একটি সিনেমার লাটাই সম্পাদকের হাতে থাকে বইকি! বলা হয়, সম্পাদনার টেবিলে একটা ছবির নতুন করে চিত্রনাট্য লেখা হয়। একজন সম্পাদক প্রায় দ্বিতীয় পরিচালকের মতো। সম্পাদনায় যদি কোনও গলদ থেকে যায়, তাহলে সেই ছবি কখনও শেষ হয় না, সেই ছবি উড়তে পারে না, সেই ছবি মুখ থুবড়ে পড়ে। শুধুই তো তা নয়, একটা সিনেমা যখন সম্পাদনার টেবিলে সম্পাদিত হয়, তারপর সেখানে সংগীত যুক্ত হয়। সংগীতের যথার্থ প্রয়োগও নির্ভরশীল সম্পাদকের ওপর।
একটা সিনেমা যখন মুক্তি পায়, তখন তা একটা সম্পূর্ণ আকাশ পায়। মুক্ত আকাশে সে উড়তে থাকে, কখনও সমালোচনার মুখোমুখি হয়, কখনও প্রশংসায় আলোকিত হয়। আকাশে উড়তে পেরে ঘুড়ি যেমন খুশিতে ডগমগ হয়ে এগিয়ে যায়, একটা সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার ক্ষেত্রে তেমনটা বলা যেতেই পারে। তবে, একটু পিছনে ফিরলে দেখা যায়, একটা লাটাই অবশ্য আছে, তা যে শুধু নিয়ন্ত্রণ করছে এমন নয়, আশকারাও দিচ্ছে বটে। লাটাইয়ের অস্তিত্বের কথা অবশ্য ভুলে যাওয়াই দস্তুর, কারণ নীল আকাশে রঙিন ঘুড়ি দেখে ফেললে অন্যদিকে কি আর চোখ যায়? ওখানেই চোখ আটকে যাবে, ওখানেই মন পড়ে থাকবে।
একটি সিনেমার লাটাই সম্পাদকের হাতে থাকে বইকি! বলা হয়, সম্পাদনার টেবিলে একটা ছবির নতুন করে চিত্রনাট্য লেখা হয়। একজন সম্পাদক প্রায় দ্বিতীয় পরিচালকের মতো। সম্পাদনায় যদি কোনও গলদ থেকে যায়, তাহলে সেই ছবি কখনও শেষ হয় না, সেই ছবি উড়তে পারে না, সেই ছবি মুখ থুবড়ে পড়ে। শুধুই তো তা নয়, একটা সিনেমা যখন সম্পাদনার টেবিলে সম্পাদিত হয়, তারপর সেখানে সংগীত যুক্ত হয়। সংগীতের যথার্থ প্রয়োগও নির্ভরশীল সম্পাদকের ওপর। সংগীতের চলের সঙ্গে সম্পাদনার চলনও, সিনেমার চলনকে মিলতে হবে।
যদিও অনেকেই মনে করেন শুটিংটাই আসল, বহু ক্লায়েন্টের কাছেও শুটিং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে শুটিংয়ের পর থেকেই তাড়াহুড়ো শুরু হয়ে যায়, কবে সিনেমাটি মুক্তি পাবে। তার কারণ শুটিং-টা দেখতে পাওয়া যায়, মানুষ বুঝতে পারে, ক্লায়েন্টও বুঝতে পারে। এটাও অনেকটা আকাশে ঘুড়ি দেখার মতো। দেখতে পেলেই নিশ্চিন্ত। কিন্তু একজন সম্পাদকের কাছে যখন সিনেমাটির শুটিং মেটেরিয়াল এসে পৌঁছয়, তারপর শুরু হয় নতুন করে গল্প বলার পাঠ্যক্রম।
………………………………………………………..
সিনেমা যদি মসৃণ না হয়, সিনেমা যদি নিজের ছন্দে এগিয়ে না চলে, তাহলে তার দায় সম্পাদকের। তখনই একমাত্র সম্পাদক দৃশ্যমান হয়, তখনই সিনেমাটি ভেস্তে যায়। সম্পাদকের কৃতিত্ব তার অদৃশ্যমানতায়। একজন ভালো সিনেমাটোগ্রাফারের কাজ চাক্ষুষ করা যায়, সেভাবে সম্পাদকও যদি মনে করে তার কাজ চাক্ষুস করা যাবে, তাহলে সেটা তার কৃতিত্ব নয়, বরং বিপরীতই।
………………………………………………………..
লাটাই যার হাতে থাকে তার কি গরিমা নেই? সে কি নেপথ্য কারিগর হিসেবেই থাকতে চায়? নাকি প্রকাশিতও হতে চায়? সে কি উড়তে চায় না মাঝ আকাশে? সে চায় না প্রকাশিত হতে? মাটির সঙ্গে তার কী সম্পর্ক? মাটির কাছেই কেন তার বাঁধা পড়ার প্রবণতা?
……………………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার.ইন
……………………………………………..
আসলে লাটাই যার হাতে, তাকে অস্তিত্বহীনই হতে হয়। তাকে আড়ালে থাকাই মানায়। অদৃশ্য থাকাটাই তার গরিমা। সে দৃশ্যমান হয়ে উঠলে আর কোনও ম্যাজিক থাকে না। সিনেমার ক্ষেত্রে যদি সম্পাদকের ভূমিকা টের পাওয়া যায়, তাহলে বুঝতে হবে সম্পাদনা ভালো হয়নি। সিনেমা যদি মসৃণ না হয়, সিনেমা যদি নিজের ছন্দে এগিয়ে না চলে, তাহলে তার দায় সম্পাদকের। তখনই একমাত্র সম্পাদক দৃশ্যমান হয়, তখনই সিনেমাটি ভেস্তে যায়। সম্পাদকের কৃতিত্ব তার অদৃশ্যমানতায়। একজন ভালো সিনেমাটোগ্রাফারের কাজ চাক্ষুস করা যায়, সেভাবে সম্পাদকও যদি মনে করে তার কাজ চাক্ষুস করা যাবে, তাহলে সেটা তার কৃতিত্ব নয়, বরং বিপরীতই।
………………………………….. পড়ুন হাতে লাটাই …………………………..
শুদ্ধসত্ত্ব ঘোষ-এর লেখা: সুতোর দায়িত্বে অর্জুন বা যুধিষ্ঠির থাকলেও মহাভারতের লাটাইধারী কিন্তু কৃষ্ণই
অর্পণ গুপ্ত-র লেখা: আকাশের লড়াইতে দ্রাবিড় কেবলই মাটির প্রতিনিধি
হিরণ মিত্র-র লেখা: ঘুড়ির রং নিয়ে ভেবো না, লাটাই কার হাতে দেখো
সুস্নাত চৌধুরী-র লেখা: বই কার হাতে গ্রন্থিত, উল্লেখ না থাকার সম্ভাবনা সাড়ে চোদ্দ আনা