১৮৮৭ সালে পোল্যান্ডের লুডোভিক জামেনহফ এক নতুন ভাষার জন্ম দিলেন। পেশায় ডাক্তার জামেনহফ সারা বিশ্বের মানুষের ভাব বিনিময়ের জন্যে এই পরিকল্পিত আন্তর্জাতিক ভাষাটি উদ্ভাবন করলেন। যে ভাষা সহজে শেখা এবং বলা যায়। নাম দিলেন ‘এস্পেরান্তো’। বাংলা তরজমা করলে ‘যে আশা করে’। বেশ বড়সড় সে আশা। এক পৃথিবী, এক ভাষা। প্রতি বছর ২৬ জুলাই দিনটিকে ‘এস্পেরান্তো দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনেই এস্পেরান্তো ভাষার প্রথম বই ‘ইউনুয়া লিব্রো’ প্রকাশিত হয়েছিল। যে ভাষার নামের মধ্যেই আশাবাদ সে ভাষার বর্তমান বা ভবিষ্যৎ কি সত্যিই আশাব্যঞ্জক! অন্তত তার অতীত তা বলে না। হিটলার এস্পেরান্তো ভাষাকে ১৯৩৫ সালে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কারণ এর মধ্যে তিনি ইহুদিদের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান।
প্রচ্ছদ: অর্ঘ্য চৌধুরী
‘আপনারা আমাকে ভোট দাও…’। শুনেছেন এমন কথা? বাংলা টিভি চ্যানেলে শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপন। এই শ্যাম্পু মাখলে ভোটে দাঁড়ালেও চুলের ‘শাইন’ নষ্ট হয় না। সেই ভরসায় রেশমি চুল ঝাঁকিয়ে একটি মেয়ে মাইক্রোফোন নিয়ে নিজের জন্যে ভোট চাইছে। হিন্দি বিজ্ঞাপনের অন্ধ বঙ্গীকরণে এই খিচুড়িটি পেকেছে। বলিহারি যাই। যিনি এটায় গলা দিলেন, যিনি রেকর্ড করলেন, যাঁরা প্রচার করলেন এবং আরও যাঁরা যাঁরা এই বিজ্ঞাপনের দৌলতে দু’-পয়সা রোজগার করলেন, তাঁদের কানে কি তুলো গোঁজা ছিল! এঁদের কারও কি আপনি-তুমি জ্ঞান নেই গো!
নামকরা হেলথ্ ড্রিঙ্কের বিজ্ঞাপন। সেখানে রোজ শুনছি, এই ড্রিঙ্ক আপনার শিশুর ‘ইমিউনিটিকে সমর্থন’ করে। যাব্বাবা! ইমিউনিটি কি কোন প্রস্তাব, নাকি বিতর্কের বিষয়, যে তাকে সমর্থন করতে হবে! পরে বুঝেছি আসলে শব্দটি ছিল ‘সাপোর্ট’। সেটির আনাড়ি বাংলা তরজমায় হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘সমর্থন’। ‘রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে’ বললেই তো ল্যাটা চুকে যেত। এমন ভুরি ভুরি অখাদ্য অনুবাদ দেখে এবং শুনে থাকবেন আপনারা। এবং এগুলো করছে বাঙালিরাই। এত মিষ্টি একটা ভাষাকে এভাবে বিকৃত করতে দু’বার ঠোঁট কাঁপে না!
‘নাউ ইটস টাইম ফর ট্র্যাফিক আপডেটস। আজ কোলকাতার ট্র্যাফিক কন্ডিশন ওভারঅল স্মুদ। ওনলি রাসবিহারি থেকে আপটু গ্যড়িয়াহাট অ্যান্ড নর্থ-এ ফ্রম শ্যামবাজার ট্যুয়ার্ডস এসপ্ল্যানেড দুটো র্যালি আছে…’ এমন ফোড়নের মতো বাংলা শব্দ ছিটিয়ে কারা কথা বলে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। ঠিকই ধরেছেন। বাংলা এফএম চ্যানেল। সবাই নয়। তবে বেশিরভাগই। ওরা তো প্রায় প্রতিযোগিতায় নেমেছে, কে কত কম বাংলা বলতে পারে! যেটুকুও বা বলে তা আবার সাহেবি উচ্চারণে। আরে ভাই বলো না, ‘আজ যান চলাচল স্বাভাবিক। অমুক জায়গা থেকে অমুক জায়গায় মিছিল আছে।’ তা বললে তো হবে না। ওরা তো সঞ্চালক না, আর. জে.। এত কষ্ট করে ছেলেমেয়েগুলো বাংলা শব্দ উচ্চারণ করে, ওদের জন্যে সত্যি মায়া হয়। পেটের দায়ে মাতৃভাষা বলা। ইংরেজি ইশকুলে পড়া এই প্রজন্মের বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের কথার ধরনই এমন। ওদের খপ্পরে পড়ে বাংলা শব্দগুলো যেন ভয়ে ভয়ে হ্যাট-কোট চড়িয়ে সাহেব বাংলোর দারোয়ানি করছে।
টেলিভিশনের চব্বিশ ঘণ্টার খবরের কারবারিরা আবার কিছু শব্দবন্ধকে অস্থানে কুস্থানে লাগিয়ে দিচ্ছেন অনবরত। খেয়াল করবেন, একজন সাংবাদিক দশটি বাক্যের মধ্যে কতবার ‘কিন্তু’ বলেন। ‘আমরা কিন্তু এখন দাঁড়িয়ে আছি অমুক জায়গায়…’, ‘এখন আমরা কিন্তু আমাদের মধ্যে পেয়ে গেছি অমুককে…’। যদি কোনও দুই বিষয়ের মধ্যে আপাত বিরোধ থাকে, তবেই তো সেই বাক্যে ‘কিন্তু’ আসে। নাহ্। ওসব নিয়ম এখন আর খাটে না। মিডিয়া চাইলে কিন্তু দুধ-ভাতের মধ্যেও কিন্তু একখানা ‘কিন্তু’ ঢুকিয়ে দেবে। সাবধান কিন্তু!
সাদামাটা সরল বাক্যগুলোকে অকারণে জটিল করে ফেলতে মিডিয়া বেশ দড়। যেমন ধরুন, ‘বালিগঞ্জে অভিযুক্তের যে বাড়ি, সেই বাড়ির সামনে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, আমার ক্যামেরা পার্সনকে বলব দেখাতে…’। ‘বালিগঞ্জে অভিযুক্তের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছি’ বললে কি বাঙালি কিছু কম বুঝত? এই ধরনের ভাষাবিকার বড় ছোঁয়াচে। সেটাই ভয়। আজকাল আর একটা শব্দগুচ্ছ কথার মাঝে বেশ জায়গা করে নিয়েছে। বিশেষ করে সাংবাদিকরা উপসংহার টানার সময় কথাকটি আওড়াতে ভোলেন না। ‘এই জায়গায় দাঁড়িয়ে’…। এই ‘জায়গা’ কোন স্থান নয়। অবস্থা, আবহ, পরিস্থিতি, প্রেক্ষিত কিংবা পারিপার্শ্বিকতা। এমন অনেক বিকল্প শব্দ তো আছে। সেগুলো মাঝেসাঝেও যদি উচ্চারণ করেন তবে বাঙালির কানের একটু আরাম হয়। আমরা একই ‘জায়গায় দাঁড়িয়ে’ স্থানু হয়ে যাচ্ছি যে। আমাদের শব্দ চয়নে কোনও বৈচিত্র নেই। এদিকে বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডারে ধুলো জমছে। মাঝে মাঝে দু’চারটে করে শব্দকে ধুলো ঝেড়ে একটু আলোবাতাস খাইয়ে মুখে তুলে নিলে ভাল হয় না কি? চলুন না, এই খেলাটা শুরু করি। প্রত্যেক সপ্তাহে কিছু পোশাকি শব্দকে আটপৌরে করে ফেলার চেষ্টা করি।
………………………………………………………………………………….
রোজ সন্ধেবেলা কোনও না কোনও সিরিয়ালে কেউ না কেউ শাসাচ্ছে, ‘কান খুলে শুনে রাখো…’। হিন্দিতে এমন একটা কথা আছে বটে। তাই বলে বাঙালিকেও কান খুলতে হবে! বাংলা ভাষার এ দৈন্য শুনতে শুনতে আমাদের কান বিলক্ষণ খুলে গিয়েছে। কানে কিছুই তাই লাগে না। কিন্তু কানের ভিতর দিয়ে ভাষা হারানোর ব্যথা মরমে কবে পশিবে গো! আমাদের চোখ-ই বা কবে খুলবে! আমার আপনার ভাষাটা যে বড় মিঠে। আমার ভাষাই তো আমার প্রথম পরিচয়। আজকের প্রজন্মকে তার আত্মপরিচয়ের প্রথম পাঠ কে দেবে! সন্তানের বাংলাভাষায় অনীহাকে আশকারা দেওয়া বা তাতে গর্বিত বোধ করা অভিভাবকেরা একবার আয়নার সামনে দাঁড়ান। নিজের সঙ্গে কথা বলুন। মনের সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্যে তো নিপাট মায়ের ভাষাটাই ভরসা। তাই না?
………………………………………………………………………………….
মুশকিল হল, মিডিয়ার ভাষাই নিঃশব্দে আমাদের মুখের ভাষা হয়ে যায়। আমরা টেরও পাই না। যেমন আজকাল হামেশাই দেখবেন আমরা ‘কারণ’ না বলে বলছি ‘কেন কী’। রোজ সন্ধেবেলা কোনও না কোনও সিরিয়ালে কেউ না কেউ শাসাচ্ছে, ‘কান খুলে শুনে রাখো…’। হিন্দিতে এমন একটা কথা আছে বটে। তাই বলে বাঙালিকেও কান খুলতে হবে! বাংলা ভাষার এ দৈন্য শুনতে শুনতে আমাদের কান বিলক্ষণ খুলে গিয়েছে। কানে কিছুই তাই লাগে না। কিন্তু কানের ভিতর দিয়ে ভাষা হারানোর ব্যথা মরমে কবে পশিবে গো! আমাদের চোখ-ই বা কবে খুলবে! আমার আপনার ভাষাটা যে বড় মিঠে। আমার ভাষাই তো আমার প্রথম পরিচয়। আজকের প্রজন্মকে তার আত্মপরিচয়ের প্রথম পাঠ কে দেবে! সন্তানের বাংলাভাষায় অনীহাকে আশকারা দেওয়া বা তাতে গর্বিত বোধ করা অভিভাবকেরা একবার আয়নার সামনে দাঁড়ান। নিজের সঙ্গে কথা বলুন। মনের সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্যে তো নিপাট মায়ের ভাষাটাই ভরসা। তাই না? তাহলে সন্তানকেও সেই ভরসার ভাষাকে ভালবাসতে শেখান। তাকেও তো একদিন মনের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হবে।
দিনকয়েক আগে একটা খবরে চোখ আটকে গেল। শিলচরের বরাক উপত্যকায় ডন বস্কো স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির বাংলা পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি ইংরাজি ভাষায় করা হয়েছে। নিন্দের ঝড় উঠেছে এমন আজব কাণ্ড দেখে। শিরোনামটুকু পড়েই কানে বেজে উঠল কবি অপূর্ব দত্ত’র লেখা মোক্ষম পঙক্তিটি, ‘স্কুলে কেন বেঙ্গলিটা পড়ায় না ইংলিশে!’ এতদিনে তবে এটাও ঘটল। তাও আবার কি না বরাকে, বাংলা ভাষার জন্য যে উপত্যকার মানুষ একদিন প্রাণ দিয়েছেন! কিন্তু বরাক না হয়ে এটা তো ব্যারাকপুরেও হতে পারত। স্থান দিয়ে কি কালের বিচার হয়! গুগল-এর কল্যাণে প্রশ্নপত্রটি দেখলাম। বুঝলাম– এই শিশুরা প্রথম বাংলা শিখছে। ইংরেজি বাক্যে জানতে চাওয়া হয়েছে বর্ণ কত প্রকার। মাত্রা-সহ এবং মাত্রা-ছাড়া স্বরবর্ণ লিখতে বলা হয়েছে তাদের। যে শিশুর দৌড় স্বরবর্ণ অবধি, সে কেমন করে ব্যঞ্জনবর্ণে ঠাসা বাংলা প্রশ্নপত্রটি পড়বে বলুন দেখি! শুধু তাই নয়, তাতে যুক্তবর্ণ ও আছে! তাকে তো অন্য ভাষার সাহায্য নিতেই হবে। যে কোনও ভাষা শিখতে গেলে অন্য ভাষার মাধ্যম তো লাগবেই। এক্ষেত্রে সে ইংরেজি মাধ্যমে বাংলা শিখছে। বেশ তো। এতে গেল গেল করার কী আছে! যত্ত কাগুজে হুজুগ। হতেই পারে, এটা ওদের অনেকেরই মাতৃভাষা নয়। আর শিলচরে বসে শিশুরা এখনও বাংলাভাষা শিখছে, এটাই তো যথেষ্ট আনন্দের কথা। ওরা তো নেহাতই শিশু। পশ্চিমবঙ্গের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরেও তো কিছুদিন আগে অবধি এমনটা হতে দেখেছি। সংস্কৃত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রটি আগাগোড়া বাংলায়, পরীক্ষার্থীরা উত্তরও লিখছে বাংলায়। দেবনাগরী হরফ না জানলেও চলত। তার বেলা? একে ‘অপসংস্কৃত’ বলে তো নিন্দেবান্দা কানে আসেনি।
১৮৮৭ সালে পোল্যান্ডের লুডোভিক জামেনহফ এক নতুন ভাষার জন্ম দিলেন। পেশায় ডাক্তার জামেনহফ সারা বিশ্বের মানুষের ভাব বিনিময়ের জন্যে এই পরিকল্পিত আন্তর্জাতিক ভাষাটি উদ্ভাবন করলেন। যে ভাষা সহজে শেখা এবং বলা যায়। নাম দিলেন ‘এস্পেরান্তো’। বাংলা তরজমা করলে ‘যে আশা করে’। বেশ বড়সড় সে আশা। এক পৃথিবী, এক ভাষা। প্রতি বছর ২৬ জুলাই দিনটিকে ‘এস্পেরান্তো দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনেই এস্পেরান্তো ভাষার প্রথম বই ‘ইউনুয়া লিব্রো’ প্রকাশিত হয়েছিল। যে ভাষার নামের মধ্যেই আশাবাদ সে ভাষার বর্তমান বা ভবিষ্যৎ কি সত্যিই আশাব্যঞ্জক! অন্তত তার অতীত তা বলে না। হিটলার এস্পেরান্তো ভাষাকে ১৯৩৫ সালে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কারণ, এর মধ্যে তিনি ইহুদিদের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান। মূলত ইউরোপের দেশগুলোর বহুভাষার সমস্যা থেকেই জামেনহফের মাথায় এই বিশ্বভাষার ভাবনাটা আসে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এস্পেরান্তোর ওপর মানুষের উৎসাহ বাড়লেও ১৯৭০-এর পর থেকে সে উৎসাহে ভাটা পড়ে। বর্তমানে কিছু ইউরোপীয় দেশে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অল্প কিছু মানুষ এস্পেরান্তো ভাষায় কথা বলতে পারেন। মেরেকেটে দু’-মিলিয়ন এস্পেরান্তোভাষী খুঁজে পাওয়া যাবে হয়তো আজ। বিশ্বভাষা হওয়ার দৌড়ে হার মেনেছে এস্পেরান্তো। আর সে লড়াইতে অনেক এগিয়ে এসেছে ইংরেজি। তবে এস্পেরান্তো তো বিশ্ববাসীর দ্বিতীয় ভাষা হতে চেয়েছিল, কোনও মাতৃভাষার জায়গা সে কেড়ে নিতে চায়নি।
…………………………………………………………
আরও পড়ুন মৌসুমী ভট্টাচার্য্যর লেখা: মৌমাছির থেকে মানুষ যা যা শিখে নিতে পারে
…………………………………………………………
আজ বঙ্গদেশের নতুন প্রজন্ম তাদের মাতৃভাষাকে অবজ্ঞায়, অবহেলায় দ্বিতীয়, তৃতীয় বা আরও পিছনে ঠেলে দিচ্ছে। দীর্ঘ ঔপনিবেশিক শাসন ইংরেজির ওপর আমাদের দুর্বলতার প্রথম বীজটি বুনেছিল। বিশ্বায়ন সে বীজকে মহীরুহ করেছে। পাশ্চাত্যের বাতাস লাগুক না প্রাণে। ক্ষতি কি! তবে সে বাতাস যদি ঝঞ্ঝা হয়ে আমাদের আপন ভাষাকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে চায়, তবে ‘কণ্ঠ ছাড়ো জোরে’। বাংলার মিষ্টি ভাষায় মিশে থাক নানা আঞ্চলিকতার টান। আর শহুরে বাংলা ইংরাজি-উচ্চারণের অসম্মান থেকে নিষ্কৃতি পাক। মাঝে মধ্যে অশোক মিত্র, অম্লান দত্ত কিংবা অশীন দাশগুপ্তদের লেখা প্রবন্ধ পড়লে বা তাঁদের স্বতস্ফূর্ত বক্তৃতা শুনলে হয়ত এ প্রজন্ম বুঝবে মাতৃভাষার প্রতি কতটা মমত্ব বুকে নিয়ে এঁরা আজীবন মেধার চর্চা করে গিয়েছেন। বাংলা, ইংরেজি দুই ভাষাতেই কী অসাধারণ পারদর্শিতা! ফরাসি সাহেব ফাদার দ্যাতিয়েনদের মতো মানুষেরা বাংলাকে ভালবেসে, বাংলা ভাষাকে ভালবেসে এখানেই কাটিয়ে দিলেন জীবনের সেরা সময়টা। লিখলেন একাধিক বই, বাংলায়। ‘ডায়েরির ছেঁড়া পাতা’ কি কোনওদিন উলটে দেখবে নতুন যুগের ছেলেমেয়েরা! এমন নজির আরও আছে। আমাদের ব্যর্থতা, তাঁদের সঙ্গে আমরা আমাদের সন্তানদের পরিচয় করাতে পারিনি। ভয় হয়, বাংলাও একদিন এস্পেরান্তোর মতো পথ হারাবে না তো?
ধুস্! তাই কখনও হয়! ‘বাংলা ভাষা উচ্চারিত হলে নিকোনো উঠোনে ঝরে রৌদ্র, বারান্দায় লাগে জ্যোৎস্নার চন্দন…’। বাংলা বর্ণমালা যেন নবান্নের আলপনা; শব্দগুলো যেন সোনালি ধানের শিষ। এস্পেরান্তোর আশাবাদ মিশে থাক বাংলা ভাষার আদিগন্ত খেত জুড়ে। ‘…ফিনিক দিয়ে উঠছে তবু বুকের বাংলা ভাষা/ এবার থেকে ঐখানে হোক নিত্যি যাওয়া-আসা।’
……………………………………………………….
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………………………………….