২০২৪-এর ৪ জুন নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতে দেখা গেল রাহুল গান্ধীকেও খালি হাতে ফিরতে হয়নি। তিনি ঘৃণার বিরুদ্ধে সৌহার্দের বার্তা নিয়ে দাক্ষিণাত্য থেকে উত্তরের চূড়ায় হাঁটলেন। তাতে সৌহার্দ জিতল কি না তা বলার সময় এখনও আসেনি, কিন্তু ঘৃণা আপাতত পরাস্ত হল এটুকু অন্তত নিশ্চিত করে বলা যায়। দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান আরও কিছুদিনের জন্য রক্ষা পেল। চৈতন্য, বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, রাহুল গান্ধী– এ ভারতের বহমান ঐতিহ্য। কেবল হাঁটার এই সফল উদাহরণগুলোর পাশাপাশি মনে কাঁটার মতো বিঁধে থাকে সেইসব পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা, যাঁরা কোভিডের সময় পথ হাঁটতে হাঁটতে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছিলেন, রেললাইনে পড়ে থাকা ছিন্নভিন্ন লাশ আর রক্তমাখা রুটির টুকরো আজও আমাদের স্মৃতিতে মলিন হয়নি।
ভারত জোড়ো যাত্রা রাহুল গান্ধীকে একজন সাধারণ রাজনীতিবিদ থেকে একজন আত্মবিশ্বাসী জননেতায় রূপান্তরিত করেছে, এটা মোটামুটি সকলেই, এমনকী তাঁর বিরোধীরাও আজ বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু এটুকু যথেষ্ট নয়। আসল বদলটা কোথায় ঘটেছে, তা তিনি নিজে বারবার ব্যক্ত করেছেন। রাহুল গান্ধী বলেছেন, “আগেও আমি কৃষক, শ্রমিক, দেশের সাধারণ যুবক-যুবতীর সঙ্গে কথা বলেছি, তখন আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তাদের সমস্যাগুলো বোঝার চেষ্টা করতাম। কিন্তু ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’ আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে তাদের প্রেক্ষাপট থেকে তাদের সমস্যা আর সংকটগুলোকে বোঝা যেতে পারে।” আমূল বদলটা এসেছে এইখানে। এই নতুন করে দেখার চোখ তাঁকে আজকের ভারতে জননেতায় রূপান্তরিত করেছে।
ভারত জোড়ো যাত্রার পূর্বে যে রাহুল গান্ধী খুব খেলো রাজনীতিবিদ ছিলেন, এমনটা নয়। ২০১০ সালে তিনি পাহাড়, জঙ্গল, প্রকৃতি আর মানুষের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে ওড়িশার নিয়মগিরিতে আন্দোলনরত প্রান্তিক মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এই ঘটনার পর থেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর কর্মকাণ্ড, বক্তৃতা ইত্যাদির খোঁজ-খবর রাখি। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও তাঁর প্রায় সব প্রচার বক্তৃতা শুনেছি টিভি বা ইন্টারনেটে। তিনি নেহাত বাজে কথা কখনওই বলতেন না। কিন্তু যেসব কথা তিনি বলতেন, সেগুলো ছিল বুকিশ বা বই পড়া বিদ্যা। জননেতা হিসেবে তাঁর নিজের উপলব্ধি সেখানে খুঁজে পেতাম না। একটা উদাহরণ দিই। ২০১৯-এ তিনি বিহারের একটি জনসভায় মহিলাদের সমস্যা নিয়ে কথা বলছিলেন। কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে সত্য, কিন্তু বোঝা যাচ্ছিল তিনি কথাগুলো বলছিলেন ‘ভারতে নারীবিদ্যাচর্চা’র বইপত্র পড়ে।
এটাও একটা গুণ। এদেশে আজকাল বই-পড়া নেতার বড় অভাব। কিন্তু সেটুকু একজন রাজনীতিবিদের জন্য যথেষ্ট নয়। তাঁকে বাস্তব থেকে আহরিত জ্ঞান ও আধিত বিদ্যা এ-দুয়ের সমন্বয় ঘটাতে হয়। এবং সেই চিন্তন প্রক্রিয়াটা হতে হবে দ্রুত। ভারত জোড়ো যাত্রা তাঁকে শিখিয়েছে এই কাজটা কীভাবে করা সম্ভব। কীভাবে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে আসা বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত মানুষগুলোর কথা মন দিয়ে শুনে সমাধানের রাস্তা ভাবতে হয়। তার জন্য অবশ্যই সহানুভূতিশীল ভালো শ্রোতা হতে হয়। যেকোনও অবস্থায় দ্রুত মনঃসংযোগ করতে শিখতে হয়। ব্যক্তি অহংকে দূরে সরিয়ে অন্যের কথায় গুরুত্ব দিতে হয়। এটা আমি ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা চলাকালীন রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ২০ মিনিটের সাক্ষাতে ব্যক্তিগতভাবে বুঝেছি। দুটো ছোট পদযাত্রার ফাঁকে খুব ব্যস্ত রুটিনের মধ্যে তাঁর সঙ্গে যেটুকু আলোচনা হল, তাতে তিনি গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। আসলে শুনলেন বেশি, বললেন কম। অথচ সবার সব প্রশ্নের উত্তরও দিলেন, তবে সংক্ষিপ্ত আলোচনার ঢঙে।
সাধারণত মূলধারার রাজনীতিতে এইরকম নেতা আজকাল বিরল, যিনি কি না শুনতে বেশি আগ্রহী। সবচেয়ে বড় কথা, এই ব্যস্ততার ফাঁকে, তিনি সবে পদযাত্রা সেরে এলেন আর বাইরে অনেক মানুষ অপেক্ষা করছেন তাঁর জন্য তখনও, আমাদের সঙ্গে কথা বলার সময় এক মুহূর্ত তাঁকে দেখলাম না মনঃসংযোগ হারাতে। এটা সত্যি শিক্ষণীয়। তাঁকেও এটা শিখতে হয়েছে। তিনি নিজেকে প্রশিক্ষিত করেছেন, কীভাবে নিজের অহংকে অতিক্রম করে অন্যের কথায় মনোযোগ দিতে হয়। ভারত জোড়ো যাত্রা তাঁকে আরও অনেক কিছুর সঙ্গে এই গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটিও শিখিয়েছে।
ভারত জোড়ো যাত্রায় কন্যাকুমারী থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত অনেকটা পথ রাহুল গান্ধী হেঁটেছিলেন ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ থেকে ৩০ জানুয়ারি ২০২৩– এই ১৯ সপ্তাহে। এই যাত্রা কেবল তাঁকে পরিণত করেনি, দেশের মানুষকেও সংকটে সাহস জুগিয়েছে। একজন জননেতা তো কেবল নিজের জন্য কাজ করেন না, তাঁকে সমাজকেও কিছু দিতে হয়। একটা সময় আমরা সকলেই কমবেশি ভেবেছিলাম এদেশ নিশ্চিতভাবে ১৯৩০-এর নাৎসি জার্মানি হতে চলেছে, যদি দেশ জুড়ে একটা বড় কিছু পরিবর্তন না করা যায়। আমরা অনুভব করেছিলাম অবিলম্বে দেশের মানুষকে নিয়ে ফ্যাসিবাদের ধর্মীয় মেরুকরণ ও ঘৃণার রাজনীতির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু উপায় কী? কর্পোরেট মিডিয়া মোদি-শাহ-র কেনা গোলাম, প্রশাসন তাদের করায়ত্ত, বিচারের বাণী ব্যর্থ দীর্ঘশ্বাস বিনা কিছু নয়। কথাগুলো মানুষের কাছে পৌঁছবে কী করে!
গণতন্ত্র যখন চূড়ান্ত হতাশাগ্রস্ত অবস্থায়, তখন রাহুল গান্ধী সবচেয়ে ‘কষ্টসাধ্য’ কিন্তু সবচেয়ে ‘নিশ্চিত’ পথটা বেছে নিলেন। রাস্তা– মাইলের পর মাইল পথ চলা। এ যাত্রা কষ্টসাধ্য কারণ এই দেশটা বিরাট। রোদ, বৃষ্টি, তুষারপাত– বিচিত্র পরিবর্তনশীল আবহাওয়া। নগর, বন্দর, মাঠ, গ্রাম, চড়াই-উতরাই– বন্ধুর পন্থা– ৪,৫০০ কিলোমিটার হাঁটা তো মুখের কথা নয়। আর এই পন্থাটা ‘নিশ্চিত’ বলছি, কারণ ঐতিহাসিকভাবে এই পথ ভারতবর্ষে পরীক্ষিত। চৈতন্য থেকে গান্ধীজি, মাইলের পর মাইল পথ হেঁটে তাঁরা মানুষের কাছে পৌঁছেছিলেন। ইতিহাস জানে, যাঁরা মানুষের জন্য হাঁটেন, এদেশ তাদের শূন্য হাতে ফেরায় না! ২০২৪-এর ৪ জুন নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতে দেখা গেল রাহুল গান্ধীকেও খালি হাতে ফিরতে হয়নি। তিনি ঘৃণার বিরুদ্ধে সৌহার্দের বার্তা নিয়ে দাক্ষিণাত্য থেকে উত্তরের চূড়ায় হাঁটলেন। তাতে সৌহার্দ জিতল কি না তা বলার সময় এখনও আসেনি, কিন্তু ঘৃণা আপাতত পরাস্ত হল এটুকু অন্তত নিশ্চিত করে বলা যায়। দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান আরও কিছুদিনের জন্য রক্ষা পেল।
এই মাইলের পর মাইল মানুষের কথা শোনার জন্য পথ হাঁটার যে রাজনৈতিক কর্মসূচি, তা সম্ভবত তিনি বুঝেছিলেন গান্ধীজির জীবনী থেকে। গান্ধীজির জনপ্রিয় যে ছবিগুলি ফোটোগ্রাফের সূত্রে আমাদের দৃশ্য-সংস্কৃতিতে ঐতিহাসিকভাবে স্থান করে নিয়েছে, সেগুলির মধ্যে প্রধান তাঁর ডান্ডি অভিযান ও নোয়াখালি যাত্রা। আমরা গান্ধীজিকে সেসব ছবিতে হাঁটতে দেখেছি। ১৯১৩ সাল থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত সময়কালে তিনি হেঁটেছিলেন মোট ৭৯ হাজার কিলোমিটার, দৈনিক গড়ে ১৮ কিলোমিটার! ২০১৯ সালে ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিকেল রিসার্চ’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলরাম ভার্গব এই তথ্য তুলে এনেছেন। আসমুদ্রহিমাচলের নেতা হতে গেলে পায়ে হেঁটে এই দেশটার মানুষের যন্ত্রণা, ক্ষোভ, সংকট, শক্তিকে জানতে হয়। সি বি দালালের ‘গান্ধী ১৯১৫-১৯৪৮: এ ডিটেইল্ড ক্রনোলজি’ (১৯৭১) দেখায়, যে সময়কাল তিনি ভারতে রাজনীতি করেছেন, তার মধ্যে ৫২১৭ দিন তিনি ট্রাভেল করেছেন। অর্থাৎ, ৩৩ বছরের মধ্যে ১৪ বছরের বেশি সময় তিনি বেশিরভাগটা পায়ে হেঁটে ও কিছুটা রেলগাড়িতে চড়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছেন। সেদিনও, ঔপনিবেশিক শাসনের সেই দিনগুলিতেও পরিস্থিতি তেমন অনুকূল ছিল না। বিচারব্যবস্থা, প্রশাসন, ব্রিটিশের চামচা দেশীয় রাজন্যবর্গ, ঔপনিবেশিক শাসনের বেনিফিসিয়ারি মধ্যবিত্তের একটা অংশ কেউই তেমন পাশে ছিল না। সঙ্গে ছিল একটা দল, যাদের নেতাদের মধ্যে তরুণ প্রজন্মের একটা অংশ বাদ দিলে সবাই তাকিয়ায় বসে ক্ষমতার রাজনীতি ছাড়া জীবনে কিছু করেনি। আর ঘোরতিমিরঘন নিবিড় নিশীথে পীড়িত মূর্ছিত দেশে রক্তস্নাত নোয়াখালিতে তাঁর পদযাত্রার ছবি তো আমাদের খুব পরিচিত।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আরও পড়ুন সুতীর্থ চক্রবর্তী-র লেখা: ভারতীয় রাজনীতিতে ‘রাহুল-যুগ’ কি আর শুধুই অলীক কল্পনা?
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
সে যাত্রা ছিল অতুলনীয়। তাই তুলনা করছি না, কিন্তু রাহুল গান্ধীর মণিপুরে শান্তি যাত্রা সেই ইতিহাসকে মনে করিয়ে দিয়েছে। কারণ জাতিদাঙ্গা-বিধ্বস্ত মণিপুরে তিনিই একমাত্র জাতীয় নেতা, যিনি প্রবেশ করতে পেরেছিলেন মানুষের কাছে সৌহার্দের বাণী নিয়ে। এর জন্য সাহস লাগে, মানুষের প্রতি বিশ্বাস থাকতে হয়। সেটা মণিপুরে রাহুল গান্ধী দেখাতে পেরেছিলেন। স্বভাবতই ইদানীং সবচেয়ে বেশি অন্যায় যাদের সঙ্গে হয়েছে সেই মণিপুরবাসীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি সূচনা করেছিলেন ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার।
আসলে রাজনৈতিক বার্তা নিয়ে সংকটে পথ হাঁটার কথা যদি ছেড়েও দিই, তাহলেও বলতে হয় এই বৈচিত্রময় বিরাট দেশের মানুষ ও সমাজকে চিনতে হাঁটার কোনও বিকল্প নেই। বিবেকানন্দ যেমন এই দেশটাকে চিনেছিলেন অনেকটাই পায়ে হেঁটে। একটা ঘটনার কথা উল্লেখ করা যায়। তিনি তখন হেঁটে চলেছেন বারাণসী থেকে হরিদ্বারের দিকে। পথে একজন অচেনা লোককে হুকোয় ধূমপান করতে দেখলেন। দেখে তাঁরও ইচ্ছা হল ধূমপান করার। তিনি সে ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। কিন্তু লোকটি রাজি হলেন না। তিনি বললেন, তিনি নীচুজাতের মানুষ, একই হুকোয় তাঁর সঙ্গে সন্ন্যাসী ধূমপান করলে তাঁর নাকি পাপ হবে। বিবেকানন্দ আর কিছু বললেন না, হাঁটতে থাকলেন গন্তব্যের দিকে। কিন্তু অচিরেই তাঁর মনে একটা দার্শনিক প্রশ্ন জাগল। তিনি ছিলেন অদ্বৈতবাদী। যদি অদ্বৈতবাদ সত্যি হয়, তাহলে তো সকলেই একই আত্মার অংশ, সেখানে তো ভেদভাব বা দ্বৈততার স্থান হতে পারে না! তিনি আবার ফিরে গেলেন। সেই লোকটিকে বোঝাতে সমর্থ হলেন তাঁর যুক্তি। অবশেষে তাঁরা একসঙ্গে একই হুকোয় ধূমপান করলেন। বিবেকানন্দের জীবনী পড়লে বোঝা যায়, জাত-ব্যবস্থা ও অস্পৃশ্যতার প্রতি তাঁর যে প্রবল বীতরাগ ও বিরক্তি, তার অনেকখানি তিনি উপলব্ধি করেছিলেন এই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পায়ে হেঁটে ভ্রমণের সূত্রে। তিনি নিজে অবশ্য ভারত ভ্রমণে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যের যাত্রার কথা পড়ে। পাঁচশো বছর আগে চৈতন্য বাংলাদেশ থেকে নীলাচল, সেখান থেকে দক্ষিণ ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ও অবশেষে বারাণসী হয়ে প্রয়াগ গিয়েছিলেন। এই যাত্রার বেশিরভাগটা তিনি পায়ে হেঁটে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভক্তিবাদের প্রচার করেছিলেন। আজও তার প্রভাব এমনকী বাংলাদেশ থেকে বহু দূরে দেশের অন্য প্রান্তের সমাজেও আমরা দেখতে পাই।
………………………………….
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
………………………………….
এদেশে ক্ষমতা, অহংকার আর ঘৃণার বিজয়রথ বারবার মানুষ রুখে দিয়েছে। কিন্তু শান্তি, সৌহার্দ, ভালোবাসা ও ন্যায়ের বার্তা নিয়ে যাঁরা পায়ে হেঁটে মানুষের কাছে যান, যাঁরা সাধারণ মানুষের কথা কান পেতে শোনেন, এদেশ তাঁদের ফেরায় না। চৈতন্য, বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, রাহুল গান্ধী– এ ভারতের বহমান ঐতিহ্য। কেবল হাঁটার এই সফল উদাহরণগুলোর পাশাপাশি মনে কাঁটার মতো বিঁধে থাকে সেইসব পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা, যাঁরা কোভিডের সময় পথ হাঁটতে হাঁটতে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছিলেন, রেললাইনে পড়ে থাকা ছিন্নভিন্ন লাশ আর রক্তমাখা রুটির টুকরো আজও আমাদের স্মৃতিতে মলিন হয়নি। আমরা মনে রাখব সব। উদ্ধত মূর্খের আস্ফালন নয়, এদেশ জানে ‘দীনতা অন্তিম গুণ, অন্তহীন নক্ষত্রের আলো’। আর আমরা দেখতে পাচ্ছি– ‘আলো ক্রমে আসিতেছে’।