‘সিস্টার মিডনাইট’– একটি সিনেমাটিক অভিজ্ঞতা– প্রোলেতারিয়েত চরিত্রগুলি এক-একটা নিরালা একাকিত্বের রিলাকট্যান্ট উপকথা। এরা পরস্পরকে ভালোবাসে ভালোবাসতে হবে বলে নয়, ভালোবাসা পায় বলে। গোপাল (অশোক পাঠক) উমাকে বিয়ে করে নিয়ে আসে শহুরে বস্তিতে– উমার রেসিস্ট্যান্স তৈরি হয় দু’কোটি মানুষের ঘিনঘিনে ভিড়ে মিশে যেতে। স্বামী গোপাল উমাকে ভয় পায়, রাতের ছোট্ট চৌকিতে ওরা পরস্পরের দিকে পিঠ করে ঘুমোয়, চাদরের নীচে ল্যাংটো উমা গোপালকে হাত বাড়িয়ে ডাকলেও গোপাল হ্যান্ডশেক করে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে– একটি টগবগে ট্র্যাজেডিতে এরা সব কমিক চরিত্র হয়ে ওঠে আপন খেয়ালে।
– মাদারচোদ, মুঝে ডিভোর্স চাহিয়ে। ইশক্ মাজা কিধার গ্যায়া?
– হামেশা কুছ নাহি রেহতা।
– ইস ম্যারে ইশক্ কো জাগানা হ্যায়, মুঝে ওয়াপাস লে লে।
– আব খতম, মেরে লিয়ে তু কেয়া থি, যা কুত্তি।
– ম্যায় বিগড়া মাল হু, ম্যায় ডিভোর্সি। লেকিন ঠিক হ্যায়। ঝান্ডা লে কার পাহাড়ো মে এক দেশ বানাউঙ্গি, মারদো কে ব্যাগার, যাহা হোগা এক উঁচা মহাল, চুত্কা।
– না না, বাগাওয়াত আন্দার সে আনি চাহিয়ে, জ্যায়সে জুড়াভ কি দারাজ মে সে সাপ।
ফ্রেমের ডানদিকে এক লাইন ঝুপড়ি ঘর, তার একটির সামনে রাস্তার ওপর পা ছড়িয়ে দু’টি মেয়েমানুষ বুনে চলে কল্পিত ভবিষ্যৎ– ভাবলেশহীন মুখ দু’টিতে কণামাত্র স্বপ্ন নেই, যেন ‘মারদো কি ব্যাগার’ পৃথিবী রচনা ওদের বাঁ-হাত কা খেল।
আর আমরা স্লিপ করে ঢুকে পড়ি সেই অবিশ্বাস্য বসুন্ধরায়, যেখানে বিয়েতে পরানো কাঁচের চুড়ি, যার রিনরিন শব্দ কানে কর্কশ ঠেকে, যা অবলীলায় ভেঙে ফেললে ‘আপ শাগুণ’ হয় না, আসলে কিচ্ছুটি হয় না।
করণ কান্ধারি– এই ছবির পরিচালক আমাদের ট্রেনে করে যাত্রা করান উমার (রাধিকা আপ্তে) জগতে, আমাদের কো-ট্রাভেলার উমা নিজেই। তাই উমা যেভাবে তার নতুন পৃথিবীকে দেখে, আমরাও সেভাবেই দেখি, আমরা উমাকে আবিষ্কার করি উমার নিজেকে আবিষ্কার করার প্রক্রিয়াতেই। এ যাত্রা আমরা আগেও করেছি, মৃণাল সেন সেই ছয়ের দশকে আমাদের রেলগাড়িতে চাপিয়ে দিয়েছিলেন ভুবন সোমের (উৎপল দত্ত) দুনিয়া দেখাতে, সেই দুনিয়ায় আমরা দর্শক হয়ে অপার মুগ্ধতায় গৌরীকে (সুহাসিনী মুলে) চিনেছিলাম, দেখেছিলাম একটি গেঁয়ো মেয়ের চরিত্রে কেমন খিলখিলে মায়া সৃজন করেছিলেন মৃণালবাবু। আর কান্ধারির গল্পে আমরা চাঁদের সাম্পান বেয়ে চলি অবিরাম, এক পুণ্যিমে থেকে আর এক পুণ্যিমে এই গল্পের পরিসর ভাবলে ভুল হবে কি না ঠাহর হয় না। শহরে ঝুপুস অন্ধকার নামে না কক্ষনও, তবু উমা রাতের বেলা পাড়া বেড়াতে বেরয়, এক হাতে বালতি আর এক হাতে ঘর-মোছা লাঠি নিয়ে উমা কাজে যায়, উঁচু ছাদে এক আকাশ তারার নিচে শুয়ে থাকে– কখনও আকাশে ঝুলে থাকে কৃষ্ণা দ্বাদশীর চাঁদ, উমা অনুযোগ করে, ‘তু ইতনা শান্ত ক্যাইসে রেহতি হ্যায় ইয়ার?’ মায়া যেন ছাড়তে ছাড়তেও ছাড়ে না, থকথকে রক্তের ড্যালার মতো চিটচিটে লেগে থাকে গায়ে।
‘সিস্টার মিডনাইট’– একটি সিনেমাটিক অভিজ্ঞতা– প্রোলেতারিয়েত চরিত্রগুলি এক-একটা নিরালা একাকিত্বের রিলাকট্যান্ট উপকথা। এরা পরস্পরকে ভালোবাসে ভালোবাসতে হবে বলে নয়, ভালোবাসা পায় বলে। গোপাল (অশোক পাঠক) উমাকে বিয়ে করে নিয়ে আসে শহুরে বস্তিতে– উমার রেসিস্ট্যান্স তৈরি হয় দু’কোটি মানুষের ঘিনঘিনে ভিড়ে মিশে যেতে। স্বামী গোপাল উমাকে ভয় পায়, রাতের ছোট্ট চৌকিতে ওরা পরস্পরের দিকে পিঠ করে ঘুমোয়, চাদরের নিচে ল্যাংটো উমা গোপালকে হাত বাড়িয়ে ডাকলেও গোপাল হ্যান্ডশেক করে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে– একটি টগবগে ট্র্যাজেডিতে এরা সব কমিক চরিত্র হয়ে ওঠে আপন খেয়ালে।
করণের ছবির প্রেক্ষিত রিয়ালিস্ট– তাই ন্যারেটিভ যখন ক্রমশ অভিব্যক্তিবাদ, অ্যাবসার্ডিটি এবং আরও এগিয়ে পরাবাস্তবের সমারোহ তৈরি করে, পর্দায় ম্যাজিক তৈরি হয় বটে, কিন্তু সে ম্যাজিক পর্দায় মিলিয়ে না গিয়ে ‘বিবাহ’ নামক আদি-অনন্তের ধারণাকে দা-এর এক কোপে ধর থেকে বিচ্ছিন্ন করে; আর সেটি ফুটবল হয়ে গড়াতে থাকে এর ওর পায়ে পায়ে। আসলে এই ছবি শুধু নিয়ম ভাঙে না, জন্ম ইস্তক যে শ্বাসযন্ত্র হাপরের মতো ওঠানামা করেছে শুধু, টুঁটি টিপে থাকা সেই প্রভূত নিয়মকে এই ছবি অস্বীকার করে এবং তাকে অনন্তের সামনে বসাতে চায়। এমনকী, ছবি তৈরির যাবতীয় কৌশলকেও এই ছবি প্রশ্ন করতে ছাড়ে না। গোটা ছবি জুড়ে অসংখ্যবার ব্ল্যাক ফ্রেমের ব্যবহার এতদিনের লালন করা আঙ্গিকের ধারণাকে অস্বস্তি দেয়; আর করণ পর্দার পাশে ডগমগ খুশিতে নেত্য করেন। অস্বস্তির শেষ হয় না এখনও, ছবির একটিমাত্র জায়গায় করণ হোয়াইট ফ্রেমের ব্যবহার করেন। গোপালের চিতা সারারাত জ্বলে ভোরবেলা যখন ধূসররঙা ছাই হয়ে যায়, সাদা পর্দা ফুঁড়ে ফ্রেম ইন করেন এক সাধু, আমি ভাবব মৃত্যুর ওপার হতে হেঁটে এলেন এই মহাত্মা, গোপাল-পোড়া ছাই আজলা ভরে মেখে নেন অনাবৃত অঙ্গে, আমি অলমোস্ট কনভিন্সড, এই তো প্রস্তুতি স্পিরিচুয়ালিটির কান ঘেঁষে ন্যারেটিভের অমোঘের দিকে যাত্রার– এবার ঘাড়ের ওপর কুঠারাঘাত, ঝুলে পড়া ঘাড় নিয়ে দেখি পর্দায় সাধু তখন একটি সিলড বোতল খুলে গলা ভেজাচ্ছেন ঢকঢক অরেঞ্জ জুসে।
উমা সংসারের স্বরূপ জানে না, কীভাবে রাঁধতে হয়, বুকের কাপড় সরে গেলে কীভাবে অলক্ষ্যে বুক ঢাকতে হয়, জানে না। আসলে এগুলো যে জানতে হয়, উমা তাই জানে না! উমার ব্লাউস খসে পড়েছে কাঁধ থেকে, উমা তার হকের শরীরী সুখ চেয়েছে, দৃপ্ততায় অথচ কী আলগোছ স্নেহে গোপালকে বলেছে, ‘চল, কাপড়ে উতার, হাড্ডি দিখা’। উমা তোয়াক্কা করেনি কাউকে। তোয়াক্কা করি আমি, যাকে বারবার অনন্তবার শরীর ঢাকতে বলেছে তাবৎ পৃথিবী– সৃষ্টিকাল থেকে শরীরী সুখের আস্বাদন থেকে বঞ্চনা করেছে; তাই যা কিছু স্বাভাবিক, তাকে প্রথমে অস্বাভাবিক সাজিয়ে তারপর স্বাভাবিক করে তোলাকে সাহসী বলে যে ‘প্রগ্রেসিভ’ চেতনাকে আগলে রেখেছি মনে মনে– এই ছবি কষে থাপ্পড় মেরেছে আমার গালে, লজ্জায় নুব্জ হয়েছি। উমা সেই ‘আউটকাস্ট’, যার বন্ধু হয় ঝুপড়ির পাশের ঘরের শীতল (ছায়া কদম), কী নরম মায়ায় যার মাথায় বিলি কেটে দেয় উমা, দেহ ব্যবসায়ী হিজড়ের দল, যাদের কাঁধে মাথা রেখে ভাষাবিহীন মেদুরতায় লীন হওয়া যায়, একজন আধবুড়ো লিফটম্যান, পিতার মমতায় যে অবাধ্য উমাকে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে। আর আছে এক পাল অ্যানিমেটেড zombie ছাগল, যারা উমার সঙ্গে বসত করে, উমা দূর দূর করে তাড়িয়ে দিলেও ওরাই উমার সঙ্গে শহর ছাড়ে শেষপর্যন্ত– নদীর উন্মাদ স্রোতে সব কি ধুয়ে মুছে যায়, পলিও তো জমে!
দু’-কোটি মানুষের বিধ্বস্ত প্রবহমান শহর তার সেই কবেকার অন্ধকার দুঃখ নিয়ে উমাকে গিলে ফেলতে চায়, অসুস্থ অবিচল উমা নিরলস চেষ্টায় ছাগল, পাখির ঘিলু আর রক্ত পান করে সুস্থ হয়ে ওঠে। খেয়ে ফেলা পাখিদের উমা নরম হাতে আদর করে, সাদা কাপড় মুড়িয়ে তাদের চৌকির তলার একটি কাঠের বাক্সে থরে থরে সাজিয়ে রাখে। এই ছবির প্রতিটি ফ্রেম উমার মতোই বাধাহীন, নিয়মকে বাজি রেখে ঝুপড়ি ঘরের আলো আর শহুরে হাইরাইজের আলোর তফাতের ব্যঞ্জনা এক প্রকার হিপনোটিজমের জন্ম দেয়। উমা যখন চৌকির ওপর বসে থাকে, একরত্তি জানালায় টাঙানো কাপড় খসে গিয়ে রোদ এসে পড়ে, ছোট্ট খুপড়ি ঘরে, দৃশ্যত কুণ্ডলী পাকায় পার্থিব মুগ্ধতা। গাঢ় নীল দেওয়ালে ঠেস দিয়ে চুরি করা টবওয়ালা গাছেদের আড়ালে বসে প্যাকাটি চেহারার উমা যখন বড় বড় চোখ লেন্সের দিকে মেলে সিগারেটে টান দেয়, চিক্কন এক আলো ঘরময় ছড়িয়ে থাকে, ভোররাতের জ্বোরো স্বপ্নদের যেমন সত্যি মনে হয়, যেন ভাতের থালার পাশে কোনও ভাষ্য এসে থিতু হয়, আর আমরা এহেন দলা দলা জীবনকে অবাক মানি।
‘সিস্টার মিডনাইট’– কান্ধারির প্রথম ফিচার ফিল্ম। অভিজ্ঞতা রয়েছে মিউজিক ভিডিও বানানোর। এই পরিচয় থেকেই বোধহয় মনের কোণে উসখুস করেছে ছবিতে ব্যবহৃত মিউজিকের অচেনা চমৎকারিত্বের। আমার কান শিখেছে গীতা দত্ত, ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে কী পেলবতায় গেয়েছেন ‘তুমি যে আমার, ওগো তুমি যে আমার’ যখন পর্দায় দেখেছি, স্বামী-স্ত্রী স্লো-মোশনে ছায়ামেদুর হেঁটে পৌঁছেছেন গন্তব্যে (আসা যাওয়ার মাঝে– পরিচালক: আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত)। আমি কড়ি ও কোমল চিনেছি শিগেরু উমেবায়াসির চেলোতে যখন ফোরগ্রাউন্ডে একটি সাদা আলো জ্বলেছে, আর পাশের সিঁড়ি দিয়ে খাবার আনতে ওঠানামা করেছেন দুইটি একলা মানুষ মিনিটের তফাতে (ইন দ্য মুড ফর লাভ– পরিচালক: ওয়াং কার ওয়াই)। অথচ কান্ধারি বলছেন যেটা যেখানে খাপ খায় না, সেটাই। আমেরিকান পল ব্যাঙ্কস মিউজিক করেছেন তেমনই যা আমি বুঝলাম বা বুঝলাম না, তাতে গাছের একটি পাতাও খসবে না। পিত্যেশ মিটবে না, বরং ভাতের থালার পাশে বসে দুপুরের বিজন বাতায়নে জোছনা ভাগ করে নেওয়ার অলৌকিকতা তৈরি হবে স্পন্দনে স্পন্দনে।
ছবিটি আমাকে কোথাও স্থির হতে দেয় না। আমি অপলক তাকিয়ে দেখি সেই সব দৃশ্যপট, যেগুলো পেরিয়ে উমা বনে যায় দেবী বা দানব, বৌদ্ধ মন্দিরে সন্ন্যাসিনীকে উমা জানায়–
– মুঝে শায়াদ ইহা নাহি রুকনা চাহিয়ে
– এইসা কিউ?
– মুঝে ভগবান পে ভরসা নাহি রাহা।
– হামে কভি নাহি থা।
ছবির শেষের দিকে উমা যখন ফ্যানাটিক উন্মত্ত জনতা থেকে পালাতে থাকে– একটি গেরুয়া বসন এবং একটি পুলিশি বসন, যেমনটি চোখ-সওয়া আমাদের, তেড়ে আসে ওর দিকে, তক্ষুনি জাদুবলে পিছনের ইলেকট্রিক পোলে আগুন ছিটকে আসে, ওই দুই বসন দেবীজ্ঞানে হুমড়ি খেয়ে পড়ে উমার পায়ে, আমার অবকাশ নেই একে ম্যাজিক্যাল রিলিফ ভাবার, কারণ পরবর্তী আধ সেকেন্ডে ন্যারেটিভ মস্তিষ্কে পেরেক ঠুকে বলে দেয়– ওটা রাস্তায় ইলেকট্রিকের কাজ হওয়ার সময় ভুলবশত ভুল তার কেটে ফেলার ফল। ঠিক তার দু’-তিনটি দৃশ্য পর, উমা যখন শীতল ও অন্যান্যদের সহায়তায় প্রায় ভাগলওয়া, আবার এক দল ‘ইনসান’ মশাল হাতে দাঁপিয়ে এলে উমার কনফ্রন্টেশন–
– জানোয়ার হ্যায় তু
– ইনসান হোনা মুশকিল হ্যায়। তেরা প্রবলেম কেয়া হ্যায়?
তারপর হাত আকাশপানে তুলে হিজিবিজি। ভয়ে চোঁ চোঁ মশালধারীর দল।
কলকাতার একটিমাত্র হলে মাত্র এক সপ্তাহ চলেছে এই ছবি। তাও একটি করে শো। আমার সঙ্গে দেখেছে গোটা হলে সাকুল্যে পাঁচ-ছ’ জন। কথোপকথনের যাবতীয় নন-এলিট শব্দ মিউট করে রেখেছে এ দেশের সেন্সর বোর্ডের বোদ্ধারা। বাদ গেছে উমা আর গোপালের একমাত্র অনির্বচনীয় সেক্স দৃশ্য। সাবাশি না দিয়ে কী যে উপায়, ছবিটির যা কিছু মজা, যা কিছু খিল্লি পর্বত শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন আপনারা, কারণ খিল্লি তারাই যারা ছবিটিকে কঠিন ঠাওরেছেন, ‘বিজার’ বলে অস্বীকার করেছেন। করণ কান্ধারি, আপনি আপনার প্রথম ফিচার ফিল্মে আর যাই করুন না কেন, আমরা, সমাজবদ্ধ ন্যাকবোকা প্রাণীসকল জ্বলজ্বলে খিল্লি বনেছি, মুখের সামনে ধরেছেন যে আয়না, তাকে স্বীকার করি বা নাই করলাম। আমাদের জন্য অপরিহার্য করে দিয়েছেন উমার শ্বাপদ দন্তদ্বয়।
তরুণ লেখকমাত্রেই, যে আর্থিক স্বাবলম্বী হওয়ার কথা মানিক বলেছিলেন, তাকে অনেক বাঙালি লেখক কবি আজও কেবল দারিদ্র-মোচনের বিকল্প হিসেবেই দেখলেন। প্রতিরোধের বিকল্প হিসেবে দেখলেন না। অর্থাৎ লেখক বাঁচবেন নিজের শর্তে। প্রতিষ্ঠানের শর্তে নয়।