আমি শুরুর দিন-ই বলেছিলাম, আপনাদের মতামত শিরোধার্য– পাঠকই পত্রিকা– সে মাধ্যম যাই-ই হোক না কেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, আপনারাই ঠিক করে দেবেন, ‘রোববার.ইন’ রুচিশীল বাঙালির ঠিকানা হয়ে উঠতে পারছে কি না। এক বছর পরও সে-কথাই বলছি। আপনাদের প্রতিক্রিয়া বুঝিয়ে দিয়েছে আমাদের পথের পাঁচালি ছন্দ হারায়নি। যে সাড়া পেয়েছি আপনাদের, ভালোবাসা পেয়েছি, তা আমাদের নতুন কাজে প্রেরণা জুগিয়েছে প্রতিদিন।
এক বছর। বয়সের হিসেবে মোটে শৈশব। হামাগুড়ি দেওয়ারই সময়। তবে, দেখে ভালো লাগছে যে, ‘রোববার.ইন’ সেই শৈশবেই উঠে দাঁড়িয়েছে। আপনাদের হাত ধরে চলতে-ফিরতে, হাতে হাতে ঘুরে বেড়াতেও শিখেছে। ডিজিযুগে যখন লঘুতার ধারাবাহিক প্রপাত গ্রাস করছে বাঙালির মনন, তখন ‘রোববার.ইন’ ছোট্ট ছোট্ট পায়ে এগোতে এগোতেই স্বপ্ন দেখছে চাঁদের পাহাড় ছোঁয়ার। লক্ষ্য বড়, অভিযানও রোমাঞ্চকর। বলা যায়, আজ তার প্রথম পদক্ষেপ পূর্ণ হল।
প্রথম থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল, ডিজিটাল মাধ্যমে একটি নির্ভুল সাহিত্য-পত্রিকার জন্ম দেওয়া। যা বাঙালি সংস্কৃতির আবহমান ধারাটিকে আত্মস্থ করেই আধুনিকতার রাস্তা খুঁজে নেবে। সাহিত্য-সংস্কৃতি তো থেমে থাকে না, কেন-না সময় স্থবির নয়। মাধ্যম বদলায়, প্রজন্মের পরিবর্তন হয়, ফলত পাল্টায় ভাষাও। এই রূপান্তরের সময় সঠিক পথটি খুঁজে নিতে সময় লাগে। তা খুঁজতে গিয়ে, চটজলদি নজরটানের লক্ষ্যেই অনেক কিছু একসঙ্গে ঘটতে থাকে। তাতে সাধারণ একটি ধারণা তৈরি হয় যে, অমুক মাধ্যমে বুঝি ভালো কিছু কাজ হওয়া সম্ভব নয়। ভালোর ধারণা যদিও আপেক্ষিক এবং প্রেক্ষিতের উপর নির্ভরশীল। তবে, নানা কারণেই ডিজিটাল মাধ্যম সম্বন্ধে এরকম একটা গড় ভাবনার বেড়া তৈরি হয়েছে। লঘু-তারল্যের সামান্যীকরণে কোথাও যেন ঠেকে গিয়েছিল এই মাধ্যম। তা ভাঙাই ছিল উদ্দেশ্য। লেখা-পড়ার মাধ্যম হিসেবে ডিজিটাল যে একইসঙ্গে যুগোপযোগী এবং গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে দ্বিধা ছিল না। সঠিক রাস্তাটি চেনা ও চিনতে শেখানো জরুরি। আমার বিশ্বাস, গত এক বছর ‘রোববার.ইন’ সংস্কৃতির যে-পথে হেঁটেছে এবং আপনাদের সমর্থন-প্রশ্রয় পেয়েছে, তাতে পথটি স্পষ্ট এবং পরিষ্কার। যদিও এক বছর তেমন কোনও বড় সময়সীমা নয়, তবু আমার ধারণা, আমরা সঠিক পথেই চলছি।
আর, সবার আগে বলতে হয় আপনাদের-পাঠকের কথা। আমি শুরুর দিন-ই বলেছিলাম, আপনাদের মতামত শিরোধার্য– পাঠকই পত্রিকা– সে মাধ্যম যাই-ই হোক না কেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, আপনারাই ঠিক করে দেবেন, ‘রোববার.ইন’ রুচিশীল বাঙালির ঠিকানা হয়ে উঠতে পারছে কি না। এক বছর পরও সে-কথাই বলছি। আপনাদের প্রতিক্রিয়া বুঝিয়ে দিয়েছে আমাদের পথের পাঁচালি ছন্দ হারায়নি। যে সাড়া পেয়েছি আপনাদের, ভালোবাসা পেয়েছি, তা আমাদের নতুন কাজে প্রেরণা জুগিয়েছে প্রতিদিন। মাধ্যম হিসাবে ডিজিটালের কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট আছে। অনেকরকম নিরীক্ষার সুযোগ-ও এখানে আছে। ফ্লেক্সিবিলিটি আছে। এক বছরের এই উদযাপন-বিন্দু থেকে আমরা সেই কাজেই মন দেব। আপনারাও জানান, আমাদের আর কী কী করা উচিত। কোন কোন ক্ষেত্রে কীভাবে উন্নতির অবকাশ আছে, সে বিষয়ে খোলাখুলি মতামত জানান। ‘রোববার.ইন’ যতখানি আমাদের, তার থেকেও বেশি আপনাদেরই। আপনাদের আপনজন। শিশুর বড় হয়ে ওঠার পথে অভিভাবকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। সেই দায়িত্ব আপনাদেরই।
………………………………………………………………….
শুরুর দিনের সম্পাদকীয়: ডিজিটাল মাধ্যমের ‘রোববার’-এ ফিরল ঋতুদার সেই প্রথম দিনের ভাবনা
………………………………………………………………….
আপনারা সঙ্গী হলে আগামী দিনে ‘রোববার.ইন’ বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে নতুন নজির সৃষ্টি করতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস।
আপনাদের নির্দেশনা আর ভালোবাসার পথ ধরেই আগামী দিনে আমরা হাঁটব। জন্মদিনে কথা দিচ্ছি।
সৃঞ্জয় বোস
প্রধান সম্পাদক
সংবাদ প্রতিদিন
জীবনের বাকি শাখা-প্রশাখা থেকে বাদুড়ের মতো ঝুলতে দেখা যায়, ‘অকৃতজ্ঞ’, ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘তঞ্চক’ নামের নানা কুটিল শব্দবন্ধকে। যারা উদর নয়, হৃদয়কে তাক করে। বারবার। যন্ত্রণার ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়ে বুকের বাঁ দিকটা এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিতে থাকে সুযোগ পেলে।