‘কুলীন’ টুর্নামেন্টে পুঁজির জোরে সবই চলে, কেবল রাজনীতি নৈব নৈব চ। উয়েফার কর্তাব্যক্তিদের কড়া নিষেধ রয়েছে! এসব দেখেশুনে ফুটবলাররাও ‘ঠিক আছে বাবা, কী হবে ফালতু ঝামেলায় গিয়ে’ বা ‘রাজনীতিটা ঠিক বুঝি না’-র আশ্রয় নিয়ে দিব্যি গুডবয় হয়ে থাকেন। অন্তত, ঐতিহাসিকভাবে ফুটবলাররা রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে নিজেদের দূরেই রেখেছেন। তার মধ্যেই একজন-দু’জন মাথিয়াস সিন্ডেলার, জোহান ক্রুয়েফ, পল ব্রেইটনার, সক্রেটিস, দিয়েগো মারাদোনা বা এরিক কাঁতোনার মতো কিছু অবাধ্য কেমন করে জানি ছিটকে এসে পড়েছিলেন, দক্ষিণপন্থার মতো বিপদ-আপদ এলে তাঁদেরই আমরা রণে-বনে-জঙ্গলে ফি-টাইম স্মরণ করে থাকি।
৪ জুন যখন আমাদের দেশে তিনমাস-ব্যাপী ভোটরঙ্গের যবনিকা পতন হচ্ছে, অতি-দক্ষিণপন্থী শক্তির বিষদাঁতে ক্ষয় ধরছে দেখে আমরা অনেকেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছি, ইউরোপের রাজনীতি তখন দাঁড়িয়ে আছে অদ্ভুত এক সন্ধিক্ষণে, যার খবর ‘স্বস্তি পাওয়া’ আমরা হয়তো সেভাবে রাখিনি।
ঠিক একশো বছর পরে ইউরোপ জুড়ে আবারও অতি-দক্ষিণপন্থার হাওয়া, এবং এবারের ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচনের ফলাফলে তাদের বিপুল শক্তিবৃদ্ধি একরকম প্রত্যাশিত। যদিও, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আরও বেশি আসন তাদের পাওয়ার কথা ছিল। ওদিকে, তুল্যমূল্য বিচারে দুর্বল বামপন্থী শক্তির ফলাফলও আশার আলো দেখাচ্ছে। তবে এই বিষয়ে তর্ক থাকলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচনী ফলাফলের অভিঘাতে ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে যেভাবে সংসদ ভেঙে দিয়ে তড়িঘড়ি তাঁর স্বদেশে জরুরি নির্বাচন ঘোষণা করতে হল, তাতে সার্বিক অবস্থা যে গুরুতর, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
ফ্রান্সে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ৮১টি আসনের মধ্যে অতি-দক্ষিণপন্থী দল ন্যাশনাল র্যালি জিতেছে ৩০টি আসন, আগেরবারের তুলনায় ৭টি আসন বেশি, ভোট ভাগাভাগিতেও তাদের ফলাফল চমকপ্রদ, তারা পেয়েছে ৩১.৩৭% ভোট। ফরাসি সংসদে ন্যাশনাল র্যালির নেত্রী মেরিন লা পেন, পার্টির প্রতিষ্ঠাতা জাঁ-মেরি লা পেনের কন্যা তিনি। সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ফ্রান্স জুড়ে তৈরি হয়েছে এক অভূতপূর্ব বামপন্থী জোট। বিদ্রোহী ফ্রান্স, সোস্যালিস্ট পার্টি, ফরাসি কমিউনিস্ট পার্টি, দ্য ইকোলজিস্টস (দ্য গ্রিনস), এই চারটি প্রধান দল ও আরও বেশ কিছু বামপন্থী দল মিলে গড়ে উঠেছে ‘নিউ পপুলার ফ্রন্ট’। এই মুহূর্তে সমস্ত দলগত তিক্ততা ভুলে তাঁদের লক্ষ্য– দেশকে চরমপন্থী ফ্যাসিবাদীদের হাত থেকে বাঁচানো।
এসব যখন চলছে, ২৪টা দেশের ফুটবল দল তখন পৌঁছে গিয়েছে জার্মানি, ইউরো কাপ খেলতে। ইউরোপের মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা, তার ওপর জনপ্রিয়তার নিরিখে তার স্থান বিশ্বকাপের পরেই, কোপা আমেরিকা ধারে-কাছেও আসে না, খোদ ফ্রান্সের ক্যাপ্টেন কিলিয়ান এমবাপে (যাঁর দখলে রয়েছে বিশ্বকাপ জয়ের একটি মেডেল, রানার্স আপের একটি মেডেল, সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার এবং একটি গোল্ডেন বুট) মন্তব্য করে বসেন, বিশ্বকাপের চেয়ে ইউরো বেশি কঠিন। সে মন্তব্যের প্রতিবাদে ঝড় ওঠে ফুটবল-মহলে, ব্যঙ্গাত্মক জবাব দেন কিলিয়ানের একসময়ের ক্লাব-মেট, গত কাতার বিশ্বকাপে তাঁর দলকে হারিয়ে ট্রফি তোলা লিওনেল মেসি।
………………………………………………
বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি ফ্রান্স ফুটবল দলের অন্যতম পরিচয় এক মিশ্র বর্ণ-সংস্কৃতির দল হিসেবে। ২০১৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বজয়ী ফুটবল দলের ৮৭ শতাংশ খেলোয়াড়ই অভিবাসী পরিবারের সন্তান। আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফরাসি উপনিবেশগুলি থেকে এক সময়ে বহু মানুষ ভাগ্যান্বেষণের উদ্দেশ্যে চলে এসেছিলেন ফ্রান্সে, ঠাঁই হত শহরের গরিবপাড়াগুলোয়, কষ্টের হাত থেকে পরিত্রাণের পথ হয়ে উঠত ফুটবল।
………………………………………………
এহেন ‘কুলীন’ টুর্নামেন্টে পুঁজির জোরে সবই চলে, কেবল রাজনীতি নৈব নৈব চ। উয়েফার কর্তাব্যক্তিদের কড়া নিষেধ রয়েছে– রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছ কি মরেছ! এসব দেখেশুনে ফুটবলাররাও ‘ঠিক আছে বাবা, কী হবে ফালতু ঝামেলায় গিয়ে’ বা ‘রাজনীতিটা ঠিক বুঝি না’-র আশ্রয় নিয়ে দিব্যি গুডবয় হয়ে থাকেন। অন্তত, ঐতিহাসিকভাবে ফুটবলাররা রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া থেকে নিজেদের দূরেই রেখেছেন। তার মধ্যেই একজন-দু’জন মাথিয়াস সিন্ডেলার, জোহান ক্রুয়েফ, পল ব্রেইটনার, সক্রেটিস, দিয়েগো মারাদোনা বা এরিক কাঁতোনার মতো কিছু অবাধ্য কেমন করে জানি ছিটকে এসে পড়েছিলেন, দক্ষিণপন্থার মতো বিপদ-আপদ এলে তাঁদেরই আমরা রণে-বনে-জঙ্গলে ফি-টাইম স্মরণ করে থাকি।
তামাম ফুটবলার-কুলের এই সুবিধাবাদের জগদ্দলে সাম্প্রতিক আঘাতটা হেনেছেন ফ্রান্সের মার্কাস থুরাম এবং লাতিন আমেরিকাকে ‘অপমান’ করেছেন বলে আমাদের চোখে ‘ভিলেন’ হয়ে যাওয়া কিলিয়ান এমবাপ্পে।
বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি ফ্রান্স ফুটবল দলের অন্যতম পরিচয় এক মিশ্র বর্ণ-সংস্কৃতির দল হিসেবে। ২০১৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বজয়ী ফুটবল দলের ৮৭ শতাংশ খেলোয়াড়ই অভিবাসী পরিবারের সন্তান। আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফরাসি উপনিবেশগুলি থেকে এক সময়ে বহু মানুষ ভাগ্যান্বেষণের উদ্দেশ্যে চলে এসেছিলেন ফ্রান্সে, ঠাঁই হত শহরের গরিবপাড়াগুলোয়, কষ্টের হাত থেকে পরিত্রাণের পথ হয়ে উঠত ফুটবল। জিনেদিন জিদান থেকে শুরু করে থিয়েরি অঁরি, লিলিয়ান থুরাম থেকে করিম বেঞ্জেমা, ফ্রান্স ফুটবলের আধুনিক সুপারস্টারদের প্রত্যেকেরই ইতিহাস এই এক সূত্রে বাঁধা।
অন্যদিকে, লা পেনদের ন্যাশনাল র্যালি ফরাসি জাতিসত্তায় বিশ্বাসী, অভিবাসন-বিরোধিতা তাদের অন্যতম অ্যাজেন্ডা। স্বভাবতই, এই প্রজন্মের ফুটবলাররা চিহ্নিত করতে পেরেছেন আসন্ন সংকটকে। আউসমানে দেম্বেলে কেবল সকলকে ভোট দেওয়ার কথা বলে থেমে গেলেও অনেক বেশি স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছেন এ বছর ইন্তার মিলানকে সিরি এ জেতানো ফরোয়ার্ড মার্কাস থুরাম, যিনি জাতীয় দলের হয়ে ১৪২টি ম্যাচ খেলা, বিশ্বকাপজয়ী লিলিয়ান থুরামের ছেলে। তাঁর কথায়– ‘পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। আমাদের প্রত্যেককে প্রতিদিন লড়াই করতে হবে যাতে কোনওভাবেই ন্যাশনাল র্যালি ক্ষমতায় না আসে।’ সঙ্গে যোগ করেছেন– ‘আমি জানি, কিছু কিছু খেলোয়াড় আসবে, এসে মানুষকে বলবে কেবল ভোট দিতে, কিন্তু এই মুহূর্তে শুধু ওটুকুই বলা যথেষ্ট নয়, কীভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হল এবং অবস্থা যে গুরুতর, সেটাও পরিষ্কারভাবে বলতে হবে।’
এই প্রসঙ্গে বলে নেওয়া ভালো, লিলিয়ান থুরাম নিজে বরাবর রাজনৈতিক বিষয়ে সোচ্চার। ২০০৫-এর নভেম্বরে ফ্রান্সে দাঙ্গা লাগলে তিনি তদানীন্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোলাস সারকোজির বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্যকে দায়ী করেন। ২০০৬ সাল থেকেই তিনি লা পেনের বিরুদ্ধে কথা বলে আসছেন। এমনকী, নিজের ছেলের নামও রেখেছেন জামাইকার অবিসংবাদী কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্কাস গার্ভির নামে।
ইউরোর মতো টুর্নামেন্টের প্রাক্কালে দেশের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে স্পষ্ট অভিমত রেখে বাবার দেওয়া নামের প্রতি মার্কাস থুরাম যে যথেষ্ট সুবিচার করলেন, তা বলাই যায়।
তুলনায় একটু সাবধানী বক্তব্য রেখেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে তাঁদের প্রথম ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠকে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি মার্কাস থুরামের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন ঠিকই, কিন্তু ন্যাশনাল র্যালি বা নিউ পপুলার ফ্রন্ট, কোনও ব্লকেরই নাম ব্যবহার করেননি। প্যারিসের বন্ডি অঞ্চলে বেড়ে ওঠা, ক্যামেরুনীয় বংশোদ্ভুত বাবা এবং আলজিরীয় বংশোদ্ভূত মায়ের সন্তান কিলিয়ান এমবাপ্পে একথা জানাতেও ভোলেননি, তিনি সর্বতোভাবে বিভেদকামী শক্তির বিরুদ্ধে। দ্বর্থ্যহীন ভাষায় মনে করিয়ে দিয়েছেন, উগ্রপন্থীরা দরজায় কড়া নাড়ছে।
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
আরও পড়ুন অমৃতা সরকার-এর লেখা: সংবিধানই রক্ষাকবচ, নির্বাচনে বোঝালেন সাধারণ মানুষ
……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
কিলিয়ান কোনও দলের নাম ব্যবহার করেননি ঠিকই, তবে অতি-দক্ষিণপন্থীরা যে কখনও শত্রু চিনতে ভুল করে না, সেকথা আবারও প্রমাণিত হল ন্যাশনাল র্যালির নেতা জর্ডান বারদেল্লা তাঁকে আক্রমণ করার ভঙ্গিতে। ক্ষমতায় আসতে গেলে মানুষের ভোট তাঁদের প্রয়োজন, অতএব, তাঁদের বক্তব্যে এখন গণতন্ত্রের ফাঁপা জয়ধ্বনি। জর্ডান বলেছেন, প্রত্যেকের ভোটকে আমাদের সম্মান জানাতে হবে। মার্কাস থুরাম, কিলিয়ান এমবাপ্পেরা বড় খেলোয়াড়, তাঁদের আমি সম্মান করি। কিন্তু তাঁরা কোটিপতি, তাঁরা যখন দেশের গরিব মানুষকে ভোট দেওয়ার পরামর্শ দেন, সেটা দেখলে আমার অস্বস্তি হয়।
বর্ণবাদ বা বিভাজনের বিরুদ্ধে ফরাসি ফুটবলারদের প্রতিবাদ এমনিতেও নতুন নয়। ১৯৯৫ সালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ক্রিস্টাল প্যালেসের সঙ্গে ম্যাচ চলাকালীন লাল কার্ড দেখে বেরোনোর সময়ে প্যালেসের এক নিও-নাজি সমর্থকের ক্রমাগত বর্ণবিদ্বেষী টিটকিরিতে বিরক্ত হয়ে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের বিখ্যাত ৭ নম্বর জার্সিধারী এরিক কাঁতোনা তাকে সজোরে, কুংফু স্টাইলে লাথি মেরেছিলেন। পরে বলেছিলেন, আমার আফসোস একটাই, ওকে আরও জোরে মারতে পারিনি। আচরণবিধি-বহির্ভূত কাজ করায় ন’-মাসের জন্য সাসপেন্ড হন এরিক, কিন্তু তাঁর ওই পদক্ষেপ ফুটবল মাঠের বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে জোরদার করে। ২০০৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে অভিবাসী মা-বোনের অপমান মানতে পারেননি জিনেদিন জিদান, জীবনের শেষ ম্যাচের মোক্ষম মুহূর্তে মার্কো মাতেরাজ্জিকে ঢুঁসো মেরে লাল কার্ড দেখে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, বিশ্বকাপ ট্রফির পাশ দিয়ে তাঁর টানেলে ঢুকে যাওয়ার সেই ছবি ইতিহাস হয়ে গিয়েছে। তাঁরই পরবর্তী প্রজন্মের প্যাট্রিশ এভরাও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের সমর্থকদের বর্ণবিদ্বেষী আচরণ নিয়ে বড় ক্লাবগুলোর সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। নির্বাচনী জয়ের আশায় দুই খেলোয়াড়কে আক্রমণ শানাতে গিয়ে জর্ডান বারদেল্লা এই ইতিহাস হয়তো মনে রাখেননি, মনে রাখলে তাঁর অস্বস্তি বাড়বে বই কমবে না!
আপাতত, কিলিয়ান এমবাপ্পে মাঠের বাইরে। অস্ট্রিয়া ম্যাচে আহত হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাঁকে। গ্রুপ স্টেজের পরে ফিরবেন, তেমনই মনে করা হচ্ছে। ফিরে এলে এই ইউরোতেও বিপক্ষ ডিফেন্সকে ছারখার করে দেওয়া সেন্টার লাইনের নিচ থেকে তাঁর অতিমানবিক দৌড়গুলো দেখতে পাব আমরা, কাব্যিক ফুটবলকে জাস্ট পাত্তা না দেওয়া উদ্ধত খেলোয়াড়টিকে আরও একটু অপছন্দ করতে চাইব আমরা, মাঠের মধ্যে অকারণ বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখলে আরও একটু ঘৃণা করতে শিখব।
তবে, আপাতত আর এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই কিলিয়ান এমবাপ্পেকে। এড়ানোর উপায় নেই মার্কাস থুরামকে। ঠিক যেমন অস্বীকার করতে পারব না দক্ষিণপন্থার বিপদকে।
…………………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
…………………………………………..
আজ যখন আমরা মার্কস ও এঙ্গেলসের বন্ধুত্বকে নতুন চোখে দেখে কমিউনিস্ট ইতিহাস রচনার কথা ভাবি, তখন একই সঙ্গে কমিউনিস্ট আন্দোলনের নারীবাদী ইতিহাস খুঁজতে গেলে আমাদের মেয়েদের এই বিপ্লবী কমরেডশিপের সম্ভাবনার, নারীবাদী বন্ধুত্বের রাজনীতির দিকেও নজর দিতে হবে।