আইনস্টাইন তাঁর আপেক্ষিকতা তত্ত্বে মাধ্যাকর্ষণকে যেমন স্থান-কালের পরিবর্বতনশীলতার নিরিখে দেখেছেন, উল্টোদিকে হয়েল-নারলিকার মাধ্যাকর্ষণকে মহাবিশ্বের যাবতীও পরমাণুর পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁরা ‘সৃষ্টি ক্ষেত্র’ বা ‘ক্রিয়েশন ফিল্ড’ নামের এক নতুন ধারণার জন্ম দেন। যার অর্থ, পদার্থ বা ম্যাটারের অবিরাম সৃষ্টিতে মহাবিশ্বে কখনই শূন্যস্থান থাকে না; এবং ঘনত্বেরও কোনও হেরফের ঘটে না। মহাবিশ্ব নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রসারিত হয়ে চলেছে, অথচ দেখে বোঝবার জো নেই। ‘স্টেডি স্টেট’-এর তত্ত্বের ভিত্তি এটাই। নারলিকার তাঁর আত্মজীবনী ‘মাই টেল অফ ফোর সিটিজ’-এ ব্যাপারটাকে সহজ করে বোঝাতে ব্যাঙ্কে টাকা রাখার উদাহরণ দিয়েছেন।
ভুঁইতরাসির রাখাল আর তার সাগরেদ ভুতোকে মনে পড়ে? পাক্কা সিঁদেল চোর। সিঁদ কেটে চুরি করে পালাতে গিয়ে ডিঙি নৌকো উলটে তারা জলে ডুবে যায়। তারপর পৌঁছে যায় এক বিচিত্র দেশে, যেখানে ‘হাতকড়াও নেই, থানা-দারোগা-জজ-হাকিম কেউ নেই। অন্যায় করলে এরা নাকি খুব নিন্দে করে।’ এটুকুই শাস্তি। সে দেশে সবার বাড়ির দরজা হাট করে খোলা। অঢেল খাবার, সব বিনি পয়সায়। দাম জিজ্ঞেস করলে বলে, ‘তোমরা বুঝি হট্টমালার দেশের লোক?’ কেজো মানুষরা জানে না ফাঁকি দেওয়া কাকে বলে! পড়ুয়ারা লাইব্রেরির বইতে বুঁদ হয়ে থাকে। বই ছাড়াও কাঁড়ি কাঁড়ি সোনাদানা রাখা থাকে লাইব্রেরিতে। যার যা দরকার নিয়ে যেতে পারে, কোনও অনুমতি লাগে না। এহেন দেশে রাখাল আর ভুতোর চুরি করে আনন্দ নেই! না চাইতেই তো সব পাওয়া যায়! ওরা ভাবে কিছু সোনাদানা নিয়ে ভুঁইতরাসি তে ফিরতে পারলে জীবনটা পালটে যেত। শেষমেশ ওরা ফেরে সেই হট্টমালার দেশ ভুঁইতরাসিতেই। তবে খালি হাতে। তারপর বহুবার নদীতে ডুব দিয়েও খুঁজে পায়নি সেই আজব দেশটিকে। তবে কি সেটা কল্পনা ছিল! না কি ওরা মারা গিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল অন্য পৃথিবীতে? ছোটবেলায় এই গল্পটা পড়ে রাখালদের মতো আমরাও হাতড়াতাম, দেশটা কোথায় ছিল! লীলা মজুমদার আর প্রেমেন্দ্র মিত্রের যৌথ গল্প ‘হট্টমালার দেশে’-তে সে প্রশ্নের উত্তর নেই।
উত্তর পাওয়া গেল আর একটু বড় হয়ে। জয়ন্ত বিষ্ণু নারলিকারের (Jayant Vishnu Narlikar) ‘দ্য অ্যাডভেঞ্চার’ গল্পে। গল্পটা এরকম। পুনার বিখ্যাত ইতিহাসবিদ প্রফেসর গঙ্গাধরপন্ত গাইতোন্ডে ১৯৮৬ সালের ১৯ জুলাই একটা পথ দুর্ঘটনায় পড়ে পৌঁছে যান এক অন্য পৃথিবীতে। যেখানে গিয়ে জানতে পারেন পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে মারাঠারাই জয়ী হন। এবং ভারত ব্রিটিশ শাসনের অধীন হওয়া থেকে অল্পের জন্যে রক্ষা পায়। সমগ্র উত্তর ভারত মারাঠা-শাসনাধীন হয়। ইতিহাসের এই অদ্ভুত মোড় প্রফেসর গাইতোন্ডেকে বিচলিত করে। তিনি লাইব্রেরিতে গিয়ে ইতিহাসের বই খুঁজে সত্যিটা জানতে চান। কিন্তু সমস্ত বইতে, এমনকী তাঁর নিজের লেখা বইতেও সেই একই তথ্য পান। তাঁর চেনা বোম্বাই শহর একেবারে অচেনা লাগে। তিনি নিজের ছেলের অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, ওই নামে কোনও কর্মী সেখানে কাজ করে না। গাইতোন্ডে নিজেকে বোঝান তিনি নিজেই যখন জীবিত নেই, হয়তো তাঁর সন্তানও জীবিত নেই, হয়ত বা তাঁর সন্তান সেই সমান্তরাল পৃথিবীতে জন্মায়নি।
বিপর্যস্ত প্রফেসর গাইতোন্ডে ফিরে আসেন তাঁর শেষ ভরসা পুনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ ফেলো রাজেন্দ্র দেশপান্ডের কাছে, যিনি ক্যাটাস্ট্রফি থিওরিতে খুব দড়। তাঁদের আমন্ত্রণেই ক্যাটাস্ট্রফি থিওরি নিয়ে পুনা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। রাজেন্দ্র, প্রফেসর গাইতোন্ডের অবস্থার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেন। দুর্ঘটনার ঠিক আগের মুহূর্তে গাইতোন্ডে তাঁর পরবর্তী ভাষণের বিষয়, ‘ক্যাটাস্ট্রফি থিওরি এবং ইতিহাসে তার সম্ভাব্য প্রভাব’ নিয়ে ভাবছিলেন। আসলে বাস্তবকে তো শুধুমাত্র আমাদের ইন্দ্রিয় দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। পরমাণু এবং তার সংশ্লিষ্ট কণাদের গতিবিধি অনুমান করা বড় সহজ কাজ নয়। কোনও ইলেকট্রনের সঠিক অবস্থান জানতে পারলে, সেটা কোন পৃথিবীতে আছে সেটা বলা যায়। কিন্তু ইলেকট্রনরা যখন ‘হায়ার স্টেট অফ এনার্জি’ থেকে ‘লোয়ার স্টেট অফ এনার্জি’র দিকে যাত্রা করে তখন কিছু বিকিরণ হয়ে থাকে। তখনই ঘটে যেতে পারে ওলটপালট। ক্যাটাস্ট্রফি থিওরি বলে, দুটো সম্পূর্ণ আলাদা পৃথিবী একইসঙ্গে থাকা সম্ভব। দুটো কেন, বলা উচিৎ অসংখ্য। তবে কেউ একসঙ্গে দুটো পৃথিবীতে অবস্থান করতে পারে না। রাজেন্দ্রের অনুমান, গাইতোন্ডের ক্ষেত্রেও সেই থিওরি কাজ করেছে। তাঁর যাত্রা অতীত বা ভবিষ্যতের দিকে নয়। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে অন্য এক পৃথিবী ঘুরে দু’দিন পর গাইতোন্ডে তাঁর আসল পৃথিবীতে ফিরেছেন। পানিপথের যুদ্ধ থেকেই সেই অন্য পৃথিবীর পথটি বেঁকেছে। তাঁর মস্তিষ্কের নিউরোনগুলো তাঁকে ওই পথ ধরতে বাধ্য করেছে। হয়তো রাখাল আর ভুতোও ডিঙি উলটে ক্যাটাস্ট্রফি থিওরিতেই সেই আজব দেশে পৌঁছেছিল। লীলা মজুমদার আর প্রফেসর নারলিকারের কল্পনার সমান্তরাল পৃথিবীরা বুঝি-বা এক বাঁকে এসে মেশে, যেখানে কল্পনা এসে বিজ্ঞানের হাত ধরে। জন্ম নেয় কল্পবিজ্ঞান।
বিগ ব্যাং তত্ত্বের উল্টোপথে হাঁটা মহাকাশ বিজ্ঞানী জয়ন্ত বিষ্ণু নারলিকার (Jayant Vishnu Narlikar) নিজেই এক প্রতিষ্ঠান। জন্ম ১৯৩৮ সালের ১৯ জুলাই, মহারাষ্ট্রের কোলাপুরে। বাবা বিষ্ণু বাসুদেব নারলিকার বেনারস হিন্দু বিশবিদ্যালয়ের অঙ্কের অধ্যাপক। মা সুমতির বিষয় সংষ্কৃত। অসাধারণ মেধাবী জয়ন্ত বাবার পথ ধরেই বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্কে বি.এস.সি পাশ করে চলে যান কেমব্রিজে। সেখানেই তাঁর পরবর্তী উচ্চশিক্ষা। মহাকাশ বিজ্ঞানে আগ্রহের সূচনা তখনই। গবেষণার গুরু হিসেবে পান বিখ্যাত মহাকাশ বিজ্ঞনী ফ্রেড হয়েলকে। হয়েল-নারলিকার জুটি ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির প্রচলিত ধারণার বাইরে এক নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন করলেন। তা হল ‘স্টেডি স্টেট’ তত্ত্ব। আইনস্টাইন তাঁর আপেক্ষিকতা তত্ত্বে মাধ্যাকর্ষণকে যেমন স্থান-কালের পরিবর্বতনশীলতার নিরিখে দেখেছেন, উল্টোদিকে হয়েল-নারলিকার মাধ্যাকর্ষণকে মহাবিশ্বের যাবতীও পরমাণুর পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁরা ‘সৃষ্টি ক্ষেত্র’ বা ‘ক্রিয়েশন ফিল্ড’ নামের এক নতুন ধারণার জন্ম দেন। যার অর্থ, পদার্থ বা ম্যাটারের অবিরাম সৃষ্টিতে মহাবিশ্বে কখনই শূন্যস্থান থাকে না; এবং ঘনত্বেরও কোনও হেরফের ঘটে না। মহাবিশ্ব নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রসারিত হয়ে চলেছে, অথচ দেখে বোঝবার জো নেই। দেখে মনে হবে একইরকম আছে। ‘স্টেডি স্টেট’-এর তত্ত্বের ভিত্তি এটাই। নারলিকার তাঁর আত্মজীবনী ‘মাই টেল অফ ফোর সিটিজ’-এ ব্যাপারটাকে সহজ করে বোঝাতে ব্যাঙ্কে টাকা রাখার উদাহরণ দিয়েছেন। ব্যাঙ্কে জমানো টাকা যেমন চক্রবৃদ্ধি সুদের হারে ক্রমাগত বাড়তে থাকে, তেমনি মহাবিশ্বও ক্রমবর্ধমান।
হয়েল-নারলিকারের ‘স্টেডি স্টেট’ তত্ত্ব বলে এই মহাবিশ্ব অনন্তকাল ধরেই আছে এবং থাকবেও। অন্যদিকে বিগ ব্যাং তত্ত্ব মনে করে পৃথিবী প্রায় চোদ্দ বিলিয়ন বছর আগে একটি বিশেষ বিন্দু থেকে সৃষ্টি হয়েছে। এই বিগ ব্যাং তত্ত্ব বর্তমানে সৃষ্টিরহস্য সমাধানের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পথ। এমনকি বিজ্ঞানী হয়েলও পরবর্তীকালে এই পথে গবেষণার ক্ষেত্রে উৎসাহ দেখিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের তত্ত্বের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও নারলিকার শেষদিন পর্যন্ত তাঁর ‘স্টেডি স্টেট’ তত্ত্বেই অবিচল থেকেছেন। মূলত কসমিক মাইক্রোওয়েভ রেডিয়েশনের ব্যাখ্যা দিতে না পারাটা ‘স্টেডি স্টেট’ তত্ত্বের প্রধান খামতি। প্রামাণ্যতা না পেলেও, এই মডেলের উপযোগিতা কম নয়। সময়ের হাতে থাক তার বাকি মূল্যায়নের ভার।
মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চার সঙ্গে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার সংযোগ স্থাপনে নারলিকার বরাবরই উৎসাহী ছিলেন। আর সেই উৎসাহ থেকেই অঙ্ক বা পদার্থবিজ্ঞানের গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে তিনি মহাকাশ গবেষণাকে জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও প্রসারিত করেছেন। ১৯৯৯ সাল থেকে তাঁর নেতৃত্বে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার গবেষকরা একজোট হয়ে কাজ করছেন। তাঁরা ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪১ কিলোমিটার পর্যন্ত ওপরের বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করে তার মধ্যে জীবন্ত ব্যাকটেরিয়া এবং মাইক্রো-অর্গানিজমের সন্ধান পেয়েছেন। তাঁদের গবেষণার ফলাফল নিশ্চিত করে যে বহির্জগৎ থেকে পৃথিবীর ওপর ক্রমাগত মাইক্রো-অর্গানিজম বর্ষণ চলছে এবং এর মধ্যে কিছু যে এ পৃথিবীর বুকেও এসে ঘর বেঁধেছে– তেমনটা অনুমান করা বোধহয় অমূলক হবে না। এই গবেষণা পৃথিবীর জীবজগতের নিরাপত্তার জন্যে যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
১৯৭২ সাল পর্যন্ত ড. নারলিকার ‘ইন্সটিট্যুট অফ থিওরিটিক্যাল অ্যাস্ট্রোনমি’তে প্রতিষ্ঠাতা-অধ্যাপক ছিলেন এবং পাশাপাশি ছিলেন কেমব্রিজে ‘ফেলো অফ কিংস কলেজ’ হিসেবে। তারপরেই দেশে ফিরে আসেন তিনি। যোগ দেন ‘টাটা ইন্সটিট্যুট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ’-এ। তাঁর অধীনে গড়ে ওঠে থিওরিটিক্যাল অ্যাস্ট্রোফিজিক্স গ্রুপ। ১৯৮৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তাঁকে আহ্বান জানায় ভারতে মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হিসেবে ‘ইন্টার-ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ (আইয়ুকা) স্থাপন করার জন্য। ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি আইয়ুকার ডিরেক্টর ছিলেন আর আজীবন ছিলেন এমিরেটাস প্রফেসর। তাঁর অভিভাবকত্বে আইয়ুকা সারা বিশ্বে মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা পেয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির পাশাপাশি নারলিকার সম্মানিত হয়েছেন বহু পুরস্কারে। ছাত্র নারলিকার কেমব্রিজে পড়ার সময় পান স্মিথস্ পুরস্কার এবং অ্যাডামস্ পুরস্কার।
মাত্র ২৬ বছর বয়সে ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মভূষণ’ এবং ২০০৪ সালে ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মানে ভূষিত করেন। পেয়েছেন শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারও। আইয়ুকা-কে ‘সেন্টার অফ এক্সেলেন্স’ হিসেবে গড়ে তোলার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১২ সালে ‘থার্ড ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’ তাঁকে বিশেষ পুরস্কারে সম্মানিত করেন। ইংল্যান্ডের ‘রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি’র সদস্য এবং একসময় ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন’-এর ‘কসমোলজি কমিশন’-এর প্রেসিডেন্ট নারলিকারের পরিচয় শুধু একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী হিসেবে নয়, তিনি একজন আদ্যন্ত বিজ্ঞান প্রচারকও। বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার জন্য তিনি লিখে গেছেন অসংখ্য বই। কল্পবিজ্ঞানে তাঁর কলম অনায়াস। আর তাই ১৯৯৬ সালে ইউনেস্কো তাঁকে কলিঙ্গ পুরস্কারে সম্মানিত করে। মারাঠিতে লেখা আত্মজীবনীর জন্য ২০১৪ সালে তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান।
এই অসম্ভব মেধাবী ও কর্মচঞ্চল মানুষটির পথ চলা থামল ৮৭ বছর বয়সে। রেখে গেলেন তিন কন্যা এবং এক পৃথিবী বিজ্ঞানচেতনার উদ্দীপনা। স্ত্রী মঙ্গলাকে হারিয়েছেন বছর দুই আগে। ১৯৯৫ সালে প্রফেসর হয়েলের ৮০-তম জন্মদিনে কেমব্রিজে জড়ো হয়েছিলেন তাঁর অনুরাগী আর ছাত্রছাত্রীরা। প্রফেসর হয়েল সেদিন বলেছিলেন, ‘আমি যদি অন্যদের থেকে বেশি কিছু দেখে থাকি, তবে তা দেখেছি জয়ন্তর কাঁধে ভর দিয়ে’। গুরুর কাছ থেকে এক শিষ্য এর চেয়ে বেশি আর কী স্বীকৃতি এবং সম্মান পেতে পারেন! যাঁর কাধে ভর দিয়ে প্রফেসর হয়েল মহাকাশের অতলের তল খুঁজেছেন, সেই চিরনির্ভর চিরসখা আগামী প্রজন্মের চোখে জাগিয়ে গেলেন কল্পনার সৌন্দর্য। সে সৌন্দর্যের আধার হল মুক্তচিন্তা আর জিজ্ঞাসু মন। কল্পলোকের উঠোন জুড়ে বেঁচে থাক আপনার গাইতোন্ডেরা। আর এই বিশ্বচরাচরে থাকুন আপনি, প্রফেসর নারলিকার, ‘স্টেডি স্টেট’-এ। শূন্যতা যে আপনার তত্ত্বে মানায় না স্যর।
……………………………..
ফলো করুন আমাদের ওয়েবসাইট: রোববার ডিজিটাল
……………………………..