Robbar

আমায় ডিরেক্টর বানিয়েছে আমার আদরের দ্বিতীয়

Published by: Robbar Digital
  • Posted:February 1, 2025 11:18 am
  • Updated:February 2, 2025 8:38 pm  

দ্বিতীয় বই নিয়ে গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু হল যে না, তার জন্য দায়ী একজন মানুষ। নাম তাঁর সুজিত সরকার। উত্তর কলকাতা, পাড়া ফুটবল, কিশোর প্রেম— এমনতর বড় হওয়ার গল্প শুনে যিনি একবাক্যে রাজি হয়ে গেলেন এক নতুন পরিচালকের ছবি প্রডিউস করতে। ‘একদিনব্যাপী’ থেকে ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’-এর যাত্রাপথ অনেকটা দীর্ঘ। ছবিতে চরিত্ররা বদলে গিয়েছে অনেকটা।

অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়

তখন ‘নিরুদ্দেশ সম্পর্কে ঘোষণা’ লিখছি রোববার রোববার। ইতস্তত এক-দুটো পাঠক জমছে ইদিকসিদিক। ঝামেলা পাকাল অরুণদা। অনিন্দ্য, তোমায় ‘খেলার দুনিয়া’-র পুজোসংখ্যায় একটা উপন্যাস লিখতে হবে। খানিক চুপ থেকে বললাম, আমি তো তোমার কোনও ক্ষতি করিনি বলো অরুণদা… এ কথা শুনে ডেঞ্জারাস লোকটা একটা অমলিন হাসি ছাড়ল। সে হাসির মানে কাগজের এডিটরকে বলা হয়ে গিয়েছে– যাও, হাতে তেল লাগিয়ে লেগে পড়ো। আর লিখতে হবে কিন্তু ওই খেলা নিয়েই। আমার মতো এমন ক্রীড়া-মাকোড়াকে এ হেন অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়ার মানে কী, না-বুঝলেও, লেগে পড়লাম। প্রথমেই এডিটরকে জানালাম, আগামী সাতদিন আসব না।

নিরুদ্দেশ সম্পর্কে ঘোষণা by Anindya Chattapadhay | Goodreads
লেখকের প্রথম বই

কারণ ‘উপন্যাস’ লিখব বলে কথা! এরপর ভাবতে বসলাম কী ছাতার মাথা লিখব। খেলা বলতে জানি তো রবারের বল পেটানো… উত্তর কলকাতার পাতলা গলিতে চকের দাগ কাটা ওয়ান ডে টুর্নামেন্টই শুধু জানি। মতি নন্দীকে স্যালুট ঠুকে নেমে পড়লাম মাঠে… যা হয় হোক। মানুষ ঠেকায় পড়লে উড়তেও পারে। পরের সাতদিনে নেমে গেল একরাউন্ড খসখসে খসড়া… চোখ জ্বলজ্বলে হাসি নিয়ে নাম দিলাম– একদিনব্যাপী। যে সময়ের ঘটনা তখনও কিন্তু ‘নিরুদ্দেশ সম্পর্কে ঘোষণা’ শেষ হতে ঢের দেরি। উপন্যাস বলুন বা নভেলা– পুজোর বাজারে ‘একদিনব্যাপী’ প্রকাশ পাওয়ার পর বেশ কিছু ফোন পেয়েছিলাম। উপন্যাসের সঙ্গে ছবিগুলো এঁকেছিল শান্তনু। অরুণদারও খুব ভালো লেগেছিল লেখাটা।

EKDIN BYAPI: Buy EKDIN BYAPI by ANINDA CHATTOPADHYAY at Low Price in India | Flipkart.com
লেখকের দ্বিতীয় বই

এর কিছু বছর পর আমার প্রথম বই ‘নিরুদ্দেশ সম্পর্কে ঘোষণা’ প্রকাশিত হয়। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে চলছিল সিরিজটা, অনেকেই সংগ্রহ করেছিল বইটি। সেই বইমেলায় ভালো বিকিয়েছিল আমার প্রথম বই। ফলে প্রকাশক নতুন লেখা চাওয়ার আগেই দ্বিতীয় বই আমার রেডি ছিল। হাতে গরম পাণ্ডুলিপি  নিয়ে কলার তুলে বেরল ‘একদিনব্যাপী’। প্রথম বইয়ের মতোই এখানেও দুরন্ত অলংকরণ করলেন কৃষ্ণেন্দু চাকী। দে’জ থেকে বেরল আমার লেখা প্রথম ফিকশন।

দ্বিতীয় বই নিয়ে গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু হল যে না, তার জন্য দায়ী একজন মানুষ। নাম তাঁর সুজিত সরকার। উত্তর কলকাতা, পাড়া ফুটবল, কিশোর প্রেম– এমনতর বড় হওয়ার গল্প শুনে যিনি একবাক্যে রাজি হয়ে গেলেন এক নতুন পরিচালকের ছবি প্রডিউস করতে। ‘একদিনব্যাপী’ থেকে ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’-এর যাত্রাপথ অনেকটা দীর্ঘ। ছবিতে চরিত্ররা বদলে গিয়েছে অনেকটা।

Meet the BBFs of Open Tee Bioscope
ওপেন টি বায়োস্কোপ-এর শুটিংয়ে ঋদ্ধি সেন ও পরিচালক

কিন্তু ফোয়ারার জিতে যাওয়ার কাহিনি তো একই আছে। দ্বিতীয় বই অভিমান করে মুখ না-লুকিয়ে কেমন ব্যবস্থা করে নিল নিজের। জীবনের প্রথম নভেলা হল প্রথম বায়োস্কোপ।

দ্বিতীয় বই আমার দিকে তাকিয়ে এখন মুচকি হাসে। ফিসফিস করে সে বলে, তুমি ভাবছ ফোয়ারা জিতেছে কিন্তু আসল গোলটা কিন্তু আমিই দিয়েছি মোক্ষম মুহূর্তে। ঠিকই তো, আমায় ডিরেক্টর বানিয়েছে আমার আদরের দ্বিতীয়।