২২ ফেব্রুয়ারি ছিল বিশ্ব চিন্তা দিবস। বাঙালির মধ্যে যে চিন্তা ও মননের স্ফুরণ ছিল, তা কি এখনও বর্তমান? না কি তার ধার ক্রমে ক্ষয়ে যেতে চলেছে? রবীন্দ্রনাথ থেকে রঁদ্যা, অমর্ত্য সেনের তর্কপ্রিয় ভারত থেকে আজকের প্রগাঢ় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ঢুঁড়ে দেখা যে, বাঙালির চিন্তাচেতনার ক্ষেত্রটি কি সংকুচিত হতে হতে ক্রমশ এক গোয়ালঘরে পরিণত হয়েছে?
‘ভাবুক’ বা ‘চিন্তক’ ইত্যাদি শব্দ আমাদের স্মৃতিতে এখন অনেকটা ফিকে। তবে অভিধান বা শব্দকোষে তার উপস্থিতি টিকে আছে বটে, সেও খানিক ফসিলের ব্যঞ্জনায়। এইসব শব্দের সঙ্গে মেধার গভীর গাঁটছড়া। বলা ভালো, উভয়ে নিবিড়ভাবে সংসক্ত। এদিকে আমাদের মাথায় এখন প্রবল খরা। বেশ কিছু কাল ধরে ছাপোষা বাঙালি মধ্যমেধার কারবারি। নিম্নমেধা বলতেও অসুবিধে নেই, একটু ‘হায়ার গ্রেড’ হিসেবেই না হয় মার্কা দেওয়া গেল। মধ্যবিত্ত বাঙালির মস্তিষ্কে এমন ছ্যাতলা-পড়া দশা আগে ছিল কি না জানি না! এ কথাও সত্যি যে, চিরকাল ওপরতলা আর একেবারে নীচুতলার চাপে তারা স্যান্ডউইচ হয়ে এসেছে। তবু জোরের সঙ্গে টিকিয়ে রেখেছিল নিজের অস্তিস্ত্ব, আইডেন্টিটি খুইয়ে বসেনি। ঘা-খাওয়া মধ্যবিত্ত বাঙালি জেগে ছিল তার সৃষ্টিশীলতার তাগিদে। একসময় শিল্প-সাহিত্য-সংগীত– সর্বত্র ছিল তার জয়জয়কার। তবে কি আজ সব চুকেবুকে গিয়েছে? তাই হবে হয়তো! তার প্রতিদিনের জীবনে কেউ আজ দাগা বুলিয়ে দিয়েছে। সেই ছাঁচের রাস্তা ত্থেকে যেমন সরে দাঁড়ানোর উপায় নেই, অন্যদিকে নেই ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস! ভালোমন্দ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ‘সাবধানী পথিকের মতো’ নির্ধারিত ছকে চলতে চলতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল। তারপর পড়ন্ত বিকেলের আলোয় পৌঁছে হাইপার-টেনশন, ইন-সিকিওরিটি, উচ্চ রক্তচাপে জর্জরিত নড়বড়ে হৃদযন্ত্রের মধুরসঙ্গী তার স্মৃতিভ্রম। কাল কী করেছিলাম মনে নেই, আজ কী করতে হবে ভুলে যাই– এমনই অবস্থা। জীবনযাপনের এই ওঠাপড়াহীন নৃত্যনাট্য সমান ছন্দ লয়ে বেজে একদিন থেমে যায়। এ হেন অবস্থায় ভাবনাচিন্তার স্বতন্ত্র স্পেস কোথায়? ঋত্বিক ঘটকের সেই সংলাপ এখন কে বলবে– ‘ভাবো, ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো’। ভাবনার অবকাশ কোথায়? তবে কি বাঙালির নব নব চিন্তার উন্মেষ শুকিয়ে গিয়েছে? তেল ফুরিয়ে এসেছে তর্কপ্রিয় ভারতীয়ের প্রদীপের আলোয়? চিন্তাশীল বাঙালির অস্তিত্ব একেবারে অপস্রিয়মাণ? কে বলবে সে-কথা?
মাথার মধ্যে এমন অর্থহীন ভাবনার জাল নিমেষে সঞ্চারিত হল অগুস্ত রঁদ্যার একটি ভাস্কর্যের কথা স্মরণ করে। ‘দি থিঙ্কার’। কী এক গভীর চিন্তায় মগ্ন সেই মানুষটি! প্রায় দেড়শো আগের এই অসাধারণ ভাস্কর্য এখনও আমাদের থমকে দাঁড় করিয়ে রাখার পক্ষে যথেষ্ট। সে কি তার আঙ্গিক, না কি বিষয়ের উপস্থাপনার জন্য? ভাস্কর্যের আকারের বিশালত্বে না সামগ্রিক অভিব্যক্তির ব্যঞ্জনায়? আরেকবার ফিরে তাকাই, সেই বিশ্ববিশ্রুত কাজটির দিকে। ভালো করে খেয়াল করলে দেখি, সুঠাম শরীরের এক নগ্ন পুরুষ উঁচু পাথরখণ্ডের উপরে বসে গভীর চিন্তায় দিগ্বিদিক বিস্মৃত। তার ঝুঁকে পড়া অর্ধবৃত্তাকার দেহের ভর থুতনির নিচে থাকা ডান হাতের মুঠোর উপরে। অন্য হাত ভাঁজ করে রাখা বাঁ পায়ের ঊরুমধ্যে। পৃথিবী জুড়ে এই ভাস্কর্য দীর্ঘকাল এক প্রগাঢ় চিন্তাবিদের আইকন হিসেবে চিহ্নিত। ঠিক কি চিন্তায় আত্মবিস্মৃত এই ভাবুক– এ প্রশ্ন এখনও আমাদের আন্দোলিত করে। মূর্তির ঋজু শরীরী ভাষা যেন নিঃশব্দে যেন কিছু বলে যায়। নিজেকেই প্রশ্ন করি, ‘দ্য থিঙ্কার’-এর অনন্ত ভাবনার কেন্দ্র কি কেবল তার মস্তিষ্কে সীমাবদ্ধ? না কি, তার শরীর জুড়ে ছড়িয়ে আছে সেই চিন্তার ছায়া, এক অব্যক্ত ভাষার ইশারায়?
উত্তর দিয়ে গেছেন স্বয়ং শিল্পী। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন– ‘দি থিঙ্কার’ কেবল মস্তিস্ক দিয়েই চিন্তা করছে না, ভাবনার অবিরাম স্রোত বয়ে চলেছে ভ্রু-যুগলের বক্রতায়। নাসারন্ধ্র দিয়ে প্রবাহিত বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে জারিত হয়ে চলেছে ওই দুমড়ে যাওয়া ঠোঁটের মোচড়ে। শুধু কি তাই? চিন্তার নিয়ত চলাচল ছেয়ে আছে বাহুর প্রত্যেক পেশির উত্তল-অবতলে, পৃষ্ঠদেশে, পদযুগলের ভঙ্গিতে। মুষ্টিবদ্ধ করতল ছাড়িয়ে তা বিস্তৃত হয়েছে চিন্তার দমকে কুঁকড়ে যাওয়া পায়ের আঙুলের প্রতিটি ভাঁজেও। অর্থাৎ রঁদ্যার ‘দ্য থিঙ্কার’, মস্তিষ্কের পাশাপাশি সমস্ত শরীর দিয়ে ভেবে চলেছে। করোটির বৃত্তাকার প্রকোষ্ঠই তার ভাবনার মিথক্রিয়ায় একমাত্র পরিসর হয়ে ওঠেনি। শুনে ভারি আশ্চর্য বোধ হয় আমাদের! আরও অবাক লাগে যখন দেখি, সুদূর প্যারিস থেকে বহু যোজন দূরে কলকাতায় তাঁর থেকে ২০ বছরের কনিষ্ঠ এক বাঙালি কবি এমন ভাবে অনুভব করেছিলেন দৃশ্যমান জগতকে। এই কবির লেখা ‘ফাল্গুনী’ নাটকের অন্ধ বাউল, যে চোখ দিয়ে না দেখেও সর্বাঙ্গ দিয়ে দেখতে পায়। বুঝতে পারি, ‘ওকে রাস্তা খুঁজতে হয় না, ও ভিতর থেকে দেখতে পায়’। সে আরও বলে ‘আমি যে সব দিয়ে শুনি– শুধু কান দিয়ে না’। এখানে রোঁদার ভাবনার অনুরণন কি মিলে যায় রবীন্দ্রনাথের সংলাপে? আমরা জানি, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন রঁদ্যার কাজের বিশেষ ভক্ত। এমনকী, ১৯১৩ সালের জুন মাসে, তাঁর নোবেল অধ্যায়ের অব্যবহিত আগে লন্ডনে অবস্থানকালে রঁদ্যার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। যার প্রত্যক্ষ প্রমাণ রেখে গিয়েছে কবিকে লেখা কাইজারলিংয়র একটি চিঠি। কবির অনুরোধে উভয়ের সাক্ষাতের জন্যে কাইজারলিং একটি চায়ের আসরের ব্যবস্থা করেছিলেন। তবে সে যাত্রায় কবি আর ভাস্করের সাক্ষাৎ হতে পারেনি। জানি না, সেদিন দেখা হলে কেমন হত সেই আলাপচারিতা! ব্রোঞ্জের নটরাজ মূর্তি দেখে যে বিশ্ববিশ্রুত ভাস্কর নিজেই নাচতে শুরু করেছিলেন, কোন বার্তা তিনি দিতে চাইতেন প্রাচ্যের উদীয়মান কবিকে?
মনে রাখতে হয়, রোঁদার ‘দি থিঙ্কার’ ভাস্কর্যটির প্রকৃত নাম ‘দি পোয়েট’, কবি। এ-ও মনে রাখা জরুরি, কোনও স্বতন্ত্র ভাস্কর্য হিসেবে প্রথমে সেটি রচিত হয়নি। দান্তের ‘দ্য ডিভাইন কমেডি’ অবলম্বনে রচিত রঁদ্যার ‘দ্য গেটস অফ হেল’-এর প্রধান অংশ এই ভাস্কর্য। যা একটি সম্মিলিত ভাস্কর্যমালার অন্যতম প্রধান অংশ। ব্রোঞ্জ নির্মিত মনুমেন্টাল কাজটি আদতে প্যারিসের ডেকরেটিভ আর্টস-এর প্রবেশদ্বারের দু’টি দরজা হিসেবে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তার প্রাথমিক খসড়া তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত শিল্পীর জীবদ্দশায় সে কাজ আর সম্পূর্ণ করা যায়নি। পরবর্তী কালে শিল্পী এই ‘দ্য গেটস অফ হেল’ থিমসংলগ্ন একাধিক ভাস্কর্য স্বতন্ত্র ভাবে, বড় আকারে সৃষ্টি করেছেন। স্বীকার করতে হবে, আর্ট মিউজিয়মের প্রবেশদ্বার হিসেবে দান্তের ‘দ্য ডিভাইন কমেডি’কে বেছে নেওয়ার মধ্যে রোঁদার শিল্পজিজ্ঞাসার গভীরতা ধরা পড়ে। দান্তের ভাবনায় ‘দ্য ডিভাইন কমেডি’র অন্দরে নরকের চক্রাকার দৃশ্যাবলি প্রতিবিম্বিত হতে দেখি। রঁদ্যার ভাবনায় তা হয়ে উঠেছে নরকের প্রবেশদ্বার। সেই প্রবেশ-দরজার শীর্ষে কেন্দস্থলে দ্রষ্টা হিসেবে অবস্থান করছে ‘দ্য় থিঙ্কার’– যিনি মানবজীবনের অমোঘ পরিণতি নিয়ে গভীর ভাবে ভাবিত। প্রবেশপথের শীর্ষে উপবিষ্ট এই চিন্তাশীল মানুষটি আসলে মহাকবি দান্তের প্রতিকৃতি। দান্তের নগ্ন প্রতিমা হয়তো শিল্পীকে কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। তবে শিল্পের নগ্নতা এখানে স্রষ্টা দান্তের কবিসত্তার উন্মুক্ত অর্গলহীন প্রতিবিম্ব। মানবজীবনের বিচিত্র গতিপ্রকৃতির প্রতি তাকিয়ে মহাকবির সেই নিবিড় আত্মদর্শন– ‘দ্য ডিভাইন কমেডি’– তারই পথ বেয়ে পরবর্তী কালের শিল্পীর নীরব আত্মবোধ ‘দ্য গেটস অফ হেল’। কবির ভাবনার আখরমালা থেকে যা রূপান্তরিত হয়েছে ভাস্কর্যের অবয়বে, এক অনন্য আকারের মহাযাত্রায়। ১৮৮০ নাগাদ খসড়া তৈরি হলেও প্রায় বছর ২০ বাদে পুনরায় দান্তের সেই প্রতিকৃতিকে স্বতন্ত্র ভাস্কর্য হিসেবে রঁদ্যা তা ব্রোঞ্জে নির্মাণ করেছেন। ফরাসি ভাষায় ‘Le Penseur’ নামাঙ্কিত এই ভাস্কর্যের একাধিক কপি দেখা যায়, বিশ্বের নানা গ্যালারিতে সেগুলি ছড়িয়ে আছে। ভাস্কর্যের আঙ্গিক হিসেবে রঁদ্যা ‘ইম্প্রেশনিস্ট’ ঘরানার শিল্পী। বয়সের দিক থেকে তিনি পিসারো, মানে, দেগা প্রমুখের চেয়ে কিছু ছোট হলেও সেজান, ক্লোদ মনে, রেনোয়া প্রমুখ পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট শিল্পীদের একেবারে সমবয়সি। চিত্রকলায় ‘ইমপ্রেসনিজম’ আন্দোলনের অন্যতম ভর হিসেবে আলোক এবং রং ব্যবহারের কৌশলের কথা সুবিদিত। ক্যানভাসের আলোছায়ার সেই দ্বন্দকে ভাস্কর্যের কাঠামোগত ত্বকে প্রয়োগ করে রঁদ্যা যেন নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। ‘দ্য থিঙ্কার’ ভাস্কর্যের গায়ে তেমনই অলৌকিক আলোছায়ার বিস্তার কাজটিকে ওতপ্রোত মিশিয়ে দিয়েছে বিষয়-ভাবনার সঙ্গে। এখানে বলে রাখি, রবীন্দ্রনাথ নিজেও দান্তের ছবি এঁকেছেন, যা মস্কোর গ্যালারিতে ও পরে মুকুল দে আয়োজিত প্রদর্শনীতে ছিল।
একটা ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ দিয়ে শেষ করি। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাস, রবীন্দ্রনাথের ছবি নিয়ে গবেষণার সূত্রে দেশ-বিদেশের অসংখ্য আর্ট গ্যালারি আর মিউজিয়াম তন্ন তন্ন করে দেখে চলেছি। যেহেতু জার্মান এক্সপ্রেশনিস্ট ছবির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ছবির সাদৃশ্য সবচেয়ে বেশি, তাই সে দেশের প্রায় সমস্ত গ্যালারিতে চলেছে বিশেষ অনুসন্ধান। ছোট-বড় কোনও গ্যালারিই বাদ দেওয়া যাচ্ছে না। তখনও প্যারিসের ‘মুজে রঁদ্যা’ যাওয়া হয়নি আমার। এমনই এক ডিসেম্বরের সকালে জার্মানির Bielefeld শহরের আর্ট গ্যালারিতে কেটেছে প্রায় সারাটা দিন। বিকেলের দিকে গ্যালারির দপ্তরে, যেখানে ব্যাগ ইত্যাদি জিনিসপত্র রাখতে হয়, সেখানে হাজির হয়েছি টোকেন হাতে নিয়ে। অন্দরে প্রবেশের সময় গ্যালারির খাতায় নাম, দেশ, তারিখ, সময় ইত্যাদি লিখেছি। ফেরার সময় আবার সময় লিখে সই করতে হবে। সেসব সারা হলে ব্যাগপত্তর নিয়ে ফিরে আসছি, প্রায় দরজার কাছে– এমন সময় কর্তব্যরত সেই মহিলা পিছন থেকে আমাকে ডাকলেন। সে ডাক প্রায় আর্ত চিৎকারের মতো শোনালো। ঘাবড়ে দ্রুত এগিয়েছি ওঁর দিকে। উনি সেই খাতার পাতায় আঙুল নির্দেশ করে ভাঙা ইংরেজিতে বললেন, ‘তুমি ইন্ডিয়া থেকে এসেছো? কবে এসেছো, তুমি কি জানো তোমাদের ওখানে মসজিদ ভেঙে দিয়েছে! সাংঘাতিক কাণ্ড চলেছে’! মুহূর্তে আমার মাথায় সে এক মহাশূন্য অবস্থা। একমাস ধরে বিলেত, জার্মানি ছুটে বেড়াচ্ছি। এখন যে রবীন্দ্রনাথই একমাত্র প্রায়োরিটি। আর এ কী বলছে, কোন মসজিদ? কারা ভেঙেছে, কেন ভেঙেছে– কিছুই মাথায় ঢুকছে না। তারপর চকিতে মনে পড়ে গেল, তবে কি বাবরি মসজিদ ভাঙার কথা বলছেন মহিলা? দেশ ছাড়ার আগে তার উত্তাপ পেয়েছিলাম। হায়! ম্লানমুখে গ্যালারি থেকে বেড়িয়ে আসছি, কী আশ্চর্য, তাড়াহুড়োয় সকালে চোখে পড়েনি। প্রবেশপথের অনতিদূরে বিরাট উঁচু পেডিস্টালের ওপর রঁদ্যার সেই বিখ্যাত কাজ, ‘দ্য থিঙ্কার’। পড়ন্ত বিকেলের আলো এসে পড়েছে তার চিন্তিত মুখমণ্ডল জুড়ে। কী ভাবছেন তিনি? বড় ক্লান্ত, বড় বিষণ্ণ মনে হল সেই মুখ। উগ্র ধর্মান্ধতা কি তাঁকেও তীব্ররকমে চিন্তিত করে তুলেছে?