আমাদের বুঝে নিতে হবে যে, মানুষ জেনেশুনে নিজের মৃত্যু ডেকে আনতে উৎসাহী হয়তো ভালোর জন্য, কারণ পৃথিবীতে এত বেশি মানুষ হয়ে গেছে যে, কিছুটা খালি করা দরকার। অবশ্যই তার জন্য সুনামি আছে, ভূমিকম্প আছে, ছোট ছোট দেশের নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ আছে, কোভিড আছে– আরও কত এমন মারণ জীবাণু স্থলে, জলে, অন্তরিক্ষে ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষের মৃত্যুর দূত হয়ে।
১৪.
দিল মাঙ্গে মোর– এক বিখ্যাত ঠান্ডা পানীয় ব্র্যান্ডের অতি বিখ্যাত ক্যাপশন।
এখন কথাটা হচ্ছে যে, দিল কী মাঙ্গে… মানে কী চায়? এতদিন ধরে দেশ-বিদেশের বহু গবেষণায় লক্ষ করা গেছে যে, এই কার্বনেটেড ঠান্ডা পানীয় গলায় ঢাললে যে আরামের অনুভূতি, শরীর সেটা ভালো মনে গ্রহণ করে না। যে আরাম মেলে, তাও শরীরের ভালোর জন্য কি? না। গবেষণাবলছে, দিল যতই চাক. এই পানীয়গুলি হৃদয় দুরমুশ করতে ওস্তাদ!
আরও ব্র্যান্ড বাজাও: ধর্মতলার সেই ভিক্ষুক যে বিজ্ঞাপনের কড়া স্ট্রাটেজিস্ট
দিল মাঙ্গে মোর অর্থাৎ আমার প্রাণ বলছে আরও চাই আরও চাই আর আমার প্রাণ কী পাচ্ছে? ডায়াবেটিস, হার্টের
অসুখ, দাঁতের ক্ষয়, শরীরে আরও চর্বি বৃদ্ধি– এই ধরনের হাজারো রোগের সম্পদ! ইন্টারনেটের যুগে পৃথিবীর মানুষ এই ঠান্ডা পানীয়গুলির সব ক্ষতিকর দিকগুলো জানে তবু আশ্চর্য লাগে যে, জেনেশুনে ট্যাঁকের পয়সা খরচ করে তারা বিষ পান করছে। এটা শুধু আমাদের দেশে নয়, সারা পৃথিবী জুড়ে এই বিষ পানের উৎসব চলেছে এবং এই কোম্পানিগুলি মিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মালিক হয়ে যাচ্ছে। কী আশ্চর্য না?
সিগারেটের ও সেই একই অবস্থা। দিল মাঙ্গে মোর। প্যাকেটে লেখা আছে বড় বড় করে যে, ‘সিগারেট খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর’। তবু মানুষ কি থেমে আছে ? আর গুটখা? সে তো দিল মাঙ্গে মোর অ্যান্ড মোর অ্যান্ড মোর…
চিকিৎসকদের মতে, গুটখা মুখগহ্বরে ক্যানসারের পুঁটলি নিয়ে রেডি। তবু দিল মাঙ্গে মোর…
আরও ব্র্যান্ড বাজাও: বুকের দুধের বাজার গরম, ৩০০ মিলিলিটার ৪৫০০ টাকা!
এই মারণ-ব্র্যান্ড গুটখা কোম্পানির বাৎসরিক আয় দুই বিলিয়ন টাকা। এটাও একটা গবেষণার বিষয় যে, কেন এই লক্ষ লক্ষ ক্রেতাদের বিষ পানে এত আসক্তি যা দিন দিন বেড়েই চলেছে! আমাদের বুঝে নিতে হবে যে, মানুষ জেনেশুনে নিজের মৃত্যু ডেকে আনতে উৎসাহী হয়তো ভালোর জন্য, কারণ পৃথিবীতে এত বেশি মানুষ হয়ে গেছে যে, কিছুটা খালি করা দরকার। অবশ্যই তার জন্য সুনামি আছে, ভূমিকম্প আছে, ছোট ছোট দেশের নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ আছে, কোভিড আছে– আরও কত এমন মারণ জীবাণু স্থলে, জলে, অন্তরিক্ষে ঘুরে বেড়াচ্ছে মানুষের মৃত্যুর দূত হয়ে।
কিন্তু তারাও হেরে যাচ্ছে এই নিশ্চিত প্রাণঘাতী অথচ অতি জনপ্রিয় মারণ ব্র্যান্ডগুলির কাছে। হায় রে, এ সব ব্র্যান্ডের
বাজনার আওয়াজও কিন্তু কম নয়।