আপাতত শান্তিকল্যাণ। অনেকে ভাবছেন এই যুদ্ধবিরতি খুব ভালো একটা কাজ হয়েছে। এইবার বোধহয় যুদ্ধ থেমেছে, কিন্তু যুদ্ধ কি সত্যিই থেমেছে? যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের পর থেকে, সেই যুদ্ধ কি থেমেছে? যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল নাম দেখে, ধর্ম দেখে মারার মধ্যে দিয়ে, সেই যুদ্ধ কি এতটুকুও স্তিমিত হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে? যে যুদ্ধে– বাড়ির ফ্রিজে কী মাংস আছে, কে টিফিনে কী খাবার নিয়ে এসেছে– তা দেখে শুরু হয়েছিল, সেই যুদ্ধ কি থেমেছে? যে যুদ্ধে দেশের একাংশ নাগরিককে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ওঁদের পোশাক দেখে বোঝা যায় ওঁরা সন্ত্রাসবাদী, সেই যুদ্ধ কি থেমেছে?
আপাতত যুদ্ধবিরতি। ভারত, পাকিস্তান– উভয় দেশই আমেরিকার রাষ্ট্রপতির শান্তি-চুক্তি মেনেছে বলেই ‘খবর’। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণও হয়ে গিয়েছে, এবার এই পুরো অপারেশন সিঁদুর থেকে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার কাজ শুরু করতে হবে– স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীই বলে দিয়েছেন। শুরু হচ্ছে বিজেপির দেশব্যাপী ‘তিরঙ্গা যাত্রা’।
২০১৯ সালের নির্বাচনের কয়েক মাস আগে যখন পুলওয়ামার ঘটনা ঘটেছিল, তখনকার পরিস্থিতির সঙ্গে আজকের পরিস্থিতির একটা বড় ফারাক আছে। সেই ঘটনা নিয়েও, পরবর্তীতে যদিও বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছিল, কিন্তু ততদিনে ওই ঘটনার রাজনৈতিক ফায়দা নিয়ে বিজেপি দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছিল। এবারের পহেলগাঁওতে যে ঘটনা ঘটেছে, সেই ঘটনার নিন্দা সবাই একস্বরে করেছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে দেশের বেশিরভাগ মানুষ, এমনকী, ভুক্তভোগী মানুষদের পরিবার একযোগে বলেছেন যে, এই ঘটনায় দোষীদের খুঁজে বের করতে হবে, তাঁদের শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি তাঁরা একটা প্রশ্নও তুলে দিয়েছেন যা সরকারের অস্বস্তির কারণ। মৃত মানুষদের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, ওই ঘটনাস্থলে কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না? অনেকে বলেছেন, এই যে সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বারবার বলেছেন, যে তাঁদের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ফলে সন্ত্রাসবাদের কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে, সেই দাবি একেবারেই কার্যকর নয়, তা পহেলগাঁওয়ের ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে। এইখানেই সরকার কিছুটা হলেও পিছু হটেছে। তাঁরা যতই জঙ্গি দমনের কথা বলুক, যতই প্রধানমন্ত্রী বলুন, অপারেশন সিঁদুর দেশকে ন্যায় দিয়েছে, মানুষ কিন্তু এখনও খুব বেশি বিশ্বাস করছে, এমনটা নয়।
যাই হোক, আপাতত শান্তিকল্যাণ। অনেকে ভাবছেন এই যুদ্ধবিরতি খুব ভালো একটা কাজ হয়েছে। এইবার বোধহয় যুদ্ধ থেমেছে, কিন্তু যুদ্ধ কি সত্যিই থেমেছে? যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের পর থেকে, সেই যুদ্ধ কি থেমেছে? যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল নাম দেখে, ধর্ম দেখে মারার মধ্যে দিয়ে, সেই যুদ্ধ কি এতটুকুও স্তিমিত হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে? যে যুদ্ধে– বাড়ির ফ্রিজে কী মাংস আছে, কে টিফিনে কী খাবার নিয়ে এসেছে– তা দেখে শুরু হয়েছিল, সেই যুদ্ধ কি থেমেছে? যে যুদ্ধে দেশের একাংশ নাগরিককে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ওঁদের পোশাক দেখে বোঝা যায় ওঁরা সন্ত্রাসবাদী, সেই যুদ্ধ কি থেমেছে?
যে যুদ্ধ দেশের নাগরিক, আখলাখ, পেহেলু খান, জুনেইদ-সহ বহু মুসলমান যুবককে পিটিয়ে মেরেছে, সেই যুদ্ধ থামানোর জন্য কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে আজ অবধি কোনও কথা বলেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী? বলেননি বলেই আজ সেই তাঁরাই নিজের দেশের বিদেশ সচিবকেও ছাড়ছেন না। ভারতের সর্বোচ্চ কূটনীতিবিদ তথা পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রী নিজের কন্যাকে নিয়ে দেশবাসীরই একাংশের কাছ থেকে ব্যাপক ট্রোলিংয়ের শিকার হওয়ার পর ব্যক্তিগত এক্স অ্যাকাউন্ট ‘লক’ করে দিয়েছেন। তার এক্স হ্যান্ডলটি এখন ‘প্রাইভেট’ করে দেওয়া হয়েছে, যেখানে বাইরের কেউ এসে কোনও কমেন্ট করতে পারবেন না।
বিক্রম মিশ্রী– যিনি দিন কয়েক আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের চালানো ‘অপারেশন সিদুঁর’-এর সময় থেকে নিয়মিত অভিযানের নানা দিক নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে আসছেন এবং কার্যত ভারতের ‘মুখ’ হয়ে উঠেছেন– তিনি অবশ্য বহু দেশবাসীর কাছ থেকে প্রবল সমর্থনও পাচ্ছিলেন। ভারতে বিভিন্ন দলের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও নানা শ্রেণি-পেশার লোকজনই পররাষ্ট্র সচিবের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং তার পেশাদারিত্ব ও কূটনৈতিক দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করছেন।
তবে তার আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে একদল লোক বিক্রম মিশ্রীকে ‘গদ্দার’ ও ‘দেশদ্রোহী’ বলে আক্রমণ করতেও দ্বিধা করেননি। পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে তাঁর একমাত্র কন্যাকেও জড়িয়ে নিয়ে অনেকে ‘একটা নির্লজ্জ লোক আর নির্লজ্জ পরিবার’ বলেও আক্রমণ করেছেন। এমনকী, সোশাল মিডিয়াতে ফাঁস করে দেওয়া হয়েছে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারও।
ভারতের সর্বোচ্চ একজন আমলা যখন চূড়ান্ত পেশাদারি দক্ষতায় ও দারুণ সফলভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করছেন বলে বেশিরভাগ ভারতীয় মনে করছেন, তখন দেশেরই আর একটা অংশের কাছ থেকে এই ধরনের ট্রোলিং এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ ও কুৎসা নিয়ে দেশ জুড়েই ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে। গত শনিবার (১০ মে) ভারতীয় সময় রাত ১১টার সময় শেষবারের মতো সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসেছিলেন বিক্রম মিশ্রী, যখন তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করার অভিযোগ আনেন। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট লক করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে এই লেখার সময় পর্যন্ত তিনি আর প্রকাশ্যে আসেননি। তার কারণও খোঁজা উচিত।
বিক্রম মিশ্রী ও তার কন্যাকে নিয়ে ট্রোলরা ক্ষুব্ধ কেন?
১৯৮৯ ব্যাচের ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিস অফিসার বিক্রম মিশ্রী গত বছরের জুলাই মাসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের পদে আসেন। ভারতের অন্তত তিনজন প্রধানমন্ত্রী– আই কে গুজরাল, মনমোহন সিং ও নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে মিশ্রীর, যা সরকারের খুব সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যেও অত্যন্ত বিরল। ভারতে পেশাদার আমলারা সচরাচর পর্দার আড়ালেই থাকেন, কিন্তু গত ৭ মে (বুধবার) পাকিস্তানে ভারতের অভিযানের পর দিল্লিতে সকালের ব্রিফিংয়ে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বিক্রম মিশ্রীকেই। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সামরিক বাহিনীর দু’জন নারী কর্মকর্তাও।
কিন্তু সেই বিক্রম মিশ্রীই যখন শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কথা নিশ্চিত করেন, তারপর থেকেই ভারতের একদল নেটিজেন বা বলা ভালো, বিজেপির সমর্থক তাঁর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিষোদ্গার করা শুরু করেন। তাদের পোস্ট দেখে মনে হয়েছে, পহেলগাঁও হামলার ‘বদলা’ নিতে ভারতের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাওয়া উচিত ছিল বলে তাঁরা মনে করছেন এবং যুদ্ধবিরতিতে ভারতের রাজি হওয়ার ‘হতাশা’ তাঁরা বিক্রম মিশ্রীর ওপরেই চাপিয়ে দিচ্ছেন।
সেই সঙ্গেই তারা আক্রমণের নিশানা হিসেবে যুক্ত করেছে পররাষ্ট্র সচিবের একমাত্র কন্যা ডিডন মিশ্রীকেও। প্রায় এক দশক আগে বিক্রম মিশ্রী সোশ্যাল মিডিয়াতে তাঁর স্ত্রী ও কন্যার সঙ্গে একটি ফ্যামিলি ফটো পোস্ট করে নিজের পরিবারের সঙ্গে দুনিয়ার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। সঙ্গে ক্যাপশন ছিল, ‘এ যাবৎ আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন!’ সেই ছবিটিকেও তুলে এনে বিক্রম মিশ্রী ও তাঁর পরিবারকে আক্রমণের নিশানা করা হতে থাকে। ডিডন মিশ্রী এখন লন্ডনে একজন আরবিট্রেশন আইনজীবী হিসেবে কর্মরত, কিন্তু প্রায় এক দশক আগে একজন আইনের ছাত্রী হিসেবে ভারতে তার লেখা কিছু নিবন্ধ ও গবেষণাপত্রের সূত্র ধরেই তাঁকে আক্রমণের নিশানা করা হয়।
তিনি তখন ‘দ্য ওয়্যার’ পোর্টালে শিক্ষানবিশ হিসেবেও কিছুদিন কাজ করেছেন– যে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে ভারত সরকারের কখনওই তেমন সুসম্পর্ক ছিল বলা যাবে না। এখন গত ক’দিনে খুঁড়ে বের করা হয়েছে ‘দ্য ওয়ার’-এ লেখা ডিডন মিশ্রীর পুরনো নিবন্ধগুলোও। তিনি তখন গবেষণা করতেন ভারতে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে, এই বিষয়টিকেও আক্রমণের ‘যুক্তি’ হিসেবে বেছে নিয়েছেন এই ট্রোলরা। ‘জে আর নায়ার’ নামের একটি হ্যান্ডল থেকে লেখা হয়েছে, ‘সবচেয়ে শকিং ব্যাপার হল যখন আপনারা জানবেন বিক্রম মিশ্রীর মেয়ে ঠিক কী করেন! তিনি রোহিঙ্গাদের আইনি সহায়তা দেন! এখন আবার লন্ডনে পাড়ি দিয়েছেন!’
আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিন্তু একবারের জন্যেও তাঁর সমর্থকদের নিষেধ করেননি। কোনওদিন বলেননি যে, মুসলমানদের মসজিদের সামনে নৃত্য করাটা দেশপ্রেম নয়, আর বলেননি বলেই হিমাংশী নারওয়াল, যিনি তাঁর কাছের মানুষকে পহেলগাঁওতে সন্ত্রাসবাদী হামলায় হারিয়েও আজ ছাড় পায় না, ওঁদের কটূক্তির থেকে। যেহেতু হিমাংশী নারওয়াল ওঁদের মতো করে বলেননি, যে সমস্ত মুসলমান মানেই সন্ত্রাসবাদী, কাশ্মীরি মানেই জঙ্গি। সেদিন যদি প্রথমেই বলা হত, কারা কোথায় নামাজ পড়বেন, তা নিয়ে দেশের মাথাদের মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। যে যাঁর ধর্ম অনুশীলন করতে পারবেন নির্ভয়ে, তাহলে আজ এই দিনটা দেখতে হত না। হায়দ্রাবাদের করাচি বেকারির নাম বদলানোর দাবিতে হাঙ্গামা চালানো অতি দক্ষিণপন্থী কোনও সন্ত্রাসবাদী গ্রেপ্তার হয় না; আর হয় না বলেই ওঁরা আরও দ্বিগুণ বিক্রমে মুসলমান নিধনে উদ্যোগী হয়। এই সতর্কবাণী যদি প্রথমেই দিতেন প্রধানমন্ত্রী এবং বলতেন আইন আইনের পথে চলবে, তাহলে বিক্রম মিশ্রীকে এইরকম বিশ্রী ট্রোল করা লোকজনকে খুঁজে শাস্তি দেওয়া যেত সহজেই। আমলাদের সংগঠন দাঁড়িয়েছে বিক্রম মিশ্রীর পাশে, কিন্তু বিদেশমন্ত্রী দাঁড়াননি। এই প্রশ্নগুলো করে যেতেই হবে, ভারতের একাংশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে সংখ্যাগুরুর একাংশের এই যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। না হলে প্রমাণিত হবে, প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের শাসকদের মূল যুদ্ধ নিজের দেশের সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে। পাকিস্তান এবং সন্ত্রাসবাদ দমন তো সাধারণ উপলক্ষ্য মাত্র। বিষয়টা কিন্তু শুধু বিক্রম মিশ্রী বা তাঁকে আক্রমণ করার মধ্যেও সীমাবদ্ধ নেই আর। ভারতীয় সেনার দুই মহিলা কমান্ডার সোফিয়া কুরেশি এবং ভ্যোমিকা সিংকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। বিজেপির মধ্যপ্রদেশের উপমুখমন্ত্রী বলেছেন ভারতীয় সেনা নাকি প্রধানমন্ত্রীর পায়ে নতজানু হয়ে আছে। যেখানে সাধারণ মানুষকে বারবার আক্রমণ করা হচ্ছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর দিকে আঙুল তুললে– সেখানে এই সব নেতা-মন্ত্রীরা বারংবার ভারতীয় সেনাবাহিনী, ভারতের বিদেশ সচিবকে আক্রমণ করে যাচ্ছে বহাল তবিয়তে।
যে কোনও সরকারি নীতির বিরোধিতাকারীদের প্রশ্ন করা যে কোনও ব্যক্তিদের খুব সহজেই ‘চিনের দালাল’, ‘পাকিস্তানের দালাল’ বলে দেওয়া যাচ্ছে গায়ের জোরে। কিন্তু নিজেরাই যখন একই কাজ করছেন তাঁদের কি প্রধানমন্ত্রী একবারও সমালোচনা করছেন? ১৮১৮ সালে ইংরেজ লেখক, মেরি শেলির বিখ্যাত উপন্যাস, ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের কথা স্মরণ করতে হচ্ছে। যেভাবে স্রষ্টাকে শেষ অবধি আক্রমণ করে সৃষ্টি, সেটাই আজকে বিজেপির সৃষ্ট ট্রোল বাহিনী করছে। যুদ্ধ নিয়ে যে আচরণ তাঁদের সমর্থকেরা আজ করছেন, তা দেখে ঐ উপন্যাসের কথাই আবার ফিরে পড়তে হচ্ছে– এমনটা হবে না তো যে, এই সৃষ্টিই স্রষ্টাকে ধ্বংস করবে?