শিকাগো, লস এঞ্জেলেস, ডেট্রয়েট, ফিলাডেলফিয়া, নিউ ইয়র্ক। এক দেশের মধ্যে এই ‘গ্রেট মাইগ্রেশান’-এ এক হার্লেমে তিন বর্গ মাইল এলাকায় এসে বসতি তৈরি করেন প্রায় ১,৭৫,০০০ জন। নন-স্কিলড শ্রমিক থেকে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সকলেই। এইখানে কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের বসতি তাবৎ পৃথিবীতে সবচেয়ে ঘন।
প্রাচ্যবাদী ছবির ধারায় কৃষ্ণাঙ্গ নারী পুরুষের কমতি নেই। কিন্তু ফরাসি বিপ্লব ঘনিয়ে আসার আগে থেকেই ইউরোপের উঁচু তলার মহিলাদের সঙ্গী হিসেবে কৃষ্ণাঙ্গদের একটা অংশ অভিজাত সমাজে ঘোরাফেরা করছিলেন। ‘হাউ ডু দ্য সাবঅলটার্ন স্পিক’ বা আদৌ তারা কথা কয় কি না জানতে গেলে এইবার আমাদের সালোঁর দিকে ফিরে তাকাতে হবে।
এর আগে ফরাসি দেশে বা প্যারিতে শুধু পাবলিক লাইব্রেরি ছিল। সেখানে একমাত্র বসে বই পড়া যেত বলে, বিশ শতকের সভ্যতা এসে গেলেও কোনও সময়ই মহিলারা ঠিক সাহিত্যের পাঠক হয়ে উঠতে পারেননি। আদ্রিয়েঁ তাঁর দোকান-কাম-লাইব্রেরিতে বহু সংখ্যক ফরাসি মহিলাকে শুধু বই নিতে ও ফেরত দিতে জড়ো করে ফেলেছিলেন।
ও সি গাঙ্গুলী এবং সত্যজিৎ রায় প্রায় সমসময়ে ডি. জে. কিমারে আসেন, সেই সময়ে এই বিজ্ঞাপন সংস্থার প্রধান শিল্পী ছিলেন অন্নদা মুন্সী। পরবর্তীকালের অতি প্রখ্যাত বিজ্ঞাপন-শিল্পীরা তাঁদের কর্মজীবনের সূত্রপাতে পথপ্রদর্শক হিসাবে পেয়েছিলেন অন্নদা মুন্সীকে। সেই শিল্পীর ১২০তম জন্মদিনে তাঁকে এবং তাঁর বিজ্ঞাপনকে স্মরণ করতেই এই লেখার অবতারণা।
ভারতে ‘কমার্শিয়াল আর্টের জনক’ অন্নদা মুন্সীকে নিজের অজান্তেই আত্মস্থ করেছি আশৈশব। অন্যভাবে বলতে গেলে, সত্যজিৎ রায়ের পর আরও দু’-প্রজন্ম (কী তারও বেশি) পার করেও অন্নদা মুন্সীর প্রভাব অটুট।
যতদূর মনে পড়ে, সিঁড়ি দিয়ে উঠেই ডানদিকে একটা দীর্ঘ বারান্দার এ-প্রান্তে একটা ঘরে বসে পিয়ানো বাজাচ্ছিলেন– মনে হল সদ্যস্নাত, সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত এক প্রৌঢ় ভদ্রলোক। মাথায় প্রায় কাঁধ পর্যন্ত যত্নে পাট করা কাঁচাপাকা চুল। অন্নদা মুন্সী– চিনতে অসুবিধা হয়নি একটুও।
ডি জে কিমারে সত্যজিতের কাছে কী কাজ দেওয়া হবে, তা অন্নদা মুন্সীই ঠিক করে দিতেন। সিগনেট প্রেস খোলার পরেও অনেক কাজ মুন্সীকেই দেখিয়ে দিতে হয়েছে। সত্যজিৎ খুবই ভালো ছবি আঁকতে পারতেন ঠিকই, কিন্তু বিজ্ঞাপনের লে-আউট ব্যাপারটা তিনি বুঝতেন না। সত্যজিৎ নিজেই লিখেছেন, ‘সাগ্রহে আমি অন্নদা মুন্সীর শিক্ষানবিশি করতে থাকি।’
বাবা আর ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন বন্ধু। ওঁদের মধ্যে প্রায়শই চিঠি চালাচালি হত। একবার ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, অন্নদার প্রতিটি চিঠির দাম কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা! সময়টা সম্ভবত ১৯৭৩-’৭৪ সাল।
শান্তিনিকেতন আশ্রমিক সংঘ, কলকাতা শাখার পক্ষ থেকে ১৩৯০ বঙ্গাব্দে অন্নদা মুন্সীকে আহ্বান করা হয়েছিল ২৫ বৈশাখের জন্মোৎসব ভাষণের জন্য। সেই ভাষণ এখনও পর্যন্ত কোনও গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
প্রচারের আলোয় পুরস্কারপ্রাপ্তির খবরগুলো যখন ঝলমলে হয়ে ওঠে, ইতিহাসের তথ্য হিসাবে তা জিইয়ে থেকে যায় গণমনে। অথচ প্রত্যাখ্যান এবং তার প্রেক্ষিতের ইতিবৃত্ত তুলনায় রয়ে যায় অনালোচিত। ডায়েরির পাতায় নিভৃত কলমের আঁচড়ে সেই দাগটুকু কিন্তু থেকেই যায়।
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved