রোববার.ইন-এর এবারের পুজোর চতুর্থ গল্প স্বপন পাণ্ডা-র।
প্রচ্ছদ শিল্পী: শান্তনু দে
সবাই না জানলেও, কেউ কেউ এতদিনে নিশ্চয়ই জেনে গিয়েছেন যে বেশ কিছুদিন ধরে আমরা, আমাদের প্রিয় পেয়ারাবাগান গলির একটা ইতিহাস, না, ইতিহাস ঠিক নয়, ইতিহাসের কিছু মালমশলা জোগাড়-টোগাড় করে সংক্ষিপ্ত একটি খসড়া তৈরি করার উদ্যোগে আছি। গলির আদি বাসিন্দাদের অংশ কিছুটা এগিয়েছে, কিছু বাকি। নতুন যাঁরা এ-গলির অধিবাসী হয়েছেন, হচ্ছেন তাঁদের নিয়েও একটু যাকে পণ্ডিতি ভাষায় বলে ‘ক্ষেত্রসন্ধান’, তাও করতে হচ্ছে। অবশ্য কলকাতার কোনও গলিই এখন তার গলিয়ানা আর বজায় রাখতে পারছে কই! নিত্যি নতুন লোকজন গলিতে ঢুকে পড়ছে, বেরিয়ে যাচ্ছে। গলির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক তেমন জমে উঠতে পারছে না। রোজই দেখি ভাড়াটেদের ভ্যান ঢুকছে আর বেরচ্ছে। খাট-আলমারি-ফ্রিজ-ড্রেসিং টেবিল-ঝাঁটা-বালতি-মগ-বিছানা-গ্যাসের ওভেন, আর সবার ওপর দোল খাচ্ছে ঠাকুর সিংহাসন– হেলতে হেলতে দুলতে দুলতে নড়বড়ে ঠাকুর গলি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে, উল্টোদিক থেকে আবার ওই প্রায় একই লটবহর নিয়ে ভ্যান ঢুকছে তো ঢুকছে, সামনে-পেছনে ভাড়াটিয়া-পরিবার, তার সঙ্গে ফেউ– দালাল তস্য দালাল– ফাসক্লাস বাড়ি, জলের ঝামেলা নেই, মালিক পার্টির লোক, খুব ভালো লোক, আপদে-বিপদে আমরা তো আছি স্যর, পার্টি আছে, পাশেই কেলাব, ওখানে চলে আসবেন, কেউ না কেউ থাগবই, না না এ গলির মতো চুতিয়া গলি নয়, ভালো পাড়া… যাওয়ার সময় এভাবেই গলির বদনাম ছড়াতে ছড়াতে দালালরা চলে যাওয়ার সময় খুব রাগ হয় আমাদের। কিন্তু কিছু করার থাকে না, পার্টি-ফার্টির হুজ্জতকে ভীষণ…
ভাড়াটিয়ারা চলে যায়; আর যেতে যেতে মা জানকীর চরণ-অলংকার চিহ্নের মতো গলি জুড়ে পড়ে থাকে, হাওয়ায় ওড়ে পুরনো বাসি খবর-কাগজ, বিবর্ণ কালো পলি-প্যাকেট, মুড়ো ঝাঁটা, ন্যাতানো টেবিল ম্যাট, চায়ের ফুটো ছাকনি, হাত-পা ভাঙা দুখী দুখী টেডি বিয়ার, আরও কত কী যে! এরা আমাদের গলির ইতিহাসের কেউ নয়। আমরা মাস্টারমশায়কে জিজ্ঞেস করলাম, স্যর ভাড়াটেদের বাদ দিলেই তো হয়। স্যর বললেন, ‘একটা মাপকাঠি ঠিক করে নাও; অন্তত টানা তিন বছর যারা এ-গলির ভাড়াটে, তাদের কথাও আমাদের বিবেচনায় রাখা উচিত।’ স্যর বাক্যি শিরোধার্য।
ঠিক, এই গলির জল-বাতাস যাদের গায়ে একটু লেগেছে, তারা তো গলিরই মানুষ হয়ে গেছে, তারাও ইতিহাসে থাক। আজ আমরা গলির সবচেয়ে প্রাচীন ভাড়াটের একজনের ইতিহাস একটু পেশ করছি।
প্রকৃত নাম চন্দ্রনাথ মিশ্র। জ্যোতিবাবুর পর, বুদ্ধবাবু যখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হলেন, ওই জমানার কোনও একসময় চন্দ্রনাথের বাবা দীননাথ মিশ্র, স্ত্রী সারদা মিশ্র ও ছেলেটিকে নিয়ে বউবাজার ছেড়ে, আমাদের এই পেয়ারাবাগানের গলির তেরো নম্বরের সাহাদের একতলায় ভাড়া এল। চন্দ্রনাথ তখন কিশোরটি। তার ডাকনাম চন্দন। চন্দন নামটি যে বেশ ছোট আর মিষ্টি, কেউ কি আপত্তি করবেন? কিন্তু আমরা হই বাঙালি, ছোটকে আরও ছোট, মিষ্টিকে চটকে চটকে আরও মিষ্টি করব। ভেবে বা না ভেবে চন্দনকে চাঁদু তার বাপকে দীনু আর মিশ্রকে মিশির বানিয়ে তবে আমাদের শান্তি। তার ওপর চন্দন ওড়িশার ছেলে, আর যায় কোথায়, উড়িয়াকে উড়ে আর বিহারিকে খোট্টা, খৈনিখোর না দেগে দেওয়া অবধি সুখ নেইকো মনে। অপরের মুখ ম্লান করে দেওয়াতেই আমাদের সর্বসুখ! ওদিকে উড়িয়া ভাষা বলতে আমাদের সর্বশেষ পুঁজি, খান দেড়েক ভাঙা, মজার শব্দ ধাঁই কিড়িকিড়ি ধাঁই কিড়িকিড়ি… চন্দনের জন্ম বউবাজারে, বাংলা তার প্রায় মাতৃভাষাই। গলি থেকে দু’-তিন শ’ মিটার দূরেই বাংলা মিডিয়াম রামলাল ইশকুলে পড়ে, তবু গলির বন্ধুরা বিকেল হলেই সাহাদের একতলায় গিয়ে ডাক দেয়, এ চাঁদু, ধাঁই কিড়িকিড়ি ধাঁই কিড়িকিড়ি… খেলবি তো আয় আয়, ধাঁই কিড়িকিড়ি ধাঁই কিড়িকিড়ি– চন্দন হাসে, তার বাপ হাসে, তার মা-ও কোনও কোনও দিন মন ভালো থাকলে হাসে, কবেকার কথা সব…
……………………………………………………
দীনু ছিলেন পাকা রাঁধুনি। এই গলি তো বটেই, আরও নানা গলি-পাড়া-মহল্লায়, শহরের নানা দিকে, তাঁর ডাক পড়ত। নিরিমিষ বলো নিরিমিষ, মাছ বলো, মাংস বলো, পোলাও-কালিয়া– কত কিসিমের রান্নায় যে সে ওস্তাদ, যারা না খেয়েছে, বলে বোঝানো যাবে না! চাঁদু বাপের সঙ্গে-সঙ্গে থেকে বেশ কয়েক বছর শাগরেদি করেও তেমন কিছু নামযশ করতে পারেনি। দু’-একবার কেউ কেউ কাজ দিয়েছিল বটে, কিন্তু লোকে বললে, ‘চাঁদুর রান্না অতি জঘন্য, পাতে দেওয়া যায় না।’ ব্যস! চাঁদু পেশা বদলে ফেলল।
……………………………………………………
রবিবারের সকাল। প্রাতঃস্মরণীয়, স্বর্গীয় শ্যামলাল নস্কর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দশ মহাবিদ্যা মন্দিরের সামনের ধাপিতে বসে, পেয়ারাবাগান গলির প্রাচীন পুরুষ রামরাম মুখুয্যে বললেন, ‘কত এল কত গেল, শরৎবাবুর মতো কেউ তো আর এল নাকো। দম লাগে বাবা দম। কত কত লেখক দেখলাম, দম ফুরিয়ে অকালে মরেই গেল!’ স্বীকার করি, রামরামবাবুর মতো সাহিত্য-টাহিত্য আমরা বিশেষ কেউ কিছু তেমন পড়ে উঠতে পারিনি। আমাদের সব খুচরো পড়া, নামটাম কিছু জানি এইমাত্র। বঙ্কিম-রবীন্দ্র-শরৎ, বিভূতি-মানিক-তারাশঙ্কর, এক ঝুড়ি বিমল মিত্তির, এক বস্তা শংকর, সুনীল গাঙ্গুলি, শীর্ষেন্দু মুখার্জি, সঞ্জীব চাটুজ্যে; একমাত্র এই সঞ্জীববাবুর কিছু লেখা আমরা পড়েছি, রস আছে। আরও কিছু নাম জানি, এখুনি এখুনি মনে পড়ছে না। আসলে চর্চা তো আর তেমন নেই! করোনা অতিমারিতে গলিটা যখন প্রায় উজাড় হতে বসেছে, গলিতে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকছে-বেরুচ্ছে, লোকজন বেরুচ্ছে, কিন্তু ঢুকছে না, ধাপা না কোথায় কোন্ শ্মশান-গোরস্থানে জ্বালিয়ে দিচ্ছে, পুতে দিচ্ছে– মৃত্যুভয়ে ঘরবন্দি সেই সময়টিতে আমাদের এই ইতিহাস-ভাবনা। বড়রা বলল, “লিখে রাখো, লিখে রাখো। আমরা তো আর ক’দিনে ফৌত হয়ে যাব, গলির ইতিহাস যে কেউ জানতেই পারবে না…”। সেই শুরু। এখন এই ইতিহাস ইতিহাস করতে গিয়ে কত কী জানছি, কত কী শুনছি, কোনও দিন এসব মালমশলা দিয়ে কিছু লেখা-টেখা হলে হবে, না হয় না হবে, স্যর বলছিলেন, ‘জ্ঞানটি তো রয়ে যাবে!’
২০২০-তে, লকডাউন ঘোষণার এক-দু’দিন আগেই দীননাথ, ওরফে দীনু মিশির ওরফে দীনু ঠাকুরের পরিবার দেশের বাড়ি চলে যায়। কোথায় দেশের বাড়ি, জানতে কেউ চায়নি, সবাই এমনিই জানি কটক জেলা। ২০২১-এর কোনও এক সময়, একা চাঁদু মিশির ফিরে আসে দেখে আমরা অবাক হয়ে যাই। একা কেন রে চাঁদু চন্দন, চন্দ্রনাথ মিশ্র? বছর তিরিশ-বত্রিশের যুবক চাঁদু মিশির, বাপের মতোই একটু খর্বকায়, ধপধপে গৌর; তবে দীননাথের মতো সে শীর্ণ-রুগন নয়, নাদুস-নুদুস চেহারা। কিন্তু সে ফিরে এল একেবারে অর্ধেক হয়ে, বলা যায় দীননাথ হয়ে। একদা হাসিখুশি চেহারায় জেল্লা নেই, মুখে হাসি নেই। বলল, “মা-বাপ দু’জনেই একদিনের আগু-পিছু মরে গেছে!” একরাতে শ্বাসকষ্ট শুরু, পরের দিন কটক থেকে অ্যাম্বুলেন্স এল নিয়ে গেল সেদিন রাতেই নাকি বাপ, ভোরের দিকে মা। না, মা-বাপকে শেষ দেখা দেখতে দেয়নি, ওরা আগুনটুকুও… নাপিত মুণ্ডন করতেও এল না, ধোপা কাপড় নিতে এল না। ‘পাশে মামার বাড়ি, কাকাদের বাড়ি, কেউ আসল না দাদা, মহালদীর জলরে যাই লিজে, দশ দিনর মথায় ডুবকি দিলম।’ এই প্রথম জানলাম, ওদের বাড়ি মহানদীর ধারে। এই প্রথম শুনলাম, টানা বছর দেড়-দুই গাঁয়ে থেকে ওর কথায় ঢুকে পড়েছে উড়িয়া টান। কিছুদিনেই সেসব ঠিকঠাক হয়ে গিয়ে চাঁদু আবার আমাদের পেয়ারাবাগান গলির একজন হয়ে উঠতে লাগল। উড়িয়ার টান চলে গিয়ে দিব্য চেনা বাংলাতেও ফিরে এল, কিন্তু আর সে বাবা দীনু ঠাকুরের পেশায় সুবিধে করতে পারল না।
দীনু ছিলেন পাকা রাঁধুনি। এই গলি তো বটেই, আরও নানা গলি-পাড়া-মহল্লায়, শহরের নানা দিকে, তাঁর ডাক পড়ত। নিরিমিষ বলো নিরিমিষ, মাছ বলো, মাংস বলো, পোলাও-কালিয়া– কত কিসিমের রান্নায় যে সে ওস্তাদ, যারা না খেয়েছে, বলে বোঝানো যাবে না! চাঁদু বাপের সঙ্গে-সঙ্গে থেকে বেশ কয়েক বছর শাগরেদি করেও তেমন কিছু নামযশ করতে পারেনি। দু’-একবার কেউ কেউ কাজ দিয়েছিল বটে, কিন্তু লোকে বললে, ‘চাঁদুর রান্না অতি জঘন্য, পাতে দেওয়া যায় না।’ ব্যস! চাঁদু পেশা বদলে ফেলল। এখন সে দত্তপুকুর বাজারে ছোট্ট একটা জায়গা পেয়ে গেছে, টিনের চালা, দোকানের পেছনে মুরগির খাঁচা, সামনে মাংস কুচি কুচি করে কাটার কাঠের চাকতি, ব্রাহ্মণ সন্তান চাঁদুর হাতে এখন মুরগি জবাইয়ের ছুরি মুহুর্মুহু ঝলসে ওঠে, ফিনকি দিয়ে ওঠা রক্তে ওর নাক-মুখ-চোখ ভরে যায় ও যত্ন করে সেসব মুছে নিয়ে খদ্দেরের আবদারমতো মুর্গির ঠ্যাং-ছাতি-ডানা-মেটে-গিলে সব কেটেকুটে গুছিয়ে প্রথমে সাদা তারপর কালো, ডবল পলিথিনে মুড়ে দিয়ে পয়সা গুনতে থাকে। রামরামবাবু আদর করে তাকে ডাকেন, ননকু কসাই; আমরা বলি, ও তো আমাদের চাঁদু, রামরামবাবু বলেন, ‘সে তোমরা বুঝবে না, আছে আছে…’।
………………………………………………….
পড়তে পারেন ‘গল্পবেলা’য় সৈকত দে-র লেখা: দ্বি-মুখ
………………………………………………….
পেয়ারাবাগানের ইতিহাসের খসড়া প্রস্তুতের কাজ চলছে। এই সেদিন আমরা চাঁদুকে ডেকেছিলাম স্যরের বাড়ির একতলার পড়ার ঘরে। দেখা হলেই দুই বন্ধুর তর্ক-কলহ চলতেই থাকে, আবার তাঁরা পরস্পরকে সবকিছু না জানিয়ে কিছু করতেই পারেন না। বুঝতেই পারেন, আমরা রামরামবাবুর কথা বলছি। ইতিহাস লিখতে হবে তো, একটু স্যর-বাবুদের ছুঁইয়ে, সব ঠিকঠাক নোট না রাখলে কি চলে!
স্যর জানতে চান, ‘চাঁদু তোমরা তো কটক জেলার লোক?’
–হ্যাঁ, স্যর।
–তোমাদের গাঁয়ের পাশ দিয়ে মহানদী বহে যায়?
–আজ্ঞে, স্যর।
রামরামবাবুর হঠাৎ যেন কী মনে পড়ে যায়, তিনিও প্রশ্ন শুরু করেন, ‘তোমাদের গাঁয়ের নাম কি পধানপাড়া?’
–না, স্যর, গাঁয়ের নাম বিরূপাক্ষপুর।
রামরামবাবু– হতেই পারে না, গাঁয়ের নাম পধানপাড়া, নদীটিও মহানদী নয়, নদীর নাম বিরূপা।
স্যর– তুমি থামবে! ওর বাপ পিতেম’র ভিটে ওখানে, নদীর নাম গাঁয়ের নাম তুমি ঠিক করে দেবে নাকি…
রামরামবাবু– দেব, কারণ ও ঠিক বলছে না, চাঁদু তো কলকাতায় জন্মেছে, কালেভদ্রে দেশে যেত, ও কী করে সব জানবে?
………………………………………………….
পড়তে পারেন ‘গল্পবেলা’য় অম্লানকুসুম চক্রবর্তী-র লেখা: তোমায় অনমাঝারে রাখব
………………………………………………….
স্যর– বেশ, তুমিই বলো, আমি আর এর মধ্যে নেই –
রামরামবাবু– তা বাবা চাঁদু চন্দন চন্দ্রনাথ, তোমার বাবা দীননাথ মিশ্র, সে আমরা জানি। পিতামহর নাম?
–আজ্ঞে রতিনাথ।
–তস্য পিতা?
–আজ্ঞে, শক্তিনাথ।
–তস্য পিতা?
–আজ্ঞে হরিহর।
–বাহ, যাবে কোথায় চাঁদু হল তো, কেমন ঠিক ধরে ফেললাম কি না, দেখো দেখো মাস্টার, শোনো কী বলছে–
–ওর চোদ্দো পুরুষের নাম টেনে বার করছো করো, কিন্তু তুমি কী বলতে চাচ্ছ? মতলবটা কী?
–দ্যাখো, এ হল আমার গোয়েন্দাগিরি, শরদিন্দু কি কম পড়েছি নাকি!
–ব্যাপারটা খুলে বলবে কী?
চাঁদু কেমন ভ্যাবাচ্যাকা!
–খুব তো পড়ো, লেকচার দিয়ে বেড়াও, বলি কালিন্দীচরণের ‘মাটির মানুষ’ আছে? দেখাতে পারবে?
স্যর দেখিয়ে দেন, আমরা বইটি নামিয়ে আনি।
কেন নয়, ওই তো ভারতীয় সাহিত্যের তাকে দেখো, পেয়ে যাবে। রামরামবাবু চাঁদুকে দেখান বইটি, সে নেড়েচেড়ে পাতা ওল্টায়। কী বুঝলে?
–আমাদের ওড়িয়া ভাষার বই, বাংলায় লেখা।
–ঠিক। এই বইতেই তোমাদের বংশের প্রবল পুরুষ হরি মিশ্রর কথা আছে। বিশাল জমিদার, লোক, অবশ্য ভালো না–
–কী বলছেন স্যর?
–ঠিক বলছি। হেঁজিপেজি নও তুমি চাঁদু, জমিদার বাড়ির ছেলে, আবার বলছি তোমার পূর্বপুরুষ লোক ছিল খুব মন্দ–
–তা হোক স্যর, জমিদার তো ছিল, আর দেখুন, বামুন হয়ে আমি মুরগি কাটছি…
–সেইজন্যই তো বলছি, এ বইতেই আছে, জিলা কটক, নদীর নাম বিরূপা। গাঁয়ের নাম পধানপাড়া…
–না স্যর, জিলা ঠিক আছে, নদীর নাম মহানদী, গাঁয়ের নাম…
–কিন্তু হরি মিশ্র? সে তো মিথ্যা নয়…
চাঁদু বলল, তা আজ্ঞে, তা তো ঠিক।
–তাহলে কি…
………………………………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
………………………………………………………..
চাঁদুর দোকানটির সামনের সাইনবোর্ড হঠাৎ বদলে গেছে। এখন দেখছি লেখা আছে:
জমিদার হরিহর চিকেন সেন্টার
প্রো: চাঁদু মিশির, এখানে সুস্বাদু মুরুগীর মাংস সুলভ মূল্যে পাইবেন (ছোট কক পাওয়া যায় খুচরা ও পাইকারী)।
দত্তপুকুর বাজার, মোবাইল নম্বর: ৯৮৩৬৪৪১৭৪৫।