সমাজ বিপ্লবের প্রায় সর্বক্ষেত্রেই অভ্যন্তরীণ ঘটনা ছাড়াও কোনও বিদেশি শক্তির স্বার্থও কাজ করে। জারতন্ত্রের উৎখাত ঘটিয়ে রাশিয়ায় যে বিপ্লব সংঘটিত হয়, তার পিছনে যেমন জার্মানির সরাসরি মদত ছিল, তেমনই গ্রেট ব্রিটেনেরও প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় ছিল। যেহেতু জার সরকার বরাবর ওই দুই দেশেরই মাথাব্যথার কারণ ছিল। রুশ বিপ্লবের হোতা লেনিনকে তো সেই সময় তাঁর নিজের দেশের অনেকে ‘জার্মান চর’ বলেও অভিহিত করত। জারের উৎখাতের খবর পেয়ে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লয়েড জর্জ উল্লসিত হয়ে বলে উঠছিলেন: ‘বিশ্বযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য সিদ্ধ হল।’
৭.
বিপ্লবের বার্তা
সব আবেগ-উচ্ছ্বাসই এক সময় না এক সময় থিতিয়ে আসে। লেনিন প্রতিষ্ঠিত সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সিকি শতাব্দী পরে আজ দিনটি কীভাবে যোগ্য মর্যাদার সঙ্গে উদযাপিত হতে পারে, সেই নিয়ে দেশের বর্তমান রাষ্ট্রনেতারা ভাবনা-চিন্তা করছেন। সে দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান যদি আজ বলে থাকেন যে, ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক ট্র্যাজেডি’, তাহলে তো তা পরোক্ষে বিপ্লবকে স্বীকৃতি জানানোরই নামান্তর, কারণ সোভিয়েত ইউনিয়ন তো গঠিত হয়েছিল বিপ্লবেরই ফলে। কিছুদিন আগে আবার তিনি লেনিনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও এনেছিলেন যে, লেনিন রাশিয়ার ভিত্তির তলায় একটি পরমাণু বোমা রেখে দিয়েছিলেন– তারই বিস্ফোরণ ঘটেছিল পরবর্তীকালে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এখনও দেশের অন্তত শতকরা ৪০ জন মানুষ লেনিনের ভূমিকাকে সদর্থক বলে মনে করেন, শতকরা মাত্র ২০ জনের চোখে তাঁর ভূমিকা নেতিবাচক।
রুশদেশে সংঘটিত বিপ্লবের আগে পর্যন্ত স্বাধীনতা, সাম্য ও সৌভ্রাত্রর বার্তা নিয়ে সংঘটিত ফরাসি বিপ্লবই বিশ্বময় আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিপ্লবের মর্যাদা পেয়ে আসছিল। ফরাসি বিপ্লবের ১০০ বছর পরে ১৯৮৯ সালে পারিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শিল্প প্রদর্শনী উপলক্ষে স্থপতি গুস্তাভ আইফেল যে টাওয়ার নির্মাণ করেছিলেন, যা পরবর্তীকালে ‘আইফেল টাওয়ার’ নামে পরিচিত হয়ে পারি তথা ফরাসি দেশে অন্যতম দর্শনীয় বস্তুতে পরিণত হয়, সেও তো ওই ফরাসি বিপ্লবের সম্মানেই নির্মিত। ফরাসি বিপ্লব যে সময়ে সংঘটিত হয়েছিল, সেই ১৭৮৯ সাল থেকে শুরু করে ১৪ জুলাই বাস্তিল কারাদুর্গ পতনের দিনটিকে ফ্রান্সের জাতীয় উৎসব দিবস ঘোষণা করতে প্রায় ৯০ বছর লেগে গিয়েছিল। ১৯৮৯ সালে সেই বিপ্লবের দ্বিশতবার্ষিকী সেদেশে মহা সমারোহে উদযাপিত হয়। অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবকেও সেই জাতীয় মর্যাদা ফিরে পেতে তাই অবশ্যই সময় লাগবে। বিপ্লবের বার্তা ব্যর্থ হওয়ার নয়।
পাল্টে যাচ্ছে ইতিহাসের গতিপথ
১৯১৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নের জনসংখ্যা ছিল ১৯ কোটি ৬৭ লক্ষ ১৬ হাজার। যুদ্ধের পর ১৯৪৫-এ সেই সংখ্যা হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় ১৭ কোটি ৬০ লক্ষ-তে।
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য– এদের যে কারও তুলনায় সোভিয়েত ইউনিয়নে যুদ্ধের বলি ২০ গুণ করে বেশি (ওই দুই দেশে যুদ্ধের বলি ৩ লক্ষ ৫০ হাজার করে)। জার্মানিতে অবশ্য ৮৪ লক্ষ পর্যন্ত মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সোভিয়েত ইউনিয়নকে একরকম একাই এই যুদ্ধের মোকাবিলা করতে হয়েছিল। সাহায্য এসে পৌঁছেছিল একেবারে শেষদিকে, তা না হলে বার্লিন পর্যন্ত নয়, লাল ফৌজ ইংলিশ চ্যানেল পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।
৭ নভেম্বর, ১৯৯১। ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের জন্য কমিউনিস্টদের সংগঠিত ১৯ আগস্টের অভ্যুত্থান তিন দিনের মাথায়– ২১ আগস্ট অবদমিত হল। এই সুযোগে গর্বাচেভপন্থী ছদ্ম কমিউনিস্টদের হাত থেকে দেশের প্রকৃত ক্ষমতা আমূল সংস্কারপন্থী ইয়েলৎসিনদের হাতে চলে গেল। ‘Regime change’-এর জন্য পশ্চিমের সরাসরি হস্তক্ষেপের অপেক্ষায় থাকতে হল না।
এই ঘটনার আরও বছর দুয়েক আগে একটি প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার ঘটনা ঘটিয়েছিল লাল অক্টোবরের অন্তর্ঘাতী প্রতিপক্ষ। ১৯৪৫ সালের ৯ মে, ৮৬ লক্ষ সোভিয়েত সৈনিক সমেত মোট ২ কোটি ৭৫ লক্ষ সোভিয়েত নাগরিকের প্রাণের বিনিময়ে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করে রাইখস্টাগের মাথার ওপর সোভিয়েত ইউনিয়নের লাল পতাকা তুলেছিল সোভিয়েত সৈনিকরা। সেই থেকে দিনটি সেদেশে ‘বিজয় দিবস’ নামে মহা সমারোহে উদযাপিত হয়ে আসছে। ১৯৮৯ সালে সেই বিজয় উৎসব উদযাপনের ঠিক ছয় মাস পরে আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে ‘অক্টোবর বিপ্লব’ বার্ষিকী উদযাপনের দু’দিন পরে ৯ নভেম্বর, পরবর্তীকালে সঙ্গত কারণেই জার্মানিতে ‘জার্মানির শ্রেষ্ঠ সন্তান’ আখ্যায় ভূষিত সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক, দেশের হর্তাকর্তাবিধাতা মিখাইল গর্বাচ্যোভের প্রশ্রয়ে ধসে পড়ল বার্লিন প্রাচীর, যা গেস্টাপোর সদর দপ্তরে ধ্বংসস্তূপের ওপরেই গড়ে উঠেছিল। আরও বছর আড়াই যেতে না যেতে সেই প্রাচীরেরই ধ্বংসস্তূপের চাপে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন নামের দেশটারই সৌধ ভেঙে পড়ল। সবই চলছিল পরিকল্পনামাফিক। বার্লিন প্রাচীর ভাঙার পর বছর ঘুরতে না ঘুরতে ১৯৯০ সালের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক নোবেল কমিটি আগাম পুরস্কার হিসেবে গর্বাচ্যোভকে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করল। এই সব ঘটনা-পরম্পরা কি নিছক কাকতালীয়, না অন্য কিছু, সে বিচার ঐতিহাসিকরাই করবেন। কিন্তু দৃশ্যত এসবই যেন প্রতিবিপ্লবের প্রস্তুতি ও তার চূড়ান্ত পরিণতির লক্ষণাক্রান্ত।
অবশ্য এটা ঠিক যে অক্টোবর বিপ্লব বহুদিন যাবৎ ‘অক্টোবর অভ্যুত্থান’ নামেই প্রচলিত ছিল– অন্তত ১৯২৭ সাল পর্যন্ত বলশেভিকদের নিজেদের মূল্যায়নেও তা-ই ছিল। বস্তুত বিপ্লব বলতে যা বোঝায়, তা বোধহয় ১৯১৭-র ফেব্রুয়ারিতেই হয়েছিল– সেটা ছিল জারতন্ত্র উৎখাত করে বুর্জোয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিপ্লব। সেই বিপ্লবের ভেতর থেকে আচমকা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সামরিক সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় তার অন্যতম শরিক বলশেভিকরা। এমনকী, ১৯১৯ সালেও স্বয়ং লেনিন কমিন্টার্নের প্রথম অধিবেশনে অক্টোবর অভ্যুত্থানকে আসলে ‘বুর্জোয়া বিপ্লব’ নামে অভিহিত করেন। এই প্রসঙ্গে তাঁর আরও একটি বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেছিলেন, অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ক্ষমতা দখল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নির্ধারিত হয় ক্ষমতা দখলের পরে।
সমাজতন্ত্র দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে স্তালিন ব্যক্তিগত মালিকানা, মুনাফা ও বাজারের বিলোপসাধন করেছিলেন– সেটা বিপ্লবের বেশ কিছুকাল পরে। লেনিন নিজে এই তিনটি ব্যবস্থা উচ্ছেদের পক্ষপাতী হলেও উপস্থিত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৯২১ সাল থেকে নয়া অর্থনৈতিক নীতি নামে এক মিশ্র অর্থনীতির প্রচলন করে ব্যক্তিগত মালিকানা ব্যবস্থা মুনাফা ও বাজার অর্থনীতি আংশিকভাবে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হন। তার অর্থ এটাই যে, দেশ তখনও পুরোপুরি সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রচলনের উপযোগী বলে তাঁর মনে হয়নি। ১৯২৪ সালে লেনিনের মৃত্যুর পরও তিনের দশকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত সেই ব্যবস্থা অব্যাহত ছিল। পরবর্তীকালে, তিনের দশকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে তার স্থান নিয়েছিল সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। প্রথম পাঁচশালা পরিকল্পনাই ১৯২৮-এর আগে হয়ে উঠতে পারেনি।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
বস্তুত বিপ্লব বলতে যা বোঝায়, তা বোধহয় ১৯১৭-র ফেব্রুয়ারিতেই হয়েছিল– সেটা ছিল জারতন্ত্র উৎখাত করে বুর্জোয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিপ্লব। সেই বিপ্লবের ভেতর থেকে আচমকা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সামরিক সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয় তার অন্যতম শরিক বলশেভিকরা। এমনকী, ১৯১৯ সালেও স্বয়ং লেনিন কমিন্টার্নের প্রথম অধিবেশনে অক্টোবর অভ্যুত্থানকে আসলে ‘বুর্জোয়া বিপ্লব’ নামে অভিহিত করেন।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
বিপ্লব ও সঠিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণের মাঝখানের এই ফাঁকাটাতেই রুশ বিপ্লবের পর একটি আমলাচক্র পার্টি, প্রশাসন, সামরিক বাহিনী, পরিকল্পনা দপ্তর, অর্থাৎ রাষ্ট্রের সর্বস্তরে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দখল করে নিয়েছিল, যার ফলে সমাজতন্ত্রের ভিতটাই আর পাকাপোক্ত হওয়ার অবকাশ পেল না।
আরও একটি কথা: সমাজ বিপ্লবের প্রায় সর্বক্ষেত্রেই অভ্যন্তরীণ ঘটনা ছাড়াও কোনও বিদেশি শক্তির স্বার্থও কাজ করে। জারতন্ত্রের উৎখাত ঘটিয়ে রাশিয়ায় যে বিপ্লব সংঘটিত হয়, তার পিছনে যেমন জার্মানির সরাসরি মদত ছিল, তেমনই গ্রেট ব্রিটেনেরও প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় ছিল। যেহেতু জার সরকার বরাবর ওই দুই দেশেরই মাথাব্যথার কারণ ছিল। রুশ বিপ্লবের হোতা লেনিনকে তো সেই সময় তাঁর নিজের দেশের অনেকে ‘জার্মান চর’ বলেও অভিহিত করত। জারের উৎখাতের খবর পেয়ে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লয়েড জর্জ উল্লসিত হয়ে বলে উঠছিলেন: ‘বিশ্বযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য সিদ্ধ হল।’ মার্কিন প্ররোচনায় সংঘটিত সেই যুদ্ধের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়ার কাঁচামালের বাজার দখল করা, সেই সঙ্গে ইঙ্গ-মার্কিন জোটের প্রতিদ্বন্ধী শক্তি জার্মানিকেও অকেজো করে দেওয়া, অর্থাৎ রাশিয়া ও জার্মানিকে পরস্পরের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে উভয়কেই নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া। তাই রাশিয়ার শেষ জার নিকলাই রমানভ্ তৎকালীন মহারানি ভিক্টোরিয়া এবং জার্মানির তৎকালীন কাইজারের নিকট আত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে উদ্ধার করার জন্য যেমন গ্রেট ব্রিটেনের তেমনই জার্মানিরও কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি।
জারতন্ত্র উৎখাতের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে ব্রিটিশ-রুশ পুঁজির আঁতাঁত রুশদেশে অত্যন্ত প্রভাবশালী শক্তি হয়ে উঠেছিল ঠিকই, কিন্তু অনতিকালের মধ্যে বলশেভিকদের অক্টোবর অভ্যুত্থান ঘটে যাওয়ার ফলে সব ছক পাল্টে গেল। ভুল শোধরানোর জন্য পশ্চিমি শক্তিগুলি রাশিয়ার অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করে গৃহযুদ্ধের ইন্ধন জোগাতে লাগল– অনেকটা আজকের দিনের মতোই বিপ্লব ঘটিয়ে জোরজবরদস্তি Regime Change ও বাজার দখলের লড়াই।
পেরেস্ত্রৈকা পর্বের রাশিয়াতে বলশোভিক কায়দায় সোভিয়েত সরকারের ভেতর থেকে অতর্কিতে আরও একটি অভ্যুত্থান ঘটিয়ে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল ১৯৯১-এর ১৯ আগস্ট। কিন্তু তিনদিনের মাথায় তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়ে পরিণামে সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা সমাজতন্ত্রের পতনকেই ত্বরান্বিত করে দিয়েছিল। এ ধরনের হঠকারি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকে বোধহয় সচরাচর ‘পুচ্’ (Putsch) আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে।
আর মাত্র মাস দুয়েকের অপেক্ষা। ইতিহাসের গতিপথ পাল্টে যাচ্ছে। কিন্তু এখন থেকেই অক্টোবর বিপ্লব আর বিপ্লব নয়– অভ্যুত্থান মাত্র। তাই জাতীয় উৎসবের তালিকায় তার নাম রাখা যাচ্ছে না। এ বছরও দিনটা ছুটির দিন থাকছে, যেহেতু যথাসময়ে নতুন সরকারি নির্দেশ জারি করা সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে তাও থাকবে না। আজকের এই ছুটি কোনও কিছুর জন্যই নয়– অকারণ। এমন ছুটি শুধু রাশিয়াতেই সম্ভব! রাশিয়া এমনই একটা দেশ, যেখানে গোগোলের কথায়, ‘অসম্ভবও সম্ভব।’
আজকের মতো ভবিষ্যতেও ৭ নভেম্বরের এই বিশেষ দিনটিতে ক্রেমলিনের রেড স্কোয়ারে আর দেখা যাবে না রেড স্কোয়ার ছাপিয়ে যাওয়া শ্রমিক ও মেহনতি জনতার সুবিশাল সমাবেশ, অবিরত জনস্রোত।
এমনিতেও সাধারণ লোকজনের কারওরই উৎসবের শোভাযাত্রায় যোগদানের কোনও তাড়া নেই, নেই কোনও আগ্রহ। জনতার ভিড় খাবারের দোকানের সামনে– দুধ আর রুটির জন্য মাইলখানেক লম্বা লাইন– আক্ষরিক অর্থে। উৎসবের আনন্দে স্থান নিয়েছে মানুষের অস্তিত্বরক্ষার লড়াই।
…পড়ুন রুশকথার অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ৬: যে-পতাকা বিজয়গর্বে রাইখস্টাগের মাথায় উড়েছিল, তা আজ ক্রেমলিনের মাথা থেকে নামানো হবে
পর্ব ৫: কোনটা বিপ্লব, কোনটা অভ্যুত্থান– দেশের মানুষ আজও তা স্থির করতে পারছে না
পর্ব ৪: আমার সাদা-কালোর স্বপ্নের মধ্যে ছিল সোভিয়েত দেশ
পর্ব ৩: ক্রেমলিনে যে বছর লেনিনের মূর্তি স্থাপিত হয়, সে বছরই ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সূচনাকাল
পর্ব ২: যে দেশে সূর্য অস্ত যায় না– আজও যায় না
পর্ব ১: এক প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে রাশিয়ার খণ্ডচিত্র ও অতীতে উঁকিঝুঁকি