Robbar

প্রথমবার চুমু খেয়ে মনে হয়েছিল গোটা সিস্টেমটাকেই গুঁড়িয়ে দেব শালা

Published by: Robbar Digital
  • Posted:December 21, 2024 8:29 pm
  • Updated:December 21, 2024 8:29 pm  

আমার প্রথম প্রেম দেবাশিস। তাঁকে নিয়ে একটি গানও আছে আমার– দেবাশিস। দেবাশিসের প্রতি যে প্রেম, তার ধারেকাছে কোনও প্রেমই আসেনি। দু’জনেই ভালো ক্রিকেট খেলতাম। দেবাশিস বল করত, আমি ব্যাট। একবার শীতকালে খেলতে গিয়েছিলাম লেকে। ক্রিকেট খেলে ফিরে আসছি দু’জনে। হঠাৎ চারপাশ শুনশান। একটা বড় গাছের তলায় দাঁড়িয়ে কী হল, বুঝলাম না, দু’জনেই দু’জনের মুখের দিকে তাকালাম। আকস্মিক ভাবেই শুরু হল চুমু। অদ্ভুত একটা কষ্ট সেই চুমুর মধ্যে। কখনও ওরকম চুমু আর খেতে পারিনি সারা জীবনে। এই চুমু আমার জীবনের সবথেকে জরুরি ঘটনাগুলোর একটি হয়ে থেকে গেল। অপূর্ব এক নেশা, প্রথম প্রেমের নেশা, নিয়মের বিরুদ্ধে আমার বিপ্লবের ঘোষণা।

কবীর সুমন

আমি বড় হয়েছি সাধারণ মধ্যবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবেশে। ছোটবেলায় বাবা-মা-মাসি, মেসো– সকলেই চুমু খেয়েছে আদর করে, যেমন করে আরকি। কিন্তু এ তো তেমন ‘চুমু’ নয়, নিরামিষ আদর। আমার মনে আছে, ওই ১১-১২ বছরে আমার ভালো লেগেছিল একজনকে, হয়তো তাঁরও ভালো লেগেছিল আমাকে। তিনি আমাদের পাড়ার একটি মেয়ে, থাকতেন পাশের বাড়িতেই। আমি একটু-আধটু গান গাইতাম তখন। শোনাতাম ওঁকে। স্কুল ছুটি থাকলে আমাদের বাড়িতে আসতেন। ইশারায় বলতেন, গান গাও, গান গাও। সন্ধের মুখে একদিন সিঁড়ির তলায় আমি ও তিনি, আমার জীবনের, সম্ভবত তাঁর জীবনেরও প্রথম চুমু খেয়ে ফেলি। সেই মুহূর্তটা একটা ঘোষণার মতো। না, কাব্যি করছি না। আমি খুব শরীর-মানুষ। মন-মানুষ নয়। ওই যে চুমু খেলাম, মনে হল একটা ঘটনা ঘটে গেল আমার জীবনে।

শিল্পী: হরেন দাস

এর বছর দুয়েক পরে প্রেমে পড়লাম। না, এই মেয়েটির নয়। কোনও মেয়েরই নয়।

প্রেমে পড়লাম একটি ছেলের। তাঁকে নিয়ে একটি গানও আছে আমার– দেবাশিস। এই প্রেমের পরেও আমি মেয়েদের প্রেমে পড়েছি, কিন্তু দেবাশিসের প্রতি যে প্রেম, তার ধারেকাছে কোনও প্রেমই আসেনি। প্রচণ্ড প্যাশনেট ছিলাম আমরা এই প্রেমে! দু’জনেই ভালো ক্রিকেট খেলতাম। দেবাশিস বল করত, আমি ব্যাট। একবার শীতকালে খেলতে গিয়েছিলাম লেকে। ক্রিকেট খেলে ফিরে আসছি দু’জনে। হঠাৎ চারপাশ শুনশান। একটা বড় গাছের তলায় দাঁড়িয়ে কী হল, বুঝলাম না, দু’জনেই দু’জনের মুখের দিকে তাকালাম। আকস্মিক ভাবেই শুরু হল চুমু। অদ্ভুত একটা কষ্ট সেই চুমুর মধ্যে। কখনও ওরকম চুমু আর খেতে পারিনি সারা জীবনে। এই চুমু আমার জীবনের সবথেকে জরুরি ঘটনাগুলোর একটি হয়ে থেকে গেল। অপূর্ব এক নেশা, প্রথম প্রেমের নেশা, নিয়মের বিরুদ্ধে আমার বিপ্লবের ঘোষণা।

This may contain: a painting of a man standing in front of a wall
সূত্র: ইন্টারনেট

আমি ও দেবাশিস বয়েজ স্কাউট করতাম। ডিউটি পড়েছে। দেখা গেল, দেবাশিস আর আমাকে আলাদা গ্রুপে দিয়েছে। সে কী যে কষ্ট! ওই যে আমি আর দেবাশিস এক জায়গায় থাকতে পারলাম না, সে এক দুর্ধর্ষ দুঃখের ব্যাপার তখন। রাগে গরগর করছিলাম। সেই রাগেই মনে হল পাল্টে দেব পৃথিবীটাকে। ওর জন্য, আর আমার জন্য। আমার যদি টাকা থাকত, আর সম্ভব হত, তাহলে সারা আকাশে জেট দিয়ে ওর নাম লিখতাম। পৃথিবীর সবক’টা দেওয়ালে শুধু দেবাশিস লিখতাম আমি। আমাদের কামের মধ্যে যে সুখ, তা আমি জীবনে কারও কাছে পাইনি। সাংঘাতিক এই আবেদন, যাতে মিশে ছিল দেবাশিসের গায়ের গন্ধ, ঠোঁটের গন্ধ, লালার গন্ধের যোগফল। দেবাশিস আর আমার এই প্রেম, আদর কেউ মানবে না তখন! মনে হত সিস্টেমটাকেই উড়িয়ে দেব শালা! এখানেই আমার চিন্তার শুরু, সিস্টেমের বিরুদ্ধচিন্তার। এখনও দেবাশিসকে অক্লান্তভাবে মনে পড়ে। কিন্তু আমি জানি আমাদের আর দেখা না হয়ে ভালো হয়েছে। নয়তো সব তছনছ হয়ে যেত। দেবাশিস থাকলে সব ধ্বংস হয়ে যেত। আর সেই সময়টাকে তো আর ফেরাতে পারব না। ওটা থমকে আছে মনের ভেতরে, এই শরীরের ভেতরেও।

সূত্র: ইন্টারনেট

২.
ছাত্রবিপ্লবের দশকে প্রবেশ করি, সাতের দশকে। আমাদের এখানে নকশালবাড়ি অভ্যুত্থান হয়েছিল, ছাত্রবিপ্লব হয়নি কিন্তু। ছাত্ররা তাতে অংশ নিয়েছিলেন, প্রাণ দিয়েছিলেন, লড়াই করেছিলেন, একাত্মবোধ করেছিলেন। কিন্তু সেটা শুধু ছাত্রদের বিষয় না। বয়স্ক লোকেরা ছিল তাঁদের নেতা। ওদিকে, প্যারিসে যখন ছাত্র আন্দোলন হচ্ছিল, তার নেতা কন বাঁদি ও আঁরি লেফে ভ্র– তাঁরা সাধারণ ছাত্র। জার্মানিতে রুডি ডুজকে, তিনিও ছাত্রনেতা– তাঁর সঙ্গে বড় দার্শনিকরা আন্দোলনে বসছেন। আমাদের এখানে এসব ভাবতেও পারবে না। এখানে চারু মজুমদার আগে, সরোজবাবু আগে, তাঁদের পিছনে পিছনে চ্যালাদের দল। প্যারিসের ছাত্ররা গড়তে পেরেছিলেন ওই ব্যারিকেড, আমরা পারিনি। এই জুনিয়ার ডাক্তারদের আন্দোলনের সময়ও পারিনি।

সেসময় ‘নিউজ উইক’-এর সদস্য করে দিয়েছিলেন আমার মা আমাকে, সেখানে দেখতাম, শার্ল দ্য গল ছিলেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী। তিনি তখন সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়েছেন। ফ্রান্সের কমিউনিস্ট পার্টি এখানকার মতোই রিঅ্যাকশনারি। রাষ্ট্র বনাম ছাত্রের যে আন্দোলন, সেখানে তারা ছাত্রদের সঙ্গ দিল না। লুই আরাগোঁ, কমিউনিস্ট পার্টির নেতা, বিখ্যাত সাহিত্যিক, কবি, বলেছিলেন, ‘না, শ্রমিকরা যাবে না। ছাত্রদের সঙ্গ দেবে না।’ কিন্তু শ্রমিকরা বললেন, তাঁরা যাবেন।

১৯৬৮-এর ছাত্র আন্দোলন। প্যারিস। সূত্র: ইন্টারনেট

ওদিক থেকে তখন কামান দাগার মতো অবস্থা! ছাত্র-শ্রমিক একদিকে। আরেকদিকে রাষ্ট্র, মানে রাষ্ট্রের সৈন্য। মাঝে ব্যারিকেড। সেই মিছিলে কন বাদিঁদ এবং আঁরি লেফেভ্রা বলে উঠলেন, ‘চুমু খাও। তোমরা প্রেম করো।’ এবং ওই আন্দোলনে রাষ্ট্রক্ষমতার উঁচিয়ে থাকা বন্দুকের সামনে শুরু হল চুমু খাওয়া। কেউ কাউকে চেনেন না তেমন, কিন্তু সকলেই চুমু খাচ্ছেন। রাষ্ট্রের কিছু তো করার নেই সেই মুহূর্তে। ‘মেক লাভ অ্যান্ড নট ওয়ার’। এই কথাটা এল এইখান থেকেই।

………………………………………….

পড়ুন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের লেখা: ওই ছেলেমেয়ে দু’টির উচিত পরদিন ওই মেট্রো স্টেশনে গিয়ে আবার চুমু খাওয়া

………………………………………….

ফরাসি দেশের ঘটনা। অসামান্য একটা ঘটনা। বন্দুকের সামনে চুমু খাচ্ছেন, আদর করছেন, জামাকাপড় খুলে ফেলছেন। আক্ষরিক অর্থে তাঁরা আদর করছেন! সৈনিকরা হতভম্ব! যখন এই ঘটনা ঘটছে, তখন আমি উত্তেজিত হয়ে কাগজে কাগজে পড়তে করেছিলাম এই আন্দোলন নিয়ে। পড়েছিলাম যে, অনেক সৈনিককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তোমরা গুলি চালালে না কেন? শুট অর্ডার ছিল তো! মনে রাখতে হবে, এই আন্দোলন আরেকটু চললেই সরকার পড়ে যেত, কোনও যুবক বা যুবতী নেতা হতেন। খুব সম্ভবত কোনও যুবতীই!

Image
ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন সীমান্ত। একটি চুমু, যুদ্ধজয়। সূত্র: ইন্টারনেট

এই ঘটনার দু’-তিন বছর পর এই জায়গাগুলোয় আমি নিজে গিয়েছিলাম। গানেরই কাজে। প্রত্যক্ষ করলাম এ এক আশ্চর্য আলোকিত জায়গা! মেলামেশার জায়গা। ভাগ করে নেওয়ার জায়গা। তো, ফিরে যাই সেই প্রশ্নে, যেখানে সৈনিককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কেন তুমি গুলি চালালে না? সৈনিকটি বলেছিলেন, ‘হাউ কুড আই কিল আ কিস?’ চুমুকে আমি মারব কী করে! এর থেকে বেশি সুন্দর কিছু হতে পারে বলে আমার জানা নেই। ক’দিন আগে একটা ছবি দেখলাম, একজন ইজরায়েলি এবং এক প্যালেস্তাইনের মেয়ে সীমান্তে দাঁড়িয়ে নিজেদের জড়িয়ে ধরে চুমু খাচ্ছে। এটাই বিদ্রোহ, এটাই ঘোষণা। একমাত্র ঘোষণা।

৩.

আমার অল্পবয়সের একটা গানে লিখেছিলাম, ‘‘তার দু’টি চোখ যেন খাঁচায় বন্দি হরিণী/ মুক্তির দাবিদাওয়া জানাতে সে আজও পারেনি/ তার চোখে জ্বলে ওঠো স্বাধীনতা/ তার দেহে ঘষা খাও স্বাধীনতা/ এই অশনি হানবে তার দৃষ্টি/ তুমি শুকনো মাটিতে এনো বৃষ্টি/ তার চোখে কেঁপে ওঠো স্বাধীনতা/ তার চোখে ধার হও স্বাধীনতা/ ট্রাফিক থামিয়ে চুমু স্বাধীনতা/ তাকে নিয়ে প্রতিরোধ স্বাধীনতা।’ আমি এখনও মনে করি, যিনি আমার প্রেমিকা হবেন, তিনি হয়তো নিরন্তর পাল্টাচ্ছেন, তার পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে আমিও পাল্টাচ্ছি। কিন্তু যেই লড়াইটা হবে তখন তিনি আর আমি একসঙ্গে। আমরা আছি হাত ধরে, আমরা থাকব।

……………………………….

পড়ুন হিয়া মুখোপাধ্যায়ের লেখা: ইমরান হাশমিই শিখিয়েছেন সক্কলের এক-একটা নিখাদ চুমুতে হক আছে

……………………………….

নন্দীগ্রামে যখন সিপিএম গণহত্যা করল, তখন ভরত মণ্ডলের বাড়িতে আমরা গিয়েছিলাম। ‘তারা’ চ্যানেল থেকে। আমি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। ভারত মণ্ডলের স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘কী হয়েছিল?’ বললেন, ‘আমরা বাড়িতে খাওয়াদাওয়া করে বসেছিলাম। হঠাৎ বন্দুকের আওয়াজ। সে আওয়াজ পেতেই দুটো বাচ্চাকে মায়ের কাছে রেখে ভরত আর আমি হাত ধরাধরি করে ছুট লাগালাম।’ ভাবুন পাঠক, ‘হাত ধরাধরি করে’। ‘কোথায় ছুট লাগালেন?’ তিনি বললেন, ‘যেখান থেকে আওয়াজ আসছে বন্দুকের।’ গ্রামের চাষির মেয়ে হাত ধরে ছুটছে, যে মুহূর্তে তাঁর হাত ছাড়িয়ে এগিয়ে গেলেন ভরত, তিনি গুলি খেলেন। এই হাত ধরা শুধু দু’জনের নয়, সব্বার হয়ে ওঠে। এই ঘটনাগুলোই আমার জীবনকে ছুঁয়ে যায়।

This may contain: a man sitting on top of a traffic light
সূত্র: ইন্টারনেট

এই বুড়ো বয়সেও, আমার এক বান্ধবীকে বলেছিলাম, ‘রাস্তায় যখন ট্রাফিক থাকবে, তখন চুমু খাবে?’ সে রাজি হয়েছিল। সে ঘটনা এখনও ঘটেনি। তবে হইয়ে দিতে হবে। রাস্তা আটকে আমি চুমু খাবই খাব! এটা কী? একটা ছেলেমানুষিই তো! কিন্তু এই ছেলেমানুষি অনেক কিছু করে ফেলতে পারে। এও ভেবেছিলাম যে, একটা থিয়েটার করব। সেখানে শুধুই চুমু খাব। লোকজন চেঁচাবে, ‘চুমু খাচ্ছেন কেন?’ স্টেজ থেকে চেঁচিয়ে বলব, ‘আমি খাচ্ছি, আপনারা খান না, তাই।’

………………………………………

পড়ুন প্রিয়দর্শিনী চিত্রাঙ্গদার লেখা: পুরুষ-নারীর চুম্বন ‘রোমান্স’ আর দুই নারীর চুম্বন ‘প্রচণ্ড সাহসী কাজ’?

………………………………………

আমার কাছে ভালোবাসাটা এখনও বিয়ের প্রস্তুতি নয়। কিন্তু কোথা থেকে যেন বিয়েটা চলে আসে। কেন আমরা স্বাধীন নই এখনও? ভালোবাসার মতো স্বাধীন? বিয়ে এখন এমন একটা প্রতিষ্ঠান যে নিজেই নিজেকে খেয়ে ফেলছে। এত বিয়ে হচ্ছে, এত ডিভোর্স! যা যা ভেবেছিল– বিয়ে করলে এই হবে, সেই হবে– হচ্ছে না কিছুই। তখন আবার বিদ্রোহ আর চুমুর দিব্যিতে ফিরে আসা।

আমার জীবন বিচিত্র। ঘটনাবহুল। আর এই সমস্ত ঘটনার মধ্য দিয়েই বুঝেছি, প্রেম কখনওই একবার আসে না। বারবার আসে। যদিও দেবাশিস আর আমার প্রেমটা ইউনিক হয়ে থেকে গিয়েছে। মাঝে মাঝে ভেবেছি, আর কোনও দেবাশিস কি আসবে আমার জীবনে? এসেছিল।

This may contain: black and white photograph of two people kissing each other in front of a large crowd
সূত্র: ইন্টারনেট

আমি একবার, সমকামীদের নিয়ে একটা সিনেমায় মিউজিক করেছিলাম। পুরুষ-সমকামী। ২০০৪-’০৫ হবে। এক এনজিও করেছিল কাজটা। সেই কাজ করতে গিয়েই একটি ছেলে, ধরা যাক, তাঁর নাম সোমনাথ, তাঁকে ভালো লেগে গেল। তিনিও আমার প্রেমে পড়লেন। সে যুবক, অপূর্ব সুন্দর। আমরা দু’জন কাঁধে হাত দিয়ে মুখের দিকে চেয়েছিলাম। আমাকে তিনি বলেছিলেন, ‘সুমন, আমি তোমাকে এমন চুমু খাব যে, জীবনে কোনও মেয়েকে স্পর্শ করবে না।’ এই হল বিদ্রোহ, এই হল চ্যালেঞ্জ। সভ্যতার বিরুদ্ধে দ্রোহ। নারী-পুরুষের যে যুগ্মতার মধ্য দিয়ে যে মিলন ও সভ্যতা, সেই যুবক এই সভ্যতাকে প্রশ্ন করছেন। সেই অধিকার ওঁর আছে। সেই যুবক সেই চুমুটি খাননি আমাকে। আমার একাধিক সমকামী মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, কলকাতার সমকামী সমাজকে যাঁরা চেনেন না, তাঁরা কলকাতাকে চেনেন না।

This may contain: two people are in the air with their arms around each other

একটা চুমু বা ভালোবাসাকে সবসময় নরম করে দেয় আমাদের সমাজ। কিন্তু ভালোবাসার মধ্যেই তো থাকে না-মানার জোর, বদলে ফেলার স্পর্ধা– সেটা হারিয়ে যেতে দেওয়া অনুচিত। আমার মতো বুড়ো মানুষ, যার সময় হয়েছে, সে এখন দেখতে পাচ্ছে, এই জোরটা কমে যাচ্ছে, খারাপ লাগছে তাই। মিছিলে হাঁটছি যখন আমরা, হাজার হাজার মানুষেরা, বন্ধুর মতো হাঁটছি। চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করছি, কোথায় থাকো কমরেড? উত্তর আসছে উল্টোদিক থেকে। এই জনস্রোত, এই বিনিময়, এটা একটা ঘটনা।

সাহসী মানুষের ভালোবাসা পাল্টে দিতে পারে সব। চুমু একটা বোমার মতো হতে পারে। চুমু হতে পারে আমাদের নতুন ট্রাফিক সিগনাল। হতে পারে একটা ইশারা– ডানদিকে না বাঁদিকে।