সিনেমায় ভাষার দিক থেকেও বারবার এক্সপেরিমেন্ট করে গিয়েছেন। এমনকী সিনেমার ফর্ম নিয়েও। ‘সূরয কা সাতওয়া ঘোড়া’য় এক অদ্ভুত ন্যারেটিভ তৈরি করেছেন, যা গল্পটাকে বারবার ভেঙে দেয়। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জায়গাটা আজীবন বজায় রেখেছেন শ্যাম বেনেগাল। অন্যান্য বিদগ্ধ পরিচালকের ক্ষেত্রে যেমন দেখা যায়, তারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সেভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে হাঁটেন না, নিজস্ব এক জঁর-কে গুরুত্ব দেন, শ্যাম বেনেগাল কিন্তু তা করেননি। অন্য পরিচালকরা ভাষার ক্ষেত্রে এক্সপেরিমেন্ট না করলেও, শ্যাম বেনেগালের অধিকাংশ সিনেমাতেই ভাষা নিয়ে নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ছাপ দেখতে পাওয়া যায়।
সাতের দশকের গোড়ায় ভারতীয় চলচ্চিত্রে বিকল্প ধারার সিনেমার যে গোড়াপত্তন, তার অন্যতম প্রধান মুখ শ্যাম বেনেগাল। ওই সময়ে, ১৯৭৪-এ গোবিন্দম অরবিন্দমের মতো পরিচালক, নিয়ে এলেন ‘উত্তরায়ণ’-এর মতো ছবি। শ্যাম বেনেগালও ওই একই সময়ে তৈরি করছেন ‘অঙ্কুর’ (১৯৭৪)। ঠিক তার পরের বছর তৈরি করছেন ‘নিশান্ত’ (১৯৭৫)। মণি কৌলও কাছাকাছি সময়েই করছেন ‘মাথাসুরিয়া’। সামান্য আগে, ১৯৭২-এ গোপালকৃষ্ণণ ‘স্বয়ম্বরম’ করেছেন। ‘মায়াদর্পণ’ (১৯৭২) নিয়ে হাজির হয়েছেন আরেক তুখড় পরিচালক কুমার সাহানি।
এই যে একঝাঁক পরিচালক, বলা বাহুল্য, এঁদের সিনেম্যাটিক ফর্ম একে অপরের চেয়ে আলাদা। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, এঁরা প্রত্যেকেই মূলধারার যে ভারতীয় সিনেমার গতে-বাঁধা আঙ্গিক বা টেমপ্লেট, সেই সূত্র থেকে বেরিয়ে এসে ফিল্মের একটা নতুন ভাষা খোঁজার, একটা নতুন অন্বেষণের চেষ্টা করলেন। তাঁদের উপজীব্য যে বিষয়গুলো– সামাজিক বৈষম্য, লিঙ্গবৈষম্য এবং বেশ কিছু রাজনৈতিক সংঘাত। এই বিষয়গুলোই এই সমস্ত পরিচালকের সিনেমায় ফুটে উঠছে বারবার। এই নতুন সিনেমাভাষার আন্দোলন পরবর্তীকালে বিরাট আকার ধারণ করে এবং ছড়িয়ে পড়ে। কেরলে মালয়ালম সিনেমায় তার প্রভাব দেখতে পাই, দেখতে পাই বাংলা ছবিতেও, অসমে সেই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যান জাহ্নু বড়ুয়ার মতো পরিচালক। মূলত এই বিকল্প ধারার সিনেমার হাত ধরেই ভারতীয় চলচ্চিত্রে একটা আর্বান মিডল-ক্লাস অডিয়েন্স তৈরি হয়। যার অন্যতম রূপকার নিঃসন্দেহে শ্যাম বেনেগাল। এ-কথা বলার যথেষ্ট যুক্তিসংগত কারণ আছে।
শ্যাম বেনেগালই প্রথম সেই পরিচালক, যাঁর প্রথম তিনটি সিনেমা– ‘অঙ্কুর’, ‘নিশান্ত’ এবং ‘মন্থন’ (মাঝে ‘চরণদাস চোর’-ও করেছেন), যাকে ‘থিম্যাটিক ট্রিলজি’ বলা চলে। ট্রিলজি নয়, থিম্যাটিক ট্রিলজি। যেখানে আমাদের সমাজের যে বিভিন্ন সামাজিক শ্রেণি, তাদের মধ্যেকার যে টানাপোড়েন, যে সংঘাত– সেগুলোকে দেখতে পাওয়া গেল। বিশেষ কোনও দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সেগুলোকে তুলে ধরছেন শ্যাম বেনেগাল, তা কিন্তু নয়। তিনি অদ্ভুতভাবে একটা জটিল ঐতিহাসিক মুহূর্তকে তুলে ধরছেন। সেটা তাঁর সিনেমায় বারবার ঘুরেফিরে এসেছে। যেমন ‘অঙ্কুর’-এ অনন্ত নাগ যে চরিত্রটি করেছেন, তা শুধু নৃশংস ভিলেন হিসেবে ভাবা যায় না, কারণ, ওই চরিত্রের মনের ভিতরে যে ভয়, যে আতঙ্ক– সেই অনুভূতিগুলো প্রবলভাবে রয়েছে। নিজের গ্রামেই তার পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে একটা শহুরে সভ্যতা গ্রামকে গ্রাস করে নিচ্ছে। সেই অবস্থান থেকে তার রাগ, আক্রোশ– সেটা বেরিয়ে আসছে। এই যে মানুষের আত্মদর্শনের দিকটা, বিশেষ করে ভারতীয় দৃষ্টিকোণে তাকে দেখার প্রয়াস, এটাই শ্যাম বেনেগালের কাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আধুনিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ভাবনাকে গড়ে তুলছেন শ্যাম। পারস্পরিক সম্পর্কের যে জটিলতা, সেখানেও এসে পড়েছে পরিচালকের এই ক্ষুরধার দৃষ্টিভঙ্গি। তাঁর ‘নিশান্ত’ সিনেমায় শাবানা আজমির যে চরিত্র, যে কি না স্কুলমাস্টারের স্ত্রী, তাকে তুলে এনে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এবং পাশাপাশি আরও এক মহিলা চরিত্র, এক সদ্য-বিবাহিতা নারী, যে চরিত্রটি করেছেন স্মিতা পাটিল। এই চরিত্রটি দেখছে, তার স্বামী ক্রমশ বন্দি মহিলাটির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে! তা সত্ত্বেও উভয়ের মধ্যে এমন একটা সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে, যা অব্যক্ত হয়েও সহানুভূতিশীল। উভয়েই নিজের নিজের অসহায় অবস্থানটাকে অনুধাবন করতে পারছে। এখানেই শ্যাম বেনেগালের মুনশিয়ানা। ভারতে, লিঙ্গনির্বিশেষে মনের অন্ধকার জায়গাটায় আলো ফেলে দেখিয়েছেন বলেই তিনি আধুনিক।
শ্যাম বেনেগালের সিনেমায় এই আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি ভীষণভাবে প্রকট। কারণ, মানুষের মনকে পড়ে ফেলার, এবং তার ভাবনার অতলে প্রবেশ করার একটা অক্লান্ত প্রয়াস বারবার দেখা যায় শ্যামের মধ্যে। ফলে তাঁর সিনেমায় বিভিন্ন চরিত্র, তাদের বিভিন্ন আচার-ব্যবহার নিয়ে উপস্থিত হয়েছে।
তবে কখনই গতানুগতিক চিন্তাধারাকে আঁকড়ে থাকেননি শ্যাম বেনেগাল। পরবর্তী কালে তাঁর হাতেই নির্মিত হয়েছে ‘মান্ডি’, ‘ত্রিকাল’-এর মতো কালজয়ী সিনেমা। যেখানে আবার অন্বেষণের জায়গাগুলো ছোট পরিসরে এবং একটা গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ। ‘মান্ডি’র ক্ষেত্রে যেমন বলা যায়, মান্ডি একটা ‘মেটাফর’, যেখানে সমস্ত পৃথিবীটাকেই একটা বাজার বলে মনে হয়। ব্রথেলটাকে সামনে রেখে যেখানে দেখানো হচ্ছে, পুরো পৃথিবীটাই একটা মার্কেট-প্লেস! এবং সেটা পরিবেশন করা হচ্ছে ডার্ক-কমেডির আধারে। যখন তিনি এই ধরনের সিনেমা করছেন, যেমন ‘কলিযুগ’, সেখানে মহাভারতের একটা নতুন ইন্টারপ্রিটেশনও তুলে ধরছেন পরিচালক।
অনেকে তাঁর ভাবনাকে ভুলও বুঝেছেন। একটা সময় ওঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে– মিডল-পাথ বা মধ্যপন্থার ফিল্মমেকার! নিজের নামের সঙ্গে এই ধরনের তকমা জুড়ে যাওয়ায় ঘোর আপত্তি ছিল শ্যাম বেনেগালের। আপত্তি করতেনও। অথচ সিনেমার ভাষার দিক থেকে যে ক্রিটিক্যাল প্যারামিটারগুলো ছিল, যেমন রিয়ালিজম, কিংবা আত্মানুসন্ধান– সেই অন্বেষা কিন্তু চিরকাল বজায় ছিল শ্যাম বেনেগালের সিনেমায়। সেটা ‘সূরয কা সাতওয়া ঘোড়া’-তেও যেমন আছে, তেমনই আছে ‘জুনুন’-এও।
‘জুনুন’-এর কথায় আসি। গোটা সিনেমাটাই এককথায় দারুণ একটা আকর্ষণীয় পিরিয়ড পিস। সেখানে কিন্তু সামাজিক ও লিঙ্গভিত্তিক অসাম্যের দৃষ্টিকোণে বিচারের তুলনায় ব্যক্তিগত প্রেমের সম্পর্ক বেশি গুরুত্ব লাভ করেছে। যেখান থেকে মনে হতে শুরু করে, শ্যাম বেনেগাল ক্রমে পপুলিস্ট হচ্ছেন। যদিও বহু সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, নিজের দৃষ্টিভঙ্গির জায়গা থেকে তিনি মোটেই সরে আসেননি। যে চিন্তাকে কেন্দ্র করে তাঁর ছবির ভাবনা, তাতে আরও নিমগ্ন হয়েছেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। দেশীয় ভাবনার পরিসর থেকে সরে এসে দেশের ছোট ছোট জায়গাকে, সেখানকার গোষ্ঠীচেতনাকে অনুসন্ধানের চেষ্টা করেছেন আরও জোরালো ভাবে।
হিস্ট্রোরিক্যাল সাবটেক্সট, ইতিহাসের উপাদান– সিনেমায় বহন করেছেন শ্যাম বেনেগাল। চিরকাল তাঁর কাজের মধ্যে তা ফিরে ফিরে এসেছে। ভারতীয় ইতিহাসকে তিনি নানা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন। কখনও সাবেকি জায়গা থেকে, কখনও আবার পরস্পর-বিরোধিতায়। আবার কখনও তাকে তুলে এনেছেন একদম নতুন, এক নিম্নবর্গের দৃষ্টিকোণ থেকে। ফলে শ্যাম বেনেগালের অনেক ছবি, যেগুলো অন্য পরিচালকের কাছে নিছকই ‘ডকুমেন্টারি’ হত, সেটা হয়ে উঠেছে অনবদ্য ফিচার ফিল্ম। যেমন– মন্থন।
অন্য একটা কারণেও সিনেমাটি বিখ্যাত। ‘মন্থন’ নিছক ডকুমেন্টারি হতে পারত, সেখানে আমরা সেখানে দেখছি, বিষয়ের দিক থেকে কী অভিনবত্ব! ‘মন্থন’-এ স্মিতা পাটিলের যে চরিত্রটি, একজন খুব স্বাধীনচেতা মেয়ের চরিত্র, তার সঙ্গে শহুরে বৈজ্ঞানিকের যে সম্পর্ক– যে চরিত্রটি করেছিলেন গিরিশ করনাড। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এই দুই চরিত্রের মধ্যে যে সেক্সুয়াল টেনশন, তা আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
‘মন্থন’ আরও একটা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ক্রিয়েটিভিটির দিক থেকে নয়। প্রোডাকশনের দিক থেকেও। ‘মন্থন’ কিন্তু ভারতীয় সিনেমার প্রথম ক্রাউড-ফান্ডিং প্রোডাকশন। এবং তার পথিকৃৎ শ্যাম বেনেগাল-ই। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছিল মিল্ক কো-অপারেটিভের হাজার হাজার সদস্য। এর নেপথ্যে তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল যে, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্মমেকার, তারা যেন নিজেদের একটা পরিকাঠামো তৈরি করতে পারে।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে শ্যাম বেনেগাল আফসোস করেছেন, যে মিডল-ক্লাস অডিয়েন্স তাঁরা একটা সময় তৈরি করতে পেরেছিলেন, তারা কিন্তু আর হলে আসছে না। সিনেমার সেই উৎকর্ষতা, তা ওঁর কাজে প্রতিফলিত। যা মূলধারার বাইরে হয়েও দর্শকদের আকৃষ্ট করত। তাই কখনও আমরা শ্যাম বেনেগালকে ইকোলজি নিয়ে ফিল্ম করতে দেখছি, কখনও সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে। সত্যজিৎ রায়ের ওপর নির্মিত তথ্যচিত্রে একজন পরিচালক তাঁর অগ্রজ বা পূর্বসূরীকে প্রশ্ন করছেন কোনও মুগ্ধতার জায়গা থেকে নয়, বরং তার প্রশ্নগুলো খুবই ক্রিটিকাল। তিনি ‘পথের পাঁচালী’র যে আর্বিটারি লেন্স অফ ইউসেজ– তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন। এবং সে প্রশ্নে সত্যজিৎ রায়ের মতো পরিচালকের অসহায়ত্ব কিন্তু ফুটে উঠছে।
শ্যাম বেনেগালের আরও একটা অবদান অনস্বীকার্য। ভারতীয় সিনেমা তাঁর কাছে চিরঋণী থাকবে, তা হল, এক ঝাঁক নতুন প্রতিভাবান অভিনেতা তিনি উপহার দিয়েছেন। সেই প্রতিভাবানদের মধ্যে কে নেই, নাসিরুদ্দিন শাহ, ওম পুরি, শাবনা আজমি, স্মিতা পাটিল, অনন্ত নাগ, কুলভূষণ খারবান্দা, গিরিশ কারনাড– আরও অনেকে। আসলে শ্যাম বেনেগাল এমন একজন পরিচালক যিনি অভিনেতাকে সেই স্পেসটা দিতেন, যাতে অভিনেতা নিজের মতো করে অভিনয়টাকে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হন। নাসিরুদ্দিন শাহ থেকে শাবানা আজমি– সিনেমায় এঁদের সকলের স্টেপিং স্টোন কিন্তু শ্যাম বেনেগাল। বলতে গেলে শ্যাম বেনেগালের হাত ধরেই, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষে ভারতীয় সিনেমায় একটা নতুন ফর্ম অফ অ্যাকটিং স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হয়। যা আত্মগত, একইসঙ্গে সাবলীল। একেবারে অভিনেতার ভিতর থেকে সেই অভিনয় আসছে, এবং তার ওপর থিয়েটারের কোনও প্রভাব নেই।
এটা সত্যি, গিরিশ কারনাডরা থিয়েটার থেকেই এসেছেন। নাসিরুদ্দিন, ওম পুরিরা এনএসডি-র ছাত্র। তা সত্ত্বেও ফিল্মে অভিনয়ের ক্ষেত্রে তার ট্রান্সফর্মেশন, বিশেষ করে ন্যাচারাল অভিনয়ের ক্ষেত্রে, যেটা একদম সাবলীলভাবে ফুটে উঠছে অভিনেতার ভিতর থেকে, সেই রিয়ালিজমকে ধরার চেষ্টা করেছেন শ্যাম বেনেগাল। বিদেশে সেটাকে দারুণ ভাবে তুলে ধরেছেন মার্লন ব্র্যান্ডোর মতো অভিনেতা, পরবর্তীতে আরও অনেকে। এদেশে তার একটা নতুন স্ট্যান্টার্ড তৈরি দিয়েছিলেন শ্যাম বেনেগাল। সেই ন্যাচারাল অভিনয় যে পরবর্তী প্রজন্মকে কতটা উদ্বুদ্ধ করেছিল, সেটা বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে মোহন লাল, মামোত্থির মতো অভিনেতারা স্বীকার করেছেন।
সিনেমায় ভাষার দিক থেকেও বারবার এক্সপেরিমেন্ট করে গিয়েছেন। এমনকী সিনেমার ফর্ম নিয়েও। ‘সূরয কা সাতওয়া ঘোড়া’য় এক অদ্ভুত ন্যারেটিভ তৈরি করেছেন, যা গল্পটাকে বারবার ভেঙে দেয়। এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জায়গাটা আজীবন বজায় রেখেছেন শ্যাম বেনেগাল। অন্যান্য বিদগ্ধ পরিচালকের ক্ষেত্রে যেমন দেখা যায়, তারা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সেভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে হাঁটেন না, নিজস্ব এক জঁর-কে গুরুত্ব দেন, শ্যাম বেনেগাল কিন্তু তা করেননি। অন্য পরিচালকরা ভাষার ক্ষেত্রে এক্সপেরিমেন্ট না করলেও, শ্যাম বেনেগালের অধিকাংশ সিনেমাতেই ভাষা নিয়ে নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ছাপ দেখতে পাওয়া যায়। এই স্বকীয়তাই শ্যাম বেনেগালকে বাকিদের থেকে আলাদা করে রাখবে।
এসবে বাইরে মানুষ শ্যাম বেনেগাল, তিনিও ভীষণ আকর্ষণীয়। এমন একজন মানুষ, যিনি কি না রিটায়ার করতে চাইতেন না। প্রত্যেকদিন নিজের অফিসে আসতেন। কাজের মধ্যে সময় কাটাতেন। এই যে প্রাণচঞ্চল মানসিকতা, এটা কিন্তু শিক্ষণীয়। সঙ্গে শেখার ইচ্ছাটাও ছিল প্রবল। এই ক’দিন আগেই ৯০তম জন্মদিন পালন করেছিলেন। সেখানেও এক সাক্ষাৎকারে ইন্টারভিউয়ারের কাছে শিখতে চাইছিলেন ইন্সটাগ্রামের খুঁটিনাঁটি। আসলে ভীষণ আধুনিক মনের একটা মানুষ ছিলেন শ্যাম বেনেগাল। হঠাৎ করে চলে যাওয়াটা তাই শ্যাম বেনেগালকেই মানায়।
…………………………………
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
…………………………………