আমাদের কবি, আমাদের নাট্যকর্মী, আমাদের লেখক, আমাদের অভিনেতা– সবাই যে যেখানে আছে, রাস্তায় যার সঙ্গেই দেখা হবে, বলে দেবে, আজও বেঁচে আছে।
যে জোড়াসাঁকোয় তাঁর জীবনের এতখানি কাটল সেখানেও আর প্রৌঢ় অবস্থায় থাকতে ভালোবাসতেন না তিনি। সারা জীবন বহু ঘুরেছেন রবীন্দ্রনাথ। থেকেছেন বহু বাড়িতে। দুই বাংলায়, তার বাইরে এবং বিদেশে। কিন্তু কোনটি ঠিক তাঁর বাড়ি?
একজনের রক্তের গহন থেকে আকুলতা: ‘হে বন্ধু,আছো তো ভালো?’ অন্যজনের পথচলতি কথকতা: ‘'এতদিন কোথায় ছিলেন?’
পাঞ্জাব, বিহার, বাংলা ১৯৪৬-’৪৭ সালে খুনে লাল হয়ে ছিল। দুর্ভিক্ষের ছবি এঁকেছেন জয়নুল আবেদিন, চিত্তপ্রসাদ, সোমনাথ হোড়। দাঙ্গায় অবিরাম রক্তস্রোত আঁকলেন না কেন? যাঁরা এঁকেছেন, আগুন জ্বেলেছেন, রক্তের দিকটা ধুয়ে দিয়েছেন।
মানুষকে জানাতে হবে তো, কেন বিয়ে সর্বদা হয়ে যায় প্রেমের মৃত্যুর নিশ্চিত কারণ। কী জন্যে বিয়ে থেকে ঝরে যায় প্রেম?
থতমত খেয়ে তিনি ‘নীড়’ শব্দটির দিকে তাকালেন। সেখানে রবীন্দ্রনাথের হাতযশ ছিল। ‘পাখী আমার নীড়ের পাখী’ নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে তিনি পাশার দান দিলেন ‘পাখীর নীড়ের মতো’– এ যেন হেগেল থেকে মার্কস– এক অলৌকিক উল্টে দেওয়া। সংস্কার থেকে শব্দ প্রতিস্থাপনের দায় কবির মৌলিক দায়। একেই ‘ভাষা বিহার’ বলে।
একের যেমন আঁটোসাঁটো বিপুল গৌরব, দু’য়ের কি তেমন গৌরব আছে? এক ক্লাসের ফার্স্ট বয় (নাকি গার্ল?), দুই বেচারা তো জীবনে ফার্স্ট হতে পারল না। সমাজেও দু’-নম্বরিদের খুবই দুর্নাম; যদিও দু’-নম্বরি লোকজনে সমাজ ছয়লাপ, তারাই এখন গ্লোরিয়াস মেজরিটি। কিন্তু এক হতে পারল না– এ দুঃখ নিয়ে দুই আদৌ এখন আর ভাবে কি না, জানি না।
জবাকুসুম চুলের তেলের বিজ্ঞাপনে তেলের গুণাগুণ বিষয়ে প্রায় কোনও কথাই খরচ না করে ব্যবহার করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথের ‘নিদ্রিতা’ কবিতার সেই অংশটি, যার মধ্যে একটি পঙ্ক্তিতে রয়েছে, ‘মেঘের মতো গুচ্ছ কেশরাশি শিখান ঢাকি পড়েছে ভারে ভারে’। কখনও আবার ব্যবহার করা হয়েছে ‘কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি’, ‘বধূ’ ইত্যাদি কবিতার চিরকালীন পঙ্ক্তিগুলি।
অবলা বসু তাঁর জীবদ্দশায় অবিভক্ত বাংলাদেশে মহিলাদের জন্য মোট ৮৭টি শিক্ষাকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করে গেছেন। প্রকৃতভাবে অবলা বসুকে চিনতে হলে আজ জন্মের ১৬০ বছর পরে তাঁর কাজগুলোই মনে রাখা ভালো। না হলে মনে অনেক প্রশ্ন ওঠে। অনেক প্রশ্ন। যার উত্তর হয়তো শেষ পর্যন্ত লেখা যায় না।
কে বলে বাংলাভাষার পিঠ ঠেকে গিয়েছে দেওয়ালে? দিল্লি পুলিশ পর্যন্ত যেখানে ভাষাতত্ত্ব নিয়ে তীব্র পড়াশোনা করে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ সম্পর্কে জানান দেয়, তখনও আমাদের চিন্তান্বিত বুদ্ধিজীবীদের শান্তি হয় না? পুলিশের কাজ আইনরক্ষা ও ফাইনরক্ষা, কিন্তু এদেশ এমন পড়ুয়া ও ভাষাবিজ্ঞানী পুলিশের পাল্লায় পড়েছে কখনও? এজন্যই প্যাশন ছাড়তে নেই। শুধু একটাই বিনীত প্রশ্ন সেই কেন্দ্রীয় পুলিশের প্রতি: রবীন্দ্রনাথ কি ‘সোনার বাংলা’ বাংলাদেশি ভাষায়, আর জনগণমন বাংলা ভাষায় লিখেছিলেন? তা-ই হবে।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved