ইটভাটার শ্রমিক মেয়েটি হোক, চা বাগানের পাতি তোলাই হোক, সরকারি আধিকারিক বা পুলিশকর্মী, সমাজের তরফে এখনও মেয়েদের কাছে সুচারুভাবে সংসার পরিচালনার দাবি অগ্রাধিকার পায়। আর সেটা করতে গিয়ে আট ঘণ্টা কেন, আঠারো ঘণ্টা সময়েও মেয়েরা সবকিছু কুলিয়ে উঠতে পারে না।
‘আট ঘণ্টা কাজ, আট ঘণ্টা বিশ্রাম, আর আট ঘণ্টা অবসর’-এর শেষ অংশটুকু সবথেকে ‘বিপজ্জনক’। সেখানে লুকিয়ে এক অন্য স্বপ্ন– যেখানে শ্রমিক শুধু ঘুমাবে না, ক্লান্তি মেটাবে না, নিজের সময় দিয়ে কী করবে, সেটাও সে নিজে ঠিক করবে। শ্রমিক শুধুই কারখানার এক্সটেশন নয়, মুনাফা তৈরির যন্ত্র নয়, বরং বিপুল সম্ভাবনাময় রক্তমাংসের মানুষ।
কোভিডকালের পরে অনেক সংস্থা তাদের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার জন্য ইন্ধন দিচ্ছে। অফিসের ভাড়া, বিদ্যুৎ খরচ বাঁচছে প্রভূতভাবে। বেঁচে যাচ্ছে ‘আনপ্রোডাক্টিভ’ চা কফি-র খরচও।
ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ ও জাতপাতের বিভাজনকামী পরিচয়ের গণ্ডিতে আমাদের বেঁধে ফেলতে চায় ফ্যাসিবাদ, মে দিবসের শ্রমিকের ঐক্য তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ। সামাজিক বিভেদ আর উগ্র জাতীয়তা যে দুটো ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারীর সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা, সেখানেই আঘাত হানে মে দিবস।
আত্মীয়তা, সংহতি, বন্ধুত্বের রাজনীতিকেই ভয় করে শাসক। তাই জনমানসে কারাগার, কারাজীবনকে বরাবর এক অপরাধ সম্পৃক্ত বিপজ্জনক পরিসর হিসেবে চিহ্নিত করতে লাগে। বন্দিদের অপরাধ প্রমাণের আগেই তাঁদের অপরাধী করে তুলতে লাগে, বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই সাজা চলতে থাকে। মেয়েদের রাজনৈতিক সত্তাকে অস্বীকার করলেও, মেয়েদের রাজদ্রোহিতা তাই শাস্তিযোগ্য।
রিলে যেভাবে গৃহকর্মেনিপুণা, ধর্মভাবে প্রবল বিশ্বাসী, স্বামীসেবার যে ‘অবাস্তব’ স্বপ্ন দেখানো হচ্ছে, তা অন্য মহিলার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং তা গৃহহিংসার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
দক্ষিণ ভারতে হিন্দুধর্মের দেবদাসী প্রথা, ইসলাম ধর্মের খানকা ব্যবস্থা কিংবা হিব্রু বাইবেলে মোজেসের ভোগের উদ্দেশ্যে কুমারী মেয়ে ছাড়া বাকি সকল নারী-পুরুষদের হত্যা করার বিধান কি একই ধর্মীয় সুতোয় বাঁধা নয়?
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে গত ৬০-৭০ বছরের পরিসংখ্যান কী বলছে? আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে বিবাহ ও সন্তান ধারণ করা যায় না, গ্রামগুলিতেও পৌঁছে গেছে সরকারি হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা, এক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যে ভারত ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে আছে?
দেশের একটি শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে এরকম দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যেত যে একইসঙ্গে কীভাবে উন্নয়ন এবং প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেদিকে কোনওদিনই নজর দেয়নি। কিন্তু পরিকল্পনা ও পরিবেশগত দায়িত্ববোধের অভাব বারবার দেখা গেছে।
রিয়া চক্রবর্তী সুশান্তের ‘ডাইনি’ প্রেমিকা, উমা খুরানা ‘ধান্দাবাজ দুশ্চরিত্রা’, আরুষির মা হয়ে গেছিলেন ‘রাক্ষসী’ মা। এই যে সম্ভাব্য অপরাধকে একটা জঘন্য, নোংরা কিছুর সঙ্গে একাত্ম করে একটা বীভৎসতা আঁকার চেষ্টা; এটা কিন্তু কোনও মা, কোনও স্ত্রী, বা কোনও প্রেমিকার প্রতিই সম্ভব হয়েছে বারবার।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved