বর্তমান যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই শুধু প্রযুক্তির নয়, সামাজিক ও মানবিক বাস্তবতারও বড় অংশ হয়ে উঠেছে। নানা ক্ষেত্রে এর ব্যবহার আমাদের জীবনকে দ্রুততর ও সহজ করেছে ঠিকই, তবে এর দাপটে মানুষের বিশেষ গুণাবলি– যেমন আবেগ, সৃজনশীলতা, সহানুভূতি, নৈতিক বোধ– সেগুলি কি গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছে? প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু উত্তর একেবারেই স্পষ্ট– না, হারাচ্ছে না। বরং এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলিই এআই-কে সম্পূর্ণভাবে মানুষের বিকল্প হয়ে উঠতে দিচ্ছে না।
আমাদের রোজকার নিস্তরঙ্গ জীবনে হঠাৎ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ঢেউ এসে কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে দিয়েছে। কখনও কখনও নিজেদের ছবিটবি নিয়ে বেশ মশকরা করা যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ‘কী হবে’ ‘কী হবে’ ভেবে মাথা চুলকোতে হচ্ছে! এখনও পর্যন্ত যা বোঝা যাচ্ছে, চাকরির বাজারে একটি মিশ্র প্রভাব ফেলতে চলেছে এটি। প্রযুক্তির সুবিধা যাঁদের নাগালে, তাঁরাই এগিয়ে যাচ্ছেন, আর পিছিয়ে পড়ছেন সংযোগহীন বা প্রশিক্ষণহীন ব্যক্তিরা। তাহলে কি এআই তথাকথিত ‘ডিজিটাল বৈষম্য’ আরও বাড়িয়ে তুলছে, যা সমাজে এক নতুন বিভাজন তৈরি করতে পারে?
এআই আমাদের কর্মজীবনের ধারণাকেই বদলে দিচ্ছে। প্রম্পট ইঞ্জিনিয়ার, এআই এথিক্স কনসালটেন্ট, ডেটা সায়েন্টিস্ট, মেশিন লার্নিং ইঞ্জিনিয়ার, রোবোটিক্স ইঞ্জিনিয়ার এবং এআই সিস্টেম ডেভলপারদের মতো নতুন পেশার চাহিদা বাড়ছে। ডেটা অ্যানালিটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি, ডিজাইন এবং সমস্যা সমাধানের মতো ক্ষেত্রগুলিতে মানুষের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধান, আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ, বিশ্লেষণ ক্ষমতা, উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতার মতো দক্ষতা অপরিহার্য হওয়ায় এখানেও নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বিশেষত তরুণ প্রজন্ম, এআই-এর সুবিধা কাজে লাগিয়ে নিজেদের কাজকে আরও উন্নত করতে পারবে। এর ফলে তাদের আয় বৃদ্ধি হবে এবং নতুন ধরনের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এমনকী, আইন, সাংবাদিকতা এবং কিছু সৃজনশীল কাজেও এআই-এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে, যেখানে এআই কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে একই সংখ্যক কর্মীকে কম সময়ে বেশি কাজ করতে সহায়তা করবে। আইনি গবেষণা, নথি তৈরি বা প্রাথমিক খসড়া তৈরি করতে পারে এআই, যা জুনিয়র আইনজীবীদের কাজের চাপ কমিয়ে দিতে পারে।
তবে প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ঘাটতি ও দক্ষতা অর্জনের সীমিত সুযোগের কারণে অনেকেই পিছিয়ে পড়তে পারেন। বিশেষত নিম্ন আয়ের মানুষদের পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ সহজে স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাচ্ছে– যেমন কারখানায় রোবট বা কল সেন্টারে চ্যাটবটের ব্যবহার। ডেটা এন্ট্রি, হিসাবরক্ষণ বা প্রশাসনিক কাজও এআই দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে, যা কর্মহানির আশঙ্কা তৈরি করছে। বয়স্ক কর্মীদের ক্ষেত্রেও নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন, ফলে তারাও ঝুঁকিতে রয়েছেন। এআই একদিকে যেমন সুযোগ, তেমনি বৈষম্যও তৈরি করছে। বলা যায়, সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ, উভয়ই নিয়ে আসছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।
চিকিৎসা, শিক্ষা ও কৃষিতে এআই নতুন সম্ভাবনার পথ তৈরি করেছে। এক্স-রে, সিটি স্ক্যান বিশ্লেষণ করে রোগ শনাক্তকরণে এবং রোগীর ডেটা থেকে রোগের ঝুঁকি নির্ণয়ে ডাক্তারদের সহায়তা করবে এআই, যা দ্রুত সঠিক রোগ নির্ণয়ে সহায়ক। প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোবাইল স্বাস্থ্য অ্যাপের মাধ্যমে প্রাথমিক রোগ নির্ণয় সম্ভব হবে। ভারতের মতো গ্রামকেন্দ্রিক দেশে এআই ব্যক্তিগতকৃত শিক্ষার সুযোগ দেবে, শিক্ষার্থীদের শেখার ধরন ও গতি অনুযায়ী পাঠ্যক্রম তৈরি করবে। ভয়েস-ভিত্তিক এআই স্থানীয় ভাষায় শিক্ষা প্রদান করে ভাষার বাধা দূর করবে এবং শিক্ষকের ঘাটতি পূরণে সহায়ক হবে। কৃষিতে এআই দরিদ্র চাষিদের আবহাওয়ার পূর্বাভাস, মাটির স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ এবং ফসল ব্যবস্থাপনার সঠিক পরামর্শ দেবে। এটি রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ আগে থেকে শনাক্ত করে সতর্ক করবে, যা রাসায়নিকের ব্যবহার কমিয়ে ফলন বাড়াবে এবং খরচ কমাবে, যা দরিদ্র চাষিদের জীবনযাত্রা মান উন্নত করবে।
দেশের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় এআই গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। এটি স্যাটেলাইট চিত্র, সোশ্যাল মিডিয়া ডেটা এবং নজরদারি ফুটেজের মতো বিপুল পরিমাণ তথ্য দ্রুত বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ প্যাটার্ন ও সম্ভাব্য হুমকি শনাক্ত করতে পারে। এর ফলে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বা ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার পূর্বাভাস দিতে সাহায্য করে। সাইবার আক্রমণের ধরন চিহ্নিত করে স্বয়ংক্রিয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম এআই, যা হ্যাকিং বা ডেটা চুরির প্রচেষ্টা রুখে দেয়। ড্রোন ও স্বায়ত্তশাসিত যানগুলি নজরদারি, পুনরুদ্ধার এবং লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে; যেমন, এআই চালিত ড্রোন সীমান্ত সুরক্ষায় সাহায্য করে। এআই রিয়েল-টাইম তথ্য বিশ্লেষণ করে সামরিক কমান্ডারদের দ্রুত ও নির্ভুল সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে, যা জটিল পরিস্থিতিতে অপরিহার্য। এছাড়াও, এআই সৈন্যদের বাস্তবসম্মত যুদ্ধের পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে তাদের দক্ষতা বাড়ায়।
পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এআই এক গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হতে পারে। এআই তাদের চাকরির বিজ্ঞপ্তি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ সম্পর্কে আগেভাগে জানাতে পারবে। ভাষা বা শিক্ষার বাধা ছাড়াই তারা সহজ এআই অ্যাপ ব্যবহার করে নতুন দক্ষতা অর্জন করে জীবনমান উন্নত করতে পারবে। পরিযায়ী শ্রমিকরা ই-শ্রম পোর্টাল এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকারের নিজস্ব পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা, যেমন– দুর্ঘটনা বীমা, জীবন বীমা, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও আর্থিক সহায়তা পেতে পারে। ট্যাক্সি বা রিকশা চালক এবং অনলাইন ডেলিভারি কর্মীরা এআই নির্ভর নেভিগেশন অ্যাপ ব্যবহার করে দ্রুত রুট বেছে নিয়ে সময় ও জ্বালানি সাশ্রয় করতে পারবে। যেহেতু অনেকেই সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে অবগত নন, তাই সচেতনতা কর্মসূচি ও সহজ ভাষায় তথ্য প্রচার অত্যন্ত জরুরি।
…………………………….
এআই সংগীত বানাতে, ছবি আঁকতে বা লেখালেখি করতে পারে, কিন্তু তা নির্ভর করে পূর্ব-প্রাপ্ত ডেটা ও অ্যালগরিদমের ওপর। এটি কোনও লেখকের স্টাইল অনুকরণে গল্প লিখতে পারে বা বিদ্যমান ছবির মতো ছবি আঁকতে পারে, কিন্তু নতুন শিল্পধারা বা সম্পূর্ণ মৌলিক কাহিনি তৈরি করতে পারে না। একটি লেখক যখন এমন একটি উপন্যাস লেখেন, যার কাহিনি, চরিত্র, থিম একেবারে নতুন– সেটাই মানুষের সত্যিকারের সৃজনশীলতা। এআই সৃজনে কখনও সেই বিদ্রোহ সৃষ্টি করতে পারে না, যা মানুষের ভাবনাচিন্তা ও কল্পনাশক্তির ফসল।
…………………………….
বর্তমান যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই শুধু প্রযুক্তির নয়, সামাজিক ও মানবিক বাস্তবতারও বড় অংশ হয়ে উঠেছে। নানা ক্ষেত্রে এর ব্যবহার আমাদের জীবনকে দ্রুততর ও সহজ করেছে ঠিকই, তবে এর দাপটে মানুষের বিশেষ গুণাবলি– যেমন আবেগ, সৃজনশীলতা, সহানুভূতি, নৈতিক বোধ– সেগুলি কি গুরুত্ব হারিয়ে ফেলছে? প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু উত্তর একেবারেই স্পষ্ট– না, হারাচ্ছে না। বরং এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলিই এআই-কে সম্পূর্ণভাবে মানুষের বিকল্প হয়ে উঠতে দিচ্ছে না।
এআই প্রোগ্রামিং এবং ডেটা সেটের উপর ভিত্তি করে কাজ করে। এটি তথ্যকে যেভাবে ইনপুট দেওয়া হয় সেভাবেই প্রক্রিয়া করে, কিন্তু তথ্যের পেছনের ‘কেন’ বা ‘কীভাবে’ নিয়ে প্রশ্ন তোলে না। কোন পণ্য বেশি বিক্রি হচ্ছে, তা এআই বিশ্লেষণ করতে পারে; কিন্তু কেন বিক্রি কমেছে, বাজারের পরিবর্তন কী হয়েছে, গ্রাহকের অভিজ্ঞতা বা মানসিকতা কী– এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য মানুষের বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমা প্রয়োজন। মানুষের যুক্তি, অভিজ্ঞতা, এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী মত পরিবর্তনের ক্ষমতা এআই-এর নেই। একইভাবে, এআই কোনও গ্রাহকের কণ্ঠস্বরে বিরক্তি শনাক্ত করতে পারে, কিন্তু তাকে সান্ত্বনা দেওয়া, ব্যক্তিগত সংযোগ তৈরি করা বা আশ্বাস দেওয়ার মতো মানবিক আচরণ করতে পারে না। একজন বিক্রয়কর্মী বা পরিষেবাকর্মী সেই জায়গাতেই অনন্য। সহানুভূতি, আত্ম-নিয়ন্ত্রণ, আবেগ বোঝা ও তা কার্যকরভাবে ব্যবহার করার বোধ মানুষের একচেটিয়া দক্ষতা।
মানবিক যোগাযোগ শুধু তথ্যের আদানপ্রদান নয়, বরং পারস্পরিক বোঝাপড়ার সূক্ষ্মতা, ইঙ্গিত, ব্যঙ্গ, আবহ বা শরীরী ভাষার সঙ্গেও জড়িত। এআই নিয়মিত কাজ করতে পারলেও, নেতৃত্বের ভূমিকা নিতে বা মতপার্থক্য মেটাতে পারে না। একটি দল চালাতে গেলে শুধু কাজ নয়, মানুষের মন বোঝার ও সেই অনুযায়ী পরিবেশ তৈরি করার ক্ষমতা দরকার– যা কেবল মানুষের পক্ষেই সম্ভব। সমস্যা সমাধান মানে শুধু নিয়ম মেনে কাজ নয়, বরং নতুন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিয়ে উদ্ভাবনী সিদ্ধান্ত নেওয়া, যা মানুষের সাধারণ বোধ ও অভিজ্ঞতা থেকেই আসে। এই মানবিক বুদ্ধিমত্তা এআই-এর নেই।
এআই-এর নেই মানুষের মতো স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ বা অন্তর্জ্ঞান, যা সত্যিকারের সৃজনশীলতার ভিত্তি। সৃজনশীলতা মানে শুধু তথ্য থেকে কিছু বানানো নয়, বরং একদম নতুন, মৌলিক এবং উপযোগী কিছু উদ্ভাবন করা। এআই সংগীত বানাতে, ছবি আঁকতে বা লেখালেখি করতে পারে, কিন্তু তা নির্ভর করে পূর্ব-প্রাপ্ত ডেটা ও অ্যালগরিদমের ওপর। এটি কোনও লেখকের স্টাইল অনুকরণে গল্প লিখতে পারে বা বিদ্যমান ছবির মতো ছবি আঁকতে পারে, কিন্তু নতুন শিল্পধারা বা সম্পূর্ণ মৌলিক কাহিনি তৈরি করতে পারে না। একটি লেখক যখন এমন একটি উপন্যাস লেখেন, যার কাহিনি, চরিত্র, থিম একেবারে নতুন– সেটাই মানুষের সত্যিকারের সৃজনশীলতা। এআই সৃজনে কখনও সেই বিদ্রোহ সৃষ্টি করতে পারে না, যা মানুষের ভাবনাচিন্তা ও কল্পনাশক্তির ফসল।একজন চিত্রশিল্পী যখন ছবি আঁকেন, তার প্রতিটি স্ট্রোকের পেছনে থাকে দীর্ঘদিনের অনুশীলন, মেধা, আবেগ ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। এটি কেবল ছবি নয়, শিল্পীর আত্মার প্রতিচ্ছবি, যেখানে দর্শক শিল্পীর মননের ছোঁয়া পান। এআই অ্যালগরিদম ও নির্দেশিকা অনুসরণ করে ডেটা থেকে ছবি তৈরি করে; এখানে ব্যক্তিগত আবেগ বা মানবিক সৃজনশীলতার গভীরতা অনুপস্থিত।
…………………………..
পড়ুন অরুণোদয়-এর লেখা: এআই সব পারবে, কিন্তু বোকামিগুলো করতে পারবে না
…………………………..
এটা বলা যেতেই পারে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে বিভিন্ন আর্টফর্মে দক্ষ লোকের কদর বাড়বে, তবে তাদের দক্ষতার সংজ্ঞা কিছুটা পরিবর্তিত হবে। এআই রুটিন ও যান্ত্রিক কাজগুলি স্বয়ংক্রিয় করে দেবে, তাই যারা শুধুমাত্র এই কাজগুলিতে পারদর্শী, তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ বাড়বে। একজন গ্রাফিক ডিজাইনার এআই-কে প্রাথমিক ধারণা দিলে এআই তার ওপর ভিত্তি করে একাধিক বিকল্প তৈরি করতে পারে, যা ডিজাইনারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। যারা নতুন ধারণা তৈরি করতে, আবেগপূর্ণ কাজ করতে এবং অনন্য শৈলী বিকশিত করতে পারেন, তাদের কদর বাড়বে। এআই এখন একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা শিল্পীদের আরও দ্রুত, কার্যকর ও সৃজনশীল হতে সাহায্য করবে। এআই থেকে আসা আউটপুটকে বিচার করা, সংশোধন করা এবং ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজ করার জন্য মানুষের সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা অপরিহার্য। এআই-এর যুগে টিকে থাকতে হলে শিল্পীদের নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, এআই টুলসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে এবং তাদের নিজস্ব সৃজনশীলতা ও মৌলিকত্বের ওপর জোর দিতে হবে।
এই এআই-যুগে মানুষের টিকে থাকার জন্য দরকার– সৃজনশীলতা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সহানুভূতি, নেতৃত্বের দক্ষতা ও প্রযুক্তিকে ব্যবহার করার জ্ঞান। এআই একটি দরজা খুলে দিয়েছে, যার ভিতর দিয়ে আমরা প্রবেশ করছি এক নতুন যুগে। এই প্রযুক্তি সমাজে সুবিচার আনবে, না বৈষম্য বাড়াবে– তা নির্ভর করছে আমাদের মানসিকতা, উদ্যোগ এবং দায়িত্ববোধের ওপর। এই প্রযুক্তি কীভাবে এবং কতদূর পর্যন্ত সমাজকে রূপান্তরিত করতে পারে, তা এখনও একটি চলমান প্রশ্ন, কারণ এআই নিজেকে প্রতিনিয়ত উন্নত করে চলেছে। আমরা মানুষ হিসেবে কীভাবে এর সঙ্গে সমন্বয় সাধন করি, এই প্রযুক্তিকে কেবল ব্যবহার না করে কতটা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পরিচালনা করতে পারি– সেই উত্তর সময়ই দেবে। তবে এটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এআই আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়– একটি সহায়ক হাতিয়ার।
সঠিক প্রকল্পায়ণ, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি-সচেতনতার মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ যদি এই পরিবর্তনের অংশ হতে পারেন, তাহলে এআই হয়ে উঠতে পারে এক বাস্তবিক উন্নয়নের পথ। আর সেই পথেই আমাদের তৈরি হতে হবে, শেখার মন নিয়ে– যে কোনও বয়সেই।
………………………………
ফলো করুন আমাদের ওয়েবসাইট: রোববার ডিজিটাল
………………………………