E-Robbar
ঢাকনাহীন নারীদেহের সৌন্দর্য লুপ্ত হয়েছে মিলানের অজস্র শব্দের তলায়, ডুবে গেছে আটলান্টিস-এর মতো।
রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ও
যৌবনের পাপের জন্য অনুশোচনায় ভরে যাচ্ছে মন। কিন্তু বুড়ো বয়েসের আর এক পাপ যে করে যাচ্ছি। এলিয়টের ভাষাতেই বরং শিকার করি সেই পাপ। বললাম বটে আমি বৃদ্ধ অনুতপ্ত ঈগল। কিন্তু সত্যি তাই?
খাস ইংরেজ জন ক্লিল্যান্ড নানা বদ খেয়ালের বশে সে ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছে ঋণে। এরই মধ্যে সে কিনেছে একটা সস্তার টেবিল। এই টেবিলে সে খায়-দায়। জুয়া খেলে। লেখে।
জন ডান শেষ করেন তাঁর প্রেমের কবিতা। পৃথিবীতে এমন প্রেমের কবিতা এই প্রথম লেখা হল। ডানের চোখের জল পড়ে টেবিলটার ওপর।
কেমন সেই টেবিল, কেমন সেই টেবিলের মন, প্রাণ, চেতনা, ভাবনা-স্রোত, যে টেবিলে বসে, তাঁর অক্সফোর্ডের বাড়িতে নীরদচন্দ্র লিখে ফেলেন ‘আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ’, ‘আত্মঘাতী বাঙালী’, ‘বাঙালী জীবনে রমণী’র মতো তিনটি দুর্বার দরবারি গ্রন্থ, যাদের পাতায় পাতায় চমকে ওঠে বিদ্যুৎবাহী মেধা, মৌলিক মনন, আর বাংলা গদ্যের সাবেকি কৌলিন্য, আভিজাত্য, ধ্রুপদী ধৈবত!
মানুষ চিরদিন নিজের মধ্যেই দ্বিখণ্ডিত। একদিকে শেষ সমস্ত প্রকৃতিকে হারিয়ে দিয়ে যেন নিজের চিরস্থায়ী বৈভবে প্রকাশিত। অন্যদিকে, সেই মানুষই মাটির কয়েক ফুট নিচে অন্ধকারে অন্ধভাবে ফিরে যাচ্ছে তার শেষ মূক আশ্রয়ে, যেখানে সে পচতে পচতে একদিন স্রেফ উবে যাবে। তাহলে অনন্ত বলে কিছু নেই? সবাই মৃত্যু পথের যাত্রী?
লেখার টেবিলের কথা শুনে আমার নোবেল এক্সেপ্টেন্স লেকচারে আমি এক অপ্রত্যাশিত অঘটন ঘটিয়েছি। বলেই চলেছি, বলেই চলেছি শুধু গাছের কথা!