রেমব্রার ধর্মীয় ছবির দর্শনকে ভ্যান গঘ স্বাগত জানিয়ে বলেছিলেন, ‘এ হল এক মেটাফিজিকাল ম্যাজিক’। রেমব্রা-র ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে করা বিখ্যাত এচিং ‘দ্য রেজিং অব্ ল্যাজারাস’ ছবিটির তিনি এক রঙিন অনুবাদ করেন। ভ্যান গঘ মনে করতেন যে, রেমব্রা হচ্ছেন সেই শিল্পী, যিনি ছবির শুরুটা করেন প্রকৃতি থেকে। অতিপ্রাকৃত বিষয়কেও তিনি রিয়ালিস্টিক রূপ দেন। ভ্যান গঘ তাঁর নিজের ছবির নান্দনিকতায় এই পথই অনুসরণ করে গেছেন।
আমস্টারডাম শহরের সবচেয়ে বড় শিল্পসংগ্রহশালা ‘রাইটস’ (Rijks) মিউজিয়াম। এর গেট দিয়ে ঢোকার সময় মনে পড়েছিল ১৮৮৫-র এইরকম এক অক্টোবরেই মিউজিয়ামের দরজায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন স্বয়ং ভিনসেন্ট ভ্যান গখ! মিউজিয়ামটির গোড়াপত্তন হয়েছিল ওই বছরের শুরুর দিকে। এই মিউজিয়ামেই ভ্যান গখ প্রথম পরিপূর্ণভাবে কাছে পেলেন রেমব্রা-কে। এর প্রায় দশ বছর আগে যখন তিনি প্যারিসে আর্ট গ্যালারিগুলোয় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, তখন অবশ্য রেমব্রা-র ছবির দেখা পেয়েছিলেন ল্যুভর মিউজিয়ামে। আমস্টারডামের এক প্রদর্শনীতেও তিনি দেখে ফেলেছিলেন রেমব্রা-র বিখ্যাত সব এচিং-এর কিছু কিছু। কিন্তু রাইটস মিউজিয়ামে রেমব্রা-র এইসব বর্ণাঢ্য চিত্রসংগ্রহের সামনে দাঁড়িয়ে ভিনসেন্ট সম্মোহিত হয়ে পড়লেন, নিবিড় অধ্যবসায়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলেন সেইসব মহার্ঘ ছবি।
মিউজিয়ামের ভেতরে ঢুকে চোখে পড়ল রেমব্রা-র সেই বিখ্যাত ছবিটির দিকে ‘দ্য জিউয়িস ব্রাইড’। ছবিটি কমিশনে আঁকা হলেও রেমব্রা-র হাতের জাদুতে তা যেন ভাস্কর্যসুলভ ঐশ্বর্য পেয়েছে। ইম্পাস্টো পদ্ধতিতে প্যালেট নাইফের সাহায্যে রঙের প্রলেপে প্রলেপে এ ছবিতে যেন এক তৃতীয় মাত্রা যোগ হয়েছে। এই ছবিটি দেখেই তো ভ্যান গখ চিঠিতে লিখেছিলেন তাঁর ভাই থিও-কে, ‘এই ছবির সামনে আমি টানা চোদ্দো দিন নতজানু হয়ে বসে থাকতে পারি, শুধুমাত্র একটা শুকনো রুটির ওপর নির্ভর করে এবং এই সুযোগের জন্যে আমি দশ বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকতে পারি! রেমব্রা-র ছবিকে আমি যত না বেশি কপি করেছি আমি তাঁর ছবি নিয়ে অনেকগুণ বেশি ভেবেছি।’ ভ্যান গখ যখন শিল্পী হননি তখন রেমব্রা-কে শ্রদ্ধা করতেন একজন মানুষ হিসেবে বা একজন খ্রিস্টান হিসেবে। যখন তিনি ছবি আঁকতে শুরু করলেন তখন তিনি রেমব্রা-র পায়ে আনত হলেন, বললেন, ‘এইসব ছবিকে প্রকাশ করার মতো কোনও ভাষা নেই পৃথিবীতে’!
অবনীন্দ্রনাথের ছবির প্রভাব কীভাবে পড়েছিল তাঁর শিষ্য নন্দলালের ওপরে? কিংবা নন্দলালের প্রভাব তাঁর শিষ্য বিনোদবিহারী বা রামকিঙ্করের ওপরে? এইসব ব্যাপারে আমরা কি তেমন তন্নিষ্ঠ কোনও গবেষণা করেছি এযাবৎ? নেদারল্যান্ডসে ভ্যান গঘের ওপরে রেমব্রা-র প্রভাব নিয়ে বিপুল গবেষণা চলছে। আমস্টারডামে ভ্যান গখ মিউজিয়ামে ২০০৬ সালে করা হয়েছিল বিশাল এক প্রদর্শনী, যার শিরোনাম ছিল ‘ভ্যান গখ অ্যান্ড রেমব্রা’। সেখানে ছিল রেমব্রা আর ভ্যান গখের ২৫টি ছবি, আর তাঁদের অজস্র ড্রয়িং আর চিঠিপত্র, যা দিয়ে বোঝা যায় তাঁদের দু’জনের আর্ন্তসম্পর্ককে।
১৮৮৪-তে রাইটস মিউজিয়ামে রেমব্রা-র ছবির আলোছায়ার (chiaroscuro) কারুকার্য দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন ভিনসেন্ট। সেই বছরই তিনি এঁকে ফেলেন তাঁর বিখ্যাত ছবি ‘দ্য পোটাটো ইটারস’। এই ছবিটাই আবার দেখতে ছুটলাম রাইটস মিউজিয়ামের থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বে অবস্থিত ভ্যান গখ মিউজিয়ামে। গতবার এসেও এই ছবিটিই দেখেছিলাম, বারবার দেখেও যা পুরনো হয় না! ভ্যান গখ তাঁর ছবি আঁকার সময় এই আলোছায়ার রূপ প্রকাশ করার জন্য বেশিরভাগ জানলা সব বন্ধ রাখতেন। এই ছবিতে ভ্যান গঘ ঘরের ওপরের অনুজ্জ্বল বাতির আলো ছবির ক্ষুধার্ত চরিত্রদের ওপরে এক অমোঘ নৈপুণ্যে বিচ্ছুরিত করে দিলেন– তৈরি হল এক নিদারুণ আলো-অন্ধকারের জগৎ, যা দারিদ্রর এক চিরকালীন রূপ তুলে ধরল।
রেমব্রা-র ছবির আলোর উৎস ঠিক ফিজিক্সের নিয়ম অনুযায়ী বোঝা যায় না। শ্রদ্ধেয় শিল্পী গণেশ পাইন রেমব্রা-র ছবির আলোকে বলতেন তা যেন মানুষের চরিত্রের ভেতর থেকে নির্গত অন্তঃস্থ এক আলো, কোনও প্রাকৃতিক আলো নয়। আমরা বোধহয় একে বলতে পারি, ‘রেমব্রীয় আলো’।
……………………………………………….
ভ্যান গখ রেমব্রার একটি ছবি কপি করেছিলেন রাইটস মিউজিয়ামে ঘুরে আসার প্রায় চার বছর পরে। সেই ছবিটি হল ‘হাফ ফিগার অব্ অ্যান অ্যাঞ্জেল আফটার রেমব্রা’। তাঁর ভাই থিও-র পাঠানো রেমব্রার একটি এচিং অনুসারে এই ছবিটি আঁকেন তিনি স্বকীয় পদ্ধতিতে। রাইটস মিউজিয়ামে রেমব্রার ছবি আর ভ্যান গখ মিউজিয়ামে ভ্যান গখের ছবি খুঁটিয়ে খুব কাছ থেকে দেখলে দেখা যাবে যে তাঁদের ছবিতে রঙের ছোট ছোট পুঞ্জ পাশাপাশি ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে রয়েছে। আর দূর থেকে দেখলে তাই যেন তৈরি করে এক গভীর স্পেস আর আলোছায়ার জ্যামিতি।
……………………………………………….
রেমব্রা এই পৃথিবীতে বেঁচেছিলেন ১৬০৬ থেকে ১৬৬৯ সাল অবধি। ভ্যান গখ এই বিশ্বে চলাফেরা করেছিলেন তার প্রায় একশো বছর পরে। রেমব্রা-র জীবন আর ভ্যান গখের জীবনে যেন শত যোজন দূরত্ব! তবু কী এক অদৃশ্য সুতো দু’জনের জীবনকে বেঁধে ফেলল একসূত্রে। তাঁদের দু’জনের ভুবন ছিল সম্পূর্ণ আলাদা, কিন্তু তাঁদের ভাবনা ও উদ্দেশ্যর মধ্যে ছিল এক অদ্ভুত মিল। ভ্যান গখ যেন রেমব্রা-র ছবিকে পুননির্মাণ করলেন নিজের মতো করে, নিজের দর্শন দিয়ে।
রাইটস মিউজিয়ামে রেমব্রা-র সবচেয়ে বিখ্যাত ছবি ‘দ্য নাইটওয়াচ’। ১৫ বছর আগে যখন এসেছিলাম এই ছবি দেখে রেমব্রা-কে অনুভব করতে পেরেছিলাম মর্মে মর্মে। এবারে দেখলাম সেই ছবিকে পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে কী পরম যত্নে আর যথার্থ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। এই সেই ছবি যার জন্য ধিকৃত ও নিন্দিত হয়েছিলেন রেমব্রা, শেষ হয়ে গেছিল তাঁর উজ্জ্বল কেরিয়ার। অথচ অনেক পরে এই ছবিই পৌঁছে দিয়েছিল রেমব্রা-কে বিশ্বের এক শ্রেষ্ঠ শিল্পীর আসনে। এই ‘দ্য নাইটওয়াচ’ ছবির রং দেওয়ার পদ্ধতি ভিনসেন্টকে খুব আকৃষ্ট করেছিল।
রেমব্রা-র আরেকটি বিখ্যাত ছবি ‘অ্যানাটমি লেসন অব ডঃ নিকোলাস টাল্প’-তে রঙের ব্যবহারও বিমুগ্ধ করে দিয়েছিল ভ্যান গখকে। এর অনেক পরে তিনি তাঁর করুণ আত্মহত্যার কয়েকমাস আগে তার সেই বিখ্যাত ছবিটি আঁকেন, ‘স্টারি নাইট’। সেই ছবিটার আমি দেখা পেয়েছিলাম বেশ কিছু বছর আগে নিউ ইয়র্কের দ্য মিউজিয়াম অব্ মডার্ন আর্ট গ্যালারিতে (MOMA Gallary)। খুব সূক্ষ্মভাবে লক্ষ করলে বোঝা যাবে, সেই ছবির অন্ধকার আকাশ জুড়ে অসংখ্য নীলের শেডস। হয়তো ভ্যান গঘ রেমব্রা-র ‘দ্য নাইটওয়াচ’ থেকেই খুঁজে পেয়েছিলেন এই চিত্রভাষা, যেখানে হরেক রঙের স্তর মিলে রঙের এক অনির্বচনীয় সিম্ফনি গড়ে তোলে।
অনেক কষ্টেসৃষ্টে কিছু পয়সাকড়ি সংগ্রহ করে ভ্যান গখ এসে পৌঁছেছিলেন একদিন আমস্টারডামে, মূলত রাইটস মিউজিয়ামের চিত্রকলাগুলো দেখার ব্রত নিয়ে। আর আজ এই রাইটস মিউজিয়ামের দেওয়ালে আলো করে টাঙানো রয়েছে তাঁর অনেক ছবি, যা দেখার জন্য দর্শকেরা সবসময় আকুল আগ্রহে ভিড় করে থাকেন। তারই একটি ছবি ‘দ্য সিঙ্গেল নিয়ার দ্য লুথেরান চার্চ অ্যাট আমস্টারডাম’। ভ্যান গখ রাইটস মিউজিয়ামে রেমব্রা আর ফ্যান্স হলসের ছবিতে যে অভিনব ‘লুজ ব্রাশওয়ার্ক’ দেখেছিলেন, ১৮৮৫ সালের এই ছবিতে তারই অসামান্য প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন।
এই মিউজিয়ামেই টাঙানো রয়েছে ভ্যান গখের একটি মর্মভেদী ‘সেল্ফ পোর্টেট’। সেটির সামনে দাঁড়িয়ে মনে হল ভিনসেন্টের এই সেল্ফ পোর্টেট কি এই মিউজিয়ামের দেওয়ালে টাঙানো রেমব্রা-র নিজস্বী ছবিগুলোরই অনুপ্রেরণায় রচিত? রেমব্রা তাঁর সারা জীবন ধরে বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য ‘সেল্ফ পোর্ট্রেট’ এঁকেছিলেন, যা যেন তাঁর আত্মজীবনীর খসড়া। আর ভ্যান গখ তাঁর ঝোড়ো জীবনের উপত্যকার ভাঁজে ভাঁজে এঁকে গেছেন, এমন সব ‘সেল্ফ পোর্টেট’ যা থেকে লিখে ফেলা যায় তাঁর ক্ষত-বিক্ষত জীবনের ধূসর এক অটোবায়োগ্রাফি। রেমব্রা আর ভ্যান গখের সেল্ফ পোর্ট্রেটের মধ্যে বহিরাত্মায় অমিল প্রচুর; রেমব্রা সূক্ষ্ম আলোছায়ার স্পর্শে ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর সব রহস্যময় মুখাবয়ব। সেখানে ভ্যান গখ তাঁর ব্রাশের রুক্ষ আঁচড়ে, কর্কশ টেক্সচারে ফুটিয়ে তুলেছেন নিজের ভাঙাচোরা মুখের বিভিন্ন অভিব্যক্তিকে। কিন্তু একটা জায়গায় তাঁদের দু’জনের অপূর্ব মিল, তা হল তাঁরা দু’জনেই তাঁদের নিজেদের অন্তরাত্মার খোঁজ করেছেন, যা তাঁদের দু’জনকে পৃথিবীর সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সেল্ফ পোর্ট্রেট শিল্পীর সম্মান দিয়েছে।
ভ্যান গখ তাঁর প্রথম জীবনে ধর্মীয় যাজকের কাজ করতেন। তাই ধর্মীয় ছবির প্রতি তাঁর স্বভাবতই একটা আসক্তি ছিল। গঁগ্যা বা বার্নাডের মতো শিল্পীদের ধর্মীয় ছবি তিনি পছন্দ করেননি। বরং রেমব্রার ধর্মীয় ছবির দর্শনকে তিনি স্বাগত জানিয়ে বলেছিলেন, ‘এ হল এক মেটাফিজিকাল ম্যাজিক’। রেমব্রা-র ১৭০০ খ্রিস্টাব্দে করা বিখ্যাত এচিং ‘দ্য রেজিং অব্ ল্যাজারাস’ ছবিটির তিনি এক রঙিন অনুবাদ করেন। ভ্যান গখ মনে করতেন যে, রেমব্রা হচ্ছেন সেই শিল্পী, যিনি ছবির শুরুটা করেন প্রকৃতি থেকে। অতিপ্রাকৃত বিষয়কেও তিনি রিয়ালিস্টিক রূপ দেন। ভ্যান গখ তাঁর নিজের ছবির নান্দনিকতায় এই পথই অনুসরণ করে গেছেন। এই নিয়ে তাঁর সেই বিখ্যাত তর্ক হয়েছিল শিল্পী পল গঁগ্যার সঙ্গে।
ভ্যান গখ রেমব্রার একটি ছবি কপি করেছিলেন রাইটস মিউজিয়ামে ঘুরে আসার প্রায় চার বছর পরে। সেই ছবিটি হল ‘হাফ ফিগার অব্ অ্যান অ্যাঞ্জেল আফটার রেমব্রা’। তাঁর ভাই থিও-র পাঠানো রেমব্রার একটি এচিং অনুসারে এই ছবিটি আঁকেন তিনি স্বকীয় পদ্ধতিতে। রাইটস মিউজিয়ামে রেমব্রার ছবি আর ভ্যান গখ মিউজিয়ামে ভ্যান গঘের ছবি খুঁটিয়ে খুব কাছ থেকে দেখলে দেখা যাবে যে তাঁদের ছবিতে রঙের ছোট ছোট পুঞ্জ পাশাপাশি ঘন সন্নিবিষ্ট হয়ে রয়েছে। আর দূর থেকে দেখলে তাই যেন তৈরি করে এক গভীর স্পেস আর আলোছায়ার জ্যামিতি।
………………………………………………
আরও পড়ুন হিরণ মিত্র-র লেখা: খরা নয়, ফসলের বার্তা দিতে চেয়েছিলেন ভ্যান গগ
………………………………………………
ভ্যান গখ তাঁর ভাই থিও-কে চিঠিতে লিখছেন, ‘আজ আমি অনেক দূরে হেঁটে যাব, সেই নুরডেরকার্কে, যেখানে তিনিও (রেমব্রা) যেতেন এক গভীর রহস্যের খোঁজে, আমি তোমায় লিখছি, কিন্তু এসব ঠিক ভাষায় প্রকাশ করা যায় না’। সেই স্মৃতির পথ ধরে আমস্টারড্যামের উপকণ্ঠে সেই নুরডেরকার্কে পৌঁছে দেখলাম যে, একটি পুরনো প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চের ভেতরে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’-এর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে এক অদ্ভুত ত্রিমাত্রিক চিত্র প্রদর্শনী ‘ভিনসেন্ট মিটস্ রেমব্রা– আ স্টোরি আনটোল্ড’। এই চার্চের পুরনো দেওয়াল ছাদ খিলানকে করে তোলা হয়েছে যেন একটি ৩৬০ ডিগ্রি পর্দা, যেখানে প্রতিফলিত হচ্ছে রেমব্রার আর ভ্যান গঘের বিভিন্ন ছবি। সেইসব ছবি একে অপরের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, যেমন করে খয়েরি কফির মধ্যে মিশে যায় সাদা দুধ। সেই প্রদর্শনী দেখতে দেখতে মনে হবে রেমব্রা এবং ভিনসেন্ট– দু’জনেই আমাদের সামনে যেন এসে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের গলার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। যেন ভ্যান গখ বলছেন, ‘সবচেয়ে সুন্দর ছবি তো কখনও আঁকা যায় না, শুধু কল্পনা করা যায়, শুধু স্বপ্নে দেখা যায়’।
আমস্টারডাম শহরের অলিগলিতে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে বারবার মনে হচ্ছিল রেমব্রা-র কথা। যিনি তাঁর ছবির জন্য এতটুকু আপস না করে কপর্দকশূন্য হয়ে পড়েছিলেন মধ্যজীবনে আর ভিনসেন্টের কথা, যিনি নিজের ছবির দর্শনের কাছে আবদ্ধ থেকে জীবনে বিক্রি করতে পারেননি একটির বেশি ছবি। আর আজ? রাইটস মিউজিয়ামে, রেমব্রা-র বাড়ির মিউজিয়ামে আর ভ্যান গখের মিউজিয়ামে সারা পৃথিবী থেকে দলে দলে আসছেন মানুষ, শুধু একবার তাঁদের দু’জনের ছবি দেখে চোখ দু’টিকে সার্থক করে তুলতে।
পৃথিবীর দুই শ্রেষ্ঠ আশ্চর্য লুকিয়ে রয়েছে এই দুই মহান শিল্পীর শিল্পকার্যে, এই শহরেই।
……………………………………….
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
……………………………………….