পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি পড়তে ভালো লাগে আর কোন বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে, এইটুকুই কি মাপকাঠি হওয়া উচিত ছিল না? সেখানে স্বাদের রহস্য জানতে চেয়ে, নানা উপকরণ মিশিয়ে নতুন কিছু বানানোর আনন্দে কোনও ছেলে বেছে নিতে পারত নিউট্রিশন। একইভাবে ওয়ার্ক এডুকেশনের ক্লাসে সেলাই করতে না-ই চাইতে পারত কোনও মেয়ে। ‘মেয়েদের বিষয়’ ছেলেরা পড়বে কি না বা পড়তে পারবে কি না, এ কথার আগেও যে প্রশ্নটা ওঠে, তা হল পড়ার বিষয়ের লিঙ্গভেদ শুরু হল কেমন করে?
দিনকয়েক আগে এক সাংবাদিক বন্ধু গল্প করছিলেন, তাঁর পরিচিত এক কিশোরীর বাবা চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন। মেয়েকে কি মাস কমিউনিকেশন পড়তে দেওয়া আদৌ উচিত হবে? সাংবাদিকের পেশায় তো বাড়ি থেকে বেরনো বা বাড়িতে ফেরা– কোনও কিছুরই ঠিক নেই। মেয়েদের কি ওসব সাজে! তা ছাড়া শেষমেশ বিয়েই তো দিতে হবে, সুতরাং ‘মেয়েদের মতো’ কোনও বিষয় নিয়ে পড়লেই ল্যাঠা চুকে যায়। মেয়েদের মতো বিষয় বলতে কী বোঝানো হচ্ছে, এখান থেকে সে প্রশ্ন উঠবেই। যদিও প্রশ্নটা সহজ আর উত্তরও তো জানা। এবার কথা হল, এইসব মেয়ের বিষয় কি তবে ছেলেরা পড়তে পারবে না? কারও যদি ওইসব বিষয়ের মধ্যেই কোনওটি পড়তে ভালো লাগে, ‘পুরুষালি’ হয়ে ওঠার দায়ে তখন সেই ভালোবাসার সঙ্গে আপস করতে বাধ্য হবে সে? কেন-না ওইসব বিষয়ের ওপর ‘মেয়েলি’ ট্যাগ সাঁটা হয়ে গিয়েছে আর সে ট্যাগে নিজেকে আঁটাতে গেলে পড়তে হবে অনেকগুলো বাঁকা চোখের সামনে!
অর্থাৎ, ভেবে দেখলে এই বক্তব্য থেকে বেশ কয়েকটা সুতো বেরিয়ে আসছে। ‘মেয়েদের মতো’ বিষয়ের সঙ্গে তবে জুড়ে থাকছে সেই শর্তগুলোই, সমাজ যা মেয়েদের ওপরে চাপিয়ে রেখেছে। সে যে কাজই করুক না কেন, ঠিক সময়ে বাড়ি ফেরা এবং বাড়ি তথা পরিবারকে নিয়মমাফিক সময় দেওয়ার দায়িত্ব তার ওপর বর্তাবেই। কবি এবং কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক যশোধরা রায়চৌধুরী যেমন এক প্রসঙ্গে বলছিলেন, বিয়ের পর দুই বর্ষীয়ান আত্মীয়ার কথোপকথন কানে এসেছিল তাঁর। তাঁদের আক্ষেপ ছিল, বউটা অফিসার না হয়ে কেরানি হলে ভালো হত, তাহলে বিকেলের মধ্যে বাড়ি ফিরে আসতে পারত। আবার যেসব কাজ ‘মেয়েলি’ বলেই চলতি ধারণায় স্বীকৃত, যেমন রান্না করা কি ঘর সাজানো, সেসব বিষয় নিয়ে যেন মেয়েদের পড়াশোনা করাই সংগত। স্কুলের ‘ওয়ার্ক এডুকেশন’ ক্লাসে যেমন মেয়েদের জন্য বরাবর বেঁধে দেওয়া হয়েছে সেলাইফোঁড়াই, উল বোনার কাজ; আর ছেলেদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে আঁকা বা কাঠখোদাই জাতীয় অন্য কোনও কর্মশিক্ষা যা ‘মেয়েলি’ নয়। ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন কিংবা হোম সায়েন্সের মতো বিষয় নিয়ে আজকাল পড়াশোনা করাই যায়, কোর্স করা যায় ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন বা ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়েও। কিন্তু সেইসব বিষয় নিয়ে যদি মেয়েদের পাশাপাশি কোনও ছেলেও পড়তে চায় প্রথাগতভাবে? প্রথাগত শিক্ষার চলতি ছক ভেঙে কারও যদি নাচ শেখার, নৃত্যকলা নিয়ে পড়াশোনার আগ্রহ জাগে? হ্যাঁ, এই সময়ে দাঁড়িয়ে এইসব বিষয়ের ক্লাসেই একাধিক ছাত্রের দেখা মিলবে সে কথা ঠিক। কিন্তু সেই নির্বাচন যে অনেকের কাছেই বিশেষ সহজ হয়নি, সে কথাও এড়িয়ে যাওয়ার নয়।
সত্যি বলতে কিছুদিন আগে পর্যন্তও তো মাধ্যমিক পাশের পর দেখা যেত, ছেলেদের বিজ্ঞান পড়তেই হবে, বড়জোর বাণিজ্য শাখার কথা ভাবা যেতে পারে। আর আর্টসের দিকে যেন মেয়েদেরই অবাধ গতায়াত। একালে মেয়েদের বিজ্ঞান পড়ার অধিকার মান্যতা পেয়ে গেলেও, ছেলে হিউম্যানিটিজ পড়তে চাইলে অনেক পরিবারেই খানিক ‘কিন্তু’ লেগে থাকে। বিশেষ করে মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করে বিজ্ঞান না পড়া? নৈব নৈব চ! আর উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার পর কলেজে সাহিত্য পড়তে গেলে? ইংরেজি কিংবা তুলনামূলকের তাও বাজারদর ভালো, কিন্তু কোনও ছেলে বাংলা পড়লে তো তার মা-বাবার মুখ দেখানোই ভার! এখনও, কোনও নামী কলেজের বাংলা অনার্সের ক্লাসে ছাত্রছাত্রীর অনুপাত দেখলে সে মনোভাব স্পষ্ট হতে বাধ্য।
অথচ, পড়াশোনার ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি পড়তে ভালো লাগে আর কোন বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে, এইটুকুই কি মাপকাঠি হওয়া উচিত ছিল না? সেখানে স্বাদের রহস্য জানতে চেয়ে, নানা উপকরণ মিশিয়ে নতুন কিছু বানানোর আনন্দে কোনও ছেলে বেছে নিতে পারত নিউট্রিশন। একইভাবে ওয়ার্ক এডুকেশনের ক্লাসে সেলাই করতে না-ই চাইতে পারত কোনও মেয়ে। ‘মেয়েদের বিষয়’ ছেলেরা পড়বে কি না বা পড়তে পারবে কি না, এ কথার আগেও যে প্রশ্নটা ওঠে, তা হল পড়ার বিষয়ের লিঙ্গভেদ শুরু হল কেমন করে?
আসলে এই ভেদাভেদটা তখনই শুরু হয়ে গিয়েছিল, যখন পড়ার অধিকার দাবি করেছিলেন মেয়েরা। গার্গী-অপালা-মৈত্রেয়ীদের যুগ কবেই ফুরিয়েছিল, তারপর থেকে বিধবা হওয়ার ভয় দেখিয়ে, অযোগ্যতার বাহানা তুলে জ্ঞানের জগতের দরজাটা মেয়েদের মুখের ওপর সজোরে বন্ধ করে দেওয়া গিয়েছিল। কিন্তু উনিশ শতকের নতুন আলোয় নারীশিক্ষার গুরুত্ব বুঝতে শুরু করেছিলেন কেউ কেউ। যদিও মেয়েদের আদৌ বিদ্যালাভের যোগ্যতা আছে কি নেই, এ নিয়েই দীর্ঘদিন একটা বড় বিতর্ক চলেছিল। স্ত্রীশিক্ষার উলটো দিকটায় যাঁরা অনলস সওয়াল করছিলেন, তাঁদের অন্যতম যুক্তি ছিল এই যে, পড়াশোনার উপযোগী বুদ্ধি নেই মেয়েদের। যার বিরোধিতা করেন রামমোহন রায়, ‘প্রবর্ত্তক ও নিবর্ত্তকের দ্বিতীয় সম্বাদ’ পুস্তিকায় সপাট প্রশ্ন তোলেন, “স্ত্রীলোকের বুদ্ধির পরীক্ষা কোন্ কালে লইয়াছেন, যে অনায়াসেই তাহারদিগকে অল্পবুদ্ধি কহেন?” তাতেও অবশ্য দমে যাননি আকাঁড়া বিরোধীরা। মেয়েরা পুরুষের চেয়ে স্বভাবতই বুদ্ধিতে খাটো, সুতরাং ছেলেদের মতো মেয়েদের একইরকম শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা কেবল অনর্থকই নয়, বিধি-বিরোধীও বটে, এই ছিল তাঁদের দাবি। আর এই চিন্তা ও দ্বন্দ্বেরই সুস্পষ্ট ছাপ পড়েছিল স্ত্রীশিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত যাবতীয় সন্দর্ভে, মূলত মেয়েদের ‘উপযুক্ত’ পাঠ্যক্রম তৈরির প্রয়াস ও সে সংক্রান্ত আলোচনায়।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
উনিশ শতকের শেষদিকে প্যারীচাঁদ মিত্র খোঁজ নিয়ে দেখেছিলেন মেয়েদের পাঠ্যসূচিতে কী কী বই রয়েছে। সে তালিকায় ছিল— কথামালা, সীতার বনবাস, নবনারী, বর্ণবোধ, নীতিবোধ, চরিতাবলী, আখ্যানমঞ্জরী, বস্তুবিচার, সুশীলার উপাখ্যান। এ ছাড়া ছিল গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কারের ‘স্ত্রীশিক্ষাবিধায়ক’, প্যারীচাঁদের নিজের লেখা ‘বামাতোষিণী’। ১৮৯৩ সালে মাতাজি মহারানি তপস্বিনী যে মহাকালী পাঠশালা খুলছেন, যার ছাত্রীর সংখ্যা দ্রুতই বেথুন স্কুলকেও ছাপিয়ে যাবে, সেই স্কুলের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত কয়েকটি পাঠ্যপুস্তক হল: সাধ্বী সমাচার, স্তুতিমালা, শিবপূজাপদ্ধতি।
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
না, কোনও কারণ ছাড়া, নিজের জন্যই যে মেয়েদের বিদ্যালাভের অধিকার রয়েছে সে কথা নারীশিক্ষার সপক্ষের বা বিপক্ষের কোনও উকিলই স্বীকার করেন না; বিশ শতকেও রবীন্দ্রনাথকে এক চিঠিতে লিখছেন লীলা মিত্র। তবে নব্যশিক্ষিত ‘বাবু’দের যত্নআত্তি করার মতো ভালো স্ত্রী বা তাঁদের সন্তানকে পালন করার মতো ভালো মা হতে গেলেও যে শিক্ষাকে বাদ দেওয়া যাবে না আর, সে কথা ক্রমে স্পষ্ট হচ্ছিল। আর সে কথা মাথায় রেখেই তৈরি হচ্ছিল মেয়েদের পাঠ্যক্রম। উনিশ শতকের শেষদিকে প্যারীচাঁদ মিত্র খোঁজ নিয়ে দেখেছিলেন মেয়েদের পাঠ্যসূচিতে কী কী বই রয়েছে। সে তালিকায় ছিল– কথামালা, সীতার বনবাস, নবনারী, বর্ণবোধ, নীতিবোধ, চরিতাবলী, আখ্যানমঞ্জরী, বস্তুবিচার, সুশীলার উপাখ্যান। এ ছাড়া ছিল গৌরমোহন বিদ্যালঙ্কারের ‘স্ত্রীশিক্ষাবিধায়ক’, প্যারীচাঁদের নিজের লেখা ‘বামাতোষিণী’। ১৮৯৩ সালে মাতাজি মহারানি তপস্বিনী যে মহাকালী পাঠশালা খুলছেন, যার ছাত্রীর সংখ্যা দ্রুতই বেথুন স্কুলকেও ছাপিয়ে যাবে, সেই স্কুলের তত্ত্বাবধানে প্রকাশিত কয়েকটি পাঠ্যপুস্তক হল: সাধ্বী সমাচার, স্তুতিমালা, শিবপূজাপদ্ধতি। অর্থাৎ, পুরুষ ও নারীর পঠনপাঠনের ধাঁচ আলাদা হবে এ কথা মনে রেখেই নারীশিক্ষার যে ভিত্তি নির্মাণ হয়েছিল, দিনের পরে দিন গেলেও সে ভাবনায় বিশেষ বদল আসেনি।
মনে রাখা ভালো, এর অন্তত বছর কুড়ি আগেই রবীন্দ্রনাথের পড়ার ঘরে ঝুলিয়ে রাখা আছে কঙ্কাল, মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র এসে তাঁদের শারীরবিদ্যার পাঠ দিয়ে যাচ্ছেন। আবার তারই সঙ্গে ম্যাকবেথ তরজমা আর কুমারসম্ভব কাব্য পড়াও চলছে পুরোদমে। ছাত্রদের এমন বিচিত্র ও গভীর পাঠক্রমের পাশাপাশি মেয়েদের নিতান্ত মামুলি পাঠ্যক্রম জুড়ে রয়েছে স্বামীকে শ্রদ্ধাভক্তি করার উপদেশ, গৃহধর্ম পালনের নীতিশিক্ষা কি পূজাপদ্ধতি। এ জলচল ভাগ পরবর্তী কালে যতই সংকুচিত হয়ে আসুক, ভাগাভাগির দাগ কি আর সহজে মেলায়!
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
আরও পড়ুন: অর্থ ও মেধার মিলমিশ না হলে এ যুগে উচ্চশিক্ষা সম্ভব?
………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
এই যে মেয়েদের কী পড়ানো হবে তা বেঁধে দেওয়া হচ্ছিল, তারই ছাপ পড়ছিল মেয়েরা কী পড়বে, কী লিখবে তার ওপরেও। সে কথা ভেবেই, কেবল মেয়েদের পত্রিকা হিসেবে ১৮৫৪ সালে ‘মাসিক পত্রিকা’ কিংবা ১৮৬৩ সালে ‘বামাবোধিনী’ পত্রিকার শুরুয়াত। ১২৯৫ বঙ্গাব্দে সৌদামিনী দেবী নামে একজন, একটি ক্রাইম কাহিনি লিখে বসেন, যার বিষয় পরকীয়া। যদিও সেখানে ব্যাভিচারিণী স্ত্রীকে যথাবিধি হিতোপদেশ ও শাস্তি দিতে তিনি কার্পণ্য করেননি, তারপরেও ‘বামাবোধিনী’ পত্রিকা তাঁকে তুমুল ভর্ৎসনা করে মনে করিয়ে দেয়, এহেন লেখা ‘নারী লেখনীর অযোগ্য’। মেয়েদের বিষয় বেঁধে দেওয়ার সেই ছক যে সমানে চলছেই, সে কথা বুঝে নিয়েছিলেন এ যুগের ‘শ্রীমতী মহিলা লেখক’ নবনীতা দেবসেনও। যিনি দেখেছিলেন, পুরুষ লেখক প্রৌঢ়ের সঙ্গে তরুণীর প্রেমকাহিনি লিখলে তা অসংগত হয় না, কিন্তু তিনি বয়স্কা মহিলার সঙ্গে তরুণের সম্পর্ক নিয়ে লিখতে চাইলে তার অনুমোদন মিলবে না। সামাজিকভাবে অবৈধ সম্পর্ক, সমাজের কাছে অবৈধ ভাষা ব্যবহার করার এজেন্সি কেবল পুরুষেরই। অথচ মেয়েদের এই চাপা বদ্ধ সংকীর্ণ পৃথিবীটার গল্প লিখে চললে আশাপূর্ণা দেবীকে দাগিয়ে দেওয়া হবে মেয়েলি লেখক বলে। একদিকে নারী এবং নারীর লেখা মানেই তা নরমসরম, এলিয়ে পড়া– এমনই এক প্রোটোটাইপ কায়েম হয়ে থাকবে, অন্যদিকে স্বর্ণকুমারী বা সরলা দেবীর জোরালো লেখাকে ঠাকুরবাড়ির অন্য কোনও পুরুষের বকলমে লেখা বলে মনে করা হবে, সুচিত্রা ভট্টাচার্যের লেখা পড়েও তাকে পুরুষের লেখা বলেই ভাববেন খোদ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। এমনভাবেই ছকে বেঁধে দেওয়া হবে যে কোন কোন বিষয় মেয়েদের, আর কোন কোন বিষয় নিয়ে কেবল মেয়েদেরই কথা বলা সাজে।
কাজের জায়গায় লেডিস টয়লেটের দাবি তুলবেন কেবল মেয়েরাই। সন্তান জন্মের নেপথ্যে পুরুষের ভূমিকা থাকলেও মাতৃত্বকালীন ছুটি নিছক ‘মেয়েলি’ দাবি হয়েই থেকে যাবে। বাড়িতে গৃহসহায়িকা সংক্রান্ত সমস্ত দায়িত্ব থাকবে মহিলার, উলটোদিকে কলের মিস্ত্রি এসে কর্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় যাওয়ার বদলে ডাকবেন ‘দাদা’কে, কারণ সেটা আবার পুরুষের দপ্তর। আর এমন করেই ‘মেয়েদের বিষয়’ আর কেবল স্কুল-কলেজে আটকে থাকবে না। তার পরিধি ছড়িয়ে পড়বে স্কুল থেকে অফিসে, ঘর থেকে রাস্তায়। কেবল পড়ালেখার ক্ষেত্রে নয়, মেয়েদের জীবন সংক্রান্ত যা কিছু, ‘মেয়েদের বিষয়ে’র পরিধিতে আটকে দেওয়া হবে তার সবকিছুই।
তবুও, মেয়েদের যৌন হেনস্তার প্রতিবাদে বিনেশ-সঙ্গীতা-সাক্ষীদের সঙ্গে পথে নামবেন বজরং পুনিয়া-রা। গণধর্ষিতা বিলকিস বানোকে নিয়ে দরজায় দরজায় ফিরবেন ইয়াকুব রসুল। স্ত্রীর ঋতুকালীন ‘মেয়েলি’ কষ্ট দেখে স্যানিটারি ন্যাপকিনের কথা ভাববেন অরুণাচলম মুরুগানাথম। যেমন কোনও কোনও পুরুষ মেয়েদের বিষয় নিয়ে পড়তে চাইবেন, তেমনই কোনও কোনও পুরুষ বাঁকা চোখগুলোকে অগ্রাহ্য করে মেয়েলি বিষয় নিয়েও মাথা ঘামাবেন বইকি। সমাজের গড়া ওই ভাগাভাগির পোক্ত পাঁচিলে মেয়েরা এবং ছেলেরা বসে পা দোলাবে একদিন, নিশ্চিত।