অনুপদা প্রথম থেকেই অত্যন্ত ভালো গাইতেন। মাঝেমধ্যেই এসে পড়তেন আমাদের বাড়ি। আর এলে, স্বাভাবিকভাবেই বাড়িটা হয়ে উঠত গানের বাড়ি। বাবা যখন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর কাজ শুরু করেন, তখন হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন নতুন গানের গলা। এই ভারি দুশ্চিন্তার সময়ে বাবাকে উতরে দিয়েছিলেন আমার মা। বলেছিলেন, বাইরে কী খুঁজছ, নতুন গলা তো বাড়িতেই আছে! এ কথায় বাবা নড়েচড়ে বসেন। অনুপদাকে ডেকে পাঠানো হয়।
আমি প্রায় ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি ঘোষাল পরিবারকে। অনেকটা অনুপ ঘোষালকে কেন্দ্র করে, কিন্তু পুরোটা নয়। সে লেক টেম্পল রোডের বাড়ি হোক, বা বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়ি– ঘোষাল পরিবার ও রায় পরিবারের মধ্যে যোগাযোগ ছিল নিরন্তর। অনুপদার কথায় আসার আগে, জানিয়ে রাখি, ওঁর মা আর আমার মায়ের খুবই বন্ধুত্ব ছিল। এবং তা বহুকালের বন্ধুত্ব, সেই পাটনার সময় থেকেই। অনুপদার দিদি, নমিতা ঘোষাল বাবার ছবি ‘চিড়িয়াখানা’-তে গান গেয়েছিলেন। সেই গানও বহুখ্যাত, বহুশ্রুত, আপনারা সকলেই জানেন, ‘ভালোবাসার তুমি কী জানো…’। কাজেই এই ছিল গানের পূর্বসূত্র।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
আরও পড়ুন: সংলাপ স্বাভাবিক না হলে অভিনয় স্বাভাবিক হওয়া মুশকিল
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
অনুপদা প্রথম থেকেই অত্যন্ত ভালো গাইতেন। মাঝেমধ্যেই এসে পড়তেন আমাদের বাড়ি। আর এলে, স্বাভাবিকভাবেই বাড়িটা হয়ে উঠত গানের বাড়ি। বাবা যখন ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর কাজ শুরু করেন, তখন হন্যে হয়ে খুঁজছিলেন নতুন গানের গলা। এই ভারি দুশ্চিন্তার সময়ে বাবাকে উতরে দিয়েছিলেন আমার মা। বলেছিলেন, বাইরে কী খুঁজছ, নতুন গলা তো বাড়িতেই আছে! এ কথায় বাবা নড়েচড়ে বসেন। অনুপদাকে ডেকে পাঠানো হয়।
ততদিনে বাবা ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর অধিকাংশ গানই কম্পোজ করে ফেলেছেন। অনুপদা সিনেমার গানগুলো তোলেন। ক’দিন পর এসে বাবাকে শোনান। বাবা খুবই খুশি হয়েছিলেন, নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন অনুপদার গলায়।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
আরও পড়ুন: একটি পাখি কী করে মানুষের কথার চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে?
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
আমি ওঁকে ডাকতাম ‘খোকনদা’ বলেই, ডাকনামে, অনুপদা কখনও নয়। দেখাসাক্ষাৎ ছিলই। ‘হীরক রাজার দেশে’ এবং আমার ‘গুপী বাঘা ফিরে এলো’-ও ওঁর সঙ্গে আলাপ-সংলাপ বাড়িয়ে তুলেছিল। এই যোগাযোগ কখনওই হারিয়ে যায়নি। নিজেই অনেক সময় ফোন করে খোঁজখবর নিতেন। আমিও।
দেশ-বিদেশ জুড়ে অসংখ্য শো করাই শুধু নয়, প্রচুর ছাত্র-ছাত্রীও রয়েছেন তাঁর। রয়েছেন অগণন শ্রোতা। নজরুলগীতির অন্যতম শিল্পী ছিলেন তিনি। যে কারণে তিনি ‘ড. অনুপ ঘোষাল’। খোকনদার চলে যাওয়া বড় আমাকে বড় বিষণ্ণ করে তুলল।