বস্তি অঞ্চলের গায়ে গায়ে লেগে থাকা ঘরগুলি প্লেগের জন্য আদর্শ বলে মন্তব্য করা হল। সেই সূত্র ধরে উত্তরের দর্মাহাটা স্ট্রিটের বেশ কিছু ঘর ভেঙে দেওয়া হয় যখন ওই অঞ্চলে প্লেগ রোগীর কথা জানা যায়। লোকগুলির স্থান হয় ক্যাম্পে, তাঁদের বাড়ির বিছানা-তোশক সব পুড়িয়ে দেওয়া হয় প্লেগের জীবাণু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। গরিব বস্তিবাসীর ওপর এই অত্যাচার বেশ কিছুদিন ধরে চলে সেই অঞ্চলে। তাঁরা মোটেই ঘরবাড়ি ছেড়ে ক্যাম্পে যেতে প্রস্তুত ছিলেন না। একদিকে যেমন ঘর-আসবাব হারানোর আতঙ্ক ছিল, অন্যদিকে ছিল ক্যাম্পে গিয়ে নানা জাতের মানুষের সঙ্গে শোয়াবসা-খাওয়ার ফলে ‘ম্লেচ্ছাচারের’ ভয়।
৪.
উনিশ শতকের একেবারে শেষে, পশ্চিম ভারতে প্লেগের প্রাদুর্ভাব কলকাতার ব্রিটিশ শাসকদের বেশ দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, ঘিঞ্জি বাড়িঘর, অপরিসর রাস্তাঘাট, অপরিষ্কার নিকাশি ব্যবস্থা– সবকিছুই নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে। প্লেগ ছড়িয়ে পড়লে রোগীকে আলাদা রাখা, বাড়িঘর সাফ রাখা, আলোবাতাসের চলাচল বজায় রাখা যে বিশেষ জরুরি, একথা বম্বে বা পুণা শহরের অভিজ্ঞতা থেকে ততদিনে সবাই জেনে গিয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন এলাকা দেখেশুনে স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিম্পসনের বরাবরের বক্তব্য নিয়ে এবার প্রশাসন নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হল।
কী ছিল সেই দাবি? কলকাতার বাড়ি তৈরির নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন বেঁধে দেওয়া, যেমন কোন রাস্তায় কীরকম বাড়ি বানানো যাবে, বাড়ির উচ্চতা কত হবে, উঠোনের মাপজোক কী হবে, বা দুই বাড়ির মধ্যে হাওয়া চলাচলের জন্য কতটা জায়গা ছাড়তে হবে। প্রয়োজনে পুরনো ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে নতুন করে কিছু জায়গা তৈরি করতে হবে। এইসব কথা নিয়ে আলোচনার জন্য দশ সদস্যের ‘ক্যালকাটা বিল্ডিং কমিশন’ গঠন করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয়দের মতামত সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে কমিশনের কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া সমস্যার ছিল, তাতে ভয় ছিল যে গরিব বস্তিবাসী বা বাড়ি-জমির বড়লোক মালিক– কেউই কোনও কথা মানবে না। ফলে ভারতীয়দের খানিক আশ্বস্ত করতে কালী নাথ মিত্র আর নলীন বিহারী সরকারকে কমিশনের সদস্য করা হয়।
১৮৯৭ সালে কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ত্রুটিপূর্ণ বাড়ির নকশা আর মহামারীর মধ্যে নিবিড় যোগ আছে এটা প্রথমেই জোরালোভাবে বলে দেওয়া হল এই নথিতে। ভারতীয়দের বাসস্থানের অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে নানা মন্তব্য করা হল। বলা হল– বড়বাজার, জোড়াবাগান, আর কলুটোলার মতো অঞ্চল এক্ষুনি ভেঙেচুরে আলো বাতাসের পথ করা দরকার বা বস্তির জমি থেকে কুঁড়েঘর সরিয়ে ফাঁকা মাঠ বের করা প্রয়োজন, যা শহরের ফুসফুসের কাজ করবে। তবে এইসব প্রস্তাব তখনই কার্যকর করা সম্ভব, যখন সরকার টাকা দিতে প্রস্তুত। ভারতীয়দের ওপর নগর উন্নয়নের জন্য নতুন ট্যাক্স বসিয়ে যে বেশিদূর এগোনো যাবে না, তা কমিশনের সদস্যরা স্বীকার করে নেন।
কমিশনের অন্য একটা কাজ ছিল বাড়ির নকশা পর্যালোচনা করে সেই অনু্যায়ী বাড়ি বানানো যাবে কি না, তার অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া। পুরনো বাড়িতে কোনও নতুন অংশ তৈরি করার আগেও কমিশনের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। কমিশনের বিশেষ নজর ছিল রাস্তার প্রস্থের সঙ্গে বাড়ির উচ্চতার একটা নির্দিষ্ট সীমা বজায় রাখা। ভারতীয়দের বাড়ির ওপর কমিশনের বিশেষ নজর পড়ল, কারণ এইসব বাড়ির অভ্যন্তরে ক’টা লোক থাকে, কীভাবেই বা থাকে, ঘরের ভাগ-বাটোয়ারা কীকরে হয়, এহেন যাবতীয় প্রশ্ন ব্রিটিশ নগর প্রশাসনকে বেশ অনেক বছর ধরেই জ্বালাতন করছিল। এবার বাড়ির নকশা দেখে অন্তত কিছুটা আন্দাজ করা যাবে বলে মনে করা হল।
ভারতীয় বাড়ির নকশায় উঠোনের ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তোলা হল বেশ জোরালোভাবে। এই ফাঁকা স্থান– যার নির্দিষ্ট কোনও ব্যবহার নির্ধারিত নয়– শুধু ময়লা-আবর্জনা জমা হওয়া ‘আদর্শ জায়গা’ বলে কমিশনের বেশ কিছু সদস্য মন্তব্য করলেন। কিছু পুরনো বাড়িতে যখন নতুন ঘর বানানোর জন্য আবেদন জানালেন মালিকরা তখন তাঁদের বলা হয় যে উঠোনের ওপর ছাদ বানিয়ে সেই জায়গায় ঘর তৈরি করে নিতে। তবে কমিশনের ক্ষমতাও বেশ সীমিত ছিল। বাড়িওয়ালারা অনেক সময়েই তাদের নির্দেশ অমান্য করতেন। সেসব ক্ষেত্রে আইনি পথে মামলা-মোকদ্দমা করে কোনও সিদ্ধান্ত হতে হতে বহু বছর কেটে যাওয়ার আশঙ্কা সবসময় তাদের তাড়া করত। অন্যদিকে, কমিশনের সব সদস্য যে নিয়মকানুন নিয়ে একমত ছিলেন, তাও নয়। এর ফলেও নানাবিধ জটিলতা দেখা দিত এবং আইন-ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে হত।
কুঁড়েঘর বা রিপোর্টের ভাষায় ‘কাঁচা’ বাড়ির ক্ষেত্রে অবশ্য কমিশন আরও বেশি কঠোর মনোভাব নিয়েছিল। বস্তি অঞ্চলের গায়ে গায়ে লেগে থাকা ঘরগুলি প্লেগের জন্য আদর্শ বলে মন্তব্য করা হল। সেই সূত্র ধরে উত্তরের দর্মাহাটা স্ট্রিটের বেশ কিছু ঘর ভেঙে দেওয়া হয় যখন ওই অঞ্চলে প্লেগ রোগীর কথা জানা যায়। লোকগুলির স্থান হয় ক্যাম্পে, তাঁদের বাড়ির বিছানা-তোশক সব পুড়িয়ে দেওয়া হয় প্লেগের জীবাণু থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। গরিব বস্তিবাসীর ওপর এই অত্যাচার বেশ কিছুদিন ধরে চলে সেই অঞ্চলে। তাঁরা মোটেই ঘরবাড়ি ছেড়ে ক্যাম্পে যেতে প্রস্তুত ছিলেন না। একদিকে যেমন ঘর-আসবাব হারানোর আতঙ্ক ছিল, অন্যদিকে ছিল ক্যাম্পে গিয়ে নানা জাতের মানুষের সঙ্গে শোয়াবসা-খাওয়ার ফলে ‘ম্লেচ্ছাচারের’ ভয়। শেষে, পুলিশ ডেকে লাঠির গুঁতোয় তাঁদের বাধ্য করা হয় ঘর ছাড়তে।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
দাবি করা হয়, যে কোনও অভিন্ন বিল্ডিং রেগুলেশন চালু করা উচিত নয় কারণ হিন্দু-মুসলমান, গরিব-বড়লোক, উঁচু জাত-নিচু জাত, বাঙালি-অবাঙালি– এঁদের প্রত্যেকের ঘরদোর ব্যবহারের রীতিনীতি ভিন্ন ভিন্ন, তাই বাড়ির নকশা একই নিয়ম মেনে তৈরি হবে, এটা ভাবার কোনও মানে হয় না। কিন্তু এর পাশাপাশি এই হিন্দু ভদ্রলোকদের লেখায় এই কথাও বারবার ঘুরেফিরে আসে যে আদর্শ নির্মাণ পদ্ধতি হিন্দু শাস্ত্রে উল্লিখিত নানা সূত্রে পাওয়া যায়। শহরের ভারতীয় করদাতাদের মধ্যে হিন্দু উচ্চবর্ণের ভাগ স্বাভাবিকভাবেই বেশি ছিল। সরকারি কাজকর্মের ক্ষেত্রেও এঁদের আধিপত্য ছিল। ফলে শহর এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করার সময়ে এক ধর্মীয় অনুষঙ্গ খুব সহজেই এসে পড়ে।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
বিল্ডিং কমিশনের দেখানো পথে কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনও মাছুয়াবাজার অঞ্চলে বেশ কিছু জায়গায় ‘কাঁচা’ ঘর ভেঙে দেয়। তার পরিবর্তে নতুন বাড়ি বানিয়ে অবশ্য দেয়নি। এই জমিগুলি ফাঁকাই পড়ে থাকে এর পরের বেশ কয়েক বছর। প্লেগের মোকাবিলায় এই ভাঙচুর যে খুব কার্যকর হয়েছিল, তা মোটেই নয়। জোড়াবাগান অঞ্চলে প্লেগ রোগীর সংখ্যা বেশ কম ছিল, যদিও সেখানে কাঁচা ঘরবাড়িই বেশি ছিল। অন্যদিকে, পাগেয়াপট্টি বস্তিতে প্রচুর ঘরদোর ভেঙে নতুন পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু সেখানে প্লেগ রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। নতুন তৈরি ইটের বাড়িগুলিতে হাওয়া চলাচলের বিশেষ ব্যবস্থা ছিল না, ফলে অঞ্চলের সার্বিক পরিকাঠামোগত উন্নতি কিছুই ঘটেনি।
স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় বাড়িওয়ালাদের মনে হতে শুরু করে যে প্লেগের অজুহাতে সরকার তাঁদের বাড়ি-জমি-ভাড়াটের ওপর অন্যায় অত্যাচার শুরু করেছে। প্লেগ, প্লেগ নিবারণের নানা উপায়, প্লেগের টিকাকরণ নিয়ে নানা আশঙ্কা ও গুজব ছড়াতে শুরু করে। বম্বে বা পুণা শহরের মতো না হলেও কলকাতার প্লেগ বেশ চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল নগর প্রশাসকদের কাছে। একইসঙ্গে শহরের বাসিন্দারাও শঙ্কিত হয়ে পড়েছিল– রোগ ও রাষ্ট্র, দুইয়ের হাত থেকে বাঁচতেই অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে থাকতে শুরু করেছিল। কিন্তু এর পাশাপাশি একদল শিক্ষিত বাঙালি হিন্দু পুরুষ ‘নাগরিক’ শহরের উন্নতি সম্পর্কে লেখালিখি শুরু করেন। এই আত্মপরিচিতির মধ্যে দিয়ে তাঁরা ঔপনিবেশিক নগর পরিকল্পনার বিরুদ্ধ মত তুলে ধরতে চাইলেন। শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে নানা আলোচনা পত্রিকার পাতায় ছেপে বেরতে শুরু করল হু হু করে। বেশ কিছু প্রবন্ধে বিল্ডিং কমিশনের কাজকর্মের খুব নিন্দা করা হয়। বাড়ির অন্দরে এসে কমিশনের নজরদারি অত্যন্ত অপমানসূচক বলে ধিক্কার জানানো হয়।
একইসঙ্গে দাবি করা হয়, যে কোনও অভিন্ন বিল্ডিং রেগুলেশন চালু করা উচিত নয় কারণ হিন্দু-মুসলমান, গরিব-বড়লোক, উঁচু জাত-নিচু জাত, বাঙালি-অবাঙালি– এঁদের প্রত্যেকের ঘরদোর ব্যবহারের রীতিনীতি ভিন্ন ভিন্ন, তাই বাড়ির নকশা একই নিয়ম মেনে তৈরি হবে, এটা ভাবার কোনও মানে হয় না। কিন্তু এর পাশাপাশি এই হিন্দু ভদ্রলোকদের লেখায় এই কথাও বারবার ঘুরেফিরে আসে যে আদর্শ নির্মাণ পদ্ধতি হিন্দু শাস্ত্রে উল্লিখিত নানা সূত্রে পাওয়া যায়। শহরের ভারতীয় করদাতাদের মধ্যে হিন্দু উচ্চবর্ণের ভাগ স্বাভাবিকভাবেই বেশি ছিল। সরকারি কাজকর্মের ক্ষেত্রেও এঁদের আধিপত্য ছিল। ফলে শহর এবং নাগরিকদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করার সময়ে এক ধর্মীয় অনুষঙ্গ খুব সহজেই এসে পড়ে। ব্রিটিশ সরকারের নীতির সমালোচনার হাতিয়ার হয়ে ওঠে তথাকথিত প্রাচীন শাস্ত্রের বাস্তুগৃহ নিয়ে বক্তব্য। ‘স্বাস্থ্য’ পত্রিকায় পাঠকদের মনে করিয়ে দেওয়া হল বাড়ি বানানোর হিন্দু নির্দেশ: পূবে হাঁস পশ্চিমে বাঁশ/ উত্তরে গুয়া দক্ষিণে ধূয়া [স্বাস্থ্য, ১৩০৮ [১৯০২], ৫ম খণ্ড, ২য় সংখ্যা]। অর্থাৎ বাড়ির পূর্ব দিকে পুকুর থাকবে, পশ্চিমে বাঁশঝাড়, যা ছায়া দেবে, সুপুরি গাছ উত্তুরে ঠান্ডা থেকে আড়াল করবে, আর দক্ষিণে থাকবে ফাঁকা জমি, হাওয়া চলাচলের জন্য। ‘বাসগৃহ’ প্রবন্ধে লেখা হল:
অতি প্রাচীনকালে এই ভারতে স্বাস্থ্যরক্ষা একটা গুরুতর ব্যাপার ছিল। সেই সময় ধর্ম্মপরায়ণ মুনি ঋষিগণ সর্ব্ব প্রকার বিধি ব্যবস্থার প্রবর্ত্তক ছিলেন। তাঁহারা প্রধানত স্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখিয়াই ইহার প্রবর্ত্তন করিতেন। এ সম্বন্ধে তাঁহাদের শাসন এট কঠোর ছিল যে, স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়মগুলি মানবের ধর্ম্মাচরণের সহিত জড়িত করিয়া গিয়াছেন। সুতরাং তদানীন্তন লোকেরা ধর্ম্মভয়ে স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়ম পালন করিতেন। কালক্রমে হিন্দুদিগের বংশধরেরা বিজাতীয় লোকের সংঘর্ষণেরাসিয়া তাঁহাদের পূর্ব্বপুরুষদের আচারব্যবহার এবং রীতিনীতি হইতে বিচ্যুত হইয়া পড়িয়াছেন… দেশের ধর্ম্মভাব পূর্ব্বাপেক্ষা যখন ক্ষীণ হইয়া পড়িয়াছে, তখন নিম্নশ্রেণীর নিরক্ষর লোকেরা স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়ম পালন করিবে, ইহা কোন মতেই আশা করা যাইতে পারে না। তাই স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়ম সম্বন্ধে নিম্নশ্রেণীর লোকদের অজ্ঞতা ও জ্ঞাতসার শিক্ষিত লোকেদের ঔদাস্যের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া বর্ত্তমান সময়ে মানব সমাজের স্বাস্থ্যোন্নতির চেষ্টা স্বাস্থ্যসংস্কারকদের অবশ্যকর্ত্তব্য হইয়া পড়িয়াছে। [স্বাস্থ্য, দ্বিতীয় খণ্ড ১৩০৫]
ব্রিটিশ নীতির সমালোচনায় শহরের ‘নাগরিক’ সমাজ যেভাবে ‘হিন্দু’ অতীতকে উল্লেখ করে স্বাস্থ্য, ধর্মাচরণ, বাস্তুগৃহ, ও নগর পরিকল্পনাকে মিলিয়ে মিশিয়ে নাগরিকতার এক বিকল্প ভাষ্য তৈরি করতে শুরু করে বিশ শতকের গোড়ায় তার নানা প্রকাশ আমরা দেখতে পাব পরের কয়েক দশক জুড়ে, যখন কলকাতা ধীরে ধীরে এক ‘হিন্দু’ শহরে পরিণত হবে; সংখ্যাগুরুর অস্বস্তি বাড়াতে কিছু মুসলমান মহল্লা [‘ঘেটো’] যদিও রয়ে যাবে।
ঋণস্বীকার: নবপর্ণা ঘোষ, এ হাইজিনিক সিটি-নেশন: স্পেস, কমিউনিটি, অ্যান্ড এভরিইডে লাইফ ইন কলোনিয়াল ক্যালকাটা (২০২০)
…কলিকথার অন্যান্য পর্ব…
প্রথম পর্ব: চেনা কলকাতাকে না পাল্টেই বদল সম্ভব, পথ দেখাতে পারে একটি বাতিল রিপোর্ট
দ্বিতীয় পর্ব: ‘জল’ যেভাবে ‘জমি’ হল এ কলকাতায়
তৃতীয় পর্ব: ঔপনিবেশিক কলকাতায় হোয়াইট টাউন-ব্ল্যাক টাউনের মধ্যে কোনও অলঙ্ঘনীয় সীমানা ছিল না