দেশ আর বিশ্ব যদি আলাদা করে ধরা হয়, তাহলেও মানুষের সঙ্গে যা হওয়ার সবটাই একইসঙ্গে হচ্ছে। আর যদি একে অন্যের সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে দেখি, তাহলে একটাই আখ্যানের সন্ধান মেলে। মানুষের হাতে তৈরি মানুষের ইতিহাস। সাহিত্যের সূত্রে তা আমাদের দেখা আলাদা ভাবে জরুরি।
‘দেশ’ কথাটিকে যদি স্পেস অর্থে বিবেচনা করি, আখ্যানের নিরিখে, তবে দু’টি দিক একযোগে খুলে যায়। এক, এই স্পেস আখ্যানকে তার পরিধিগত সংকট বা অচলায়তন থেকে মুক্তি দেয়। মুক্তমনা আখ্যানের বিচরণ তখন চরিত্রে সর্বত্রগামী। আর এই সম্ভাবনা যত বাড়তে থাকে, তত দ্বিতীয় দিকটি খোলে। আখ্যানে বহু স্তরের সংক্রমণ ঘটতে থাকে। ফলে পরতে পরতে ঢুকে পড়ে মানুষ, তার বাস্তবতার বিবিধ রকমফের নিয়ে। আদতে তা অনেকখানি ছুঁয়ে ফেলতে পারে বাস্তব দেশ, কিংবা দেশ সংক্রান্ত বাস্তব ধারণাকে।
এখন, আখ্যানের এই অনুশীলন একজন পাঠকেরও ধর্ম হওয়া জরুরি। দেশ দুই অর্থেই– ব্যাপ্তি ও বাস্তবতা– পাঠাভ্যাসকে যদি প্রভাবিত করে, তবে, সময়ের চরিত্র, নিয়তি, পরিহাস সবটাই খোলসা হয় অনেকটা যৌক্তিকভাবে। বিশ্ব এবং দেশ, দুই ধারণাই পরস্পরের বন্ধু হিসেবে ধরে নিতে পারি, সময়-কাল ও বাস্তবতার অর্থে। সেই ভিত্তিভূমি থেকেই আমাদের তাকানো সাহিত্যের দিকে। ‘ছাপাখানার গলি’ পত্রিকার বিশ্বসাহিত্য নিয়ে যে সাম্প্রতিক প্রকল্প, তা সব অর্থেই এই দেশ-এর সন্ধান।
সেই সন্ধানে বেরিয়েই সম্ভবত এমন আখ্যানের কাছে পৌঁছতে হয়েছে, যা গড়ে এবং বেড়ে উঠেছে নারীকে অবলম্বন করে। কাকতালীয় নয় বরং তা অনিবার্য। বলা যায়, সমাজের অবরোধ এবং নারীর প্রতিরোধ-ই, ইতিহাস ও সমসময়কে পড়ে নিতে এক্ষেত্রে সহায়ক। আমাদের মনে পড়বে, গ্যের্নিকায় আঁকা চরিত্রগুলির মধ্যে নারীর সংখ্যাই বেশি। একটা ঘুণ ধরা সময় যখন ধ্বস্ত হতে থাকে, আর সেই আক্রোশ এসে লাগে সময়ের গায়ে, তখন প্রথম আঘাত নেমে আসে নারীর ওপরেই।
এমন নয় যে সাহিত্যের সূত্রে বিশ্বদর্শনের এই পরিক্রমায় গ্যের্নিকার সঙ্গে সাদৃশ্য খুঁজে বের করতেই হবে। সে প্রসঙ্গ নয় পরে খতিয়ে দেখা যাবে। ভাষা যদি অক্ষর অতিক্রম করে একটি আবহ নির্মাণ করতে পারে, তবে দেশের ভাষার ভিতর দিয়ে উঠে আসা দেশেরই বাস্তবতার আবহটি আমরা অনুমান করতে পারি। সেই অভিপ্রায়েই চোখ রাখা যাক কয়েকটি আলোচনার দিকে। ঔষ্ণীক ঘোষ সোম প্রখ্যাত কন্নড় সাহিত্যিক বৈদেহীর সাহিত্যকর্মের ধারণা দিয়েছেন। আমরা সেখানে শকুন্তলা চরিত্রটিকে পেয়ে যাই একেবারে ভিন্নতর পাঠে। কবির বয়ানে নয়, বরং কবির অভিপ্রায় থেকে সরে গিয়ে শকুন্তলা এখানে নিজেই বাঙ্ময়, ফলত প্রশ্ন উত্থাপন করছেন তিনি, আদতে যা পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারীকে দেখার বহুকাল যাবৎ চলতে থাকা ধরনটিরই সমালোচনা।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
ওড়িয়া ঔপন্যাসিক বিভূতি পট্টনায়েকের ‘নতুন দ্রৌপদী’ উপন্যাসটি চিনিয়ে দিতে গিয়ে যেমন উপ্রেন্দ্র প্রসাদ নায়েক ধরিয়ে দিয়েছেন মহাভারতেরই সাম্প্রতিক রূপ। এখানে যিনি দ্রৌপদী, তিনি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী। তাঁকে ধর্ষিতা হতে হল যখন, তখন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের পরবর্তী ঘটনার মতোই ঘনিয়ে ওঠে সংঘাত, সংঘর্ষ, রাজনীতি। এটা কাহিনির কাঠামোর একটা দিক।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
শকুন্তলা না হয়ে যে কোনও চরিত্রকে দিয়েই হয়তো এই সমালোচনা করানো যেত। তবে শকুন্তলাকে ধরে এগোনোর ফলে সামূহিক স্মৃতি এবং অভিজ্ঞতার একেবারে মূল থেকেই তা করা সম্ভব হচ্ছে। সেখানে কবির অভিপ্রায়ও সমালোচনার অতীত নয়। ফলত দেখা যাচ্ছে, দুর্বাসা মুনির অভিশাপ এখানে নতুন একটি অর্থ নিয়ে ধরা দিচ্ছে। তা যত না নিয়তি, তার থেকেও বেশি ক্ষমতার সক্রিয়তাকে নির্দেশ করছে। অদৃষ্টবাদ অতিক্রম সম্ভব, যদি ক্ষমতার সেই স্বরূপটিকে চিহ্নিত করে ফেলা যায়। অতএব এই কাহিনি এই যে নতুন অর্থ এনে দিচ্ছে, আদতে তা একটি নতুন পথ; যা আমাদের ভাবনাকে অদৃষ্ট থেকে সরিয়ে আনতে সক্ষম যুক্তির কাছে।
পুরুষের দোষ ঢাকতে অভিশাপের অছিলায় কবির যে রচনা করা ছলনাজাল, তা শকুন্তলা ধরিয়ে দিচ্ছেন নির্দ্বিধায়। ফলত প্রসারিত অর্থে, ক্ষমতা আর ক্ষমতার দোষ ঢাকার ছলনাময় প্রকল্পগুলোকেও আমরা এই পথের অনুসরণেই সহজে চিনে নিতে পারি। ওড়িয়া ঔপন্যাসিক বিভূতি পট্টনায়েকের ‘নতুন দ্রৌপদী’ উপন্যাসটি চিনিয়ে দিতে গিয়ে যেমন উপ্রেন্দ্র প্রসাদ নায়েক ধরিয়ে দিয়েছেন মহাভারতেরই সাম্প্রতিক রূপ। এখানে যিনি দ্রৌপদী, তিনি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রী। তাঁকে ধর্ষিতা হতে হল যখন, তখন দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের পরবর্তী ঘটনার মতোই ঘনিয়ে ওঠে সংঘাত, সংঘর্ষ, রাজনীতি। এটা কাহিনির কাঠামোর একটা দিক। উপেন্দ্র প্রসাদ জানাচ্ছেন, সেই কাঠামোর তলে তলে লেখক স্বাধীনতা ও পরবর্তী কালের ভারতকেই এনে হাজির করেছেন। মুক্তি সংগ্রাম থেকে দেশভাগ, দাঙ্গা এবং সেই সূত্রেই নারী স্বাধীনতা, নারী সুরক্ষার দিকগুলো একে একে গড়ে তুলছে কাহিনির আর একটি শরীর। অতএব পাঠকের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না, নতুন দ্রৌপদী আসলে কে। এ-কাহিনিও অবশ্য একটি প্রতিরোধের পরিসর শেষ পর্যন্ত রচনা করেছে। আমরা খেয়াল করব, দেশের অন্য কোথাও বসে অন্য ভাষায় যিনি দেশকে রচনা করছেন, তিনিও পৌঁছে যাচ্ছেন সেই একই প্রতিরোধের জায়গায়, কেননা গন্তব্য সেটিই।
সাঁওতালি ভাষায় রচিত বাসুদেব বেসরার গল্প নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে সুন্দর মনোজ হেমব্রম ‘জুলি’ গল্পটির প্রসঙ্গ এনেছেন। সাঁওতাল পরগনার পাহাড়পুর গ্রাম ছেড়ে নার্সিং পড়তে পাটনায় এসেছেন এক যুবতী। সেখানে যে তার প্রেমিক হয়ে ওঠে, সে-ই তাঁর শোষণকর্তা হয়ে দাঁড়ায়। সে প্রেম টেকেও না। গল্প এগোলে দেখা যায়, প্রেমিকপ্রবর যুবতীকে আত্মহত্যা করার পরামর্শ জানিয়ে একটি চিঠি লেখে। গল্প শেষ হয় যুবতীর সিদ্ধান্তে, যেখানে তিনি দৃঢ় অবস্থানে বলতে পারছেন যে, তাঁকে শেষ করে দেবে এমন শক্তি সমাজের নেই। প্রেমিকটি শেষ পর্যন্ত যুবতীর কাছে গোটা সমাজ হয়েই ধরা দিয়েছে। তাঁর বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত সেই সামাজিক কুচক্রের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়ানো। আপাতভাবে ব্যক্তির এই কাহিনি তাহলে একটি শ্রেণির প্রতিরোধই হয়ে ওঠে শেষ পর্যন্ত।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
আরও পড়ুন সরোজ দরবার-এর লেখা: ভেসে যায় ভেলা ইতিহাস ছুঁয়ে ছুঁয়ে
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
গীতাঞ্জলী শ্রী-র উপন্যাস ‘মাঈ’ বা মা-এর ক্ষেত্রেও তাই দেখা যায়, বহুবর্ণিল মায়ের চরিত্র আসলে স্বাধীনতার পর ঔপনিবেশিক দৃষ্টি আঁকড়ে থাকা একটি সমাজব্যবস্থার বাস্তবতা এবং অস্বস্তিগুলোকেই হাটের মাঝে এনে ফেলে। ফলে ব্যথাকাতর অগণন প্রশ্নের মুখে এসে যে পাঠককে দাঁড়াতে হয় তা মনে করিয়ে দিয়েছেন আলোচক শম্পা রায়। তামিল লেখক রা নটরাজনের নভেলা ‘আয়েশা’ নিয়ে আলোচনায় শীর্ষা মণ্ডল যখন জানান যে, একটি ছাত্রের মৃত্যুই আয়েশা চরিত্রটিকে গড়ে তুলেছে, তখন এই তথ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনাথ মুসলিম পরিবারে মেয়ে আয়েশা এই সমাজের বিক্ষত বাস্তবতার যতগুলি মাত্রা ছুঁয়ে ফেলে, তাতেই যেন স্পষ্ট হয় লেখক ব্যক্তির সংকটকে অনেকটা বড় প্রেক্ষাতে ধরতে চাইছেন, যা একমাত্র আয়েশা থাকার ফলেই সম্ভব।
এ সবই আমাদের দেশের গল্প। দেশের মানুষের গল্প, মানুষেরই নির্মিত। সেই গল্প জুড়ে জুড়েই আমরা পেয়ে যাই দেশের আদল। আমরা সন্ধান পাই আমাদের সম্মিলিত বেঁচে থাকার বাস্তবতার, ইতিহাসের।
এই ইতিহাসই আমাদের ঠেলে দেয় আরও বড় ইতিহাসের দিকে। অর্থাৎ ব্যাপ্তির দ্বিতীয় স্তরে। দেশ পেরিয়েও যে মানুষের লড়াই, বেঁচে থাকা আর তা থেকে জন্ম নেওয়া আখ্যান, তা ভিন্নতা সত্ত্বেও তাই পুরোপুরি অচেনা হয় না। বা বলা যায়, ইতিহাসের একটি সূত্র ধরে নিজেদের ইতিহাসের মূল্যায়নও করা যায়। নাইজেরিয়ার লেখিকা চিমামান্দা আদিচির রাজনৈতিক উপন্যাস ‘হাফ অব এ ইয়েলো সান’-এর আলোচনা প্রসঙ্গে সেই বিন্দুতে পৌঁছে যান আলোচক সৌভিক ঘোষাল। এ-উপন্যাসের ভিত্তি রচনা করেছে সে-দেশের যুদ্ধের ট্র্যাজেডি। ক্ষমতাকেন্দ্রগুলির দ্বন্দ্ব আখ্যানকে গতি দিয়েছে, আর সেই গতির ভিতর দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠছে ইতিহাসের ক্ষতচিহ্ন। এবং সেখানে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পরিচিতি সত্তা। তা সহাবস্থানে যেমন থাকে, তেমনি তা দ্বন্দ্বময়। এই যে মৌলিক বৈশিষ্টটি তা নাইজেরিয়ার জন্য যেমন সত্য, ভারতের জন্যও। নিশ্চয়ই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গৃহযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধ মানুষের জন্য একই রকম পরিণতি বয়ে আনে না। তবু কোনও এক স্থানাঙ্কে যেন মানুষের ইতিহাস একে অন্যের কাছাকাছি চলে আসে। এই একাত্মবোধ আসলে ব্যাপ্তি ও বাস্তবতার নিরিখে বিশ্বের সঙ্গে দেশের ধারণার বন্ধুত্ব পাতিয়ে দেয়। অর্থাৎ এক রকমের বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে আমরা মিলিয়ে নিতে পারি নিজেদের বেঁচে থাকার সত্যি, মিথ্যে, স্বস্তি ও অস্বস্তিকে। তা সাহিত্যের সূত্রে হওয়াই সম্ভব। কেননা সেখানে মানুষই মুখ্য। অতএব মৌল জায়গাগুলোতে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগ আর সেই নিরিখে ইতিহাসের একটা বড় ধারণার সামনাসামনি হতে পারেন পাঠক। যেমন পাঠক বুঝতে পারেন যে, কেন আখ্যান নিজেকে জিগস পাজলের মতো ছড়িয়ে দেয় মাঝেমধ্যে। বিকাশ গণ চৌধুরী ‘জীবনযাপনের ব্যবহারবিধি’ নামে জর্জ পেরেক-এর যে উপন্যাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, তা আঙ্গিকে নতুন তো বটেই, বলা যায়, ফর্মের দিক থেকে উপন্যাসের মুক্তির একটি দিক।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
আরও পড়ুন সরোজ দরবার-এর লেখা: মুখোমুখি জীবন আর জীবনের মর্ম, ভিতরপানে চাওয়ারই আখ্যান ‘উজানযাত্রা’
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
আমাদের খেয়াল পড়বে, স্বয়ং বঙ্কিম তাঁরই ফর্ম থেকে বেরোনোর বাসনায় একদিন পৌঁছে গেলেন কমলাকান্তের কাছে। দেবেশবাবুর মতে, উপন্যাসের সেই একটা নতুন রকম পাওয়া গেল, যা উপন্যাসকে কাঠামোর শাসন থেকে মুক্তি দিতেও পারে, অনেকটা পরিসরও আয়ত্ত করে নিতে পারে। জর্জ পেরেক-ও সেরকমই একটা ছড়িয়ে থাকা ফর্ম নিয়েছেন, যা জুড়ে জুড়ে পাঠককে তৈরি করে নিতে হবে আখ্যান। এখন এই যে একটি স্থির কাঠামো ভেঙে ছড়িয়ে পড়া বা সর্বত্রগামী হয়ে ওঠা, তা কি কেবলই আঙ্গিকের পরীক্ষা! নাকি বিশ্বযুদ্ধের মাঝে মানুষের ভেঙে ছড়িয়ে যাওয়া ইতিহাস, তার আগামী বিচ্ছিন্নতাবোধেরই টুকরো টুকরো আভাস। সে-আভাস রাজনৈতিক তো বটেই। জুড়ে জুড়ে দেখলে সমগ্রতায় মানুষেরই আদল ফুটে ওঠে। দেশ আর বিশ্ব যদি আলাদা করে ধরা হয়, তাহলেও মানুষের সঙ্গে যা হওয়ার সবটাই একই সঙ্গে হচ্ছে। আর যদি একে অন্যের সঙ্গে মিলিয়ে মিশিয়ে দেখি, তাহলে একটাই আখ্যানের সন্ধান মেলে। মানুষের হাতে তৈরি মানুষের ইতিহাস। সাহিত্যের সূত্রে তা আমাদের দেখা আলাদা ভাবে জরুরি। সম্পাদক জানিয়েছেন, এই সংখ্যার আলোচকদের গরিষ্ঠজন তরুণ। অর্থাৎ নতুন সময়-ই চিনে নিতে চাইছে সময়কে একেবারে ভিতর থেকে। সে চেনার ফল এই যে, একমাত্র মানুষের গল্পই মানুষকে বলতে পারে, ইতিহাস নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতাও থাকে মানুষের হাতেই। অতএব আখ্যানের শেষ নেই।
অনেকগুলি আলোচনার কথাই এই আলোচনার বাইরে থেকে গেল। পাঠক, যদি এতদূর পড়েন তো, নিশ্চিতই সমস্ত লেখাই খুঁজে নেবেন এটুকু আশা করাই যায়। সত্যি বলতে এই ধরনের কাজ যত বেশি হয় তত ভালো। এই চর্চা ছাড়া ব্যাপ্তি ও বাস্তবতার ধারণা আমাদের কাছে অসম্পূর্ণই থেকে যায়। সেই অভাববোধই প্রকারন্তরে বোধে, মননে, রাজনীতিতে দেউলিয়াপনার দিকে ঠেলে দেয়। তাই সম্পাদক ও সম্পাদকমণ্ডলী যে শ্রমসাধ্য কাজ করেছেন, সে কারণে তাঁদের ধন্যবাদ প্রাপ্য। কয়েকটি ছাপার ভুল থেকেই গেল, না থাকলেই ভালো হত। তবে কী আর করা যাবে, আমাদের বেঁচে থাকাও তো ত্রুটিমুক্ত নয় শেষ পর্যন্ত!
ছাপাখানার গলি
বিশ্বসাহিত্য সংখ্যা
সম্পাদক: দেবাশিস সাহা
৩৫০টাকা