যে সত্যটি রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো, পাছে রবীন্দ্রনাথ আরও বেদনা পান, সেই নির্মম সত্য হল, ভিক্টোরিয়ার জীবনে পিয়ের দ্রিউলা রোশেল নামের এক ফরাসি প্রেমিকের আবির্ভাব। এই প্রেমও বহু পুরুষের সঙ্গিনী ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর জীবনে শেষ হয় গভীর যন্ত্রণায়।
‘বন্দে মাতরম্’ যেখানে উগ্রজাতীয়তাবাদের সহচর সেখানেই রবীন্দ্রনাথের আপত্তি। বঙ্কিমের প্রতি অশ্রদ্ধা নিয়ে নয়, হিন্দু-মুসলমান-ইংরেজ যেখানে ছোট ও সংকীর্ণ– সেই অংশের প্রতি সচেতনতা থেকেই, এই গানটির অঙ্গচ্ছেদ করে গ্রহণের পক্ষপাতী ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
৮ পৌষের প্রতিষ্ঠাদিবস পালনের জন্য এই আলপনা চলত মেলা শুরুর আগের দিন পর্যন্ত। ছাতিমতলা থেকে শুরু করে ‘শান্তিনিকেতন বাড়ি’, ‘আম্রকুঞ্জ’, ‘ঘণ্টাতলা’, ‘মাধবীবিতান’ যেন আমার সমস্ত নান্দনিক ভাবনা-চিন্তার উৎসক্ষেত্র হয়ে উঠত। আম্রকুঞ্জ হয়ে উঠত ছবির পট– আমার সকল আনন্দের উৎস।
সুমনের ‘পাগল’ বিধাতার সঙ্গে সাপ-লুডো খেলছিল– আমরা সবাই খেলছি। গদার হেরে-যাওয়া খেলায় শেষ পর্যন্ত ‘ছায়ার সঙ্গে কুস্তি’ লড়েননি– তিনি ‘এই মাত্র! আর কিছু নয়’-কে ডিঙিয়ে যেতে চেয়েছেন। বোর্ড উল্টে দিয়েছেন অতর্কিত ‘কাট্’-এ।
রবীন্দ্রনাথ বহুদিন ধরেই দেখে আসছেন সত্যি-মানুষের চলাচলের জগৎ। ‘ছড়ার ছবি’তে এসে তারা ঘটিয়ে বসল এক সাংঘাতিক কাণ্ড! নন্দলালের ছবি তাঁকে দিয়ে ৩২টি ছড়াই লিখিয়ে নিল না শুধু, সৃষ্টি করিয়ে নিল একরাশ সত্যি-মানুষ।
আকাশ দেখতে সুবিধে হবে ভেবে একসময় কোণার্ক বাড়িতে চৌকির উপর চেয়ার চাপিয়ে সূর্যাস্ত দেখবার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি। সেই কবির আশ্রমে আকাশ ক্রমশ ফালা ফালা হয়ে গেল বড় বাড়ির স্থাপনায়। আশ্রম-সংলগ্ন অন্য বাড়িগুলির বা অধুনা শান্তিনিকেতন উপনগরীর কথা যদি বাদ দিই, খোদ উত্তরায়ণের আকাশই খণ্ডিত হয়ে গেল।
শান্তিনিকেতন আশ্রমিক সংঘ, কলকাতা শাখার পক্ষ থেকে ১৩৯০ বঙ্গাব্দে অন্নদা মুন্সীকে আহ্বান করা হয়েছিল ২৫ বৈশাখের জন্মোৎসব ভাষণের জন্য। সেই ভাষণ এখনও পর্যন্ত কোনও গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
জীবনের শেষ পর্বে রবীন্দ্রনাথ কখনও কখনও যেন এক অভিমান নিয়েই সুরুলে চলে গিয়েছেন। বাস করেছেন তেতলার ঘরে, যেটিকে এখন ‘কবিকক্ষ’ বলা হয়। রবীন্দ্রনাথের প্রধান অভিভাবিকা প্রতিমা দেবী এতে খুবই বিপন্ন বোধ করেছেন।
রবীন্দ্র-উত্তর পর্বের একদম গোড়ার দিকে শিল্প-সাহিত্যের সৃজনবোধে জারিত তরুণ বঙ্গমননে তাঁর মোহাচ্ছন্নতা একরকম স্বাভাবিক নিয়মেই এসে দাঁড়িয়েছিল। সলিল চৌধুরীও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে ‘পরমাত্মীয়’ মেনে ‘অশৌচ’ পালন হয়তো খানিক ব্যতিক্রমীই।
প্রিয়ম্বদা তখন চল্লিশোর্ধ্ব আর ওকাকুরা পঞ্চাশের দ্বারপ্রান্তে। শান্ত, শুভ্র, করুণ শঙ্খের মতো অথচ দীপ্তিময় প্রিয়ম্বদাকে দেখে মন হারিয়েছিলেন তিনি। তাঁর মনে হয়েছিল, প্রিয়ম্বদা যেন সূক্ষ্ম রেখা ও হালকা রঙে আঁকা এক জাপানি ছবির মতো। শোনা যায়, ‘শ্বেত কমল’ নামে তাঁর একটি ছবিও এঁকেছিলেন তিনি।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved