দুর্গাপুজো উপলক্ষে গ্রামে বসেছে কবিগানের আসর। চাঁদ মুহম্মদ আর কাশীনাথ দেবনাথ। রাঢ়বঙ্গের দুই বিখ্যাত কবিয়াল। পালার বিষয় হিন্দু-মুসলমান। দুই ধর্মের অগুনতি শ্রোতা। শ্রোতারাই পালা নির্বাচন করে দিলেন। তবে শর্ত হল, হিঁদু হবেন চাঁদ মুহম্মদ। মুসলমান কাশীনাথ।
আদান-প্রদান যে নতুন কিছু তা না। আরাকান রাজসভার কবিরা যে বাংলায় যে কাব্য লিখেছিলেন, সেগুলোর উৎস একটু খুঁজলেই দেখা যায়– অবিভক্ত ভারতবর্ষের কবিদের কবিতার সঙ্গে তার স্পষ্ট যোগসূত্র বর্তমান। এঁদের মধ্যে মুসলমানরাও ছিলেন, তাঁদের কাব্যে কৃষ্ণরাধাও ছিল, হোলিও ছিল।
কীর্তনের উদ্দেশ্যকে মাথায় রেখেই একসময় শুরু হয়েছিল ‘খ্রিস্টকীর্তন’! এর সূচনা সেই নদীয়ার চাপড়াতেই। সেখানে যিশুর বন্দনায় শোনা যেত শ্রীখোল, করতাল ইত্যাদি কীর্তন-উপযোগী বাদ্য।
জয় গোস্বামীর বিরাট কাব্য-ভূখণ্ডের প্রবেশক দরজাটি আমাদের সামনে খুলে ধরে কে? খুলে ধরে তাঁর প্রথম বই ‘ক্রীসমাস ও শীতের সনেটগুচ্ছ’-র প্রথম কবিতার এই লাইন– ‘সমস্ত ক্ষুধার নীচে বালি আর সোরা আর গন্ধকের গৃহ’।
গুরু মাধবের পরামর্শে রাম নারায়ণ সারেঙ্গির প্রধান তারটির কার্কশ্যকে বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় করে তুলেছিলেন পেলব, মিঠে। তাঁর সারেঙ্গির এই মিঠে আওয়াজ পুরোদস্তুর উচ্চাঙ্গ সংগীতের গুরুগম্ভীর মহল থেকে বাণিজ্যসফল হিন্দি সিনেমার অজস্র গানে ওঁর উপস্থিতি অনিবার্য করে তুলেছিল।
শান্তিনিকেতনে ৭ পৌষ তারিখে উৎসবের বিশেষ মাহাত্ম্য কী? মাহাত্ম্য এই যে, সেদিন আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের দীক্ষার দিন। যিনি একদিন ভোগের মাঝখান থেকে জেগে উঠে ‘বিলাসমন্দিরের সমস্ত আলোকে অন্ধকার’ দেখেছিলেন, বেড়িয়ে পড়েছিলেন অমৃত উৎসের সন্ধানে।
সামাজিক মাধ্যমে কেমন লাগছে সেলিব্রিটিদের ঝুলনযাত্রা? জাগলিং করার বলের মতো আমরা নাচিয়ে যাচ্ছি বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের। ওবামার পিঠে হাত দিচ্ছি, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে চায়ের দোকানে বসে আড্ডা মারছি, নেতাজীর সঙ্গে দাবা খেলছি, চাঁদের মাটিতে একসঙ্গে নামছি নীল আর্মস্ট্রংয়ের সঙ্গে।
বরানগর এলাকার বাসিন্দা নকশাল আন্দোলনের তীব্রতা, রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন থেকে তিনি কি কোনও রসদ পাচ্ছেন না? ওই ‘ব্যাঙের রক্ত’, ‘বাজি পোড়ানো’, ‘হৈ হল্লা’ ভাস্করের মতো নির্জনতা-প্রিয় কবিকে উত্যক্ত করছে না? হতেও তো পারে শীতের অপেক্ষায় আছেন, যাতে এই হাইবারনেশনে তিনমাস রক্ত হত্যা শব্দবাণ থেকে মুক্তি পেতে পারেন কিছুটা?
মানুষের থেকে মানুষ বিচ্ছিন্ন হতে দেখি। অবিশ্বাস করতে দেখি। দুটো মেরু শুধু স্পষ্ট হতে দেখি প্রতিদিন। এক পৃথিবী বন্যতা মিশে রক্তে। বছর দশেক আগেও, যা ছিল চোখরাঙানি অথবা হুমকি সেগুলো আজ শরীর পেয়ে দাপাচ্ছে।
আজ ২৫ ডিসেম্বর। প্রভু যিশুর জন্মদিন। ‘কলকাতায় যীশু’ লিখেছিলেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। কাকতালীয় ব্যাপার, তাঁর প্রয়াণ ঘটেছিল ২০১৮ সালের এই তারিখেই।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved