বাংলাদেশের নাটকে অভিনেতা মারজুক রাসেলের একটি মজার দৃশ্য রয়েছে, যেখানে মা এসে পুত্রকে বলছেন, ‘এত রাত জাগিস কেন বাবা?’ পুত্র ভীষণ সিরিয়াস ভঙ্গিতে উত্তর দিচ্ছে, “এই রাতজাগা বিষয়ে আমাদের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর একটি বিখ্যাত কবিতায় বলেছেন, ‘আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে?’ তাই আমি সকাল বানিয়ে তারপর ঘুমাব।”
ইন্টারনেটের কোটা একটা ফাঁদ। ইন্টারনেট প্যাক উসুল করার তাগিদ আমাদের আরও বেশি বেশি করে ফোন ব্যবহার করিয়ে নিচ্ছে। অন্ধকার ঘর, শুধু ফোনের আলো জ্বলছে। কানে হেডফোন, স্ক্রিনের উপর আঙুলের দাপাদাপি। সবাই সবার নিজস্ব দুনিয়ায় মত্ত। নেপথ্যে ডোপামিনের ‘ফিল গুড’ খেলা।
বাঙালির জেগে থাকা এবং জাগানোর ধারা বহু পুরনো। এভাবেই বাংলায় নবজাগরণ এসেছিল। গোঁড়ামি-কুসংস্কার সরিয়ে পথ দেখিয়েছিলেন মনীষীরা। স্বদেশি আন্দোলনে বাঙালিকে জাগিয়েছিলেন বিপ্লবীরা। সেই জেগে ওঠা, দেশমাতৃকার শৃঙ্খল মোচনে বড় ভূমিকা নিয়েছিল। খাদ্য আন্দোলনে কমিউনিস্টরা মানুষের মধ্যে জাগিয়ে তুলেছিলেন অধিকারবোধ। শ্রেণিচেতনায় জেগে অধিকার বুঝে নিতে শিখেছিল সাধারণ মানুষ। তারপর একদিন তাঁরা আশ্বস্ত করে বললেন, ‘তুমি ঘুমোও কমরেড, আমরা জেগে আছি।’ এভাবেই জেগে থাকা রক্তে মিশে গেছে।
ইদানীং ‘জাগো হিন্দু জাগো’ হাঁক পেড়ে হিন্দুকে জাগানোর নানা কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। কেউ কেউ হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাঙালিকে জাগাচ্ছেন– ‘ঘুমাইও না আর বাঙালি।’ এই ধরনের জাগার বাস্তবে কতখানি প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তা নিয়ে নানান তর্কবিতর্ক থাকবে। সব জাগাই তো মানবসভ্যতার জন্য সুখকর নয়।
আমাদের ক্রেতাসুরক্ষার বার্তায় ‘জাগো গ্রাহক জাগো।’ চায়ের বিজ্ঞাপনে ‘জাগো রে।’ চারিদিকে এত ঘুমজাগানিয়া। এর প্রভাবেই কি স্বভাবে ল্যাদখোর, কুম্ভকর্ণের সুপার পাওয়ার নিয়ে জন্মানো বাঙালির হঠাৎ মতিভ্রম হল? সেজন্য তারা রাতে ঘুমাচ্ছে না?
সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থার সর্বভারতীয় সমীক্ষার ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান স্লিপ স্কোরকার্ড ২০২৫’-এর রিপোর্ট বলছে, ৫৮ শতাংশ ভারতীয়ই রাত ১১ টার আগে ঘুমোতে যান না। এই ‘লেট স্লিপার’দের তালিকায় বেঙ্গালুরু, মুম্বাইকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থানে রয়েছে কলকাতা। কী ভাবছেন? যাক কিছু ব্যাপারে তো বাঙালি প্রথম সারিতে এল! না এমন ভেবে খুশি হওয়ার জায়গা নেই। কারণ সমস্যাটা ধীরে ধীরে গোটা জাতিকেই প্রভাবিত করছে।
দেরিতে ঘুমোতে যাওয়ার অভ্যাস তরুণদের পাশাপাশি গ্রাস করেছে মাঝ বয়সের মানুষদের। গুরুজনরা যাঁরা একসময় বলতেন, ‘এত ফোন ঘাঁটিস কেন?’ সময়ের দুর্বিপাকে তাঁরাই ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ছেন। এখন ফোনেই সিরিয়াল, অমুক ক্রাইম ফাইলস। ‘এই একটু অমুকটা কেন চলছে না দেখে দে তো।’ সারাদিনের মোবাইলের ঘাঁটাঘাঁটি গিয়ে থামে মাঝরাতে।
বাঙালির ছিল রাত জেগে খেলা দেখা। এখন তা অন্য মাত্রা পেয়েছে। এ প্রজন্ম বুঝেছে, লামিনে ইয়ামেলের দৃষ্টিনন্দন ফুটবল ঘুমের চেয়েও সুন্দর। ‘ঘুম ভালোবাসি’ এখন বার্সিলোনা-রিয়ালের রেষারেষিতে শিফ্ট করেছে। খেলা শেষ হলেও গল্পটা শেষ হচ্ছে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ম্যাচ পরবর্তী ‘কেমন দিলাম?’ খুনসুটি না-করে ঘুমানো যাবে না। ‘রিয়াল কীভাবে রেফারি ম্যানেজ করে’, ‘রোনাল্ডো পেনাল্টি ছাড়া অচল’, ‘রাফিনিয়া বার্সিলোনাতেই সুন্দর’– এমন নাতিদীর্ঘ গদ্য লেখার তাগিদ থাকে। তারপর ‘কথায় কথা যে রাত হয়ে যায়।’
চ্যাটে মশগুল অল্পবয়সী প্রেম প্রেম ভাব। মেসেঞ্জারে উড়ে বেড়াচ্ছে ভার্চুয়াল প্রজাপতি। প্রেমের জন্য মাইল মাইল হেঁটে যাওয়া এখন ব্যাকডেটেড। রাতের পর রাত জেগে থাকা জরুরি হয়ে পড়েছে। না-জাগলে শুনতে হবে, ‘তুমি আর আমায় ভালোবাসো না। এখন তো অন্য কেউ জুটে গেছে! আমায় গুডনাইট বলে সেখানে সময় দেবে, তাই তো?’
ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলে ঘুমটাও জলে গেল। ফলে চোখের নীচে কালি! আহা এসব তো থাকবেই। এ তো ভালোবাসায় জেগে থাকা, নিষ্ঠার যতিচিহ্ন। প্রেমের উপহার। সম্পর্ক বাঁচাতে একটু কম্প্রোমাইজ তো করতেই হয়!
বেছে বেছে সাউথের থ্রিলার দেখতে দেখতে, কোরিয়ান ছবিতে অভ্যস্ত হয়ে মানুষের মধ্যে ‘প্যারাসাইট’-এর মতো বাস করছে মুভিপোকা। আরও আরও আবিষ্কারের নেশা। কত কত রত্ন লুকিয়ে আছে বিশ্বজুড়ে। ছবি দেখার সে আনন্দ ঘুম ভুলিয়ে দেয়। না, সিনেমা দেখায় ভুল কিছু নেই, তবে সিনেমা কিংবা সিরিজের বিঞ্জ-ওয়াচের নেশা নিশাচর করে তুলেছে। দুটো এপিসোড দেখার পর শেষ না-করে শান্তি নেই। সিরিজটা নেসেসিটি, ঘুমটা লাক্সারি। বাকি যা হবে কাল দেখা যাবে!
অফিসফেরত স্বামী অঘোরে ঘুমাচ্ছেন। গৃহবধূর রাত্রিকালীন ঘরোয়া নিঃসঙ্গতায় সঙ্গী মোবাইল। কাপলদের ঘরকন্নার ভ্লগ দেখে আকাশকুসুম কল্পনা। যদি আমার এমন সুন্দর জীবন হত। যদি এই থাকত, ওই থাকত। ওর মতো হত। এসব ভাবতে ভাবতেই পেরিয়ে যায় রাত।
এছাড়া আরেকটি শ্রেণি– উদ্দ্যেশহীনভাবে স্ক্রল করে যাওয়াই তাঁদের কাজ। কী দেখছেন, কেন দেখছেন কোনও খেয়াল নেই। জেসিবির মাটিকাটা, ধাতু গলিয়ে ছাঁচে ফেলে কিছু বানানো, পুরানো সামগ্রীকে ঝকঝকে করে তোলা, পাঁচমিনিটের বোগাস লাইফ হ্যাকস– এইসব ভিডিও দেখা মাঝরাতের অভ্যাস। কিংবা এমন অচেনা রেপিসি যা কখনওই রাঁধবেন না, কিন্তু দেখে যেতে হবে। এই নিরবিচ্ছিন্ন দেখে যাওয়ায় অসম্ভব সুখ। ‘ঝরে ঝরে পড়ছে’, ‘তিনটে পরোটা’, ‘ঐতিহাসিক বিরিয়ানি’– কত কত গুরুত্বপূর্ণ ভিডিও। সেসব না দেখলে আপডেটেড থাকা যাবে কীভাবে? তাছাড়া সমাজ কি মেনে নেবে?
তারপর অপ্রয়োজনীয় রিলের ফাঁদে খেয়াল হল, এই রে ভোর হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে মন এটাও বলে, আর ঘুমিয়ে লাভ কী! ঘুমালে যদি উঠতে না-পারি। তার চেয়ে সারাদিন একটু একটু ঝিমিয়ে নেওয়া যাবে। তার চেয়ে বেটিং অ্যাপের প্রাথমিক টিমটা বানিয়ে নেওয়া যাক। সেখানেও দুশ্চিন্তা– আজ বিস্তর লোকসান হল। আগামীকাল কয়েক কোটি তুলে নিতে হবে। এত টাকা লোকসানের জবাব দিতেই হবে। ততক্ষণে ঘুম বাবাজি জানলা দিয়ে ফুড়ুৎ। সেই যা পাখি উড়ে গেছে, সে কি আর আসে?
কেউ কেউ আরেকটু অন্য পথ বাছেন। মাঝরাতে দুষ্টু ছবির নায়িকার চোখে চোখ না রাখলে মনে হয়, জীবন বড় বেরঙিন। কিন্তু ‘ঠিকঠাক জিনিস’-টাও তো পেতে হবে। মনের গোপন ইচ্ছে পূরণে শুরু হল ইনকগনিটো মোডের জার্নি। পেজের পর পেজ খুঁজে যাওয়া। ক্লান্তিহীন। কী-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করে খান দশেক পেজ ঘাঁটাঘাঁটির পর ‘ইউরেকা’ বলে মনের মতো দুষ্টু ভিডিও খুঁজে পাওয়া গেল। মাঝরাতের ফ্যান্টাসিতে কেটে কেটে দেখেও মোটের উপরে আধঘণ্টা কাবার। দিনের পর দিন এই রুটিনে পরিস্থিতি এমন, ‘ওইসব’ না দেখলে রাতে ঘুম আসে না।
টেনশন, ডিপ্রেশনে ভোগা এই দুনিয়ায় অনেকের কাছে ঘুম ছিল পলায়ন, অর্থাৎ খারাপ যা কিছু ভুলে ঘুমের দেশে যাওয়া। পরদিন আবার নতুন করে শুরু করা। এখন সেখানেও ফাঁকিবাজি। ঘুম না-থাকলে কোমল স্বপ্নেরা থাকবে কীভাবে? বাস্তবের কঠোর জীবনে অবচেতনে পাওয়া শান্তিরাও কাছে ঘেঁষতে পারে না। এর মধ্যে হঠাৎ ঘুম এসে গিয়ে, হাত থেকে ফোন পড়ল মুখের উপর! একটু উহ্ আহ্ করে ব্যথা সামলে আবার ফোন ঘাঁটা চালু।
প্রশ্ন আসে, ‘কোথায় ছিলে? রিপ্লাই নেই কেন?’
‘আর বোলো না। চোখ লেগে গিয়েছিল।’
‘হ্যাঁ, এখন তো ঘুম পাবেই। পুরনো হয়ে গেছি তো।’
এভাবে ঝগড়া ঘনীভূত হয়। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে প্যারার পর প্যারা লেখা আসছে দুদিক থেকেই। একপক্ষ ‘সরি’ না-বলা পর্যন্ত চলতেই থাকবে। এভাবেই নেমে আসবে ভোর। পাখি ডেকে উঠবে। দুই যুযুধান যুগলের কেউ ঘুমাবে না।
পূর্বে উল্লেখিত সংস্থাটির গবেষণায় এভাবে না-ঘুমানোর ফলাফল ভীষণ উদ্বেগের। কারণ শুধু ক্লান্তি, গা ম্যাজম্যাজে কিংবা ঘুম-ঘুম ভাবই নয়, বিপাকজনিত শারীরিক সমস্যার মূলে রয়েছে দিনের পর দিন ভালোভাবে না ঘুমানো। রাতে শরীরের প্রাকৃতিক জৈব-ঘড়ির ভারসাম্যহীন হয়ে পড়া সমগ্র শরীর-মনে তৈরি করছে স্থায়ী প্রভাব। লেট স্লিপারদের মধ্যে ৪৪ শতাংশ লোকজনই ঘুম থেকে উঠে ‘নতুন আনন্দে জাগা’-র মতো পরিসর পান না। ৫৯ শতাংশের ক্ষেত্রে সারাদিনের সঙ্গী হাই ওঠা ক্লান্তি। যা কর্মক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। জোটে বসের চোখরাঙানি। তা নিয়ে আবার জীবনে অস্থিরতা। ঘুম উড়ে যাওয়া। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মোবাইল ঘাঁটার অভ্যাস রয়েছে দেশের ৮৪-৯০ শতাংশ মানুষের মধ্যে। এমন ব্যাপক পরিবর্তন যে লাইফস্টাইলে প্রভাব ফেলবে তা বলাই বাহুল্য।
ল্যাপটপ কিংবা ফোন, অথবা সাধ করে কেনা ট্যাব। ডিভাইসের স্ক্রিন থেকে নির্গত নীল আলোয় ঘুমে সহায়ক হরমোন মেলাটোনিনের ক্ষরণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে যদিও-বা দেরিতে ঘুম আসে, সেই ঘুম গভীর হয় না। কিন্তু তাতে কী? রাত জাগা চলছে চলবে।
চিকিৎসকেরা সাধারণত পরামর্শ দেন ঘুমোতে যাওয়ার কমপক্ষে এক-দু’ ঘণ্টা আগেই স্ক্রিন দেখা বন্ধ করতে হবে। কিন্তু মুঠোফোনের মায়া ত্যাগ করতে পারেন না কেউই। এ জিনিস ছেড়ে থাকা যায়? যতক্ষণ জেগে থাকা, তার মধ্যে ফোন থেকে দূরে গেলেই মনে হয় জগৎ থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
প্রাথমিকভাবে ক্লান্তি, মনোযোগে ব্যাঘাত, তার সঙ্গে বিপাকেরও অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হজমে সমস্যা, স্থূলতায় আক্রান্তের অন্যতম বড় কারণ পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব। অন্ততপক্ষে সাতঘণ্টা স্বাভাবিক ঘুম ছাড়া দীর্ঘদীন কাটালে পরবর্তী প্রজন্ম বড়সড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে। রাত জাগার বদভ্যাসের জেরে মস্তিষ্কের জৈব-ঘড়ি নিজেই বুঝে উঠতে পারে না, কখন ঘুমোনো উচিত। একটা সময়ে এই বদভ্যাস রোগে পরিণত হয়।
‘জেন-জি’ জেনারেশনের কাছে রাত জাগা প্রসঙ্গে তৈরি আছে নানা জাস্টিফিকেশান। নানান যুক্তি। ‘প্রকৃত সাধনা রাতেই হয়’ বা ‘রাতের নির্জনতায় পড়াশোনা ভালো হয়’ বা ‘রাত জেগে পড়ি, আর দিনে ঘুমাই’ আর তার কিছুক্ষণ পর ফোন ঘাঁটা শুরু হয়…।
‘দিনে স্বাভাবিক কাজকর্ম, রাতে ঘুম’– প্রকৃতির এই নিয়মও ‘মাই লাইফ, মাই রুলস’ এর চক্করে সংকটে পড়েছে। প্রকৃতির বিরুদ্ধে গেলে শুধুই ক্ষয়, তাই বলে কি লাইফ এনজয় করা হবে না? লেটনাইট পার্টি, নাচা-গানা এসব ছাড়া দুনিয়া বড় পানসে।
বাংলাদেশের নাটকে অভিনেতা মারজুক রাসেলের একটি মজার দৃশ্য রয়েছে, যেখানে মা এসে পুত্রকে বলছেন, ‘এত রাত জাগিস কেন বাবা?’ পুত্র ভীষণ সিরিয়াস ভঙ্গিতে উত্তর দিচ্ছে, “এই রাতজাগা বিষয়ে আমাদের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর একটি বিখ্যাত কবিতায় বলেছেন, ‘আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে?’ তাই আমি সকাল বানিয়ে তারপর ঘুমাব।”
ইন্টারনেটের কোটা একটা ফাঁদ। ইন্টারনেট প্যাক উসুল করার তাগিদ আমাদের আরও বেশি বেশি করে ফোন ব্যবহার করিয়ে নিচ্ছে। অন্ধকার ঘর, শুধু ফোনের আলো জ্বলছে। কানে হেডফোন, স্ক্রিনের উপর আঙুলের দাপাদাপি। সবাই সবার নিজস্ব দুনিয়ায় মত্ত। নেপথ্যে ডোপামিনের ‘ফিল গুড’ খেলা।
‘রাত কত হল?
উত্তর মেলে না।
কেননা, অন্ধ কাল যুগ-যুগান্তরের গোলকধাঁধায় ঘোরে, পথ অজানা,
পথের শেষ কোথায় খেয়াল নেই।’