ছোটবেলায় মায়ের জন্মদিনে ঠিক করতাম, মাকে একটা স্পেশাল গিফট দিতে হবে। কিন্তু তখনও আমরা পকেটমানি পেতাম না। তাহলে উপায়? আমরা তাই, মায়ের ড্রেসিং টেবিল থেকে আগে থেকেই কিছু গয়না সরিয়ে রাখতাম। সেগুলোকে পরে বের করে মা’কে গিফট করতাম। মা বুঝতে পারত সব। কিন্তু কোনওদিন কিছু বলত না আমাদের। গিফট পাওয়ার পর সেই চেনা হাসি নিয়ে জড়িয়ে চুমু খেয়েছে আমাদের।
বলতে দ্বিধা নেই, মা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তবে একটা সময় ছিল, যখন আমরা মা’কে যমের মতো ভয় পেতাম। ড্যাডি আমাদের কোনও দিন বকেননি। কিন্তু ছোটবেলায় আমাদের দুষ্টুমি থামাতে ড্যাডি বলত, ‘মাম্মি কল্ড অ্যান্ড সেড…’ ব্যস! ওই তিনটে শব্দ শুনলেই আমাদের প্রচণ্ড ভয় লাগত। কিন্তু আজ কত বদলে গেছি আমরা সবাই।
মার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের রসায়নটাও বদলে গেছে। এখন বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ঝামেলা হলে, সবার আগে মাম্মিকে বলি, কারও সঙ্গে ডেটে যাওয়ার আগে মাম্মিকে বলি। এই সম্পর্কের বদল শুধু আমার জীবনে নয়, হয়তো সবার জীবনেই আসে। প্রত্যেক মা-মেয়ে একটা সময়ের পর পরস্পরের বন্ধু হয়ে ওঠে। সম্পর্কটা আরও নিবিড় হয়।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
মিঠুন চক্রবর্তী আমায় নিজেই বলেছেন, আমার মাম্মিকে তিনি কতটা অ্যাডমায়ার করতেন। কিন্তু ছোটবেলায় আমরা এইগুলো কিছুতেই বুঝতে পারতাম না। কারণ মুনমুন সেন আমাদের কাছে মাম্মি ছিল। সেই অ্যাটেনশনের গ্ল্যামার কোনও দিনই আমাদের বাড়িতে ঢোকেনি।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আগে মনে হত, মায়ের সঙ্গে সময় কাটানোর থেকে তিন-চারটে বন্ধু ডেকে আড্ডা মারি। কিন্তু এখন মনে হয় মায়ের সঙ্গে সময় কাটাই। গল্প করি। কিংবা নেটফ্লিক্স দেখি। ছোটবেলায় কিন্তু আমরা কোনও দিন মায়ের ওই গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না। মায়ের কত অনুরাগী ছিল, আমরা জানতাম না। সেগুলো এখন গল্পের ফাঁকে মাঝে মাঝে মা বলে ওঠে।
মিঠুন চক্রবর্তী আমায় নিজেই বলেছেন, আমার মাম্মিকে তিনি কতটা অ্যাডমায়ার করতেন। কিন্তু ছোটবেলায় আমরা এইগুলো কিছুই বুঝতে পারতাম না। কারণ, মুনমুন সেন আমাদের কাছে মাম্মিই ছিল। আর কিছু নয়। গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ডের সেই অ্যাটেনশন কোনও দিনই আমাদের বাড়িতে ঢোকেনি।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আরও পড়ুন: বললেই হল, কবীর সুমন ৭৫!
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
অনেকে আমাকে এবং রিয়াকে প্রশ্ন করে যে, আমাদের হিংসে হয় কি না, যখন দেখি এতদিন পরেও মাম্মিকে এত মানুষ আটেনশন দেয়। সত্যি বলছি, উই ফিল প্রাউড। এত বছর পরেও, এতদিন ধরে এত মানুষ মাম্মিকে এত ভালোবাসছে, গর্ব হয় ভাবলে।
মায়ের জন্মদিনটা আমাদের কাছে সবসময় স্পেশাল। অনেক পুরনো কথা মনে যায়। একটা মজাদার ঘটনা বলি। ছোটবেলায় মায়ের জন্মদিনে ঠিক করতাম, মাকে একটা স্পেশাল গিফট দিতে হবে। কিন্তু তখনও আমরা পকেটমানি পেতাম না। তাহলে উপায়? আমরা তাই, মায়ের ড্রেসিং টেবিল থেকে আগে থেকেই কিছু গয়না সরিয়ে রাখতাম। সেগুলোকে পরে বের করে মা’কে গিফট করতাম। মা বুঝতে পারত সব। কিন্তু কোনও দিন কিছু বলত না আমাদের। বুঝতেই দেয়নি। গিফট পাওয়ার পর সেই চেনা হাসি নিয়ে জড়িয়ে চুমু খেয়েছে আমাদের।