট আঙ্গিক জরুরি হয়ে ওঠে। শ্যাম বেনেগালের ছবির মূল আঙ্গিক ছিল বাস্তববাদ। বিষয়ের দিক দিয়ে একজন আধুনিক নাগরিক দৃষ্টি দিয়ে সামন্ততান্ত্রিক গ্রামজীবনের বাস্তবতাকে দেখা ছিল মুখ্য। অর্থাৎ, সেই ছবি মৃণাল সেনের সাতের দশকের ছবির মতো ব্রেখটিয়ান নয়, আবার কুমার সাহানি বা মণি কৌলের মতো বাস্তববাদ থেকে বেশ দুরূহতায় সরে যেতেও চাইছে না। আদুর গোপালাকৃষ্ণণের মতোই শ্যাম বেনেগালের ওপর প্রভাব হয়তো রয়েছে সত্যজিৎ রায়ের (যাঁর ওপর নির্মিত ফিচার-দৈর্ঘ্যের ডকুমেন্টারিটি আমাদের খুব পরিচিত ছিল)। এই আঙ্গিকটি ছিল খুবই সুনির্দিষ্ট (যে আঙ্গিক থেকে খানিক সরে যায় ১৯৯৩ সালের চমকপ্রদ ‘সূরয কা সাতওয়া ঘোড়া’), নির্দিষ্ট আঙ্গিকের সঙ্গেই জরুরি হয়ে ওঠে ‘ধারা’-র ধারণা, অর্থাৎ এমন একটি পরিকল্প পেশ করা, যা আরও ফিল্মের, আরও ফিল্মমেকারের জন্ম দেবে। যেভাবে শ্যাম বেনেগালের ছবির অন্যতম সিনেমাটোগ্রাফার গোবিন্দ নিহালনী নিজে হয়ে উঠবেন একজন ফিল্মমেকার।
এই ‘ধারা’-র ধারণা হয়তো কিছু কিছু ঐতিহাসিক মুহূর্তে ‘আন্দোলন’-এরও রূপ নিতে পারে। গত বিশ-তিরিশ বছরের ভারতীয় ভিন্ন ছবিতে এই আঙ্গিকগত পরিকল্প এবং ধারা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা প্রায় দেখাই যায় না। উল্টে অত্যাধিক দেশজ এবং বিদেশি কর্পোরেট ফান্ডিং-এর ওপর নির্ভরশীলতা, এবং আমার মতে তার ফলে এক ধরনের ‘আন্তর্জাতিক’ এস্থেটিক্স অর্জন করতে ঘটে যাওয়া মৌলিক vision-এ আপস, এই ধরনের ছবিগুলিকে শ্যাম বেনেগালদের ছবির মতো সাংস্কৃতিকভাবে কার্যকর হতে দিচ্ছে না আর।
এইখানে আমি একটি প্রসঙ্গের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি। বিশ্বযুদ্ধের পরের ইতিহাসের দিকে তাকালেই দেখা যাবে যে, ভিন্নধর্মী নতুন ছবির ধারা, বিশ্বজুড়েই, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়েছে। এর মানে এই নয় যে, ছবিগুলি রাষ্ট্রীয় প্রোপাগান্ডা ছিল (বরং বেশিরভাগ ছবিই তার উল্টো প্রমাণ দেবে)। বরং বলা যায় যে এক ধরনের ওয়েলফেয়ার স্টেটের কাঠামো থাকলে আরও অনেক কিছুর মতোই সিভিল সোসাইটি সংস্কৃতি বা সিনেমার ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রের কাছে পরিকাঠামোগত সাহায্যের দাবি জানাতে পারে, যা কর্পোরেট সংস্থার কাছে জানানো যায় না সেভাবে। এরকম ছবি এক ধরনের নাগরিক ‘ক্রিটিকাল’ দর্শকসত্তাও তৈরি করত, যার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল ফিল্ম সোসাইটির আন্দোলন। শ্যাম বেনেগাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আমার মতে, এই ওয়েলফেয়ার স্টেটের ধারণার সঙ্গে ভারতের মতো দেশে ‘সমান্তরাল সিনেমা’-রও অবসান ঘটেছে। আমি ‘আর্টহাউজ সিনেমা’-র কথা বলছি না। কর্পোরেট ফান্ডিং-এ, ফিল্ম ফেস্টিভালের কিউরেশন এবং মেন্টরশিপের পৃষ্ঠপোষকতায় এক ধরনের ‘আর্টহাউজ সিনেমা’ এখনও আছে; কিন্তু সেই সিনেমার পক্ষে কিছুতেই ‘নিউ ইন্ডিয়ান সিনেমা’-র মতো একটা ধারা বা আন্দোলন তৈরি করা সম্ভব হবে না। সেই সিনেমাকে বৃহত্তর বিনোদন-ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে বোঝাপড়া করেই টিকে থাকতে হবে। একরকম ভিন্ন ‘ফিল্ম কালচার’-এর জন্ম দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব হবে না। শ্যাম বেনেগালের তিরোধান ঘটল, ‘সমান্তরাল ছবি’-ও দীর্ঘদিন হল গত ভারতে।
………………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
………………………………………..
২৫ বৈশাখের সময় যেমন অনেক সময়েই সঞ্চালক হিসেবে থেকেছি স্টুডিও-তে, কখনও জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি, কখনও রবীন্দ্র সদনের অনুষ্ঠান দেখানোর ফাঁকে ফাঁকে বলেছি রবীন্দ্রনাথের কথা, পড়েছি তাঁর রচনা থেকে, ঠিক সেই ‘গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড’ পদ্ধতিতে পুজোর বৈঠক সম্প্রচারিত হত।