কড়চা। চারপাশে কী হচ্ছে। কোথায় যাবেন, কী দেখবেন। সংস্কৃতির হাঁড়ির খবর, ভেতরবাড়ির খবর এখন এক ঠিকানায়: ক্ক!
দেখ রে নয়ন মেলে
কবিতা হোক কি নাটক, পথে পথে বেড়িয়ে সেই সফরের নির্যাস নিজের সৃষ্টিতে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন হাবিব তনভীর। ছত্তিশগড়ের রায়পুরে যে ক্ষয়িষ্ণু সাবেকি অভিজাত পরিবারে হাবিবের জন্ম, বড় হয়ে ওঠার কালে তার চারিপাশের অধিবাসী জনজাতি মানুষের জীবনের সঙ্গে পরিচয় হয়নি তাঁর, সে কথা আত্মকথায় তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। কিন্তু রুপোলি দুনিয়ায় তারকা হওয়ার স্বপ্নে বম্বে পাড়ি দিয়েই তাঁর জীবন বাঁক বদলায়। ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে সম্পর্ক তাঁর চেতনাকে যেভাবে জারিত করেছিল, সেই বোধ প্রবাহিত হয়েছিল তাঁর নির্মাণে। সেই নির্মাণ ও সৃষ্টিকে ছুঁয়ে দেখতেই হাবিব তনভীরের জন্মশতবর্ষে কলকাতার বুকে শুরু হল তিনদিন ব্যাপী নাট্য উৎসব, ‘দেখ রহে হ্যায় নয়ন’। কলকাতা সেন্টার ফর ক্রিয়েটিভিটি-র আয়োজনে এই নাট্যোৎসবের উদ্বোধনে হাজির ছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ, রত্না পাঠক শাহ, রঘুবীর যাদব, সুধীর মিশ্র, হাবিব-কন্যা নাগিন তনভীর, এম কে রায়না, দানিশ হুসেন-রা। পেশায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী নাগিন বাবার নাটকের গান নিয়ে কাজ করে চলেছেন বহুদিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই ‘হাবিব তনভীর অ্যান্ড হিজ লেগ্যাসি ইন থিয়েটার: আ সেন্টেনিয়াল রিঅ্যাপ্রাইজাল’ শিরোনামে একটি বই প্রকাশ এবং আলোচনাসভারও আয়োজন ছিল। কিংবদন্তি নাট্যকারকে জানা-বোঝার এই প্রয়াস জারি রাখাই শতবর্ষে তাঁর প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন, একইসঙ্গে ভারতীয় থিয়েটারের পরিসরেও এই চর্চা নিঃসন্দেহে জরুরি।
……………………………………….. ক্ক ……………………………….
সুরের যুগলবন্দি
অস্থির সময় মনকে শান্ত করে গান। এক্ষেত্রে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তুলনা হয় না। বিশেষ করে যন্ত্রসঙ্গীত। শহরের ইতিউতি প্রায়শই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত অনুষ্ঠানের খবর শোনা যায়। কখনও সেতার, কখনও সরোদ, কখনও অন্য কিছু। সঙ্গতে থাকে তবলা। এবার এমনই এক সেতার বাদ্যের অনুষ্ঠান হতে চলেছে। সঙ্গে থাকবে তবলাও। আসর বসবে উত্তম মঞ্চে। ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বিখ্যাত সেতার শিল্পী পণ্ডিত পার্থ বোস এবং তাঁর সঙ্গে তবলায় থাকবেন পণ্ডিত কুমার বোস। তাঁদের যুগলবন্দিতেই সুরেলা হয়ে উঠবে উত্তম মঞ্চের সন্ধ্যা। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করছে অ্যাঞ্জেলিনো গোষ্ঠী। এই সংস্থা মূলত প্রবীণদের জন্য কাজ করেন। শহরের প্রবীণ নাগরিকদের কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হলে এই গোষ্ঠীর তরফেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তাঁদের উদ্যোগে আয়োজিত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সঙ্গীত ফর সাইয়োগ’। অনুষ্ঠানটির সহযোগিতায় থাকবে উমা গুহ ফাউন্ডেশন। এই সংস্থা শিশু শিক্ষা নিয়ে নানা বিষয়ে কাজ করে। এছাড়া ৫ তারিখের সঙ্গীত অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য প্রবীণ নাগরিকদের কল্যাণ এবং শিশু শিক্ষার বিকাশে সাহায্য করা।
………………………………………… ক্ক ………………………………………….
ছবির দেশ
ছবির দুনিয়া। সেখানে সবকিছু একটা মুহূর্তে আটকে। অথচ তা ইঙ্গিত দেয় চলমান জীবনের। চলে যাওয়া, বয়ে যাওয়া মুহূর্তের সেই ছবিই মনে করিয়ে দিতে পারে অনেক কিছু। যে কোনও ছবির প্রদর্শনী বিশেষ বার্তা দিতে চায়। কোথাও পুরনো সময়কে মনে করিয়ে দেওয়া, কোথাও সমাজের ভুল তুলে ধরা। কোথাও আবার স্রেফ দৃশ্যসুখ। মন ভালো করা ছবি। তাতে রঙের ব্যবহার মনে রাখার মতো। এমনই কিছু ছবি নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন হতে চলেছে। উপলক্ষ আর্ট ইন-এর দশম বর্ষপূর্তি। ৩০ আগস্ট শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চলবে ১ সেপ্টেম্বর অবধি। প্রতিদিন দুপুর ২ টো থেকে ৮ টা অবধি। দেখা যাবে কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর আর্ট লিটারেচার অ্যান্ড কালচার। প্রবেশ অবাধ। চাইলেই সাক্ষী থাকা যাবে সেইসব থমকে যাওয়া মুহূর্তের। কিন্তু কী নিয়ে এই প্রদর্শনী তা জানতে হলে, সঠিক ঠিকানায় সময় মতো পৌঁছে যেতে হবে।
………………………….. ক্ক ………………………
খাল-সমাচার
কলকাতার খালগুলির বর্তমান অবস্থা সংকটজনক। ভয়ঙ্কর দূষণের জেরে এই পরিণতির মুখে দাঁড়িয়ে শহরের খালগুলি। শুধুমাত্র কলকাতার পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গই নয়, এই খালগুলির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নাগরিক সভ্যতার ইতিহাসও। খালগুলির ইতিহাস, বর্তমান পরিস্থিতি, তার আর্থসামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণাসন্দর্ভ প্রকাশ করতে চলেছে জলাদর্শ কালেক্টিভ। ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টেয় তাদের গবেষণাপত্র “Towards Sustainable Flows: A Citizens’ Audit of Kolkata Canals” প্রকাশিত হবে কলকাতার যদুনাথ ভবনে। পাশাপাশি থাকছে একটি আলোচনাসভাও। একইসঙ্গে ৪-৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে চিত্রপ্রদর্শনী।
…………………………….. ক্ক ……………………………
প্রকৃতিতে ফেরার ‘বিকল্প ব্রত’
প্রকৃতির কোল ছেড়ে যত দূরে সরে যাচ্ছে মানুষ, ততই থাবা সমাজ-জীবনে থাবা বসাচ্ছে ব্যাধির বাড়বাড়ন্ত। সাধারণ মানুষের মনে জমাট বাঁধছে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সুচিৎকসার জন্য হাহাকার। একমাত্র প্রকৃতিমুখী চিকিৎসাই পারে সাধারণের মনে জমতে থাকা এই দুশ্চিন্তা দূর করতে। নীরবে, নিস্তব্ধে সেই বৈপ্লবিক কাজে সুদীর্ঘ সময় ধরে ব্রতী ইন্ডিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউড ফর ইন্টিগ্রেটেড মেডিসি (ইরিম)। সুষ্ঠু জীবনশৈলী ও প্রাকৃতিক খাদ্য গ্রহণে রোগমুক্ত জীবনযাপন সম্ভব, সেই চিন্তাধারাকে সামনে রেখে এবার নিজস্ব আর্কাইভ ‘বিকল্প ব্রত’ প্রকাশ করতে চলেছে ইরিম। আর্কাইভের মূল ভাবনা ডাঃ দেবাশিস বক্সীর। পরিকল্পনা ও রূপায়ণে অরিন্দম সাহা সরদার। ভারতীয় মেডিকেল মিশন, ডাঃ কোটনিস, ডাঃ বিজয় বসু ও ইরিম বিষয়ক এই আর্কাইভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ১ সেপ্টেম্বর, হাওড়া, মৌরিগ্রামে, ইরিম ভবনে। উদ্বোধনে প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানী অধ্যাপক ডঃ রামগোপাল, নাগাল্যান্ডের গ্লোবাল ওপেন ইউনিভার্সিটির আচার্য ডঃ শ্যাম নারায়ণ পান্ডে। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশনায় রূপকথা এবং নিবন্ধপাঠে সুজাতা সাহা ও বিয়াস ঘোষ।
………………………………………………. ক্ক …………………………………………..
মনের ফাঁদে বন্দি জীবন
বিষাক্ত এই সময় গ্রাস করছে মনকে। ডুবিয়ে দিচ্ছে অবশ বিষন্নতায়। এক উদাসীন, দায়-দায়িত্বহীন পরিণতির দিকে ছুটে চলেছে মানুষ। নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে নিজের ওপর থেকে। অতৃপ্ত বাসনা আর লোভ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। যেন অলক্ষে থাকা কোন লোলুপ-নিষ্ঠুর দানবের হাতের পুতুল সে। সেই দানব কি মানুষের সুপ্ত-সত্তা? অল্টার ইগো? সেই ভোগবাদী সত্তার গ্রাসেই কি মানুষ হয়ে উঠছে দানব? সে প্রশ্নের উত্তর পেতে গেলে মানুষকে দাঁড়াতে হবে নিজের মুখোমুখি। আত্মজিজ্ঞাসায় অন্বেষণ করতে হবে হারিয়ে যেতে বসা মানব সত্তাকে। সেই অবিরাম সংঘর্ষ থেকে মানব-মনের মুক্তির উপায় আদৌ কি আছে? নাকি জীবন আসলে একটা জাল, একটা বুনোট, আর মানুষ সেই বুনোটের ফাঁদে বন্দি? তারই উত্তরসন্ধান করেছে ‘RECONTEURS’। অয়ন মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে ৯ আগস্ট থেকে বিজয়গড়, এ.এম. স্টুডিও-তে চলছে তাদের দ্বিতীয় মরশুমের প্রথম পর্বের শিল্প কর্মশালা- ‘ফাঁদ’ (TRAP: Season 2 – Episode 1)। চলবে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, প্রতিদিন (রবিবার বন্ধ) বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা। সহযোগিতায় রয়েছেন ডেভিড মালাকার, দেবারতি রায় সাহা, রাজীব ভট্টাচার্য, সপ্তর্ষি ঘোষ, জগন্নাথ চক্রবর্তী, বন্দনা কুমারী প্রমুখ।
সহায়তা: শুভদীপ রায়, রণিতা চট্টোপাধ্যায়, সুমন্ত চট্টোপাধ্যায়
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved