বিশ্বায়নের দৌরাত্ম্যে বিপন্ন বাংলার বাঘ এবং তাকে নিয়ে তৈরি হওয়া লোকজ সংস্কৃতি। বাংলার লোকজ শিল্পের অন্যতম প্রধান অঙ্গ হচ্ছে মাটির পুতুল। সেই পুতুলের মধ্যে বাঘের অভিব্যক্তি ও তাকে ঘিরে থাকা নাটকীয়তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিশুমনকে আনন্দ দিয়ে এসেছে। কিন্তু এ সময় বিপন্ন বাঘ-পুতুল। লোকজ দেবদেবীর ছলনে ও মাজারের মানতে পোড়ামাটির ঘোড়ার চাহিদা বজায় থাকলেও বঙ্গজ শিল্পের অদ্বিতীয় প্রতীক বাঘ-পুতুল ক্রমাগত বিলুপ্ত দিকে চলে যাচ্ছে।
‘পায়ে পড়ি বাঘ মামা করো নাকো রাগ মামা তুমি যে ঘরে কে তা জানত।’ হীরক রাজার দেশে গুপি-বাঘার করুণ আকুতি শুনেছিল বাঘ মামা। কিন্তু বাস্তবের মাটিতে বিশ্বায়নের দৌরাত্ম্যে বিপন্ন বাংলার বাঘ এবং তাকে নিয়ে তৈরি হওয়া লোকজ সংস্কৃতি।
বাংলার লোকজ শিল্পের অন্যতম প্রধান অঙ্গ হচ্ছে মাটির পুতুল। সেই পুতুলের মধ্যে বাঘের অভিব্যক্তি ও তাকে ঘিরে থাকা নাটকীয়তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে শিশুমনকে আনন্দ দিয়ে এসেছে। কিন্তু এ সময় বিপন্ন বাঘ পুতুল। লোকজ দেবদেবীর ছলনে ও মাজারের মানতে পোড়ামাটির ঘোড়ার চাহিদা বজায় থাকলেও বঙ্গজ শিল্পের অদ্বিতীয় প্রতীক বাঘ-পুতুল ক্রমাগত বিলুপ্ত দিকে চলে যাচ্ছে। স্রোতের প্রতিকূলে দাঁড়িয়ে থেকে কিছু শিল্পী এখনও এই পুতুলকে বাংলার বুকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।
তীব্র গতিতে এগিয়ে আসছে বাঘ। প্রাণভয়ে পালাচ্ছে হরিণ। পালানোর মুহূর্তে হরিণের মুখে অসহায় ভাব। অন্যদিকে, বাঘের মুখের অভিব্যক্তিতে সেই আদিম হিংস্রতা বিরাজমান। এভাবেই বাংলার বাঘকে নিজের পুতুল নির্মাণশৈলীর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন হাওড়ার মৃৎশিল্পী কিরণ পাল। ছুটন্ত বাঘের লেজ এবং পাগুলি অনবদ্যভাবে নির্মাণ করেছেন শিল্পী। তার নির্মাণের মধ্যে শিকারের প্রতি বাঘের ক্ষিপ্রতা প্রকাশ পেয়েছে। এই পুতুলের মধ্যে খাদ্য ও খাদকের সেই আদিম প্রবৃত্তিগুলিকে শিল্পী ফুটিয়ে তুলেছেন।
সীতাভোগ, মিহিদানার শহর বর্ধমানে এক নম্র গৃহবধূর হাতে গড়ে ওঠে গর্জনরত বাঘ। বর্ধমানের ছোট নীলপুর পীরতলা মধ্যপাড়ার মৃৎশিল্পী সরস্বতী পাল। মূলত ঝুলনযাত্রা উপলক্ষে ছাঁচের কাঁচা মাটির রঙিন পুতুল তৈরি করে থাকেন। দুই খোল ছাঁচের বাঘ গর্জন করে শিকারের দিকে এগিয়ে চলেছে। আর সেই বাঘকে কিনতে ঝুলনের মেলায় কচিকাঁচাদের ভিড়। সমাজের উচ্চবিত্ত, উচ্চ-মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণি সরল সাবলীল ছন্দে চলা এই শিল্পের থেকে নিজের বাচ্চাদের অনেক দূরে সরিয়ে এনেছেন। তাই বাঘ-পুতুলকে বাঁচিয়ে রেখেছে সমাজের প্রান্তিক শ্রেণিতে থাকা শিশুরা।
প্রাণভয়ে ব্যর্থ পালানোর চেষ্টা গরুর। পিছন থেকে গরুর কাঁধে কামড়ে ধরেছে বাঘ। ক্ষতস্থান থেকে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। শিকার ও শিকারির চিরাচরিত বীভৎস রূপকে মাটির পুতুলের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন নদিয়ার শান্তিপুর চৌগাছার মৃৎশিল্পী সতু পাল। ছোট্ট টালির ঘরে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে দাঁড়িয়ে মাটির পুতুল নির্মাণ করে চলেন সতু পাল। আর্থিক প্রতিকূলতা ও দৈনন্দিন জীবনের সংগ্রামের মধ্যে থেকেও এখনও নকশাল পুতুল তৈরি করেন তিনি। তার তৈরি নকশাল পুতুলের মধ্যে যে আক্রমণাত্মক মনোভাব রয়েছে সেটাই প্রকাশ পেয়েছে তার তৈরি বাঘের মধ্যে। এখানে বাঘ এবং গরু পুতুল দু’টি শুধুমাত্র কাঠির ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাঘ গরুর কাঁধের ওপর ঝুঁকে পড়েছে। অন্যদিকে, মৃত্যুর এই খাদ থেকে নিজের প্রাণকে বাঁচানোর জন্য লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা গরুর। সতু পালের এই পোড়ামাটির পুতুল নির্মাণের মধ্যে বন্য নাটকীয়তা রয়েছে। শান্ত ও নিরীহ সতু পালের পরম্পরাগত শিল্পভাবনার মধ্যে থাকা জীবজগতের বাসনা জীবন্ত হয়ে উঠেছে তার পুতুলের মধ্যে।
তিরবিদ্ধ মৃতবাঘ। ক্ষতস্থান থেকে গড়িয়ে পড়ছে রক্ত। আর সেই মৃতবাঘকে বিজয় স্মারক হিসেবে নিজের কাঁধের উপর চাপিয়ে এগিয়ে চলেছেন এক আদিবাসী পুরুষ। হলুদ পাগড়ি ও খাটো ধুতি। এইভাবে বাঘ শিকারী আদিবাসী পুরুষের রূপ নিজের পুতুল নির্মাণের মাধ্যমে এঁকেছেন শান্তিপুর চৌগাছার শিল্পী অনিমা পাল। এই ভাবনার মধ্যে সমাজের প্রান্তিক শ্রেণিতে থাকা মানুষের দৈনন্দিন জীবন সংগ্রাম উঠে এসেছে। মূলত ঝুলন উপলক্ষে মাটির পুতুল নির্মাণ করে থাকেন শিল্পী। কিন্তু মাটির পুতুল নির্মাণ করে সংসার চলে না। তবুও ঝুলনের সময় বাংলার বাঘের নাটকীয় দৃশ্য পুতুল নির্মাণের মাধ্যমে বছরের পর বছর ধরে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তিনি।
নমনীয় দৃষ্টি এবং মুখে হাসি। শিশু মনকে আনন্দ দেওয়ার জন্য বাঘকে খেলাচ্ছলে তৈরি করেছেন। শান্তিপুরের কাঁসারি পাড়ার শিল্পী সুজিত দাস। বাঘের ভয়ানক রূপ এখানে নেই। রয়েছে শিল্পীর কল্পনায় আঁকা বাঘের নমনীয় রূপ।
মাথায় লাল টিপ। গায়ে লাল হলুদ ডোরাকাটা। নিজের বাঘ পুতুলকে এই ভাবনাতে তৈরি করেছেন শান্তিপুর চৌগাছার শিল্পী অসীম পাল। সবুজ রঙের মাটির ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে শিকারের দিকে উদ্যতভাবে তাকিয়ে রয়েছে বাঘ। শিল্পীর ভাবনায় বাঘ যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
কলকাতার কালী-তীর্থ কালীঘাট। একটা সময় ছিল যখন পটচিত্র বলতেই কালীঘাট পটুয়াপাড়াকে বোঝানো হত। কিন্তু বিশ্বায়নে বিস্মিত এই পৃথিবীতে সেসব এখন অতীত। টিমটিম করে বেঁচে রয়েছে কালীঘাটের মাটির পুতুল। পরবর্তী প্রজন্মের এই শিল্পকে শেখার অনীহার ফলে ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে কালীঘাটের মাটির পুতুলশিল্প। বর্ষীয়ান মৃৎশিল্পী মীরা চিত্রকর নিজের অপ্রশস্ত ঘরে ঝুলনযাত্রার সময় তৈরি করেন মাটির পুতুল। শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও তিনি শিল্পটিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। তার তৈরি বাঘ পুতুলের মধ্যে শান্ত সমাহিত ধ্যানস্থভাব লক্ষণীয়। যেন জীবন যুদ্ধের স্মৃতি রোমন্থন করে চলেছে বৃদ্ধ বাঘ। মীরা চিত্রকর তৈরি কাঁচামাটির বাঘ পুতুলের বাঙালির ফেলে আসা আভিজাত্যের কথা বলে চলে।
………………………………………………………………………….
বছরের অর্ধেক সময় দেশের বাণিজ্য নগরীতে থাকলেও শিল্পের পরম্পরাগত ঐতিহ্যকে নিজের মন থেকে মুছে যেতে দেননি শ্রীরামপুর সদগোপ পাড়ার শিল্পী মিঠুন দাস। তাঁর তৈরি মানুষখেকো বাঘের নির্মাণের মধ্যে সেই আক্রমণাত্মক মনোভাব রয়েছে। ধুতি পরিহিত শুয়ে থাকা ব্যক্তির ঘাড় কামড়ে ধরেছে বাঘ। এখানে বাঘের গায়ে লম্বা দাগের মতো ডোরাকাটা নেই। রয়েছে কালো কয়েকটি ছোপ। শিকার ও শিকারির মাথায় লাল টিকা। বাঘের কামড়ানোর জায়গা থেকে বেরিয়ে আসছে রক্ত। বাঘের তাকানোতে হিংস্র ভাব স্পষ্ট। কিন্তু এই বাঘ-পুতুল তৈরি করে সংসার চালানো দুষ্কর। তাই প্রতিভাবান এই শিল্পীকে প্রতি বছর পাড়ি দিতে হয় মুম্বইতে।
………………………………………………………………………….
বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র কুমোরটুলি। একটা সময় বিপুল পরিমাণে মাটির পুতুল এখানে তৈরি হলেও এখন মূলত মাটির কাঠামোর প্রতিমা নির্মাণ হয়। এমন পরিস্থিতিতে দাড়িয়ে মাটির পুতুলশিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন অনিমা পাল ও মায়া পাল। সম্পর্কে দুই জা। অনিমা পালের তৈরি বাঘ পুতুলে তথাকথিত হলুদ রং কম রয়েছে। সেখানে সাদা রঙের আধিক্য বেশি। বাঘের মুখের অভিব্যক্তি সুন্দরভাবে শিল্পী ফুটিয়ে তুলেছেন। পুতুল তৈরিতে মূল উপাদান হচ্ছে মাটি ও রং। বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতির জেরে এই দুই উপাদানেরই দাম বেড়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে কমে গিয়েছে মাটির পুতুলের চাহিদা। ফলে শিল্পের সংকট দেখা দিয়েছে। বিপন্ন বোধ করছে মাটির বাঘ পুতুল।
অঙ্কের ক্লাসে বসে দেওয়ালে টাঙানো এক মনীষীর ছবিকে হুবহু নিজের খাতায় এঁকে শিক্ষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন শিল্পী নীতিশচন্দ্র মণ্ডল। বংশপরম্পরায় মৃৎশিল্পের সঙ্গে যোগ না থাকলেও একান্ত ব্যক্তিগত সাধনা ও অধ্যবসায় নিজেকে এই শিল্পের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। বর্তমানে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমার চাঁদপাড়ার বাসিন্দা তিনি। তার তৈরি বাঘের চোখ টকটকে লাল। শিকারের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। জীবনের বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে এইভাবেই মাটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি।
লাফ দিয়ে কাঁধে থাবা বসিয়েছে বাঘ। দা হাতে আত্মরক্ষার চেষ্টা বনবাসীর। দু’জনের চোখেই তীব্রতা স্পষ্ট। বন জীবনের ঘটনাকে নিজের পুতুলের মাধ্যমে এভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন উত্তর ২৪ পরগনার কাঁকিনাড়া রামনগর কলোনির মৃৎশিল্পী বিমল পাল। তার তৈরি পুতুল কাঁচা মাটির। তার পুতুল নির্মাণের মধ্যে পূর্ববঙ্গীয় শিল্পের ধারা স্পষ্ট প্রস্ফুটিত হয়েছে।
…………………………………………………………………….
আরও পড়ুন সমীর মণ্ডল-এর লেখা: কাঠ খোদাইয়ের কবি, আমার শিক্ষক হরেন দাস
…………………………………………………………………….
মুম্বইয়ের গণেশ চতুর্থীতে তার তৈরি গণপতির প্রতিমা মানুষের ভক্তির কেন্দ্রে পরিণত হয়। বছরের অর্ধেক সময় দেশের বাণিজ্য নগরীতে থাকলেও শিল্পের পরম্পরাগত ঐতিহ্যকে নিজের মন থেকে মুছে যেতে দেননি শ্রীরামপুর সদগোপ পাড়ার শিল্পী মিঠুন দাস। তাঁর তৈরি মানুষখেকো বাঘের নির্মাণের মধ্যে সেই আক্রমণাত্মক মনোভাব রয়েছে। ধুতি পরিহিত শুয়ে থাকা ব্যক্তির ঘাড় কামড়ে ধরেছে বাঘ। এখানে বাঘের গায়ে লম্বা দাগের মতো ডোরাকাটা নেই। রয়েছে কালো কয়েকটি ছোপ। শিকার ও শিকারির মাথায় লাল টিকা। বাঘের কামড়ানোর জায়গা থেকে বেরিয়ে আসছে রক্ত। বাঘের তাকানোতে হিংস্র ভাব স্পষ্ট। কিন্তু এই বাঘ-পুতুল তৈরি করে সংসার চালানো দুষ্কর। তাই প্রতিভাবান এই শিল্পীকে প্রতি বছর পাড়ি দিতে হয় মুম্বইতে।
মুখের মধ্যে গম্ভীর মনোভাব স্পষ্ট। যেন এখনই শিকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। শরীরে থাকা ডোরাকাটা ভাব আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বড়িয়া চিত্রকর পাড়ার বাঘ-পুতুলকে এ বিন্যাসেই তুলে ধরেছেন শিল্পী দিলীপ চিত্রকর। মূলত রথযাত্রা উপলক্ষেই মাটির পুতুল তৈরি করে থাকেন তিনি। পরম্পরাগত এই শিল্প মৃতপ্রায় হয়ে যাওয়ার কারণে শিল্পী অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। কিন্তু বংশানুক্রমিক পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে নিয়ে মাটির পুতুল নির্মাণ করে চলেন দিলীপবাবু। বাড়ির মহিলারাই এই কাজে তাঁকে সাহায্য করে থাকেন।
সমাজের সকল স্তরের শিল্প রসিক মানুষ যদি এগিয়ে না আসে তবে কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলার বুক থেকে বিলীন হয়ে যাবে বাঘ পুতুল। নিজের মাটির শিল্পের প্রতি টান প্রতিটা নাগরিকের মনের মধ্যে থাকা উচিত। তবেই বাঁচবে শিল্প ও শিল্পী।
……………………………………………
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………………………
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর খুব সঠিকভাবেই ভারতের বিদেশনীতির ব্যাখ্যা করে আগাম বলে রেখেছিলেন, ‘হোয়াইট হাউস ডেমোক্র্যাট প্রার্থী না রিপাবলিকান প্রার্থীর দখলে গেল তা নিয়ে নয়াদিল্লি মোটেও চিন্তিত নয়। কারণ, ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের এতে কোনও পরিবর্তন ঘটবে না। গত পাঁচটি প্রেসিডেন্টের আমলেই ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের উন্নতি ঘটেছে।’
যাঁরা সবিতার বিরুদ্ধে ছিলেন, আম্বেদকরের মৃত্যুর জন্যেও সবিতাকে দায়ী করেছিলেন তাঁরা। কেউ কেউ অভিযোগ করেছিলেন ডক্টর আম্বেদকরের ভুল চিকিৎসা করেছেন তাঁর স্ত্রী, আবার কেউ কেউ আরও এক ধাপ এগিয়ে এটা মৃত্যু না হত্যা সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন।