দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম সাহিত্যিক হিসেবে হান কাং এ বছর সাহিত্যে নোবেল পেলেন। ২০১৬ সালে ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছিলেন ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল। শেষ কয়েক বছরের সাহিত্যে নোবেল ও বুকার প্রাপকদের নামের তালিকায় চোখ বুললেই দেখা যায়– বুকার যদি বা পাঠকপ্রিয় লেখকদের গ্রাহ্য করে, নোবেল পুরস্কারের মেজাজ অনেকটা শেষের কবিতার অমিত রায়ের মতো– ‘যারা নামজাদা তারা ওর কাছে বড়ো বেশি সরকারি, বর্ধমানের ওয়েটিংরুমের মতো; আর যাদেরকে ও নিজে আবিষ্কার করেছে তাদের উপর ওর খাসদখল, যেন স্পেশাল ট্রেনের সেলুন কামরা।’ সে তুলনায়, এ বছরের সাহিত্যে নোবেল প্রাপক হান কাং বরং পাঠক মহলে অনেক বেশি পরিচিত।
কয়েক দশক আগে কবি অনন্য রায় লিখেছিলেন,
‘উন্মোচিত হয়
ঘায়ের গোলাপ, ক্ষতের স্ফটিক বিন্দু
… চাঁদের ক্যাক্টাস’
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম সাহিত্যিক হিসেবে হান কাং এ বছর সাহিত্যে নোবেল পেলেন। ২০১৬ সালে ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছিলেন ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল। শেষ কয়েক বছরের সাহিত্যে নোবেল ও বুকার প্রাপকদের নামের তালিকায় চোখ বুললেই দেখা যায়– বুকার যদি বা পাঠকপ্রিয় লেখকদের গ্রাহ্য করে, নোবেল পুরস্কারের মেজাজ অনেকটা শেষের কবিতার অমিত রায়ের মতো– ‘যারা নামজাদা তারা ওর কাছে বড়ো বেশি সরকারি, বর্ধমানের ওয়েটিংরুমের মতো; আর যাদেরকে ও নিজে আবিষ্কার করেছে তাদের উপর ওর খাসদখল, যেন স্পেশাল ট্রেনের সেলুন কামরা।’ সে তুলনায়, এ বছরের সাহিত্যে নোবেল প্রাপক হান কাং বরং পাঠক মহলে অনেক বেশি পরিচিত। বর্ধমানের ওয়েটিংরুম না হলেও অন্তত শিলিগুড়ি বা নিউ জলপাইগুড়ির ওয়েটিংরুম বলা চলে তাঁকে। যেসব ভ্রমণপ্রিয় পাঠক নিজের চেনা চৌহদ্দির বাইরে কোরিয়ান সাহিত্যে গ্রীষ্মাবকাশে কখনও-সখনও গিয়েছেন, হান কাং তাঁদের কাছে পরিচিত নাম। আর ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ তো রীতিমতো সাড়া জাগানো বই! এর সিনে অ্যাডাপটেশনকে অনেকেই আর্ট হাউস ঘরানার এশীয় বডি হরর বলেছেন বটে, কিন্তু অনেক সমালোচক বডি হররের অন্যতম স্রষ্টা ডেভিড ক্রোনেনবার্গের কিছু সিনেমা, পিটার গ্রিনাওয়ের ‘দ্য পিলো বুক’ ইত্যাদির সঙ্গে এর মিলের কথা বলেছেন। পরিচালক লিম উ সিঅং তাঁর এই প্রথম সিনেমাতেই বুসান এবং সানড্যান্স ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন।
লেখিকা ২০১২-এ লিটারেচার ট্রান্সলেশন ইনস্টিটিউট অফ কোরিয়ার মুখপত্রে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, পরিচালকের অ্যাডাপটেশনে তিনি বেশ সন্তুষ্টই, কিন্তু বিপণনের জন্য প্রযোজক ও বাণিজ্যিক সংস্থা যেভাবে শুধু যৌনতাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে, সেটা তাঁর অপছন্দের। সিনেমাটা জোগাড় করা এখন বেশ কষ্টসাধ্য! কিন্তু উপন্যাসটা পড়তে পড়তেও বিভিন্ন সিনেমার টুকরো ছবি মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। যৌনতা আর উদ্ভটরসের ককটেল পার্ক চান উকের ‘দ্য হ্যান্ড মেইডেন’, ইয়োর্গোস ল্যান্থিমোসের ‘ডগটুথ’-এর মতো সিনেমার কথা মনে করায়। মানুষের মাংস নিয়ে ক্যানিবালিজম সম্পর্কিত সিনেমা অনেক তৈরি হয়েছে। বাঙালিদের প্রথমেই মনে পড়বে ভাস্কর হাজারিকার ‘আমিষ’-এর কথা। কিন্তু আমিষ যে গোত্রের সিনেমা, তার চেয়ে বেশ ভিন্ন কিছু জাপানি বডি হরর ফিল্ম আছে, যেগুলোর প্রচ্ছন্ন প্রভাব এই উপন্যাসে যে একেবারেই নেই, সেকথা নস্যাৎ করা যায় না। হান কাংকে বোঝার জন্য সিনেমার সূত্র ধরেই আমরা দক্ষিণ কোরিয়ার সাহিত্য ও সংস্কৃতির অতীতচারণ করে নিলে কাংকে বোঝার প্রেক্ষিত একটু স্পষ্ট হবে।
কোরিয়া ১৮৭০-’৮০-এর দশক অবধি বহির্বিশ্বের সঙ্গে প্রায় সব রকমের সংস্রব এড়িয়ে চলত। সেসময় কোরিয়ায় যে রাজবংশ রাজত্ব করত, তারা নিজেদের এলাকায় স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারলেও সামরিক ও বৈদেশিক সম্পর্কের জন্য চিনের ছিং রাজবংশের অধীনস্থ ছিল। ওদিকে জাপানে ১৮৬৮-এর পর থেকে মেইজি সংস্কার শুরু হলে জাপানের আধুনিকীকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বহির্বিশ্বের সঙ্গে শুধু যোগাযোগ স্থাপনই নয়, ধীরে ধীরে শুরু হয় জাপানের সাম্রাজ্যবাদী নীতির আগ্রাসন। ১৮৭৬-এ জাপানের কূটনৈতিক চাপে কোরিয়া প্রথমবারের জন্য বাধ্য হয় বহির্বিশ্বের কোনও দেশের জন্য তিনটে বন্দরপোত উন্মুক্ত করতে। ভারতের ঔপনিবেশিক ইতিহাসের সঙ্গে এখানে বেশ মিল আছে। কোরিয়াতেও ওই বন্দর দিয়ে ক্রিশ্চান মিশনারিরা প্রবেশ করে, সঙ্গে করে আনে পাশ্চাত্যের হাওয়া। জাপানে ইতিমধ্যে পাশ্চাত্য সাহিত্যের প্রবেশ ঘটে গিয়েছে। জাপানি অনুবাদে বিপুল পরিমাণে সেসব বইপত্র এবার পৌঁছতে থাকে কোরিয়াতেও। ১৯১০ থেকে পাকাপাকিভাবে জাপানি সাম্রাজ্যবাদ গেঁড়ে বসে কোরিয়ায়। ভারতের দু’বছর আগেই ভারতের মতো একই দিনে ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট কোরিয়া স্বাধীনতা লাভ করে বটে, কিন্তু ঠান্ডা যুদ্ধের সময়ে কোরিয়া দ্বিখণ্ডিত হয়ে গিয়ে এর উত্তর অংশ শাসন করে সমাজতন্ত্রী রাশিয়া এবং দক্ষিণ অংশ শাসন করে ধনতন্ত্রী আমেরিকা। সে বিভেদ এতই স্থায়ী হয়ে যায়, যে ভারত পাকিস্তানের মতো দুটো দেশের সৃষ্টি হয়, যা এখনও বিদ্যমান।
এ ইতিহাস এই কারণেই বলা, ভারতে যেমন ঔপনিবেশিকতার ফলে ইংরেজি সরকারিভাষা হয়ে দাঁড়ায়, তেমনই, কোরিয়াতে ৩৬ বছর স্কুল-কলেজ-আদালতে কোরিয়ান ভাষার বদলে জাপানি ব্যবহৃত হত। সরকার বিরোধী কোনওকিছুই লেখা যেত না এ সময়ে। ফলে বলাই বাহুল্য, ভাষাহীন দেশের নাগরিকরা কতটা জাপানি ভাষা ও সংস্কৃতির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
এবার ফিরে আসা যাক বডি হরর ও জাপানি সিনেমার প্রসঙ্গে। হিরোসিমা-নাগাসাকির ভয়াবহতার পর বিশ্বজুড়েই এক বিশেষ ধরনের পারমাণবিক ধ্বংসলীলার ভীতি কাজ করে। বিশেষ করে আমেরিকায়। আমেরিকান মধ্যবিত্তের মনের অপরাধবোধ ও ভীতির দোলাচলকে কাজে লাগায় বি গ্রেডের সিনেমাগুলো। পারমাণবিক আতসে কদর্য বিকৃত হয়ে যাওয়া চেহারাগুলো পর্দার ছবিতে একটার পর একটা দানবিক জন্তুর জন্ম দিতে থাকে। যার মধ্যে আমজনতার বোঝার জন্য সবচেয়ে আইকনিক চরিত্র– গডজিলা। জাপানি সিনেমার বডি হররেও তার ছাপ থাকে কিছু। আরও পরে যখন তা মিশে যায় ক্যানিবাল ট্রোপের সঙ্গে, তখন তা প্রকাশ পায় কখনও জুঞ্জি ইতোর মতো মাঙ্গা আর্টিস্টের কাজে, কখনও বা হিসায়াসু সাতোর ‘স্প্ল্যাটার: নেকেড ব্লাড’, ইউদাই ইয়ামাগুচির ‘মিটবল মেশিন’ ইত্যাদি সিনেমার নেপথ্য প্রেক্ষিতে।
হান কাং-এর কাজ এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? কারণ তিনি কদর্য ক্লেদাক্ত পৃথিবীর নন্দনতত্ত্ব রচনা করেন নিরীহ সব খেলনাবাটি দিয়ে। যেসব মাঙ্গা বা সিনেমার কথা আলোচনা করলাম, সেগুলো বীভৎস, ভয়ংকর– সন্দেহ নেই। কিন্তু হিংস্রতা দেখানোর জন্য রক্তের দৃশ্যায়নে কি খুব বাহাদুরি আছে? আমাদের নিয়মিত অভ্যাসে, দৈনন্দিন যাপনে যে নিপীড়িত অত্যাচার আছে, তার দৃশ্যায়ন তো বহিরঙ্গে রক্তক্ষরণের মাধ্যমে হয় না! এদিকে অভিজ্ঞতা আমাদের পাল্টে দেয়। যেমন গ্রেগর সামসা পোকা হয়ে যায়, ভেজিটেরিয়ানের কেন্দ্রীয় চরিত্র গাছ হয়ে উঠতে চায়। বাংলা কবিতায়, গদ্যে আমরা বারবার দেখেছি রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দ, বিভূতিভূষণ, শক্তি, জয় থেকে এখন অনুপম রায়ের আকুতি– ‘এবার মরলে গাছ হবো’। চারপাশে সবুজের বন্দনা। কিন্তু যা এতই কাঙ্ক্ষিত, সেটাই কী হয়ে উঠতে পারে বিষ? দেরিদা ‘প্লেটোস ফার্মেসি’ নামে এক প্রবন্ধে দেখিয়েছিলেন গ্রিক শব্দ– ‘ফার্মাকন’-এর বহু অর্থ আছে। তা দিয়ে যেমন ‘নিরাময়’ বোঝায়, তেমনই তার অপর অর্থ ‘বিষ’। ভেজিটেরিয়ান সেই গোত্রের উপন্যাস যা পরস্পরবিরোধীই শুধু নয়, এই দ্বিচারিতাকে রীতিমতো উদযাপন করে। পাশবিকতা দেখানোর জন্য পশু হত্যা দেখানো বরং সোজা, কিন্তু সেই মানুষটাকে সমাজ কোথায় রাখবে, যে নিজেই গাছ হয়ে উঠতে চায়? সে তো পশু হত্যা করবে না বলে আমিষ খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে! সত্যিই কতটা নিরীহ এ অহিংস খাদ্যরুচি? ভারতের দিব্যি! ইতিহাস সাক্ষী। মজার ব্যাপার, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে ভেগান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এ সিনেমার স্ক্রিনিং হয়েছিল। একইভাবে চরমপন্থী ভেগানদের দৌরাত্ম্যের বহরও কান পাতলেই শোনা যায়। কাং কোনও উত্তর দেননি। নিস্পৃহ নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে এক রূপান্তরের গল্প বলেছেন। একটা মানুষের গাছ হয়ে ওঠার গল্প। উপন্যাসের বিস্তার তিনটে ভাগে। দু’বছর দু’বছর বাদে বাদে। তিনজন কথক।
কেন্দ্রীয় চরিত্র ইয়োং হৈ নামের এক মহিলা। রূপ, গুণ কোনওটাতেই সে এমন কিছু আহামরি নয়। খুবই সাধারণ। গড়পড়তা। একটা জীবিকা আছে বটে, কিন্তু স্বামী সেটাকে খুব একটা পাত্তা দেয় না। নেশার মধ্যে এক, শুধু বই পড়া। ঘরোয়া, কম কথা বলে। রান্না-বান্না করে দেয়। এককথায় নিরুপদ্রব অস্তিত্ব। সেই মহিলাই একদিন এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখে ধনুকভাঙা সিদ্ধান্ত নেয়, যে কোনওরকমের পশুজাত খাদ্য সে আর কোনও দিন ছুঁয়ে দেখবে না। শুধু আমিষ নয়, এমনকী, দুধ পর্যন্ত। এই একটা সিদ্ধান্তই সব কিছু পাল্টাতে থাকে। প্রথম পর্বের কথক তার স্বামী, তারপরের পর্বের কথক তার বোনের বর, শেষ পর্বের কথক তার বোন। এই বয়ানে প্রায় আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে আছে যৌনতা। মনের সব অবৈধ ইচ্ছা। বেশিরভাগই পুরুষের ধর্ষকামের চাহিদা। পাঠক প্রথমেই জানতে পারে, মহিলা ব্রা পরতে পছন্দ করে না, ফলে তার স্তনবৃন্ত বাইরে থেকে দেখা যায়, তারপর কিছুটা এগোতেই জানতে পারা যায় রান্না করতে করতে সে প্রায়শই তার পোশাক খুলে ফেলে। দোহাই দেয়, গরম লাগছে। এটা নয় যে সে স্বামীর সঙ্গে সহবাসে ইচ্ছুক, বরং তার ঠিক উল্টোটাই ঘটে। দিনের পর দিন স্ত্রীকে শয্যাসঙ্গী হিসেবে না পেয়ে, স্বামীর মাথায় রাগ চেপে বসে। সে জোর করে সঙ্গম করে। বারবার। নিস্পৃহ মড়ার মতো পড়ে থাকে মহিলা।
উপন্যাসের পরবর্তী অংশে মহিলার যৌনইচ্ছার বয়ান পাই বটে, কিন্তু সেটা সমাজবিরুদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। আপাত স্থবির বয়ানে যৌনতার সর্পিল যাতায়াত প্রথাবিরুদ্ধ অবচেতনের অলিগলিতে। হিংস্র বর্বরতার খতিয়ান মাঝে মাঝে পাঠককে ঝাঁকিয়ে দিয়ে যায়। যেন দুধ সাদা ধবধবে সাদা চাদরে ফোঁটা ফোঁটা রক্তের দাগ। সাদা রঙের বিধ্বংসী প্রয়োগ কাং অন্য একটা বইতে করেছেন, যার নাম ‘দ্য হোয়াইট বুক’। জন্ম-মৃত্যু নিয়ে এমন নির্বিকার নিরুত্তাপ বই কমই লেখা হয়েছে। সে বইতে সব কিছুই সাদা, শুধু মাঝে মাঝে হয়তো সাদা বরফে দেখা যায় পাখির পা, লাল রং। সাদা কোটের ওপর ঝুরঝুরে বরফ পড়লে তার ক্রিস্টাল দেখা যায়।
এই বৈপরীত্যের সহাবস্থানই তাঁর লেখার বৈশিষ্ট্য। অস্তিত্বের অতীন্দ্রিয় অস্বস্তি ধরা পড়ে তাঁর লেখায়। উত্তরাধুনিক সমাজে আমাদের প্রত্যেকেরই বুকের ভিতর রক্তক্ষরণ চলছে অবিরত। আমরা চেপে যাচ্ছি রোজ। লোকলজ্জার ভয়ে, মানহানির ভয়, গড্ডলিকা প্রবাহের বিপরীতে একা হওয়ার ভয়ে। কাং সেসব টেনে খুলে ফেলেন। আমরা বিস্ময়ে আবিষ্কার করি, ইয়োং হৈ-এর মঙ্গোলিয়ান মার্ক বা জন্মজড়ুলের মতো আমরাও বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি সময়ের ক্ষতচিহ্ন, যেগুলো নির্মমভাবে ফুল হয়ে ফুটে উঠবে সময়শিল্পীর আঁচড়ে। প্রথম কোরিয়ান সাহিত্যিকের নোবেলপ্রাপ্তি সেই জড়ুলেই পুষ্পিত উল্কি।
.………………………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
…………………………………………………