রবীন্দ্রনাথের বিপুল লেখালেখির বিস্ময়কর জগতের পাশে লুকোনো আছে কত না পাঠভেদ, পাণ্ডুলিপি পাঠ, সংশোধন, সংযোজন, রূপান্তর, খসড়া, অগ্রন্থিত রচনাসম্ভার! রবীন্দ্রনাথের নানা রচনার দায়সারা সম্পাদিত সংস্করণে ছেয়ে গেছে চতুর্দিক। রবীন্দ্রনাথের যেকোনও রচনার সম্পাদনা বা প্রকাশনা বা এমনকী মুদ্রণও সেজন্য সযত্ন মনোনিবেশ দাবি করে। এত অতিকায় প্রতিভাবানের অনিঃশেষ বিচ্ছুরণ নিয়ে কাজ করতে গেলে, স্বাভাবিকভাবেই মনে হয়, সম্পাদককেও খানিকটা অনন্য মেধার অধিকারী হওয়া প্রয়োজন। ‘ভাষ্য শব্দের তর্জনী’ সিরিজের চতুর্থ তথা শেষ পর্ব।
চতুর্থ পর্ব
সাহিত্য পরিষদে পৌঁছে দেখি স্যরের মুখ গম্ভীর। হাতে আমার খাতা। যে খাতায় কপি করে আমি ওঁর কাছে জমা দিই। যতদূর মনে পড়ে, সেসময় আমি শেষ টুকে নিয়ে গিয়েছি প্রবোধচন্দ্র সেনের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের কথোপকথন (ছন্দ-সংলাপ); প্রকাশিত হয়েছিল বিচিত্রা ১৩৩৯ জ্যৈষ্ঠ সংখ্যায়। সেই পত্রিকাটি আবার নিয়ে আসা হল। দেখলাম, দু’টি জায়গায় পেন্সিলের দাগ। দাগ নয়, জিজ্ঞাসাচিহ্ন। একটি হল প্রবোধচন্দ্রের সংযোজন পদটীকা। সেখানে বাক্যটি ছিল: ‘…প্রবর্তিত নূতন রীতি অনুসৃত হয় নি।’ আমার বড়ো একটি ভুল! আমার কপিতে ‘নতুন’ হয়ে আছে। দ্বিতীয়টি রবীন্দ্রনাথের একটি উক্তি। তিনি প্রবোধচন্দ্রকে বলেছিলেন, ‘…তখন তোমার সঙ্গে দ্বন্দ্বযুদ্ধ করা যাবে।’ শঙ্খ ঘোষের সন্দেহ হয়েছিল, মূলে হয়তো শব্দটি ‘ছন্দযুদ্ধ’ ছিল। না। আমি ঠিকঠাকই টুকেছি। এতক্ষণে স্যর একটু হাসলেন। আমাকে বেরিয়ে বললেন, ‘এসব কাজ কত সতর্ক হয়ে করতে হয়, সেটা বুঝলে তো?’ আমি তখন ‘নূতন’-কে ‘নতুন’ লেখার লজ্জায় মরমে মরে যাচ্ছি। আরও একটা কারণ হলে, আমার কারণে স্যরকে ছুটে আসতে হল সময় নষ্ট করে! এটুকু বুক ঠুকে বলতে পারি পরে কখনওই এ ধরনের সমস্যা হয়নি। পুরনো বইপত্র, বিশেষত পত্রিকার ডিজিটাইজেশন এ সব কারণেই জরুরি। মাঝে মাঝেই ভাবি আজকাল, ফটোকপি-জেরক্স বা ছবি তুলে প্রিন্ট বা ডিজিটাল ছবির প্রচলন সে যুগে থাকলে, পুঁথি নিয়ে সাহিত্যের ইতিহাসবিদদের এত সমস্যা হতো না। পুঁথি এবং পুঁথির লিপিকর প্রমাদ বা প্রতিলিপির ভ্রান্তি ধরনের কোনও শব্দই তৈরি হতো না। অন্যদিকে, শঙ্খ ঘোষ শেখালেন সম্পাদকের দায় এবং দায়িত্ব। প্রতিটি শব্দকে বারংবার পড়তে হয়, বারংবার মেলাতে হয় মূলপাঠের সঙ্গে। ‘পাঠ’ এবং ‘সতর্কতা’ এই দুই শব্দকে সযত্নে বহন করতে হয় সম্পাদককে। তাঁর সহযোগীদেরও।
সেদিন ফেরার পর তিনি শিখিয়েছিলেন আরও একটি অব্যর্থ অভিমুখ। শুধু সম্পাদনা নয়, যেকোনও সারস্বত কাজে সেই উপদেশ ভোলার নয়। আমি ফেরার পথে প্রশ্ন করেছিলাম ‘বহুরূপী’ নাট্যপত্রে ‘রক্তকরবী’ নাটকের যে দুষ্প্রাপ্য পাণ্ডুলিপিটি ছাপা হয় তার নাম কী ছিল? স্যর বললেন, ‘নন্দিনী’। বাড়ি ফিরে আমি চা-সন্দেশ ইত্যাদি খাচ্ছি, স্যর কোথায় চলে গেলেন যেন। আমি ভেতরের ঘরে গিয়ে দেখি মইয়ে উঠে কী একটা বই পেড়ে আনছেন! দেখি সেই বহুরূপী সংখ্যাটি! আমি বললাম, ‘এই তো, নাম তো স্পষ্ট। নন্দিনী।’ স্যর বললেন, ‘হ্যাঁ। দেখলে তো?’ আমি বললাম, ‘আপনি বলেছেন। ঠিকই তো বলেছেন।’ উনি পত্রিকাটির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তাহলে তোমাকে আজ একটা ছড়া শেখাই। ভুলো না। জরুরি কথা। না দেখিয়া নিজের নয়নে/বিশ্বাস কোরো না কভু গুরুর বচনে। এমনকী লেখালেখির সময়ও জানাচেনা তথ্য কলমে লেখার আগে, মান্য কোনও আকরগ্রন্থ দেখে নিও একবার। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস অনেকসময় ডুবিয়ে দেয়।’ শুনলাম। শিখলাম। মনে হল, কথাটা উল্টোবাগেও সত্য। এই যে উনি দৌড়ে গেলেন সাহিত্য পরিষদ গ্রন্থগারে, সে তো একধরনের স্বচক্ষে যাচাই করারই পদ্ধতি-প্রকরণ। ‘না দেখিয়া নিজের নয়নে/ বিশ্বাস করো না কভু ছাত্রের লিখনে।’ যেকোনও সম্পাদকের জন্য এ হল আর্ষ পথনির্দেশিকা!
২.
শিক্ষানবিশির পর্বে-পর্বে এমন অনেক রোমাঞ্চই আমার জন্য লুকিয়ে থাকতো। রবীন্দ্রনাথের বিপুল লেখালেখির বিস্ময়কর জগতের পাশে লুকোনো আছে কত না পাঠভেদ, পাণ্ডুলিপি পাঠ, সংশোধন, সংযোজন, রূপান্তর, খসড়া, অগ্রন্থিত রচনাসম্ভার! রবীন্দ্রনাথের নানা রচনার দায়সারা সম্পাদিত সংস্করণে ছেয়ে গেছে চতুর্দিক। রবীন্দ্রনাথের যেকোনও রচনার সম্পাদনা বা প্রকাশনা বা এমনকী মুদ্রণও সেজন্য সযত্ন মনোনিবেশ দাবি করে। এত অতিকায় প্রতিভাবানের অনিঃশেষ বিচ্ছুরণ নিয়ে কাজ করতে গেলে, স্বাভাবিকভাবেই মনে হয়, সম্পাদককেও খানিকটা অনন্য মেধার অধিকারী হওয়া প্রয়োজন। এই যে একেকটি শব্দ নিয়ে এত প্রাণপণ শ্রমস্বীকার, এও এক সম্পাদনার সমাদরহীন দায়! এসব ক্ষেত্রে, স্যর বলতেন, মনে করতে হবে অদৃশ্যে কেউ একজন আছেন, যিনি লক্ষ রাখেন এবং মূল্যায়ন করেন প্রতিটি কাজের। তার কাছে পরীক্ষা দিয়ে যেতে হয়। আমার অবশ্য মনে হত, আজও মনে হয়, সম্পাদকের কাজ অনেকটা গোয়েন্দার মতো। প্রতি মুহূর্তে টানটান উত্তেজনায় নানা ক্লু মিলিয়ে চুপিসাড়ে উদগ্র মনোনিবেশে দায়িত্বপালন!
প্রসঙ্গত মনে পড়ল, ‘সূর্যাবর্ত’ বইটির ‘পাঠপ্রসঙ্গ’ অংশের কথা। সেই পর্বটি আগাগোড়া যেন সম্পাদকের চমকপ্রদ সব গোয়েন্দাগিরির বিবরণে ঝলমল করছে। এই ধরা যাক, ‘হিংটিং ছট’ কবিতাটি প্রসঙ্গে টীকায় লেখা হচ্ছে– ‘পাখির মতন রাজা করে ঝট্পট্’ লাইনটি, অনেক মুদ্রণে (যেমন ইন্ডিয়ান প্রেসের কাব্যগ্রন্থ বা বিশ্বভারতী-রচনাবলী) আছে ‘ছট্ফট্’, কিন্তু পাণ্ডুলিপি বা চয়নিকা-সঞ্চয়িতা সর্বত্রই ‘ঝট্পট্’। হয়তো একই প্রণোদনায় তিনি হ্রস্বীকৃত ‘সঞ্চয়িতা’ পাঠের বদলে ‘সূর্যাবর্ত’-এ মূলগ্রন্থপাঠ নিয়ে আসেন। পাঠকের কাছে এই বৈচিত্র্যের ঐক্যকে গুরুত্বের সঙ্গে নজরবন্দী করেন। আবার, আরো সূক্ষ্ম অবলোকনের চিহ্ন লক্ষ করা যায়। শেষপর্বের একটি কবিতা ‘ঐকতান’ প্রসঙ্গে টীকায় লেখা হয়েছে– “জন্মদিনে-র দশ সংখ্যক কবিতার এই বহুল-পরিচিত নামটি ছিল ‘প্রবাসী’-তে, ১৩৪৭ সালের ফাল্গুনে। বিশ্বভারতী-রচনাবলীতে এই কবিতার তারিখ ছাপা আছে ২১ জানুয়ারি।”
এইভাবে, সযত্নে দেখতে হয় রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিভুবনের প্রতিটি অণুমুহূর্ত। স্যরের কাজের মধ্য দিয়ে সেই প্রশিক্ষণই যেন সর্বক্ষণ অনুভব করা যায়।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আমি ভেতরের ঘরে গিয়ে দেখি মইয়ে উঠে কী একটা বই পেড়ে আনছেন! দেখি সেই বহুরূপী সংখ্যাটি! আমি বললাম, ‘এই তো, নাম তো স্পষ্ট। নন্দিনী।’ স্যর বললেন, ‘হ্যাঁ। দেখলে তো?’ আমি বললাম, ‘আপনি বলেছেন। ঠিকই তো বলেছেন।’ উনি পত্রিকাটির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তাহলে তোমাকে আজ একটা ছড়া শেখাই। ভুলো না। জরুরি কথা। না দেখিয়া নিজের নয়নে/বিশ্বাস কোরো না কভু গুরুর বচনে। এমনকী লেখালেখির সময়ও জানাচেনা তথ্য কলমে লেখার আগে, মান্য কোনও আকরগ্রন্থ দেখে নিও একবার। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস অনেকসময় ডুবিয়ে দেয়।’
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
৩.
আবার ফিরে যাব ‘গ্রন্থপরিচয়’ খণ্ডটিতে। সেখানে কয়েকটি আশ্চর্য পর্যবেক্ষণ পরবর্তীকালের সম্পাদকদের নজর করা দরকার বলে মনে হয়।
(ক) সম্পাদনা কীভাবে গবেষণার সঙ্গে গোয়েন্দাগিরির পর্যবেক্ষণকে মিশিয়ে দেয়, তার নির্দশন ‘ছিন্নপত্র’ গ্রন্থের তারিখ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা। তার দু’টি তুলে ধরব–
প্রথমত, ৪২ সংখ্যক চিঠি বিষয়ে লেখা আছে, ‘এই চিঠিটির তারিখ হিসেবে প্রথমাবধি ছিল বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারি ১৮৯২। পরে একে শনিবার করা হয়েছে… কেননা সে-বছরের ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ছিল না, ছিল শনিবার। ‘ছিন্নপত্র’-র প্রচলিত সংস্করণে (১৩৭৫), চিঠির অন্তর্গত ‘আজ পূর্ণিমা রাত’-এর দিকে লক্ষ রেখে করা হয়েছে ১৪ জানুয়ারি।
দ্বিতীয়ত, রবীন্দ্রনাথ সম্পাদিত ‘ছিন্নপত্র’ গ্রন্থের শেষ চিঠি, অর্থাৎ ১৫১ সংখ্যক চিঠি প্রসঙ্গে একটি বাক্য উদ্ধৃত করব। বাকি অংশ সহৃদয় পাঠক-পাঠিকা নিজেই দেখে নেবেন। ইন্দিরা দেবী যে অনুলিপি তৈরি করেছিলেন, তাতে কোনও তারিখ ছিল না। কিন্তু প্রাপ্তি-তারিখ হিসেবে ৭ ডিসেম্বর উল্লেখ করা আছে। সম্পাদক জানাচ্ছেন, ‘সেইজন্য পরে অনুমিত হয়েছে চিঠিটি লেখার তারিখ হবে ৬ ডিসেম্বর।’
(খ) প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় লিখেছিলেন, “কবির জীবদ্দশায় ‘রক্তকরবী’ কখনো অভিনীত হয় নাই”। তথ্য হিসেবে অবশ্য এটি নির্ভুল নয়। সম্পাদক দেখিয়েছেন ৬ এপ্রিল ১৯৩৪ সালে রবি ঠাকুরের জীবদ্দশায় এই নাটকটি একবার অভিনীত হয়েছিল। সেই অভিনয়পত্রীর পৃষ্ঠাগুলি আনতে আমাকে পাঠানো হয়েছিল ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ আপিসে। সেটি ছাপাও আছে ষোড়শ খণ্ডে। এই বিভ্রান্তি অবশ্য এখনো ঘোচেনি। বহু রবীন্দ্র-বিশেষজ্ঞ মান্যজনকে প্রভাতকুমারের মন্তব্য অবলীলায় বলতে শুনেছি। ২০২৩ সালেও শুনেছি।
(গ) এই ধরনের তদন্ত এবং তথ্য নির্মাণের আরেকটি চিহ্ন ‘বীথিকা’ কাব্য গ্রন্থের ‘দুর্ভাগিনী’ কবিতাটি। ‘পূর্বাশা’ পত্রিকায় প্রকাশিত (আশ্বিন ১৩৪০) কবিতা ‘শূন্যতা’-র সঙ্গে তুলনামূলক আলোচনার সাপেক্ষে সম্পাদক দেখিয়েছেন ৬ আগস্ট নয়, কবিতাটি ১০ তারিখ পরবর্তী কিছু সংযোজন বহন করছে। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, সম্পাদক শঙ্খ ঘোষের বয়ানে– ‘এমন অনুমানের কারণ: জার্মানিতে দৌহিত্র নীতীন্দ্রের মৃত্যু ৭ আগস্ট ১৯৩২ এবং রবীন্দ্রনাথের কাছে সে খবর পৌঁছয় ১০ আগস্ট।’
৪.
এই দৃষ্টান্তগুলি থেকে শিক্ষণীয় বিষয় হলো, রচনাকাল নির্ণয়ে সম্পাদককে নানা ধরনের গাণিতিক পদ্ধতি যেমন নিতে হয়, অন্যদিকে নিয়মিত চর্চা চালাতে হয় রচনাবলি নিয়ে। এই পদ্ধতিকে বলা যেতে পারে তথ্যলালন ক্ষমতা। এই লালন এবং পরিচর্যা থেকেই তথ্যব্যবহারের নৈপুণ্য অর্জন করা যায়। এ হয়তো এক স্বাভাবিক দক্ষতা, কেউ কাউকে শেখাতে পারে না। তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তি এবং স্পষ্ট দিশা নিয়ে এ কাজ সামগ্রিকভাবে করতে হয়, নিরবচ্ছিন্ন সংকল্পে। নানা সূত্র, আকরগ্রন্থ, তথ্যপঞ্জি, পত্র-পত্রিকা, স্মৃতিকথা তো বটেই, এমনকী অতিতুচ্ছ কোনও হাতচিঠি থেকে বা বিজ্ঞাপন থেকে বড়োসড়ো সহায়তা পাওয়া যেতে পারে। এখনও কোনও কথাই বলিনি রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত যতিচিহ্ন এবং তার বৈচিত্র বিষয়ে। পুলিনবিহারী সেন, কানাই সামন্ত, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, শঙ্খ ঘোষ, শিশিরকুমার দাশ, প্রশান্তকুমার পাল, সমীর সেনগুপ্ত এবং আরও বহু শ্রদ্ধেয় রবীন্দ্রচর্চায় নিমজ্জিত ব্যক্তিবর্গ কত গভীর সংকল্পে এবং সীমাহীন অধ্যবসায়ে তথ্যমূলক সম্ভার গড়ে তুলেছেন, সে কথা ভাবলে বিস্ময়াবিষ্ট হতে হয়। আশা করি সেই ধারাবাহিকতা পূর্ণোদ্যমে বজায় থাকবে। আমরা তো সামান্য লোক। নগণ্য পাঠক মাত্র।
৫.
কথা তো বাকি রইল অনেক। শঙ্খ ঘোষের সম্পাদনার খুবই আংশিক একটা ছবি অপটু কলমে পরিবেশন করলাম। অতৃপ্তির কারণ আরও দীর্ঘ। স্যরের সঙ্গে কাজ করেছি ‘সুভাষ মুখোপাধ্যায়: কথা ও কবিতা’ বইটির সূত্রে। প্রুফ দেখা এবং ছোটোখাটো দায়িত্ব পালন করেছি ‘সপ্ত সিন্ধু দশ দিগন্ত’ বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের সময়। সেসব আঁখো দেখা হাল নিয়ে অনেক কথাই বলা যায়। পাঠক হিসেবে মনে হয় ‘সতীনাথ গ্রন্থাবলি’, ‘এই সময় ও জীবনানন্দ’, ‘কবি অরুণ মিত্র’ এমনকী ছোট্ট বই ‘ঢেউয়ে ঢেউয়ে তলোয়ার’ নিয়েও অনেক কথা সম্পাদনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা চলে। সম্পাদনা একটা জটিল, বহুস্তরিক, শ্রমসাধ্য অথচ উপভোগ্য, সৃষ্টিশীল প্রক্রিয়া। শঙ্খ ঘোষ ছিলেন তেমনই এক জ্যান্ত কর্মময়তার প্রতীক। পাঠক চাইলে হয়তো দাশুর মতো ‘আবার সে এসেছে ফিরিয়া’ বলে আড্ডা দিতে ফিরব। পাঠকই বিগ্রহ। গুরু প্রণম্য।
ভাষ্য শব্দের তর্জনী-র তৃতীয় পর্ব। কোনও সংকলনই গ্রন্থনার পূর্ণচ্ছেদ হতে পারে না, ভাবতেন শঙ্খ ঘোষ
ভাষ্য শব্দের তর্জনী-র দ্বিতীয় পর্ব। তথ্যমূলক তথাকথিত নীরস কাজে শঙ্খ ঘোষের ফুর্তির অন্ত ছিল না
ভাষ্য শব্দের তর্জনী-র প্রথম পর্ব। কত কম বলতে হবে, মুখের কথায়, সভায়, কবিতায় কিংবা ক্রোধে– সে এক সম্পাদনারই ভাষ্য
সবার থেকে বেশি আক্রমণ নেমে এসেছে কাশ্মীরের সাংবাদিকদের ওপর। একাধিক সংবাদপত্রের সম্পাদক, সাংবাদিকদের শুধু জেলবন্দিই করা হয়নি, ইন্টারনেট লকডাউন করে প্রায় উপত্যকাকেই একটা জেলে পরিণত করা হয়েছে, যেখানে কোনও রকম সাংবাদিকতাই করাই একসময় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল।