নীলিমা দেবী একধরনের কাজ ‘মেয়েলি’ কাজ, সেই ধারণাকে খানিকটা প্রশ্ন করছেন তাঁর চিঠিতে। সত্যিই তো, টেলিফোন অপারেটর বা রিসেপশনিস্টকে মেয়েই কেন হতে হবে? কিন্তু একটা বড় প্রশ্ন উহ্য রয়ে গেছে তাঁর চিঠিতে– ছেলেরা বিয়ের পর রাতের ডিউটি করতে পারলে মেয়েরা পারবেন না কেন? সেই বড় প্রশ্নটি পিতৃতন্ত্রের কাঠামোকে গোড়ায় আঘাত করে। কিন্তু পিতৃতন্ত্রের ভিত খুব শক্ত, কাঠামো আজও মজবুত। তাই আজকের দিনেও সরকার নিয়ম করেন রাতের ডিউটি যেন মেয়েদের কম দেওয়া হয়! কিন্তু পিতৃতন্ত্রের কাঠামোয় কিছু চিড়-ফাটল নিশ্চয়ই ধরিয়েছিলেন সে যুগের টেলিফোন অপারেটররা। গল্পের কমলা, বিনয় আর চাকরির মধ্যে বেছে নিয়েছিলেন চাকরি। প্রয়োজনের তাগিদেই হই হই করে তাঁরা দলে দলে দিনে, রাতে চাকরি করেছিলেন কলকাতার বিভিন্ন এক্সচেঞ্জে।
‘…টেলিফোন অফিসে কাজ করতে দিতে কমলার বাবা মোটেই রাজী নন। কয়েক বছর আগেও দলে দলে এত বাঙালি মেয়ে ওখানে কাজ করত না। বাবা আর মা দুজনেই ওজর-আপত্তি করলেন। কিন্তু কমলা প্রায় জোর করেই চাকরি নিয়ে বসল। আত্মীয়-স্বজন মহলে একটু নিন্দা মন্দ হোল। ভালো একটা বিয়ের সম্বন্ধ চলছিল সেটা ভেঙে গেল। কিন্তু কমলার তা বলে ক্ষোভ নেই, ও গোপনে গোপনে সকাল বেলার বিএ ক্লাসে ভর্তি হয়েছে।…’
দূরভাষিণী। নরেন্দ্রনাথ মিত্র
পাঁচ-ছয়ের দশকের ‘কলিকাতা কমলাময়’। কমলারা প্রায় সবাই ব্রাহ্মণ, বদ্যি, বা কায়স্থ পরিবারের, অধিকাংশই পূর্ববঙ্গের। দেশভাগের ধাক্কায় তাঁরা চাকরিতে ঢুকেছেন বা নরেন মিত্রের ভাষায় চাকরিতে ‘নেমেছেন’। তাঁদের কারও গন্তব্য হাসপাতাল, কারও টেলিফোন অফিস, কেউ বা তাঁরা যান স্কুল–কলেজে পড়াতে, কেউ বসেন সকালে দুধের বুথে, কেউ সদাগরি অফিসে টাইপিস্ট, কেউ সরকারি অফিসের কেরানি। মৌসুমী মণ্ডল তাঁর গবেষণায় সে-যুগের মেয়েদের চাকরিকে তিনভাগে ভাগ করেছেন। কিছু কিছু চাকরিতে মেয়েরা তখন প্রথম ঢুকছেন। আবার কোনও চাকরিতে ‘বাঙালি’ মেয়েরা প্রথম দলে দলে ঢুকছেন– উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় টেলিফোন অপারেটরদের কথা। মেয়েদের জন্য তৈরিও হচ্ছে দুধের বুথে বসার মতো নতুন কয়েকটি চাকরি।
টেলিফোন অপারেটরের চাকরিতে মেয়েদের একচেটিয়া অধিকার অবশ্য সেই গ্রাহাম বেলের আমল থেকেই। ফোন আবিষ্কারের পর পরই সুইচবোর্ড অপারেটরের চাকরি মেয়েদের চাকরি হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল বিশ্বজুড়ে। ম্যানুয়াল সিস্টেমের ফোনে কেউ কথা বলতে চাইলে তাঁকে ফোন করতে হত এক্সচেঞ্জে; অপারেটর সেই ফোন ধরতেন ও জেনে নিতেন কার সঙ্গে কথা বলতে চান গ্রাহক; অপারেটর তাঁকে ফোন করে সুইচবোর্ডের মাধ্যমে দু’টি লাইনের যোগাযোগ করিয়ে দিতেন। এই গোটা সমন্বয়ের কাজটি কেবলমাত্র মেয়েদের উপযুক্ত এমন ভাবার পিছনে ছিল নানা সমাজ-গড়া যুক্তি– যেমন মেয়েদের গলা কানে শুনতে ভালো, মেয়েরা ভদ্রভাবে কথা বলে, ফাঁকি মারে কম ইত্যাদি।
১৮৮২ সালে এদেশে কলকাতা, মাদ্রাজ, বোম্বেতে চালু হল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ। সেই থেকেই টেলিফোনের সুইচবোর্ড চালনার দায়দায়িত্ব ছিল মেয়েদের ওপর। স্বাধীনতা/ভাগাভাগির আগে অবধি অবশ্য তাঁদের মধ্যে হাতে-গোনা ছিল দেশি মেয়েদের সংখ্যা; বেশিরভাগই তাঁরা ছিলেন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ও ইউরোপিয়ান। ১৯৪৭–এর পর দ্রুত সেই ছবিটা পাল্টে গেল। অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা অনেকেই পাড়ি দিলেন অস্ট্রেলিয়া বা কানাডায়। উদ্বাস্তু মেয়েরা ভরাট করেন তাঁদের শূন্যস্থান।
……………………………..
নীলিমা দেবী একধরনের কাজ ‘মেয়েলি’ কাজ, সেই ধারণাকে খানিকটা প্রশ্ন করছেন তাঁর চিঠিতে। সত্যিই তো, টেলিফোন অপারেটর বা রিসেপশনিস্টকে মেয়েই কেন হতে হবে? কিন্তু একটা বড় প্রশ্ন উহ্য রয়ে গেছে তাঁর চিঠিতে– ছেলেরা বিয়ের পর রাতের ডিউটি করতে পারলে মেয়েরা পারবেন না কেন? সেই বড় প্রশ্নটি পিতৃতন্ত্রের কাঠামোকে গোড়ায় আঘাত করে। কিন্তু পিতৃতন্ত্রের ভিত খুব শক্ত, কাঠামো আজও মজবুত। তাই আজকের দিনেও সরকার নিয়ম করেন রাতের ডিউটি যেন মেয়েদের কম দেওয়া হয়!
……………………………..
১৯৫০ সালের হিসেব অনুসারে কলকাতার টেলিফোন অপারেটরদের মধ্যে ২৩৯ জন ছিলেন অ্যাংলো ইন্ডিয়ান ও ৪৮০ জন অন্যান্য জাতি-বর্ণের ভারতীয়। আর এই অন্যান্য ভারতীয়র মধ্যে সেসময় অধিকাংশই ছিলেন কমলাদের মতো বাঙালি হিন্দু ভদ্রমহিলা, অনেকেই তাঁরা পূর্ব বাংলা থেকে আসা উদ্বাস্তু। উদ্বাস্তুদের জন্য কিছু বাড়তি সুযোগ সুবিধাও ছিল এ সময়ে– যেমন চাকরিতে ঢোকার বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় তাঁদের জন্য কিছু ছাড় ছিল। দেশভাগের পর ছিন্নমূল হয়ে আসা মানুষের অর্থনৈতিক পুনর্বাসনের জন্য সরকার এমন কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছিল।
কলকাতার টেলিফোন এক্সচেঞ্জে মেয়েদের আনাগোনা যেহেতু উনিশ শতকের শেষ থেকে, মহিলাদের উপযুক্ত পরিকাঠামো সেখানে ছিল। মেয়েদের জন্য আলাদা বাথরুম, বিশ্রামের ঘর, প্রয়োজনে স্যানিটারি ন্যাপকিন ইত্যাদি নানা ব্যবস্থাই ছিল টেলিফোন অফিসে। শুধু মেয়েরাই থাকেন, কাজ করেন– এই ব্যবস্থার ফলে টেলিফোন অপারেটরের চাকরি অনেক বাড়িতে বেশি গ্রহণযোগ্যও ছিল। সুযোগ-সুবিধার লিস্টের পাশাপাশি অসুবিধার তালিকাও ছিল বেশ লম্বা। অমানুষিক কাজের চাপের কথা না বললেই নয় এখানে। ‘যুগান্তর’-এ পড়ি–
‘একজন অপারেটরের হাত দুটো। কিন্তু বোর্ডে সর্বদাই অনেকগুলি করে আলো জ্বলছে। একটা কানেকশন দিতে না দিতে আরেকটা আলো জ্বলে উঠছে। তার ব্যবস্থা করার আগেই আরও নতুন নতুন আলো জ্বলে উঠছে। …অনেকের বোর্ডেই একসঙ্গে সাত-আটটা আলো জ্বলছে। আর টেলিফোন-মেয়েদের হাত যে রকম ক্ষিপ্রগতিতে কাজ করে যাচ্ছে তার সঙ্গে একমাত্র টাইপিস্টের দ্রুততার তুলনা চলতে পারে। একটা কানেকশন কেটে দেওয়া, অন্য কানেকশনে তার লাগানো, টেলিফোনকারীকে নম্বর জিজ্ঞেস করা, অন্য এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কানেকশকন করে দেওয়া– ইত্যাদি কাজ যে রকম দ্রুততায় হচ্ছে তাতে ধাঁধা লেগে যায়।’
টেলিফোন জরুরি পরিষেবা, রাত-দিন চালু। তাই পালা করে দিনের তিনটি পর্যায়ে ডিউটি পড়ত মেয়েদের। প্রথম পর্যায় শুরু হত সকাল ৬টা থেকে, শেষ হত দুপুর দুটোয়; তার পরের পর্যায় ছিল দুপুর দুটো থেকে রাত ৯টা এবং শেষটি ছিল রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত। বাঙালি পরিবারের বউ-মেয়েরা রাতের ডিউটি দিতে যাচ্ছেন, সমাজ সহজে তা মেনে নিয়েছিল বলে মনে হয় না। নরেন মিত্রের লেখায় পড়ি কমলা ও তাঁর স্বামীর বার্তালাপ–
বিনয়– …ঘরের বৌ হয়ে রাতের পর রাত কাটাচ্ছ বাইরে।…
কমলা– কী করব বল না, আমারও কি ভালো লাগে? কিন্তু আমার ইচ্ছেতেই তো ডিউটির নিয়ম পাল্টাবে না।
বিনয়– …ডিউটির নিয়ম হতে পারে কিন্তু বিবাহিত জীবনের পক্ষে এ ঘোর অনিয়ম। তুমি এ চাকরী ছেড়ে দাও।
কমলা চাকরি ছাড়েনি। কিন্তু অনেকেই ছাড়তেন। টেলিফোন বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার একবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘অধিকাংশ ভারতীয় তরুণী চাকুরী পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যে বিবাহিতা হয় এবং চাকুরী ছাড়িয়া যায়। গড়পড়তা ১০ জন করিয়া প্রতি মাসে কাজ ছাড়িয়া যায়।’ উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন এক দশক আগেও কেমন বিবাহিতা মেয়েরা চাকরি পেতেন না টেলিফোন অফিসে। সেই ‘স্বর্ণযুগের’ কথা ভেবে হয়তো দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলেছিলেন তিনি মনে মনে। (যুগান্তর, পয়লা সেপ্টেম্বর ১৯৫০)। টেলিফোনের লাইন পেতে সময় লাগে, খালি খালি ভুল জায়গায় ফোন চলে যায়, টেলিফোন অপারেটরদের ব্যবহার ভালো না ইত্যাদি গ্রাহকদের থেকে আসা নানা অভিযোগের জবাব দিতে ডাকা হয়েছিল এই সাংবাদিক সম্মেলনটি। সেখানে এই ভদ্রলোক মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাওয়া ছাড়াও কিছু বিচিত্র অজুহাত দেন। যেমন তিনি বলেন যে বাঙালি মেয়েরা চটপট ইংরেজি বলতে পারেন না ও সাহেবি আদবকায়দা তেমন জানেন না, তাই তাঁদের কাজে সময় বেশি লাগে। অবশ্য পাশাপাশি তিনি ‘পুরাতন ও জীর্ণ সাজসরঞ্জাম, উৎকৃষ্ট উপাদান নিয়মিত না পাওয়া, যুদ্ধের জরুরি অবস্থার চাপে যথাসম্ভব দ্রুতগতিতে লাইন স্থাপন’ ইত্যাদি কারণের উল্লেখও করেন।
এই সাংবাদিক সম্মেলনে চিঁড়ে ভেজেনি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের কাছে শুনেছি সে যুগে প্রায়ই লোকে বলত টেলিফোন অফিসে একঘর মেয়ে বসে খালি আড্ডা মারে আর ভুলভাল লাইন যোগ করে দেয়; তাই এত রং নম্বর হয়। উপরোক্ত সাংবাদিক সম্মেলনের পরপরই জনৈকা নীলিমা চৌধুরীর লেখা একটি চিঠি পাই ‘যুগান্তর’-এ (২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৫০)–
‘(টেলিফোন) কোম্পানির আমলে কেবলমাত্র ইঙ্গ-ভারতীয় মেয়েদের দিয়ে একাজ [অপারেটরের কাজ] সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে সকলেই স্বীকার করবেন। এখন শুনতে পাই শতকরা ৭৫টি ভারতীয় মহিলা নিযুক্ত হয়েছেন। অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও লজ্জিত হয়ে বলতে হচ্ছে, যদি ভারতীয় ও বঙ্গ মহিলারা এত নিদারুণ অপটুতার পরিচয় দিয়ে থাকেন শুধু মেয়েজাত বলে তাঁদের অনুকম্পা দেখানোর কি প্রকৃষ্ট কারণ আছে? টেলিফোন চালনা শুধু মেয়েদের কাজ, এই বা কি যুক্তিসঙ্গত কারণ হতে পারে? ইঙ্গ-ভারতীয় বা ভারতীয় যারা সম্যক কর্মক্ষম তাদের কর্তৃপক্ষ নিয়োজিত করুন, অবশিষ্ট পুরুষ চালক নিযুক্ত করুন। যথেষ্ট শিক্ষিত বেকার যুবক দেশে আছে, তাদের শিক্ষা দিয়ে যথোচিত উপযুক্ত করে তুলুন। শিক্ষা দেওয়ার সময়ে এক শর্ত সকলকেই করিয়ে নিতে পারেন যে, বিদ্যুৎ, জল ইত্যাদির ন্যায় টেলিফোনও Public Utility Service। এ কাজে যোগদান করলে ইচ্ছামত ইস্তফা দেওয়া চলতে পারে না।
এখন প্রতি মাসে গড়ে ১০ জন চালক ইস্তফা দিয়ে চলে যায় …যদি বিবাহ প্রধান হেতু হয়, তবে পুরুষ চালক হলে এ প্রশ্ন আর উঠবে না। এবং নারী চালক এ কাজে যোগদান করার পূর্বে বিবেচনা করে আসবেন। এ সংসারে যথেষ্ট অন্য কাজ নারীদের দিয়ে হতে পারে। হঠাৎ কোন একটা বিপদ হলে বর্তমান টেলিফোন আমাদের কোন আশা-ভরসার স্থল নয়।’
নীলিমা দেবী একধরনের কাজ ‘মেয়েলি’ কাজ, সেই ধারণাকে খানিকটা প্রশ্ন করছেন তাঁর চিঠিতে। সত্যিই তো, টেলিফোন অপারেটর বা রিসেপশনিস্টকে মেয়েই কেন হতে হবে? কিন্তু একটা বড় প্রশ্ন উহ্য রয়ে গেছে তাঁর চিঠিতে– ছেলেরা বিয়ের পর রাতের ডিউটি করতে পারলে মেয়েরা পারবেন না কেন? সেই বড় প্রশ্নটি পিতৃতন্ত্রের কাঠামোকে গোড়ায় আঘাত করে। কিন্তু পিতৃতন্ত্রের ভিত খুব শক্ত, কাঠামো আজও মজবুত। তাই আজকের দিনেও সরকার নিয়ম করেন রাতের ডিউটি যেন মেয়েদের কম দেওয়া হয়! কিন্তু পিতৃতন্ত্রের কাঠামোয় কিছু চিড়-ফাটল নিশ্চয়ই ধরিয়েছিলেন সে যুগের টেলিফোন অপারেটররা। গল্পের কমলা, বিনয় আর চাকরির মধ্যে বেছে নিয়েছিলেন চাকরি। প্রয়োজনের তাগিদেই হই হই করে তাঁরা দলে দলে দিনে, রাতে চাকরি করেছিলেন কলকাতার বিভিন্ন এক্সচেঞ্জে। কারও গন্তব্য তখন জোড়াসাঁকো, কারও বা ছিল সাউথ এক্সচেঞ্জ; কেউ ছুটতেন পার্ক এক্সচেঞ্জে, কেউ এন্টালি, কেউ আলিপুর। বাড়ি বসে ফোন ঘোরালে যেমন তাঁদের গলা শোনা যেত, তেমনই তাঁদের চোখে পড়ত পাড়ায়, পাড়ায়, বাসে ট্রামে চলার পথে। দেশভাগ ও স্বাধীনতা কলকাতা শহরে বাঙালি মেয়েদের দৃশ্যমান করেছিল, শ্রাব্য করেছিল। তার ফলে পুরুষতন্ত্রে ফাটল একটু ধরেছিল বইকি!
তথ্যসূত্র
১. মৌসুমী মণ্ডল, At Home in the World a Study of the Working Refugee Bhadramahila in Post Partition Calcutta, অপ্রকাশিত পিএইচডি থিসিস, জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, ২০২১।
২. দেবাশিষ দত্তগুপ্তের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা। দেবাশিষ দত্তগুপ্ত টেলিফোন দপ্তরে দীর্ঘদিন কাজ করেন। অটো এক্সচেঞ্জ অ্যাসিস্ট্যান্ট ও জুনিয়র টেলিকম অফিসারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পাশাপাশি, তিনি ছিলেন ইউনিয়নের সক্রিয় কর্মী। তাঁর স্ত্রী শিপ্রা দত্তগুপ্ত টেলিফোন অপারেটর হিসাবে দীর্ঘকাল কাজ করেন। দেবাশিষ দত্তগুপ্ত ‘নিকট-দূর দূরভাষ’ নামক প্রবন্ধ সংকলনের রচয়িতা।
৩. সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা।
‘যৌনতার পাঠশালা’র ভাবনা শুরুই হয়েছিল যৌনতা নিয়ে ‘যা খুশি তাই বলা’ বা ভাবার লাইসেন্স নিয়ে একটু নাড়াচাড়া করার জন্য যে, যৌনতা মানে কে কাকে কার সঙ্গে শুয়ে পড়তে চায় সেই সংক্রান্ত তাল পাকানোই শুধু নয়, যৌনকর্ম এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে আলোচিত হতে পারে।
পাকিস্তানী বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের কথা বলতে বলতে তাঁর অশ্রুসজল চোখ দেখে শুধু সেই সময় নির্বাক হয়েছিলাম তা’ নয়, আজও তাঁর সেই চোখ দেখতে পাই, শুনতে পাই মানুষের প্রতি মানুষের বর্বরোচিত অত্যাচারের সেই গল্প বলতে বলতে তাঁর রুদ্ধ কণ্ঠস্বর।