১৮ দিনের বিশ্বখেতাবি লড়াই। মহাভারতসম। গুকেশের পক্ষে ছিলেন বিশ্বনাথন আনন্দ। অর্জুনের সারথী হিসেবে কৃষ্ণের যে ভূমিকা, তার চেয়ে কোনও অংশে কম নয় আনন্দের ভূমিকা। আনন্দ পাঁচবারের বিশ্ববিজয়ী। নিজের তরুণ বয়সে বিশ্বখেতাবি লড়াইয়ে কারপভ আর কাসপারভকে প্রতিস্পর্ধা জানিয়েও পরাজয় স্বীকার করেছিলেন। পরে অবশ্য প্রত্যাঘাত করেছিলেন। ক্রামনিক, টোপালভ, গেলফাঁর মতো তাবড় দাবাড়ুদের হারিয়ে বিশ্বখেতাব দখলে রেখেছেন। বিশ্বজয়ের লড়াইয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা প্রচুর। সেই অভিজ্ঞতা আর দর্শন চারিয়ে দিয়েছেন গুকেশের মধ্যে।
দাবার অন্য তত্ত্ব জানার আগে এন্ডগেমের তত্ত্ব জানা সবচেয়ে জরুরি।
যে দাবাড়ু এন্ডগেমে দক্ষ, সে সামগ্রিক দাবাতেও দক্ষ। বহু দশক আগে দাবাচর্চায় নতুন দিশা দিয়ে গিয়েছিলেন হোসে রাউল ক্যাপাব্ল্যাঙ্কা। ওপেনিংয়ের দানপর্যায় নখদর্পণে থাকা প্রয়োজন, মিডলগেমে কৌশলের বহুমুখী প্রয়োগ সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে। কিন্তু এন্ডগেমে যদি দক্ষতা না থাকে, যদি এন্ডগেমের তত্ত্বের বাস্তবপ্রয়োগ জানা না থাকে, তাহলে জিত হাসিল হবে না। একটা ভালো গেম এন্ডগেম পর্যায়ে এসে শেষ হয়। আর, একটা ভালো এন্ডগেম সমস্ত গেম ধরে তৈরি হওয়া ভালো-মন্দ মুহূর্তকে অমোঘ পরিণতি দেয়।
ডিং লিরেন বনাম গুকেশ দোম্মারাজুর বিশ্বখেতাবি লড়াই সেই এন্ডগেমেই পরিণতি পেল। ১৪ নম্বর তথা শেষ ক্লাসিকাল গেমে এসে শেষ মুহূর্তে ব্লান্ডার দিলেন ডিং। এন্ডগেম। ডিংয়ের চরম ব্লান্ডার দেখে মুহূর্তের জন্য থমকে গেলেন গুকেশ। চোখে বিস্ময়, অবিশ্বাস আর শত্রুবধের শস্ত্র পেয়ে যাওয়ার আনন্দ যুগপৎ খেলা করছে। সময় নিলেন গুকেশ। সত্যিই এত বড় ভুল করলেন ডিং? ১৩টি ম্যাচ ধরে সমানে সমানে লড়াই। দু’জনেরই ৬.৫ পয়েন্ট। গুকেশ দুটো জিতেছেন। ডিংও দুটো। বাকি ন’টি ম্যাচ ড্র। শেষ গেমের শেষ পর্যায়ে এসে যখন সক্কলে ধরে নিয়েছেন এই গেমের পরিণতি ড্র, তখনই এমন ভুল করলেন ডিং? ভেতরে ভেতরে চলতে থাকা উত্তেজনার ঝড় শান্ত করে নির্ভুল দান দিলেন গুকেশ। জল খেলেন। Rxf2 তারপর Bd5! এবার অপেক্ষা। তারপরেই এল বহু আকাঙ্ক্ষিত বিজয়মুহূর্ত। Ke5! ডিং লিরেন পরাজয় স্বীকার করে নিলেন। আনন্দে কেঁদে ফেললেন গুকেশ। দাবাবিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ বিশ্বখেতাবজয়ী দোম্মারাজু গুকেশ।
‘দাবা খুব কঠিন আর মনস্তাত্ত্বিকভাবে বিপজ্জনক ক্রীড়া, এতে ইস্পাতকঠিন স্নায়ুর প্রয়োজন’– আনাতোলি কারপভ
১৪ নম্বর রাউন্ড শুরু হয়েছিল কিংস ইন্ডিয়ান অ্যাটাক দিয়ে। ডিংয়ের সাদা, গুকেশের কালো। ছ’নম্বর দানে মূল ওপেনিং-শাখা থেকে সরে গেলেন গুকেশ। ডিংও প্রস্তুত ছিলেন। ধীরে ধীরে সুবিধেজনক অবস্থায় পৌঁছলেন ডিং। পজিশনে অসামঞ্জস্য তৈরি করে সুবিধেজনক অবস্থায় পৌঁছানোর লড়াই, বিপক্ষের জমি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা, নিজের পিসগুলিকে সঠিক অবস্থানে সচল রাখা এইসব নীতিই প্রয়োগ করছিলেন ডিং এবং গুকেশ। লিরেন যখন কুইনের দিকের পন খাওয়ালেন, তখনও দু’জনের পজিশন সমান। গুকেশের একটি পন বেশি। রুক এবং সমবর্ণের বিশপ এন্ডগেম সাধারণত ড্র হয়। কালোর একটি পন বেশি থাকলেও এন্ডগেমের তত্ত্ব অনুযায়ী, ড্র হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। ঠিক এই অবস্থান থেকে গুকেশের খেলার নীতি পাল্টাল। ড্র যদি করতেই হয়, তাহলে তা সাদাকে করতে হবে। কালো জেতার জন্য চাপ বাড়িয়ে যাবে এবং সঠিক সুযোগের অপেক্ষা করবে। খেলাটা শুধু এন্ডগেমে আটকে রইল না, স্নায়ুযুদ্ধে রূপান্তরিত হল।
২০১৮ সালের বিশ্বখেতাবি লড়াইয়ের প্রথম গেমে ম্যাগনাস কার্লসেন ফ্যাবিয়ানো কারুয়ানার বিরুদ্ধে এই নীতিই নিয়েছিলেন। রুক এন্ডগেমে কার্লসেনের একটি পন বেশি ছিল। তত্ত্বগতভাবে ড্র। কিন্তু কার্লসেন দীর্ঘ সময় ধরে কালোর দুর্গ ভাঙার চেষ্টা করেছিলেন। ৫৫ দানে যে খেলায় ড্র মান্যতা পায়, তাকেই ১১৫ দান অবধি টেনে নিয়ে গেছিলেন কার্লসেন, কালো ঘুঁটি নিয়ে। মূল লক্ষ্য ছিল মনস্তাত্ত্বিক চাপ বাড়ানো। ‘এটা বিশ্বখেতাবি লড়াই, এখানে সহজ ফলাফল হবে না’– এই সারবাক্য বুঝিয়ে দেওয়া। আর, তত্ত্বগতভাবে ড্র কিংবা দাবাইঞ্জিনের গণনা অনুযায়ী, ড্র হওয়ার সঙ্গে বাস্তবে ড্র হওয়ার ফারাক অনেক। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সঠিক দানপর্যায় গণনা করা, অনুশীলিত তত্ত্বের যথাযথ প্রয়োগ ঘটানো এবং স্নায়ুর চাপ সামলে নিরন্তর প্রতিরোধ– এর কোনও একটায় গড়বড় হলেই ম্যাচ হাতের বাইরে চলে যাবে। সেটাই হল ডিং লিরেনের ক্ষেত্রে। সকলে এমনকী, ধারাভাষ্যকাররাও যখন ধরে নিয়েছেন খেলাটি ড্র হচ্ছে, তখনই আচমকা ব্লান্ডার। ভেঙে পড়ল ডিংয়ের সব প্রতিরোধ! যতক্ষণ না খেলা শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত জেতার অদম্য বাসনায় প্রতিপক্ষকে তাড়া করে কোণঠাসা করা এবং তাকে সময়-শেষের চাপে ফেলে একটা ভুলের জন্য অধীর অপেক্ষা। অবশেষে সেটাই হল। রুক+বিশপ এন্ডগেমে একটা পন কম থাকা মানে সরু দড়ির ওপরে হাঁটা, ব্যালান্স রাখতে পারলে নিশ্চিত ড্র। ডিং ব্যালান্স হারালেন মোক্ষম সময়ে যখন ফিরে আসার সমস্ত পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
প্রথম রাউন্ডে ডিং জিতেছিলেন। গুকেশের সাহসী লড়াই কাজে আসেনি। ক্রীড়াবিশ্ব স্বস্তি পেয়েছিল ডিং লিরেনের প্রত্যাবর্তনে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে ইয়ান নেপোমনিয়াৎশিকে হারিয়ে বিশ্বখেতাব জেতার পরে ক্রীড়ামহল থেকে উধাও হয়ে গেছিলেন ডিং। বিশ্বখেতাবজয়ী কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন না, অন্য দাবাড়ুদের প্রত্যাহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন না, এমনটা আগে কখনও হয়নি। ২০২৪ সালের বিশ্বখেতাবি লড়াইয়ের আগে দেড় বছরে হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিযোগিতায় খেলেছেন ডিং। হেরেছেন বেশিরভাগ। ফিডে রেটিং হুড়মুড়িয়ে কমেছে। কার্লসেনের বিরুদ্ধে একটি গেমে শিক্ষানবিশের মতো ভুল করেছেন। বিশ্বখেতাবধারীর এমন পারফরম্যান্স অপ্রত্যাশিত।
………………………………………………….
গুকেশ টগবগে তরুণ, জেতার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। নিজের যাবতীয় দাবাজ্ঞান আর নিয়ন্ত্রিত স্নায়ুশক্তি নিয়ে বিশ্বখেতাবের জন্য জান লড়িয়ে দিচ্ছে। গত এক বছরে গুকেশের ধীর-স্থির উত্থান আর ডিংয়ের পালিয়ে বেড়ানো বিশ্বখেতাবি দাবাযুদ্ধের নিয়তি ঠিক করে দিয়েছিল। আমার মনে হয়, ডিং এই বিশ্বখেতাবের ভার থেকে মুক্তি চাইছিলেন। বিশ্বখেতাব জয় কিন্তু একদিনের উচ্ছ্বাস না, বরং এক বিরাট দায়িত্ব! ক্রীড়াজগতের প্রতি, নিজের সুনামের প্রতি, অর্জিত খেতাবের প্রতি, এবং নির্দিষ্ট ক্রীড়াটির উন্নতির প্রতি নিরন্তর দায়িত্বপালন। ডিং সেই প্রবল চাপের অস্থিরতা থেকে মুক্তি খুঁজছিলেন।
………………………………………………….
বিশ্বখেতাবি লড়াইয়ের প্রথম গেমে তাঁর জয় ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিল। তুল্যমূল্য লড়াই হবে গুকেশ বনাম ডিংয়ের, এমনটা ভাবা গেছিল। দুটো গেম পরে বদলা নিয়েছিলেন গুকেশ। কিন্তু ডিং এক অদ্ভুত রক্ষণাত্মক নীতির খোলসে নিজের দানগুলোকে মুড়ে নিয়েছিলেন। পরপর সাতটি রাউন্ড ড্র হল। গুকেশ ডিংয়ের প্রতিরোধ ভাঙলেন একাদশ রাউন্ডে। কালো নিয়ে ২৮ নম্বর দানে অক্ষমার্হ ভুল করলেন ডিং। চাপের মুখে ডিং লিরেনের সেরা খেলা বেরিয়ে আসে– দাবাজগতের এই মিথের বিপ্রতীপে ডিং লিরেনের আচমকা ব্লান্ডার! পরের রাউন্ডেই ডিং প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছিলেন। হয়ত এই বিশ্বখেতাবি লড়াইয়ের সেরা খেলাটা দ্বাদশ রাউন্ডের জন্যই তুলে রেখেছিলেন ডিং। কিন্তু, ডিং লিরেন নিশ্চিত জানতেন, তিনি আর দু’বছর আগের স্থিতধী, তীক্ষ্ণমেধার ডিং নেই। নিজের দুর্বলতা আর প্রবল চাপের মুখে দানগণনার দুর্বলতা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন। তাই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েও বিশ্বচ্যাম্পিয়নোচিত খেলা তাঁর থেকে পাওয়া গেল না। পুরনো ডিংয়ের কিছু ঝলক দেখা গেল, কিন্তু স্বয়ং কার্লসেন যাঁকে সমীহ করতেন, সেই ডিং আর ফিরে এলেন না।
যতক্ষণ প্রতিরোধ করা যায়, করব, তারপর অনিশ্চিত, তারপর অস্থির শূন্যতা, তারপর আর কিচ্ছু করার নেই– ডিংয়ের এই মানসিকতা চ্যাম্পিয়নসুলভ না। অন্যদিকে, গুকেশ টগবগে তরুণ, জেতার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। নিজের যাবতীয় দাবাজ্ঞান আর নিয়ন্ত্রিত স্নায়ুশক্তি নিয়ে বিশ্বখেতাবের জন্য জান লড়িয়ে দিচ্ছে। গত এক বছরে গুকেশের ধীর-স্থির উত্থান আর ডিংয়ের পালিয়ে বেড়ানো বিশ্বখেতাবি দাবাযুদ্ধের নিয়তি ঠিক করে দিয়েছিল। আমার মনে হয়, ডিং এই বিশ্বখেতাবের ভার থেকে মুক্তি চাইছিলেন। বিশ্বখেতাব জয় কিন্তু একদিনের উচ্ছ্বাস না, বরং এক বিরাট দায়িত্ব! ক্রীড়াজগতের প্রতি, নিজের সুনামের প্রতি, অর্জিত খেতাবের প্রতি, এবং নির্দিষ্ট ক্রীড়াটির উন্নতির প্রতি নিরন্তর দায়িত্বপালন। ডিং সেই প্রবল চাপের অস্থিরতা থেকে মুক্তি খুঁজছিলেন। প্রতিযোগিতা শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে ডিং কি সেই মুক্তির কথাই বললেন না?
#
‘ভিশির সন্তানরা বড় হয়ে গেছে। ভারতীয় দাবার ভবিষ্যৎ এখন ওদেরই হাতে’– গ্যারি কাসপারভ
১৮ দিনের বিশ্বখেতাবি লড়াই। মহাভারতসম। গুকেশের পক্ষে ছিলেন বিশ্বনাথন আনন্দ। অর্জুনের সারথী হিসেবে কৃষ্ণের যে ভূমিকা, তার চেয়ে কোনও অংশে কম নয় আনন্দের ভূমিকা। আনন্দ পাঁচবারের বিশ্ববিজয়ী। নিজের তরুণ বয়সে বিশ্বখেতাবি লড়াইয়ে কারপভ আর কাসপারভকে প্রতিস্পর্ধা জানিয়েও পরাজয় স্বীকার করেছিলেন। পরে অবশ্য প্রত্যাঘাত করেছিলেন। ক্রামনিক, টোপালভ, গেলফাঁর মতো তাবড় দাবাড়ুদের হারিয়ে বিশ্বখেতাব দখলে রেখেছেন। বিশ্বজয়ের লড়াইয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা প্রচুর। সেই অভিজ্ঞতা আর দর্শন চারিয়ে দিয়েছেন গুকেশের মধ্যে।
বটবৃক্ষের মতো গুকেশকে আগলেছেন নীরবে। হেরে গেলে সাহস জুগিয়েছেন আর জেতার পরে শান্ত থাকার উপায় বলেছেন। গুকেশের টিম নির্বাচনেও আনন্দের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। নইলে প্যাডি আপটনকে কেনই বা গুকেশের ‘সেকেন্ড’ দলে রাখা হবে? দক্ষিণ আফ্রিকার প্যাডি আপটন ক্রীড়াজগতের ক্রিকেট শাখার ব্যক্তিত্ব। গুকেশের মানসিকতা ইস্পাতকঠিন করে তুলতে এবং তাঁর মনস্তত্ত্বে চ্যাম্পিয়নসুলভ অঙ্গীকার সঞ্চারিত করতে প্যাডির প্রয়োজন- আনন্দের চেয়ে ভালো একথা কেই বা জানবে? ভুয়োদর্শী সারথী কৃষ্ণের মতো বিশ্বনাথন আনন্দ ভারতীয় দাবার প্রাণপুরুষ হয়ে উঠেছেন- তাই অর্জুনের মতোই বিশ্বজয় করলেন গুকেশ।
গুকেশের আগে সর্বকনিষ্ঠ বিশ্বখেতাবজয়ী ছিলেন গ্যারি কাসপারভ। কাসপারভ বিশ্বখেতাব জিতেছিলেন স্বদেশীয় আনাতোলি কারপভকে হারিয়ে, নভেম্বরের ৯ তারিখ। ওদিনই মিখাইল তালের জন্মদিন। কাসপারভের পূর্বসূরি, তাঁর মতোই বেপরোয়া এবং তুখোড় কম্বিনেশনবিদ তাল। কারপভের বিরুদ্ধে বিশ্বখেতাবি লড়াইয়ের শেষ রাউন্ডের আগের দিন কাসপারভকে ফোন করে তাল বলেছিলেন, ‘আগামিকাল আমার জন্মদিন, মনে আছে তো?’ প্রিয় দাবাড়ুকে ‘শ্রেষ্ঠ উপহার’ দিয়েছিলেন কাসপারভ। আনন্দের জন্মদিন ছিল ১১ ডিসেম্বর। আর, তার পরের দিনই গুকেশ খেতাব জিতলেন। আনন্দ তাঁর জন্মদিনের উপহারের কথা একইভাবে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন কি না জানা নেই, তবে গুকেশ তাঁর আদর্শ দাবাড়ুকে এবং ভারতকে শ্রেষ্ঠ উপহার দিলেন ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪।
……………………………………….
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………………….