ভারতীয় সংবিধানের ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী ভারতে যে-কোনও রূপে অস্পৃশ্যতার চর্চা নিষিদ্ধ। ১৯৫৫ সালে এই আইনটি পাশ হয়েছিল। বলা হয়েছিল– অস্পৃশ্যতা নিরোধক আইন, যেখানে অস্পৃশ্যতার চর্চা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর ভারত সংবিধানের ধারা, আইন– কোনও কিছুরই তোয়াক্কা করেনি। আজও দেশের সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তিতে যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে, ‘আম্বেদকর, আম্বেদকর’ বলে কটাক্ষ করেন– তখন তাঁর মধ্যেও সেই তোয়াক্কা না-করার মানসিকতাই প্রকট হয়।
২০১৯ সালে একটি হিন্দি ছবি মুক্তি পেয়েছিল– ‘আর্টিকেল ফিফটিন’। পরিচালক ছিলেন অনুভব সিনহা। গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন আয়ুষ্মান খুরানা। উত্তরপ্রদেশের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে দু’জন দলিত কিশোরীর গাছ থেকে ঝুলন্ত দেহ দেখা এবং তার তদন্তে নেমে একজন পুলিশ অফিসারের অস্পৃশ্যতা সংক্রান্ত উপলব্ধিকে নিয়ে তৈরি ছবিটি দেখে অনেকেই চমকে উঠেছিলেন। সংবিধান গৃহীত হওয়ার ৭৫ বছর পরেও এই ধরনের বিষয় অনেককেই সেদিন নাড়িয়ে দিয়েছিল।
কলকাতার বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি দেখার পরে, অনেকেরই প্রতিক্রিয়া ছিল– এই ধরনের ঘটনা ‘গোবলয়’ অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহারের মতো রাজ্যে হতে পারে; কিন্তু বাংলায় এই ঘটনা ছিল না কোনও দিন এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না। সেই প্রতিক্রিয়া যে কতটা ভ্রান্ত, তা আজ বুঝিয়ে দিল আমাদের বাংলা। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী যতই অস্পৃশ্যতা ‘নিষিদ্ধ’ হোক, এ-দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনও তার প্রবল উপস্থিতি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গকে এই ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম মনে করা হত। অস্পৃশ্যতা, বিজেপি-শাসিত গোবলয়ের অন্য রাজ্যগুলির মতো এই রাজ্যে তেমন শিকড় বিস্তার করতে পারেনি, তেমনভাবে এই রাজ্যে জাতপাতের ভাগ হয় না– এমনই ছিল ধারণা। কিন্তু সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের একটি শিবমন্দিরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তা জোর ধাক্কা খেয়েছে।
কাটোয়ার গীধগ্রামে এই সুপ্রাচীন মন্দিরটিতে প্রবেশাধিকারের দাবিতে পথে নেমেছেন দাসপাড়ার শতাধিক দলিত পরিবার। অভিযোগ– বছরের পর বছর ধরে তাঁদের মন্দিরে প্রবেশ করা বা পুজো দেওয়া তো দূরস্থান, মন্দিরের সিঁড়িতে পা দেওয়ার অধিকারটুকুও ছিল না। এই অন্যায় প্রথা বন্ধ করতে এবং শিবরাত্রির দিন পুজোর অধিকার চেয়ে তাঁরা স্থানীয় প্রশাসনিক পদাধিকারী এবং পুলিশের কাছে চিঠি লেখেন। সেই অনুযায়ী পুলিশ-প্রশাসন দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে। সিদ্ধান্ত হয় পুজোর অধিকার সকলেই পাবেন। কিন্তু অভিযোগ, দাসপাড়ার বাসিন্দাদের জন্য মন্দিরের তালা খোলেনি।
অতঃপর দীর্ঘদিনের প্রথা, সমানাধিকারের দাবি এবং অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে ফের উত্তপ্ত হয়েছে সমগ্র এলাকা। জাতবর্ণগত বিরোধের অনুপস্থিতি বাংলাকে অন্যান্য রাজ্য থেকে আলাদা করেছে বলে অনেকে মনে করেন। বিশেষজ্ঞরা জনসাধারণের দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণ-বিলুপ্তির অনেক কারণ উল্লেখ করেছেন। যেমন– দেশভাগের কারণে দলিত আন্দোলনের দুর্বলতা, বাম রাজনীতির প্রভাবে ‘বর্ণ’ অপেক্ষা ‘শ্রেণি’-র ওপর অধিক জোর আরোপ, ভদ্রলোকের আধিপত্য, বর্ণ-উপ-গোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন দাবি ইত্যাদি। ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে, গ্রামীণ রাজনীতিতে এবং আনুষ্ঠানিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাতপাত সর্বদাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু জনজীবনে এবং আনুষ্ঠানিক রাজনীতিতে, দীর্ঘদিন ধরেই, গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ হিসেবে তা হয়তো সামনে আসেনি। তবে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে এবং বাংলার রাজনীতিতে জাতপাত এখন আর অদৃশ্য নয়।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জাতির আত্মপ্রকাশের ঘটনা ঘটছে। উদাহরণ হিসেবে দেখতে গেলে ২০০১ সালে প্রতীচী ট্রাস্টের এক সমীক্ষার দিকে চোখ রাখতে হয়। সেখানে দেখা গিয়েছিল– কিছু বিদ্যালয়ে তফসিলি জাতিভুক্ত শিক্ষার্থীদের আলাদা বসতে বাধ্য করা হয়। স্কুলে নিচু বর্ণের মহিলাদের রান্না করা খাবার খেতে অভিভাবকরা আপত্তি জানিয়েছেন এই জাতীয় অভিযোগও আগে উঠেছে। উচ্চবিত্ত মানুষজন আজও ‘সোনার চাঁদ- সোনার টুকরো’ বলে কটাক্ষ করে থাকেন তাঁদেরই সহকর্মীদের। জ্ঞানত বা অজ্ঞানত, শিক্ষকরা, তাঁদের ছাত্রদের মধ্যে বৈষম্য করে থাকেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপিকা মেরুনা মুর্মুকে সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে নিজের কাজের জায়গাতেও নানা সময়ে নানা কটূক্তি শুনতে হয়েছে। তাঁর সবটুকু অর্জনই তাঁর পদবির জন্য, না-হলে তিনি এতদূর পৌঁছতে পারতেন না। তাঁর পরিচিত মানুষজনই তাঁর পিছনে এই ধরনের কথা বলে থাকেন। ২০১৯ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের উদ্দেশ্যে জাত তুলে কটাক্ষের অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় একের পর এক অধ্যাপক তাঁদের পদত্যাগপত্র পাঠান উপাচার্যের কাছে। পরিস্থিতি সামলাতে আসরে নামেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী।
সাহিত্য-সংস্কৃতির জগতেও রয়েছে এই বৈষম্য। এই রাজ্যে দলিত সাহিত্যিকদের রচনা আজও সীমিত সংখ্যক পাঠকের মধ্যেই আবদ্ধ। কতজন পাঠক নাম শুনেছেন কল্যাণী ঠাকুর চাঁড়ালের। কতজন তাঁর লেখা পড়েছেন, হাতে গুনে বলে দেওয়া যায়। কেন ‘দলিত সাহিত্য আকাডেমি’ খোলা হয়েছে– তা নিয়েও নানা বিতর্ক চলেছে এবং চলে। বাম রাজনীতি এবং আলোকপ্রাপ্ত উচ্চবর্ণের শিক্ষিত ‘ভদ্রলোক’ শ্রেণির অতিরিক্ত দৃশ্যমানতা এই অসাম্যের চিত্রটি প্রকট হতে দেয়নি। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে তা প্রবলভাবেই উপস্থিত ছিল, আজও আছে। পূর্ব বর্ধমান তার নিদর্শন তুলে ধরল। গ্রামের মন্দিরে প্রবেশের এই ঘটনাটি নিত্যদিনের জাতিভেদ প্রথার একটি উদাহরণ।
তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এটি একটি রাজনৈতিক দাবিরও গল্প– যেখানে একটি দলিত গোষ্ঠী স্থানীয় প্রশাসনের কাছে মন্দিরে তাদের নিরাপদ এবং ন্যায্য প্রবেশ নিশ্চিত করার জন্য আবেদন করেছে এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সুরক্ষায় একটি প্রাচীন জাতিগত বাধা সফলভাবে ভেঙে ফেলতে পেরেছে। তাঁদের জন্য, মন্দিরে প্রবেশ, সমান অধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি সংগ্রাম। গত দুই দশকে, পশ্চিমবঙ্গে মতুয়া, কুর্মি, রাজবংশী এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের দ্বারা ‘বর্ণ’ এবং ‘জাত’ পরিচয়-ভিত্তিক রাজনৈতিক দাবির একটি ধারাবাহিকতা দেখা গেছে। এই ধরনের দাবি কেবল জাতপাতকে আনুষ্ঠানিক রাজনীতির একটি বাগধারায় পরিণত করেনি; বরং বাংলার ‘ব্যতিক্রমী’ তকমাও সরিয়ে দিয়েছে এবং ‘ভদ্রলোক’-দের আধিপত্যকে কিছুটা হলেও ক্ষুণ্ণ করেছে। রাজনৈতিক সংহতির উদীয়মান ধরন, নতুন প্রতিমূর্তিদের স্বীকৃতির রাজনীতি এবং রাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তিত শব্দভাণ্ডার অধ্যয়ন করলে বর্ণের ক্রমবর্ধমান দৃশ্যমানতা লক্ষ্য করা কঠিন নয়।
……………………………………….
উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিতে উচ্চবর্ণের আধিপত্য, জাত ব্যবস্থায় অবাধ প্রশ্রয়দান এই অন্যায়কে সমানে ইন্ধন জুগিয়েছে। তারই পরিণতি– কখনও পানীয় জলের বালতি ছোঁয়া, কখনও নিছক সন্দেহের বশে দলিত শিশু থেকে বৃদ্ধদের নির্যাতন, দলিত মেয়েদের ধর্ষণ। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে প্রতিকার না-পাওয়াও এই দেশে স্বাভাবিকতায় পরিণত। এই কি তবে আধুনিক যুক্তিবাদী ভারত?
……………………………………….
প্রথমত, বামফ্রন্ট, যা একসময় গ্রামীণ রাজনৈতিক বিষয়গুলিতে অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ রাখত– বহুদিন হল, তা বর্তমান গ্রামীণ রাজনীতিতে একমাত্র প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আর নেই। এর ফলে রাজনৈতিক আন্দোলনের ধরনে পরিবর্তন এসেছে এবং পরিচয়-ভিত্তিক সংগঠনগুলির ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক প্রভাবের পথ প্রশস্ত হয়েছে। জাতি, জাতিগত বা ধর্মীয় সম্প্রীতির ভিত্তিতে গঠিত এই নতুন নেতৃত্ব এখন জনগণ এবং রাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যস্থতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আজ মতুয়ারা, যাঁরা দলিত শরণার্থী, তাঁদের নাগরিকত্ব সম্পর্কিত কোনও সমস্যার সম্মুখীন হয়– তাহলে তার সমাধান খুঁজতে কোনও রাজনৈতিক দল নয়, সম্ভবত মতুয়া মহাসংঘের স্থানীয় শাখায় যাবে। গত বছর কিছু মতুয়া তাদের আধার নম্বর হঠাৎ নিষ্ক্রিয় হওয়ার অভিযোগ করলে, মতুয়া নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর যখন নিজের ব্যক্তিগত ফোন নম্বর এবং একটি ইমেল ঠিকানা দিয়ে বলেন– কোনও অসুবিধা হলে তাঁর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে, তখন বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নিজ নিজ সম্প্রদায়ের ওপর এই সংগঠনগুলির যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণের কারণে, রাজনৈতিক দলগুলি নির্বাচনী সমর্থনের বিনিময়ে তাদের দাবিগুলির সঙ্গে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে– এই দৃশ্যও সাম্প্রতিক সময়ে দেখতে পাওয়া গেছে। গত দশকে রাজনৈতিক দলগুলি তাদের ইশতিহারে বিভিন্ন বর্ণের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেই জাতির নেতাদের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে এবং প্রায়শই বিভিন্ন জাতির সংগঠনগুলিকে বস্তুগত সুবিধা প্রদান করেছে।
দ্বিতীয়ত, বিগত দু’টি সরকারের দ্বারা এ-পর্যন্ত উপেক্ষিত বর্ণ-প্রতীকদের স্বীকৃতি দেওয়ার অনুশীলনগুলি পর্যবেক্ষণ করলে বর্ণের রাজনীতি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ২০১০ সালে, বামফ্রন্ট দলিত উন্নয়নে অবদানের জন্য একটি পুরস্কার প্রতিষ্ঠা করে এবং সেটিকে মতুয়া গুরু ‘ঠাকুর হরিচাঁদ গুরুচাঁদ’ পুরস্কার নামে নামকরণ করে। আরেকটি উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বর্তমান সরকার বাউরি, নমশূদ্র, রাজবংশী, কুর্মি বাগদি-সহ অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর জন্য উন্নয়ন বোর্ড গঠন করেছে। কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ দলিত সাহিত্য আকাডেমি বা দলিত বন্ধু কল্যাণ ও উন্নয়ন বোর্ডের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানের নামকরণের রীতি প্রাতিষ্ঠানিক রাজনীতিতে বর্ণের দৃশ্যমানতা প্রকাশ করে। ঠাকুর হরিচাঁদ, পঞ্চানন বর্মার জন্মদিনে ছ’টি ঘোষণাও করা হয়েছে সরকারিভাবে।
পরিশেষে, উচ্চবর্ণের রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তিত শব্দভাণ্ডার লক্ষ্য করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চবর্ণের ‘ভদ্রলোক’ রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটি সংজ্ঞায়িত বৈশিষ্ট্য হল জনজীবন থেকে জাতকে অদৃশ্য করার প্রচেষ্টা। এখন মনে হচ্ছে, ‘ভদ্রলোক’ নেতৃত্ব প্রকাশ্যে কারও জাত বা ধর্মীয় পরিচয় দাবি করাকে আর অশোভন মনে করে না; এবং বর্তমান সময়ে জাতকে একটি কার্যকরী অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতেও দ্বিধা করে না।
কিন্তু এইসব করেও কি অস্পৃশ্যতা বন্ধ হবে? প্রসঙ্গত, ভারতীয় সংবিধানের ১৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী ভারতে যে-কোনও রূপে অস্পৃশ্যতার চর্চা নিষিদ্ধ। ১৯৫৫ সালে এই আইনটি পাশ হয়েছিল। বলা হয়েছিল– অস্পৃশ্যতা নিরোধক আইন, যেখানে অস্পৃশ্যতার চর্চা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেই আইনের পরিভাষা বদলে গিয়ে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা হয়ে গেছে। সেখানেও বলা আছে ধর্মস্থানে, জনপরিসরে, অথবা গণপরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে কাউকে জাত, কিংবা ধর্মের ভিত্তিতে বাধাদান শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর ভারত সংবিধানের ধারা, আইন– কোনও কিছুরই তোয়াক্কা করেনি। আজও দেশের সংবিধানের ৭৫ বছর পূর্তিতে যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাঁড়িয়ে, ‘আম্বেদকর, আম্বেদকর’ বলে কটাক্ষ করেন– তখন তাঁর মধ্যেও সেই তোয়াক্কা না-করার মানসিকতাই প্রকট হয়।
………………………………………
পড়ুন অনিকেত মাহাতো-র লেখা: লালমাটির আদিবাসী ছেলে আর নীল পাহাড়ের ব্রাহ্মণ মেয়ে যে লড়াই জিতে গেল
………………………………………
উত্তর থেকে দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিতে উচ্চবর্ণের আধিপত্য, জাত ব্যবস্থায় অবাধ প্রশ্রয়দান এই অন্যায়কে সমানে ইন্ধন জুগিয়েছে। তারই পরিণতি– কখনও পানীয় জলের বালতি ছোঁয়া, কখনও নিছক সন্দেহের বশে দলিত শিশু থেকে বৃদ্ধদের নির্যাতন, দলিত মেয়েদের ধর্ষণ। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে প্রতিকার না-পাওয়াও এই দেশে স্বাভাবিকতায় পরিণত। এই কি তবে আধুনিক যুক্তিবাদী ভারত?
তবে এই ধরনের দলিত মানুষদের সামনে এসে বিরোধিতা আগামীদিনে বাংলার রাজনীতিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাবে, তা বলাই যায়। তখনই হয়তো ‘আমি চাই সাঁওতাল তার ভাষায় বলবে রাষ্ট্রপুঞ্জে’ আক্ষরিক অর্থে সত্যি হয়ে উঠবে।
……………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………………..