যা করতে ইচ্ছা করে তাতেই আমরা প্রবৃত্ত হই, ফলাফলের বিচার করি না। একে বলে ‘পাশব ধর্ম’। আবার কখনও কখনও হয় কিছুতেই মন নেই। আলস্য আর জড়ভাব আশ্রয় করে শরীর মনকে। কোনও কিছুতেই উৎসাহ নেই। তাই জীবনে অগ্রগতি আর আনন্দ– দুইয়েরই অভাব। মানুষের অন্তরে দেবত্বের কোনও প্রকাশ হয় না। এ যেন কোনও ভাবে দিনগুজরান।
আমাদের জীবনের কর্মসকলকে মোটামুটি দু’ভাগে ভাগ করা যায়– জীবনরক্ষার ব্যবস্থা এবং উন্নয়নের প্রচেষ্টা। আমাদের মধ্যে উন্নতির অনন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। জীবনরক্ষার চেষ্টা আমরা প্রত্যেকেই করে থাকি। কিন্তু দেহমনের গতিকে ঊর্ধ্বদিকে মোড় দিতে হলে চেষ্টা প্রয়োজন। এখানেই সদাচারের ভূমিকা। ধর্মের একটি অন্যতম অঙ্গ সদাচার। শরীর-মনের কিছু কিছু প্রবৃত্তি আমাদের বিপথে চালিত করে। জীবনে চলে আসে স্বেচ্ছাচারিতা। যা করতে ইচ্ছা করে তাতেই আমরা প্রবৃত্ত হই, ফলাফলের বিচার করি না। একে বলে ‘পাশব ধর্ম’। আবার কখনও কখনও হয় কিছুতেই মন নেই। আলস্য আর জড়ভাব আশ্রয় করে শরীর মনকে। কোনও কিছুতেই উৎসাহ নেই। তাই জীবনে অগ্রগতি আর আনন্দ– দুইয়েরই অভাব। মানুষের অন্তরে দেবত্বের কোনও প্রকাশ হয় না। এ যেন কোনও ভাবে দিনগুজরান।
তাই শাস্ত্রে সদাচারের কথা আছে। সদাচারের দ্বারা শরীর পটু ও ওজস্বী হয়। মনে সাত্ত্বিক ভাব আসে, উৎসাহ দেখা দেয়। শাস্ত্রে বিবিধ সদাচারের কথা আছে। সদাচার জীবনে শৃঙ্খলা নিয়ে আসে। শারীরিক এবং মানসিক দুই প্রকার সদাচারের ব্যবস্থা রয়েছে শাস্ত্রে। তাতে শরীর এবং মন দুইয়েরই জড়তা কাটে। শরীর অসুস্থ থাকলে মনে উৎসাহ থাকে না। আর মন ঠিক না থাকলে কাজের ক্ষমতা ও আগ্রহ কিছুই হয় না। তাই বিবিধ সদাচারের কথা।
তবে শুধু সদাচার পালন করলেই হবে না। তার সঙ্গে ভেতরের জীবনের একটা যোগসূত্র তৈরি করা দরকার। কেন এত নিয়ম-নিষ্ঠা? কেন এই সদাচার? জীবনের সঙ্গে এর যোগ কী? তা বুঝলে, এই বিচার থাকলে সদাচার ছাড়তে কখনও ইচ্ছে হবে না। নইলে তা বালির বাঁধের মতো হয়ে দাঁড়াবে। ঠিক ঠিক বিচারের একটা আলাদা শক্তি রয়েছে। ভেতরে একটা আন্তরপ্রক্রিয়া চলতে থাকে। ফলে বিপরীত পরিস্থিতি এলে সমস্ত শক্তি দিয়ে সে রুখে দাঁড়াতে পারে। সদাচার-ভ্রষ্ট সে হয় না। সদাচারের সঙ্গে সঙ্গে বিচার-বুদ্ধির ওপরেও জীবনটাকে রাখতে হবে।