ইউরি গ্যাগারিনের মহাকাশ অভিযানের পরে ৬৩ বছর কেটে গেছে। পৃথিবীর যে রূপ, গন্ধ তিনি প্রত্যক্ষ করেছিলেন, তার অবক্ষয় ঘটেছে। পার্থিব সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রাখার যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তার অনেকটা উল্টোদিকে যাত্রা করেছে সমবেত রাষ্ট্রনেতাগণ। মুনাফা বাড়িয়ে নেওয়ার রাস্তায় সবচেয়ে অবহেলিত থেকেছে পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা। সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার আগে রাষ্ট্রগুলি যদি সচেতন হয় এবং সংবেদনশীল নাগরিকরা যদি রাষ্ট্রনেতাদের, আইনপ্রণেতাদের সচেতন করতে পারেন, সেটাই ইয়ুরি গ্যাগারিনের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধার্ঘ হবে।
১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল ভস্তক-১ যানে প্রথম মানুষ হিসেবে মহাকাশে গেছিলেন ২৭ বছর বয়সি ইউরি আলেক্সেভিচ গ্যাগারিন। তার আগে মহাকাশ অগম্য তো বটেই, দুর্জ্ঞেয়ও ছিল। কত বিচিত্র ধারণা, কত রকমের কল্পনা এবং কত ভিন্ন মাত্রার বিশ্বাস মানুষের মনে মহাকাশ সম্পর্কিত বোধের জন্ম দিয়েছিল। বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষ তাদের পৌরাণিক কাহিনি, গল্পগাছায় মহাকাশ তথা ‘মহাশূন্য’ নিয়ে নানা তত্ত্ব পেশ করেছে। মহাকাশে কোনও এক ‘কাল্পনিক’ পরমশক্তির বাস, যিনি মানবজগৎ এবং প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, এমত বিশ্বাস প্রজন্মান্তরে চারিয়ে গেছে। গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান ‘বিচার’ করে ভাগ্যগণনা মানুষের যুক্তিবোধে ছায়া ফেলেছে বহুকাল। মানুষ মারা যাওয়ার পরে আকাশের তারা হয়ে যায়, এই বিশ্বাসও বহুশ্রুত। ইউরি গ্যাগারিনের মহাকাশযাত্রা এই সমস্ত বিশ্বাস আর কাহিনির ভিতে আঘাত করল। মহাকাশ অনন্ত সম্ভাবনার স্থান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ধীরে ধীরে সেই দুর্জ্ঞেয়কে জানতে চায়, বুঝতে যায়। বহু প্রশ্নের সদুত্তর পেতে চায়। এতে সম্ভাবনার জগৎ এবং জ্ঞানপরিসর আরও বিস্তৃত হয়।
ভস্তক-১ যখন ইউরি গ্যাগারিনকে নিয়ে মহাকাশে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করল, তখন সেই অজ্ঞাতকে জানাবোঝার পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হয়ে উঠল। একইসঙ্গে মানবসভ্যতার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দিগন্ত খুলে দিল। মহাকাশচারী মানুষ সমেত ভস্তক-১ পাঠানো সোভিয়েতের মুকুটে চিরস্মরণীয় পালক হয়ে রইল। কারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে সোভিয়েতের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী যুক্তরাষ্ট্র তখনও পর্যন্ত এমন পারদর্শিতা অর্জন করতে পারেনি। আর-সেভেন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া ছোট্ট যানে চড়ে পৃথিবীর বাইরে গিয়ে পৌনে দু’ঘণ্টা (১০৮ মিনিট) পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করেছিলেন ইউরি। পৃথিবীর সৌন্দর্য প্রত্যক্ষ করেছিলেন। ‘মহাকাশ থেকে দেখা দিগন্তরেখার দৃশ্য কী দারুণ সুন্দর! আলোকোজ্জ্বল পৃষ্ঠতল আর তারা-দেখা নিকষ আকাশের মধ্যে রঙের পার্থক্য মনোমুগ্ধকর। ধীরে ধীরে যখন ঘন নীল থেকে আঁধারের রঙে পরিবর্তন হচ্ছে, সেই দৃশ্য বর্ণনা করার ভাষা আমার নেই।’ ইউরি বিশদে তাঁর দেখা রঙ-পরিবর্তনের যথাসাধ্য বর্ণনা দিয়েছিলেন। আলো-আঁধারির মধ্যেও যে এত রোম্যান্টিক রঙিন থাকতে পারে, তার আন্দাজ পাওয়া যায়। আপামর গ্রহবাসীর কাছে আবেদন রেখেছিলেন, ‘আসুন আমরা এই সৌন্দর্য ধ্বংস না করে একে অক্ষুণ্ণ রাখি, একে আরও বাড়িয়ে তুলি।’
২.
ইউরি গ্যাগারিনের মহাকাশ অভিযানের পরে ৬৩ বছর কেটে গেছে। পৃথিবীর যে রূপ, গন্ধ তিনি প্রত্যক্ষ করেছিলেন, তার অবক্ষয় ঘটেছে। পার্থিব সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রাখার যে আর্জি জানিয়েছিলেন, তার অনেকটা উল্টোদিকে যাত্রা করেছে সমবেত রাষ্ট্রনেতাগণ। মুনাফা বাড়িয়ে নেওয়ার রাস্তায় সবচেয়ে অবহেলিত থেকেছে পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা। ভূগোল আর বিজ্ঞান বইতে সেই কবে থেকে লেখা আছে বিশ্বোষ্ণায়ন এবং গ্রিন হাউজ গ্যাসের কথা। ওজোন স্তরে ছিদ্র হওয়ার বিপদসংকেত পড়ানো হয়। কিন্তু, নাগরিকরা তথা নাগরিকদের নিয়ন্ত্রক রাষ্ট্রশাসকরা সচেতন হয় কি? ইশকুলপাঠ্য পরিবেশবিদ্যা পেরিয়ে বাস্তবে বিপদ কিছু কমেছে বা বিপদ কমানোর জন্য ক্ষমতাধর দেশের রাষ্ট্রনেতৃত্ব আন্তরিক হয়েছে? না। তথ্য-পরিসংখ্যানে বরং জানা যায় যে, বিপদ উত্তরোত্তর বাড়ছে। পৃথিবী ক্রমেই না-বাসযোগ্য হয়ে পড়ছে। ভারতে অবাধে বনজ ও খনিজ সম্পদ ধ্বংস করে চলেছে মুনাফাপ্রিয় কর্পোরেটগুলি। জল-জমি-জঙ্গল অবাধে লুঠ হচ্ছে শাসকীয় মদতে। মূলবাসীরা সংকটাপন্ন। পরিবেশরক্ষার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধেই বরং একের পর এক মামলা আইন প্রণীত হচ্ছে।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………..
ইউরি বলেছিলেন, মহাকাশ থেকে ‘পৃথবীর সূর্যকরোজ্জ্বল অংশটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। স্পষ্টত মহাদেশীয় উপকূল, দ্বীপপুঞ্জ, বড় নদী, স্থলদেশগুলিকে আলাদা করে চেনা যাচ্ছিল। আয়তাকার কৃষিক্ষেত্র দেখতে পাচ্ছিলাম…’ বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি মানবসভ্যতাকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে, আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে, কিন্তু ক্ষুদ্রস্বার্থান্বেষী পুঁজিপতিদের সংবেদনশীল মন গড়ে দিতে পারবে না।
…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
কয়েক বছর আগে দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন অরণ্য খবরের শিরোনাম হয়েছিল। ২০১৯ সালে ক্ষমতায় এসে ব্রেজিলের রাষ্ট্রপতি বলসোনারো পরিবেশরক্ষার বিভিন্ন আইন শিথিল করে দেন, পরিবেশ সংক্রান্ত গবেষণার বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য ভাবে কমিয়ে দেন, আমাজন সংলগ্ন আদিবাসী-মূলবাসী মানুষদের উচ্ছেদ করতে শুরু করেন এবং পরিবেশ-ধ্বংসকারী শিল্পের দরজা হাট করে খুলে দেন। মাত্র দু’বছরে আমাজন অরণ্যের প্রায় চৌত্রিশ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা হাপিস হয়ে যায়। আমাজনের দাউ দাউ দাবানলে ইউরির দেখা ওই রূপসী পৃথিবীর ছবি পুড়ে যাচ্ছিল। স্থিতিশীল উন্নয়ন থেকে মসৃণভাবে ‘স্থিতিশীল’ শব্দটিকে মুছে দেওয়া হয়। ‘স্থিতিশীল’ শব্দটির যথার্থ প্রয়োগে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অন্ন-জল-মাটি সুরক্ষিত থাকতে পারত। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট না করে উন্নয়ন বৃহত্তর সমাজের মঙ্গল করতে পারত। তা হয় না। মুষ্টিমেয় ক্ষমতাবানের হাতে আরও ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করতে নীতি, আইন, ব্যবস্থা সাজিয়ে নেওয়া হয়। প্রকৃতিতে বিষ বাড়ে। ইউরি পৃথিবীর যে দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন, তাতে যে ভারসাম্য ছিল, সেটুকুও ক্ষইতে থাকে ক্রমশ। ইউরি বলেছিলেন, মহাকাশ থেকে ‘পৃথবীর সূর্যকরোজ্জ্বল অংশটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। স্পষ্টত মহাদেশীয় উপকূল, দ্বীপপুঞ্জ, বড় নদী, স্থলদেশগুলিকে আলাদা করে চেনা যাচ্ছিল। আয়তাকার কৃষিক্ষেত্র দেখতে পাচ্ছিলাম…’ বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি মানবসভ্যতাকে বহুদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে, আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে, কিন্তু ক্ষুদ্রস্বার্থান্বেষী পুঁজিপতিদের সংবেদনশীল মন গড়ে দিতে পারবে না। দুর্ভাগ্য এই যে, ইউরি গ্যাগারিন যে চোখ+মাথা+মনের দৃষ্টিতে দেখে পৃথিবী গ্রহের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন, সেই দৃষ্টি লোভী পুঁজিবাদী, রাষ্ট্রনেতারা কোনও দিন পাবে না।
৩.
‘যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশচারীরা সাফল্যের সঙ্গে মহাকাশে যাক, এই কামনা করি। মহাকাশ তো কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। আমাদের পার্টি এবং সরকার চায় শান্তিপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং পারস্পরিক সহযোগিতায় মহাকাশের রহস্য উন্মোচনের গবেষণা। মহাকাশ সামরিক দখলদারির স্বার্থে ব্যবহার না করে শান্তিপূর্ণ গবেষণার লক্ষ্যে ব্যবহার করা উচিত।’
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আরও পড়ুন: বাংলার ঘর খোয়ানো মানুষের দল হিম্মত দেখায় একথা জানাতে যে, পল রবসন তাদের ভাই
…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
ইউরি প্রথম মানুষ, যিনি মহাকাশ থেকে পৃথিবীকে দেখেছিলেন। এবং তিনিই প্রথম মানুষ, যিনি মহাকাশ থেকে সামরিক বীভৎসতায় পৃথিবীর নিজেকে ছিঁড়েখুঁড়ে ফেলার বিপদ আঁচ করেছিলেন। আঁচ করেছিলেন ‘শান্তিপূর্ণ গবেষণা’ না, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে মানুষ ব্যবহার করবে গণহত্যায়। ইউরি নিজে বিশ্বযুদ্ধ দেখেছিলেন। বিশ্বযুদ্ধের বীভৎসতা পেরিয়ে ঠান্ডাযুদ্ধের ধীর-বিষময়তা পৃথিবীর বহু দেশে ছড়িয়ে পড়ছে, তা তিনি জানতেন। সেজন্যই বোধহয় অনেক অনেক উঁচু থেকে নিজের গ্রহকে দেখে নতুন করে তার প্রেমে পড়েছিলেন এবং চাননি স্বার্থান্বেষী দখলদারিতে তা শেষ হয়ে যাক। পৃথিবীর যতটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, তার থেকে কোনও অংশে কম না মানব-মানচিত্রের বৈচিত্রময় রূপ। পৃথিবীর বয়স যত বাড়বে, ততই তথাকথিত শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ সেই মানবসৌন্দর্য শেষ করে দেবে– এমন ভয় থেকেই হয়তো আবেদন রেখেছিলেন পার্থিব সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার।
অন্য মহাকাশচারীদের সঙ্গে ইউরি যখন প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মহাকাশযাত্রার, তখন ভিন্ন মাত্রার বহু শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হত তাঁদের। প্রশিক্ষণকেন্দ্রের এক মনস্তত্ত্ববিদ ইউরিকে বেছে নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসাবে তাঁর বৌদ্ধিক অগ্রগামিতাকে চিহ্নিত করেছিলেন। অতিক্ষুদ্র ব্যাপারে তাঁর পর্যবেক্ষণ, দারুণ কল্পনাশক্তি, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অভিযোজন ক্ষমতা এবং দ্রুত গাণিতিক গণনার দক্ষতা তাঁকে অন্যদের থেকে এগিয়ে দিয়েছিল। এহেন ইউরি পৃথিবীবাসীর প্রতি যে আবেদন করেছিলেন, তার মর্মার্থ বোঝা যায় যুদ্ধধ্বস্ত, গণহত্যাময়, বৈষম্যভারাক্রান্ত পৃথিবীর বাস্তবতায় তাকালে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি মানবসভ্যতায় এত প্রগতি এনেছে, তবু ধর্ম, জাতিবিদ্বেষ, বর্ণবৈষম্য, লিঙ্গবিদ্বেষ, অপরায়নের ভয়ানক রোগমুক্তি ঘটাতে পারেনি। জাতিবিদ্বেষের জন্য, ধর্মের জন্য, সম্পদ লুঠের জন্য ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র ঝাঁপিয়ে পড়ছে অন্য রাষ্ট্রের ওপর। অসম যুদ্ধ আর উচ্ছেদ চাপিয়ে দিচ্ছে।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আরও পড়ুন: প্রকৃতি সংরক্ষণে ভ্লাদিমির লেনিনের দূরদৃষ্টি আজকের দিনেও প্রাসঙ্গিক
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
প্যালেস্তাইনের একটা আস্ত শিক্ষার্থী প্রজন্মকে অস্ত্রবলে গায়েব করে দিয়েছে ইজরায়েল। হাসপাতাল, উদ্বাস্তুশিবির, শিক্ষালয় ধ্বংসস্তূপ হয়ে গেছে। প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়তে থাকে। মারণাস্ত্র উদ্ভাবনের কৌশলে গবেষণা বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্র-অনুসারী শিবিরগুলি যুদ্ধ থামায় না, নিত্যনতুন যুদ্ধনীতি এঁচে নেয়। ইউরির প্রাণাধিক প্রিয় সোভিয়েত ভেঙে গেছে তিনদশক হল। তারাও শান্তিরক্ষার নামে যুদ্ধ করেছে, জিইয়ে রেখেছে। পরিবেশবাদীদের দাবি বিত্তশালী দেশগুলি সামরিক খাতে খরচ কমিয়ে পরিবেশরক্ষার প্রকল্পে ব্যয় করুক। ২০০৯ সালে বিত্তশালী দেশগুলি সমবেতভাবে পরিবেশরক্ষা প্রকল্পে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার অনুদান দেবে প্রতিশ্রুতি দিয়েও সর্বোচ্চ ৯০ বিলিয়ন ডলারে আটকে থেকেছে। অথচ তাদেরই পুঁজিবাদী মুনাফার জন্য বিশ্বের সামগ্রিক পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে চলেছে। ‘ন্যাটো’ সুকৌশলে যাদের যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি করে, তাদের মধ্যে ৩৯টি দেশ ইতোমধ্যে পরিবেশ-বিপর্যয়ের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে।
প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, মহাকাশ-গবেষণা আরও এগোবে। দুর্জ্ঞেয়র অন্ধকার ক্রমে আরও আলোকিত হবে। হয়তো নতুন বাসযোগ্য গ্রহ, অচেনা গ্রহে অনুকূল পরিস্থিতি আবিষ্কার হবে। কিন্তু, ইউরি গ্যাগারিন, মানবসভ্যতার ইতিহাসে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব, যে পার্থিব সৌন্দর্য সুরক্ষিত রাখার প্রার্থনা করেছিলেন, তা বিফল হয়ে গেছে। তবু, সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার আগে রাষ্ট্রগুলি যদি সচেতন হয় এবং সংবেদনশীল নাগরিকরা যদি রাষ্ট্রনেতাদের, আইনপ্রণেতাদের সচেতন করতে পারেন, সেটাই ইয়ুরি গ্যাগারিনের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধার্ঘ হবে।