যে বই সম্পর্ক লিখতে গিয়ে ছাপাখানার এত কথা লিখছি, সেটি শিল্পী সুবোধ দাশগুপ্তর তৈরি করা ‘চারমূর্তি’, টেনিদার গল্প অবলম্বনে গ্রাফিক নভেল। প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭২ সালের জুন মাসে! এমন একটা সময় যখন একটা-দুটো বিদেশি কমিকস ছাড়া মার্ক ডিভিশন, সংলাপ তৈরি, স্পিচ বেলুন আঁকা, স্বগতোক্তি কিংবা জোরে চিৎকার করা– এই সমস্ত কিছুই অলংকরণের মাধ্যমে প্রকাশ কোনও উদাহরণ কিন্তু ছিল না সামনে। অথচ পড়তে বসে দেখলাম শিল্পী সুবোধ দাশগুপ্ত সেই যুগেও কী অসামান্য দক্ষতায় কমিকসটি তৈরি করেছেন!
গ্রাফিক নভেল তৈরি করা আসলে সিনেমা তৈরি করাই। যেখানে অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, ক্যামেরাম্যান– এই তিনটি চরিত্রে চিত্রশিল্পী নিজেই। শুধু নেই ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। ফিল্ম ডিরেক্টর যেমন পুরো দৃশ্যগুলো এডিট টেবিলে সাজিয়ে সাজিয়ে ‘স্টোরি লাইন’ বা গল্পের মূল কাঠামো তৈরি করেন, তেমনই চিত্রশিল্পী পুরো ছবি মাথার মধ্যে সাজিয়ে নিয়ে কমিক্স বা গ্রাফিক নভেলের প্যানেলগুলো আঁকতে বসেন। আজকাল একটা আলতো আবছা লাইন আমরা ছবিতে দিয়ে থাকি, চুলের মতো সরু লাইন দিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি! আজ থেকে বছর পঞ্চাশেক আগে কিন্তু অলংকরণ শিল্পীদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অত সহজও ছিল না। তখন শিল্পীকে ভাবতে হত একটা রং কিংবা লাইন দেওয়ার আগে– যে এটা আদৌ বইয়ের পাতার।
যে বই সম্পর্ক লিখতে গিয়ে ছাপাখানার এত কথা লিখছি, সেটি শিল্পী সুবোধ দাশগুপ্তর তৈরি করা ‘চারমূর্তি’, টেনিদার গল্প অবলম্বনে গ্রাফিক নভেল। প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭২ সালের জুন মাসে! এমন একটা সময় যখন একটা-দুটো বিদেশি কমিকস ছাড়া মার্ক ডিভিশন, সংলাপ তৈরি, স্পিচ বেলুন আঁকা, স্বগতোক্তি কিংবা জোরে চিৎকার করা– এই সমস্ত কিছুই অলংকরণের মাধ্যমে প্রকাশ কোনও উদাহরণ কিন্তু ছিল না সামনে। অথচ পড়তে বসে দেখলাম শিল্পী সুবোধ দাশগুপ্ত সেই যুগেও কী অসামান্য দক্ষতায় কমিকসটি তৈরি করেছেন! রং হিসেবে পেয়েছেন শুধুমাত্র সাদা আর কালো! কারণ এটি প্রকাশিত হত সে সময়ের বিখ্যাত ‘যুগান্তর’ পত্রিকায়। তখন সাদা-কালোর মধ্যবর্তী ব্যবহার কিন্তু স্বপ্নেও ভাবা যেত না প্রকাশনা প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে। কিন্তু তাতেই কামাল করে দিয়েছেন শিল্পী সুবোধ দাশগুপ্ত।
……………………………………..
আজকাল একটা আলতো আবছা লাইন আমরা ছবিতে দিয়ে থাকি, চুলের মতো সরু লাইন দিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি! আজ থেকে বছর পঞ্চাশেক আগে কিন্তু অলংকরণ শিল্পীদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অত সহজও ছিল না। তখন শিল্পীকে ভাবতে হত একটা রং কিংবা লাইন দেওয়ার আগে– যে এটা আদৌ বইয়ের পাতার।
……………………………………..
আমাদের দেশে গুণী লেখক-শিল্পীরা যে কদর পান না, সম্মান পান না– এটা নতুন কিছু নয়। সুবোধ দাশগুপ্তর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে সাতের দশকে এমন একটি গ্রাফিক নভেল তৈরির যথেষ্ট স্বীকৃতি না পেলেও অন্তত এই মাধ্যমটি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে কাজ করে যাওয়ার পৃষ্ঠপোষক পাননি, এটা বড় আফসোসের কথা!
দেবাশীষ চক্রবর্তীকে সাধুবাদ জানাই এই কমিকসগুলোকে ধারাবাহিকভাবে জমিয়ে রাখার জন্য, তা না হলে এ যুগের কমিকস পাঠকদের কাছে অজানাই থেকে যেতেন সুবোধ দাশগুপ্ত। বইটির প্রচ্ছদ ও প্রতি পাতায় যত্নের ছাপ স্পষ্ট, যার জন্য প্রশংসা প্রাপ্য সংশ্লিষ্ট প্রকাশক ও উদ্যোক্তাদের।
ছবি: গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত
চারমূর্তি
সুবোধ দাশগুপ্ত
কলমকারি
৪০০ টাকা
……………………………………….
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………………….
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved