পুজো মানেই অল্প জিরিয়ে নেওয়া। আর অল্পের হাত ধরেই আসে গল্প। জীবনের ফাঁকফোকরে কয়েক মিনিট একটু অন্য জীবনের ডেরায় ঘুরে আসা। একটু চক্কর মেরে আসা আরেকটা জীবনে। সে জীবন, নিজের জীবন থেকে খুব দূরের নয়। আসুন পড়ে নিই, রোববার.ইন-এর পাতায় অষ্টমীর গল্প। লিখেছেন তৃষ্ণা বসাক।
একটা মানুষ কেন খাবার লুকিয়ে রাখে? ভাবছিল জয়তী। মুনিয়ার ক্যাবিনেট খুলেছিল একটু আগে, স্টেপলারটা নেবে বলে। বাড়ির যত স্টেপলার, কাঁচি, পারফোরেটর– সবই ওর কেবিনেটে পাওয়া যাবে। হাজারবার ওর আলাদা সেট কিনে দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন পরেই সেসব খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন ও জয়তীর জিনিসগুলো নিয়ে টানাটানি করে। জয়তী ভেবে পায় না, আগে যখন স্কুল ছিল, তখন না হয় এক কথা ছিল, এখন কীভাবে হারাতে পারে এসব? দেড় বছর ধরে তো বাড়িতেই আছে মুনিয়া। বাড়িতে থাকার আর যাই খারাপ দিক থাক, রোজ রোজ মেট্রো-অটোয় ভিড় ঠেলা তো নেই, জ্যামে আটকানো নেই, আর ক্লাসে গিয়ে এর ইরেজার ওর ব্যাগে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। বাচ্চাদের এসব হামেশাই হয়। নার্সারি, ট্রানজিশন, মোটের ওপর জুনিয়র স্কুলে যতদিন ছিল, হামেশাই হয়েছে মুনিয়ার। একবার মনে আছে, এক বাচ্চার মা ওকে ফোন করে বলেছিল, ‘তোমার মেয়ে আমার মেয়ের পেনসিল চুরি করেছে। কাল না ফেরত পেলে ক্লাস টিচারকে কমপ্লেন করব’– মুনিয়া প্রায় নিয়ম করে প্রতিদিন পেনসিল-ইরেজার হারিয়ে আসলেও কোনও দিন ওর কোন সহপাঠীর মাকে এভাবে ফোন করার কথা ভাবেনি জয়তী। সেদিন ওই ফোনটা আসার পর মুনিয়ার ব্যাগ উলঢাল পালঢাল করে পেনসিল বক্স বার করে মেঝেতে ঢেলে ও চরম সংকটে পড়েছিল। ও যেসব পেনসিল কিনে দিয়েছিল মুনিয়াকে, সেগুলো এগুলোই তো? একরাশ রঙিন পেনসিলের সামনে দাঁড়িয়ে সে বুঝতেই পারেনি, অন্যের থেকে চুরি করা পেনসিল তাহলে কোনটা?
আজ এত বছর পর মুনিয়ার ক্যাবিনেট খুলে সে একইরকম অসহায় বোধ করছিল। ক্যাবিনেট খুলতেই একটা পচা গন্ধ নাকে এসেছিল, ভেতরে কি টিকটিকি মরে পড়ে আছে? তারপরেই সেই পচা গন্ধের উৎস দেখে তার পা দুটো মাটিতে গেঁথে গেছিল। গাদা গাদা হোম ডেলিভারির প্যাকেট। শহরের নামী সব ফুড জয়েন্টের পিৎজা, চিলি চিকেন বা মোমো, সব খানিকটা খেয়ে আবার প্যাক করে ভেতরে ঢুকিয়ে রাখা। এছাড়া জয়তী যা ব্রেকফাস্ট দ্যায়, তারও দু’তিনটে প্লেট এখানে পাওয়া গেল। একদিন রুটি দিয়েছিল, একদিন চিঁড়ের পোলাও, অপছন্দের এইসব খাবারগুলোর ফসিল প্লেট থেকে ওর দিকে চেয়েছিল। জয়তীর মনে হল ও কোনও মর্গে ঢুকে পড়েছে। ভীষণ বমি পেল ওর। ছুটে বেসিনের দিকে যেতে যেতে ও দেখল অঘোরে ঘুমোচ্ছে মুনিয়া। ওর ঘুমন্ত মুখ পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র দৃশ্য যেন।
সেই মেয়ে দিনের পর দিন খাবার লুকিয়ে রাখছে কেন? এরকম নয় যে শুধু বাড়ির একঘেয়ে খাবারই ও নষ্ট করছে, নিজের পছন্দ করে কেনা খাবারও নষ্ট করছে। তার মানে কি কেনার পরেই ও উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে? শুধু কেনার মধ্যেই ওর যাবতীয় সুখ?
জয়তী একবার ভাবল বিপুলকে ফোন করে। অতিমারীতে মুনিয়াকে স্কুল যেতে হচ্ছে না, কিন্তু বিপুলকে তো অফিস যেতে হচ্ছে। হপ্তায় চারদিন আপাতত। সেই যাওয়া যথেষ্ট ঝামেলার ও খরচসাপেক্ষ। সেসব নিয়ে তার মেজাজ সবসময়ই খিঁচিয়ে থাকে, বিশেষ করে এই কথাটা কীভাবে নেবে বুঝতে পারল না জয়তী। বিপুল তো মেয়ের সব ব্যর্থতা, বিচ্যুতির দায় তার ওপরেই চাপায়। সে নাকি নেট অ্যাডিক্ট, তার জন্যেই মেয়ে রাতেও ট্যাব কাছছাড়া করে না। এই খাবার নষ্ট করার কথা শুনলে কী বলবে কে জানে! হয়তো বলবে কাউন্সেলিং করাও তোমার মেয়েকে। নাহ, বিপুলকে বলা যাবে না, এখন তো নয়ই। কিন্তু কাউকে এক্ষুনি না বলতে পারলে ও মরে যাবে মনে হল।
এখন বারোটা বেজে গেছে, তার মানে বিপুল এই সময় পুরোপুরি কাজের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। এই সময় ওকে বিরক্ত করা মানে সারাদিনের জন্য অশান্তি ডেকে আনা। বন্ধুরা কে আছে এখন ফ্রি, যাদের সঙ্গে ও কথাটা শেয়ার করতে পারে? এখন অনেকেই কাজের মাসি ছাড়িয়ে দিয়েছে, নিজেরা কাজ করে, কাউকে ফোনে পায় না আগের মতো। সবাই এত ক্লান্ত, বিরক্ত, গোটা শহরটাই যেন বদলে গেছে। সবকিছুই অচেনা লাগে।
শুভকে ধরবে? হোয়াটসঅ্যাপ খুলে চোখ জ্বালা জ্বালা করে জয়তীর। একগাদা ছবি পাঠিয়েছে শুভ। মিলি একটা ইট রঙের অফ শোল্ডার গাউন পরে আছে ছবিতে। ওদের কাল অ্যানিভার্সারি ছিল! জর্জিয়ায় ভিক্টোরিয়া ক্রিকের ধারে বিশাল বাংলো প্যাটার্নের বাড়িতে সে এখন মিলির পাশে ঘুমচ্ছে। এখন ওই গোলার্ধ্বে রাত। ঘুম থেকে যখন উঠবে, তখন জয়তীর নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই। ওর তখন পরপর ব্যাচ চলে। কেমিস্ট্রি পড়ায় সে ইলেভেন-টুয়েলভের। বছর দুই আগে শুভকে ঘিরে অশান্তি শুরু হয়েছিল তাদের মধ্যে। ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া ছোটবেলার বন্ধু, নিছক মজা ছাড়া আর কিছুই ছিল না সেই সম্পর্কে। যদিও ইদানীং শুভর মেসেজে একটা ইশারা থাকে, যেন দূরের পাহাড়ের বনে হঠাৎ হাওয়া দিচ্ছে, সুখদ সেই হাওয়া শিকড় উপড়নোর শক্তি রাখে না। কিন্তু বিপুল সব ব্যাপারকেই এত সিরিয়াসলি নেয়, প্রায় খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছিল তারা, মুনিয়া তখন নাইন। সেই সময় জয়তী ভেবেছিল, আর বোধহয় টানতে পারবে না, সে সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেলেছিল আলাদা থাকবে মুনিয়াকে নিয়ে, একটা ফ্ল্যাট কেনার জন্য পাগলের মতো টিউশন শুরু করেছিল। বাবা-মা নেই, বাড়ির ভাগ থাকলেই তো আর দাদার সংসারে ঢোকা যায় না এই বয়সে। সেটা জানে বলেই বিপুল কথায় কথায় বলে, ‘আমার বাড়িতে থেকে এইসব চলবে না’।
এইসব মানে কীসব? সারাদিন ঘরে বাইরে হাড়ভাঙা খাটুনির পর কেউ যদি বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করে একটু চিল আউট করতে চায়, কিংবা ফেসবুকে একটা সেলফি পোস্ট করে, তাতে ক্ষতি কী? সে তো পাবে গিয়ে মদ খাচ্ছে না, বন্ধুদের সঙ্গে উইকেন্ডে ঘুরতেও চলে যাচ্ছে না, যদিও সেসব করলেই বা দোষের কী– এসব বিপুলকে কে বোঝাবে? জয়তীর বাবা বলতেন, ‘সব কিছু করো, কিন্তু হারিয়ে যেও না’। মেয়েকেও তো এই কথাই বলে এসেছে বরাবর, কিন্তু তার এই শিক্ষার মধ্যেই কি ত্রুটি থেকে গেছে? বিপুলের দম আটকানো শাসন একজন টিনএজারের পক্ষে ভালো বলে ভাবেনি সে, তাই ওকে স্বাধীনতা দিয়েছে। আজ পচা খাবারের গন্ধ এসে ওর সেই উদারনীতির গালে থাপ্পড় কষাল যেন।
অনেক, অনেক বছর আগে, বোধহয় টু কিংবা থ্রি-তে পড়ার সময় মেয়ে একদিন ইসকুল থেকে ফিরে, যেন জয়তীর বুদ্ধির পরীক্ষা নিচ্ছে, এমনভাবে বলেছিল–
–বলো তো ইউএসএ মানে কী?
–কী আবার? ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা। বড় হয়ে আমার মুনাই যেখানে পড়তে যাবে।
মেয়েকে বুকে জড়িয়ে আদর করে বলেছিল জয়তী।
ছটফটিয়ে ওর হাতের বাঁধন আলগা করে, যেন একটা ভীষণ গোপন খবর দিচ্ছে, এমনিভাবে তার আট বছরের মেয়ে ফিসফিস করে বলেছিল–
–তুমি কিচ্ছু জানো না, মা! ইউএসএ-র মানে হল আন্ডার স্কার্ট অ্যাডভেঞ্চার। আমাদের ওয়াশরুমের দেওয়ালে লেখা আছে। কিন্তু তুমি তো এরকম কোনও অ্যাডভেঞ্চারের স্টোরিবুক আমাকে কিনে দাওনি, নেক্সট বুক ফেয়ারে দেবে তো?
সেদিন যেমন চলচ্ছক্তিরহিত হয়ে গিয়েছিল জয়তী, আজও মেয়ের ক্যাবিনেটের সামনে দাঁড়িয়ে সেরকম মনে হল তার। এগুলো যে ফেলে দিতে হবে। এছাড়া আরও খাবার লুকনো আছে কি না, খুঁজতে হবে, কিন্তু তার হাত-পা-ই নড়ছিল না। তার মনে হচ্ছিল আর বেশি খুঁজলে কঙ্কাল বেরিয়ে আসবে, তাকে কোনও হরর মুভির সামনে দাঁড়াতে হবে। একটা জীবন, যা তার শরীর থেকে সৃষ্টি হয়েছে, তা আজ এত অচেনা হয়ে যায় কী করে? এর স্তরে স্তরে যেন ভয়ংকর শ্বাপদ লুকিয়ে আছে।
২.
এই তো কিছুদিন আগে একটু ব্যাঙ্কে যেতে হয়েছিল। মেয়েকে ফোন করে বলতে হল একটা কুরিয়ার আসবে, যেন খেয়াল রাখে। ফোন করে একটা অদ্ভুত কলারটিউন শুনতে পেল সে।
‘গাঁজার নৌকা শহরতলি যায় ও মিরাবাই’।
এই প্রথম মেয়ের কলারটিউনে একটা বাংলা গান! মেয়ে বাংলা গান শুনছে! যত অদ্ভুতই গান হোক। শিবানীকে বলেছিল কথাটা। শিবানীর সঙ্গে নির্ভয়ে সব কিছু শেয়ার করা যায়, কারণ ও একদম কথা চালাচালি করে না। কিন্তু শিবানী শুনেই বলল, ‘তুই চুপ করে বসে আছিস কী করে? আচ্ছা ক্যালাস মা তো তুই! দেখ মুনিয়া কোনও ড্রাগ র্যাকেটের খপ্পরে পড়েছে কি না?’
ড্রাগ র্যাকেট! ফোন রেখে ধপ করে বসে পড়েছিল জয়তী। পাগলের মতো এই গানটা খুঁজে পুরো লিরিক বারবার পড়ে বুঝতে চেষ্টা করেছিল এই আপাত নিরীহ এবং মাথামুণ্ডুহীন কথাগুলোর আড়ালে কোনও ভয়ংকর অন্ধকার জগৎ লুকিয়ে আছে কি না। শিবানীর কথাগুলো মনে পড়ছিল। এই যে সাইবার দুনিয়া, যেখানে আমরা ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ করি, গল্প করি, ছবি পোস্ট করি, চ্যাট করি– এর একটা একদম অজানা অংশ আছে, যাকে বলে ‘ডার্ক ওয়েব’। এখান থেকে ড্রাগ ব্যবসা, যৌন ব্যবসা, সন্ত্রাসবাদ রমরমিয়ে চলে, কারা করে, কীভাবে করে, তাদের ধরা খুব মুশকিল। এই সেদিন নাকি মুম্বইতে একজন ধরা পড়েছে যে একটা বেকারি চালাত, সেখানে ব্রাউনির মধ্যে ড্রাগ ভরা থাকত, জানা গেছে সে একটা বিশ্বজোড়া জালের একটা সামান্য অংশ, আসল মাথা বসে আছে দুবাইতে। পুরো কারবার চলে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে।
সেই শোনার পর থেকে অনেকদিন পর্যন্ত জয়তীর মনে হত একটা কালো জাল তাকে যেন ঘিরে ফেলেছে, তার প্রতিপক্ষ মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ করা মেঘনাদের মতো লুকিয়ে আছে, চুপচাপ জালে জড়িয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই তার। তবু সেবার চেঁচামেচি করে মেয়ের কলার টিউন বদলিয়েছিল সে। কিছুদিন ফোনে নজরদারিও চালিয়েছিল। সেটা যদিও বেকার পরিশ্রম, কারণ মুনিয়া ট্যাবে বায়মেট্রিক পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখে। ফলে কার সঙ্গে কথা বলছে, কাকে ছবি পাঠাচ্ছে, কার সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করছে বোঝা দুঃসাধ্য।
তারপর বেশির ভাগ সময়েই ঘরের দরজা বন্ধ, জয়তীর তখন মাথায় ঢুকেছে ড্রাগ র্যাকেটের কথা। ড্রাগ থাকলে সেক্স র্যাকেট থাকতে কতক্ষণ, তাই দরজা বন্ধ দেখলেই দরজায় দুমদাম ধাক্কা, দরজা খুলতে দেরি হলেই সন্দেহ, এত দেরি হচ্ছে কেন? তাহলে কী? একদিন বলেই ফেলে মেয়েকে। তুই কী করছিলি? মেয়ে ওর দিকে স্তম্ভিত হয়ে তাকিয়ে বলে, ‘ছি মা তুমি! শেষ অবধি তুমি! বন্ধুদের সবাইকে বলি আমার মা কত লিবারেল। তুমিও শেষ অবধি এই কথা বলছ? আউট আউট।’ ঠেলেই বার করে দেয় ঘর থেকে মেয়ে। অনেকদিন কথা বন্ধ থাকে তারপর।
তারপর আবার একদিন, মুনিয়ার বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে হয়, সে মা-র গলা জড়িয়ে পাঁচশো টাকা নিয়ে যায়, জয়তী হাঁফ ছেড়ে বাঁচে, সবকিছু স্বাভাবিক, আবার আগের মতো।
৩.
এখন এই পচা খাবারগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে জয়তী ভাবল এত খাবারের টাকাই বা কোথায় পেল মুনিয়া? এতদিন বাড়িতে আছে বলে আগের মতো পকেটমানি তো ও পায় না। সেদিনের পাঁচশো টাকায় এত খাবার কেনা যায় না তো! ও কোনও রকমে একটা বড় কালো প্লাস্টিকে প্যাকেটগুলো ঢুকিয়ে ময়লার বালতিতে ফেলে আসল। কালো ঝুল চিলি চিকেন, ফাঙ্গাস পড়া পিৎজা আর ফুলে ঢোল মরা সাদা ইঁদুরের মতো মোমোর মধ্যে শুধু ক্যাপ্সিকামের টুকরোগুলো ওর দিকে স্নিগ্ধ সবুজ চোখে চেয়ে ছিল। এই মুহূর্তে, স্নান, একটা দীর্ঘ স্নান দরকার তার। ফোনটা দেওয়ালের তাকে রেখে সে নিরাবরণ হয়ে শাওয়ারের তলায় দাঁড়ায়। আঃ, ধুয়ে যাচ্ছে চিলি চিকেন, পিৎজা, মোমোর মৃত শরীর। হঠাৎ টুং করে শব্দ, মেসেজ ঢুকেছে হোয়াটসঅ্যাপে। শুভ। এখন তো ওর ঘুমনোর কথা মিলির পাশে। ও কেন এখন! জলবিন্দুতে ঝাপসা চোখে জয়তী পড়ে, ‘ঘুম আসছে না সোনা, তোকে একবার দেখতে চাই, জাস্ট এক সেকেন্ড, প্লিজ’। সঙ্গে সঙ্গে ইনকামিং ভিডিও কল আসে।
জয়তী হাত বাড়িয়ে সাবানটা নেবে নাকি ভিডিও কলটা? ভেঙে আসে ঘাড় এতক্ষণ পচা খাবার ঘাঁটার ক্লান্তিতে, এক সেকেন্ডই তো।
ঠিক সেইসময় দরজায় ধাক্কা দ্যায় মুনিয়া। ঘুম ভেঙেই ওকে বাথরুমে যেতে হয় রোজ। ধাক্কার শব্দটা খুব চেনা লাগে জয়তীর। ভিডিও কলের রিংটোন কি জলের শব্দে ঢাকা পড়ছে? বুঝতে না পেরে দরজার এপারে দাঁড়িয়ে থাকে সে চুপচাপ।
অলংকরণ শান্তনু দে