Robbar

সংবিধানই রক্ষাকবচ, নির্বাচনে বোঝালেন সাধারণ মানুষ

Published by: Robbar Digital
  • Posted:June 16, 2024 6:19 pm
  • Updated:June 16, 2024 6:19 pm  

দলিত অনেক কিছু না বুঝলেও এইটুকু অন্তত বোঝে যে, ভারতের সংবিধানই তার সবচেয়ে বড় সুরক্ষা-কবচ। হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আড়ালে সংবিধান পরিবর্তন যে দলিতের পক্ষে বিপজ্জনক, শ্রেণি হিসেবে তার আন্দাজ রয়েছে দলিতদের। হিন্দুত্ববাদের আফিম তার মুখ দিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি বের করলেও, বুকে ভীমরাও আম্বেদকরকেই বহন করে সে।

অমৃতা সরকার

ভারতের ২০২৪ সালের লোকসভার নির্বাচনের ফলাফল অনেক প্রেক্ষিত থেকেই তাৎপর্যপূর্ণ। এই নির্বাচনের ফলাফল দেখায় যে, বিজেপির হিন্দুত্ববাদী প্রোপাগান্ডাকে অনেকখানি আটকানো গিয়েছে প্রায় দেশ জুড়ে। রামের নামে ভোট চাওয়া হলেই যে ভোটবাক্স উপচে পড়বে সমর্থনের জোয়ারে, এতটা উন্মাদনা গ্রাস করেনি ভারতীয় জনগণের একটা বড় অংশকে। ভারতীয় সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতিটি পরতে ইসলামবিদ্বেষকে তোল্লাই দিলেই যে খুব নিশ্চিন্তে ভোট বৈতরণী পার করা যায় না, এই ফলাফলে তা স্পষ্ট। নির্বাচন চলাকালীন নিজেকে অযোনিসম্ভূত, ঈশ্বরতুল্য দাবি করা ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জয়ী হওয়ার পরেও হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন একটা তেতো সত্যি। ভারতে বসবাসকারী হিন্দুদের বড় একটা অংশকে বিজেপি মেশিনারি এখনও হিন্দুত্ববাদের আফিমে এতটা চুর করতে পারেনি যে, তারা নিজেদের রুটিরুজির খতিয়ান ভুলে গিয়ে রামলালার নামে ভোট দিয়ে বিজেপিকে চারশো পার করে দেবে।

UP elections: Why the rhetoric of caste vs development rings hollow | Mint
গণতন্ত্রের বৃহত্তম উৎসবে সামিল জনগণ

এই নির্বাচন ভারতের দলিত রাজনীতির ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হয়ে থাকল। দলিত, বিশেষত গো-বলয়ের দলিত মাত্রই হিন্দুত্ববাদী এবং বিজেপির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার, এমন একটি ধারণা শেষ দশ বছরে প্রবলভাবে দেখা গিয়েছিল। সাবর্ণ হিন্দু শ্রেণি হিসাবে নিজ স্বার্থের জন্যই বিজেপিকে পছন্দ করে, তাই বিজেপি নিজের এই ভোট ব্যাংক নিয়ে মোটামুটি নিশ্চিন্তই থাকে। এই শ্রেণির সঙ্গে অনগ্রসর শ্রেণি ও দলিত ভোটের বড় একটা অংশ করায়ত্ত করলেই বিজেপিকে প্রবল শক্তিশালী দেখায়।

জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের সময় থেকেই উত্তর ভারতীয় দলিত নিজেদের আলাদা পরিচিতিতে জোর দিয়েছিল। এই পরিচিতি স্বাতন্ত্র্য এবং দলিতের নিজের অধিকার বুঝে নিতে চাওয়ার চেষ্টা হিন্দু ধর্মের পরিসরকে একক হিন্দুত্ববাদী পরিসরে পর্যবসিত হতে দেয়নি। ওবিসি ও দলিত স্বাতন্ত্র্য নিজ রাজনীতির স্বার্থেই বজায় রাখতে বারবার মরিয়া হয়েছেন কাঁসিরাম, মুলায়ম সিং যাদব এবং লালুপ্রসাদরা। তাই নিজেকে রাজনৈতিকভাবে টিকিয়ে রাখতেই লালুপ্রসাদ আডবাণীর হিন্দুত্ববাদের রথ থামিয়েছিলেন। হিন্দি হার্টল্যান্ডে এই জাতপাতের রাজনীতির জন্যই ২০১৪-এর নির্বাচনের আগে পর্যন্ত বিজেপি অখণ্ড হিন্দুত্ববাদের পরিসর গড়ে তাকে পুরো দেশের সামনে হিন্দু ধর্মের মডেল হিসেবে তুলে ধরতে পারেনি। ১৯৯০ থেকে ২০১৪– এই সিকি শতাব্দীর পরিসরে কাঁসিরামের অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া, মায়াবতীর দুর্নীতি ও ব্যক্তি ইমেজ নির্মাণ করতে গিয়ে দলিত স্বার্থকেই উপেক্ষা করা, মুলায়ম সিং-এর দোদুল্যমানতা এবং অমর সিং-এর সমস্যাজনক উপস্থিতি, লালুপ্রসাদের দুর্নীতি ও দীর্ঘকালীন বন্দিত্ব, নীতিশ কুমারের ক্ষমতা লিপ্সার জন্য যে কোনও রকমের আপোস, রামবিলাস পাসোয়ানের ব্যক্তিগত লাভের জন্য বিজেপি ঘেঁষা হয়ে ওঠা– গো-বলয়ের অনগ্রসর শ্রেণি ও দলিত পরিসরকে দিশাহীন করে তোলে। এই দিশাহীন অবস্থায় মণ্ডল কমিশন লাগু হওয়ার ২৫ বছর পর সংরক্ষণ নিয়ে নতুন করে একত্রিত হওয়ার প্রায় কিছুই ছিল না। নয়ের দশকে রাজপুত ও ভূঁইয়ারদের সঙ্গে দলিতের যে জাতপাতকেন্দ্রিক রক্তক্ষয়ী লড়াই চলেছে, তাও স্তিমিত হয়ে আসে মারতে-মারতে এবং মরতে-মরতে।

The battle in poll-bound UP is casting a shadow on the ruling alliance in Bihar
গো-বলয়ের রাজনীতি: মুলায়ম-নীতীশ-লালুপ্রসাদ যাদবরা

সুতরাং, জাতকে কেন্দ্র করে অপরপক্ষ নির্মাণ করে যে লড়াই করা হত, তাও স্তিমিত হয়ে আসে। বরং ওবিসি পরিসরের ক্রমাগত বৃদ্ধি এবং সেই পরিসরে মুসলমানের ঢুকে পড়া, দলিতকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে একটা অস্বস্তির মুখে ঠেলে দেয়। নতুন করে সংরক্ষণের পরিসর নিয়ে দলিত, মুসলমানের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাতে থাকে। এই প্রেক্ষিতে খুব পরিকল্পনামাফিক হিন্দু ধর্মীয় সংগীত নিজের চিরাচরিত ক্লাসিকাল, ভজন, তুলসীদাসী সুর ইত্যাদিকে পাশ কাটিয়ে পপ-সংস্কৃতির রূপে হাজির হতে থাকে। রাম এবং রামমন্দিরকে একটা কাল্পনিক সব পেয়েছির হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরতে থাকে এই গানগুলো, যেগুলোর টার্গেট শ্রোতা মূলত নিম্নবর্গের দলিত। এই কাল্পনিক হিন্দু রাষ্ট্রে প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা হিন্দু গোষ্ঠীর একটাই সাধারণ শত্রু থাকে: মুসলমান! ইসলামোফোবিয়াই সেই যোগসূত্র যা অনগ্রসর শ্রেণি, দলিত, রাজপুত, ভূঁইয়া, মহাদলিত, ব্রাহ্মণ সবাইকে বিজেপি একছাতার তলায় নিয়ে আসে এবং ২০২০ অবধি এই ছাতার পরিধি দিন-দিন ব্যাপ্তি লাভ করে।

………………………………………………………………………………………………………

জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের সময় থেকেই উত্তর ভারতীয় দলিত নিজেদের আলাদা পরিচিতিতে জোর দিয়েছিল। এই পরিচিতি স্বাতন্ত্র্য এবং দলিতের নিজের অধিকার বুঝে নিতে চাওয়ার চেষ্টা হিন্দু ধর্মের পরিসরকে একক হিন্দুত্ববাদী পরিসরে পর্যবসিত হতে দেয়নি। ওবিসি ও দলিত স্বাতন্ত্র্য নিজ রাজনীতির স্বার্থেই বজায়  রাখতে বারবার মরিয়া হয়েছেন কাঁসিরাম, মুলায়ম সিং যাদব এবং লালুপ্রসাদরা। তাই নিজেকে রাজনৈতিকভাবে টিকিয়ে রাখতেই লালুপ্রসাদ আডবাণীর হিন্দুত্ববাদের রথ থামিয়েছিলেন।

………………………………………………………………………………………………………

এরই মধ্যে করোনায় পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরাবস্থা প্রথমবারের জন্য চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় বিজেপি নিজের হিন্দু ভোটারের কথাও ভাবে না। পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকাংশই দলিত এবং মুসলমান হওয়ায় বিজেপির সাবর্ণ পিতৃতান্ত্রিক শ্রেণিচরিত্র দলিতের মনে অবশ্যই ছায়াপাত করেছিল। তথাকথিত ‘জেনারেল কাস্ট’ভুক্তদের মধ্যে যারা দরিদ্র, তাদের জন্য দশ শতাংশ সংরক্ষণ দলিতকে বিজেপির সম্পর্কে আরও সন্দিহান করে তোলে। এই সংরক্ষণের যে দিকটি দলিতকে বিজেপির সাবর্ণ অভিপ্রায় নিয়ে প্রায় সুনিশ্চিত করে, সেটি হল দারিদ্রের সীমারেখা। একজন দলিত, আদিবাসী, কিংবা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক সীমা যেখানে বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা পারিবারিক রোজগার, বিজেপি প্রদত্ত ‘উচ্চবর্ণ’-এর সংরক্ষণে সেই অর্থনৈতিক সীমারেখা দেওয়া হয় বছরে সাত থেকে সাড়ে সাত লাখ টাকা পারিবারিক রোজগার। এই পার্থক্য দলিতকে ভালোভাবেই বুঝিয়ে দেয়, বিজেপি-শাসিত ভারতে কার শ্রেণিস্বার্থ সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে।

ভারত সরকারের ‘অগ্নিবীর’ পরিকল্পনার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল গো-বলয়ের দলিত ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির যুবারাই। এইসব সরকারি পরিকল্পনার পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে কিছু ন্যক্কারজনক ঘটনা, যেমন– বিজেপি নেতাদের দলিতের মুখে প্রস্রাব করে দেওয়া, চড়-থাপ্পড় মারা– এগুলি ব্যক্তি হিসেবে একজন দলিতকে ত্রস্ত করে তুলছিল। এই সমস্ত কিছুর প্রেক্ষিতে যখন রাম মন্দির নির্মাণের পর নির্বাচনী প্রচারে ‘চারশো’ সংখ্যাটি বিজেপি ভাসিয়ে দিয়েছিল, তার গূঢ়ার্থ করা হয়েছিল সংবিধান পরিবর্তন এবং হিন্দু রাষ্ট্র প্রবর্তনের ভাবনাকে।

দলিত অনেক কিছু না বুঝলেও এইটুকু অন্তত বোঝে যে, ভারতের সংবিধানই তার সবচেয়ে বড় সুরক্ষা-কবচ। হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আড়ালে সংবিধান পরিবর্তন যে দলিতের পক্ষে বিপজ্জনক, শ্রেণি হিসেবে তার আন্দাজ রয়েছে দলিতদের। হিন্দুত্ববাদের আফিম তার মুখ দিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি বের করলেও, বুকে ভীমরাও আম্বেদকরকেই বহন করে সে। তাই নিজ শ্রেণির স্বার্থ রক্ষার্থেই বিজেপিকে শিক্ষা দিতে তৎপর ছিল দলিত। শুধু ভোট ভাগাভাগির অঙ্কে জিতে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল বিজেপির। এখানেই ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কৃতিত্ব। কৃতিত্ব কংগ্রেসের এবং রাহুল গান্ধীরও। এই প্রথম কংগ্রেস মেনে নিয়েছে, দলিত পরিসরে কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতির চেয়ে দলিত পরিচিতির রাজনীতি অনেক বেশি ফলপ্রসূ। ফলে, অখিলেশ যাদবের নেতৃত্বে সমাজবাদী পার্টিকে বেশি আসন ছাড়াই হোক বা আজাদ সমাজ পার্টি-কাঁসিরাম দলের প্রভাবশালী নেতা চন্দ্রশেখর আজাদ প্রাক-নির্বাচনী জোটে না এলেও তাকে জোটে সর্বদা স্বাগত জানানোর অভিব্যক্তিতেই হোক– কংগ্রেস চিরাচরিত জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ঘরানা ছেড়ে দিয়েছে। বরং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কংগ্রেস প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনীতিকে বেশি জরুরি মনে করেছে। বিজেপি যখন সবকিছুকে এক ও অভিন্ন করার নামে রাম নামক এক সর্বগ্রাসী অস্তিত্বের মিথ্যা নির্মাণ করে সাবর্ণ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার কাজে নেমেছে, তখন এই প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনীতিই গড়ে তুলেছে জোরালো প্রতিরোধ।

Akhilesh Yadav skips INDIA bloc rally at Shivaji Park in Mumbai, sends letter to Rahul Gandhi - India Today
রাহুল গান্ধি-অখিলেশ যাদব, জনতার মাঝে একফ্রেমে

ভোটের ফলাফলের পর সংবাদমাধ্যমের একাংশ সমীক্ষা করেছে জাত ও ধর্ম অনুযায়ী দুই জোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শতাংশ নিয়ে। এনডিএ জোটে ‘উচ্চবর্ণ’ ৩৩.২%, সাধারণ শ্রেণি ১৫.৭%, ওবিসি ২৬.২%, এসসি ১৩.৩ %, এসটি ১০.৮%। মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ কিংবা শিখ নেই। অপরপক্ষে, ‘ইন্ডিয়া’ জোটে ‘উচ্চবর্ণ’ ১২.৪%, সাধারণ শ্রেণি ১১.৯%, ওবিসি ৩০.৭%, এসসি ১৭.৮%, এসটি ৯.৯%, মুসলিম ৭.৯%, খ্রিস্টান ৩.৫%, শিখ ৫%, বৌদ্ধ নেই। এই পরিসংখ্যানের পার্থক্য বুঝিয়ে দেয়, বিজেপিকে কেন দশ বছর পর নড়বড়ে দেখাচ্ছে। গো-বলয়ের দলিত হিন্দুত্ববাদী পরিসরকে সাফল্যের সঙ্গে প্রতিরোধ করেছে। অথচ পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ফলাফলে সেই প্রবণতা অনুপস্থিত।

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

পড়ুন মানস ঘোষ-এর লেখা: যাঁরা মানুষের জন্য হাঁটেন, এদেশ তাঁদের শূন্য হাতে ফেরায় না

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….

পশ্চিমবঙ্গের দলিত পরিসর গো-বলয়ের দলিত পরিসরের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। পশ্চিমবঙ্গের প্রধান দলিত গোষ্ঠীগুলির দিকে যদি তাকানো যায়, তাহলে দেখা যাবে– নমঃশূদ্র, রাজবংশী ও কুড়মিরা কোনও না কোনও ভাবে নিজেদের মধ্যেই জমি দখলের লড়াইয়ে জড়িয়েছে বারবার। অভিন্ন দলিত স্বার্থ বলে কোনও পরিসরই দানা বাঁধেনি পশ্চিমবঙ্গে। অভিন্ন দলিত পরিসর তৈরি না হওয়ায় সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি-র মতো ঘোষিত প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনৈতিক দলও নেই। যেখানে হিন্দুদের গোষ্ঠী অনুযায়ী রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে আসে, সেখানেই বিজেপির হিন্দুত্ববাদ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আসনের দিক দিয়ে কমলেও বিজেপি ৩৮% ভোট পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তাই বিজেপির হিন্দুত্ববাদী ভোট ব্যাঙ্ক পশ্চিমবঙ্গে অটুট রয়েছে। দলিতের রাজনৈতিক পরিসর পশ্চিমবঙ্গে না বাড়লে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে একদম গুরুত্বহীন করে দেওয়া কিন্তু এখনও অনেক দূরের রাস্তা।

…………………………………………

ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল

…………………………………………