Robbar

স্ত্রীর অভিনেত্রীর মতো ফিগার চাওয়া নতুন কিছু নয়!

Published by: Robbar Digital
  • Posted:September 3, 2025 9:31 pm
  • Updated:September 5, 2025 2:14 pm  
Man forces wife to get a figure like Nora Fatehi by Sampriti Mukherjee

মেয়েদের শরীরে কোথায় মাংস অতিরিক্ত আর কোথায় হাড় বেরিয়ে পড়ছে, তা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য শুভাকাঙ্ক্ষীরা সদা প্রস্তুত। যেন মেয়েদের শরীরের অস্তিত্বই হল পুরুষের চোখের খিদে আর প্রত্যাশা সার্থক করতে। যেখানে তার দক্ষতা আর ক্ষমতার আগে বিচার্য বুক, পাছার মাপ, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ইত্যাদি। এইভাবে মেয়েদের একজন চিন্তাশীল, সম্ভাবনাময়, সৃজনশীল মানুষ থেকে শুধুমাত্র একটি যৌনসামগ্রীতে গুটিয়ে রাখার বিষয়টা ব্যক্তিবিশেষের কৃতকর্ম নয়; শোষণের এই প্রক্রিয়া সামাজিক যার মধ্যে দিয়ে নির্মিত হয় সৌন্দর্যের প্রথাগত ধারণা।

সম্প্রীতি মুখার্জি

দিন কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি মেয়ে থানায় অভিযোগ জানায় যে, তাঁর স্বামী তাকে নোরা ফাতেহির মতো ‘ফিগার’ বানানোর জন্য মানসিক আর শারীরিক অত্যাচার করছে। মেয়েটির উপর রোজ ৩ ঘণ্টা ব্যায়াম করার নিদান ছিল, অন্যথায় দিনের পর দিন জুটত না খাবার। শারীরিক শিক্ষার প্রশিক্ষক এই পুরুষটি তার স্ত্রীর উপস্থিতিতেই সামাজিক মাধ্যমে অন্যান্য মেয়েকে স্টক করত, কারণ তার চোখে তার ‘স্ত্রী’ যথেষ্ট আকর্ষণীয় নয়।

এই ঘটনাক্রমের সবচেয়ে বিরল অংশটি হল মেয়েটির আইনি অভিযোগ জানাতে যাওয়া। বাকিটা– মানে পুরুষটির তার বিবাহিত সঙ্গীর শরীরকে নিজের ‘সম্পত্তি’ ভাবা, মেয়েদের ‘যৌনসামগ্রী’ মনে করা বা মেয়েটিকে তথাকথিত সুন্দর হওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার ছবি আমাদের অচেনা নয়।

অন্তরঙ্গ সম্পর্ক, কর্মক্ষেত্র, রাস্তাঘাট থেকে সামাজিক মাধ্যম– এখনও মেয়েদের সবসময় জরিপ করা হচ্ছে সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে। যে-মাপকাঠি তৈরি পুরুষের চোখ দিয়ে। মেয়েদের শরীরে কোথায় মাংস অতিরিক্ত আর কোথায় হাড় বেরিয়ে পড়ছে, তা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য শুভাকাঙ্ক্ষীরা সদা প্রস্তুত। যেন মেয়েদের শরীরের অস্তিত্বই হল পুরুষের চোখের খিদে আর প্রত্যাশা সার্থক করতে। যেখানে তার দক্ষতা আর ক্ষমতার আগে বিচার্য বুক, পাছার মাপ, ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ইত্যাদি। এইভাবে মেয়েদের একজন চিন্তাশীল, সম্ভাবনাময়, সৃজনশীল মানুষ থেকে শুধুমাত্র একটি যৌনসামগ্রীতে গুটিয়ে রাখার বিষয়টা ব্যক্তিবিশেষের কৃতকর্ম নয়; শোষণের এই প্রক্রিয়া সামাজিক যার মধ্যে দিয়ে নির্মিত হয় সৌন্দর্যের প্রথাগত ধারণা।

২০১৮ সালের একটি গবেষণা বলছে, প্রায় ৭৭ শতাংশ ভারতীয় মেয়ে নিজেদের শরীরকে ঘেন্না করে। যার ফলস্বরূপ মানসিক অবসাদ আর আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভোগে মেয়েরা। পরিবার, গল্পের বই, ক্লাসরুম থেকে টিভির পর্দায় মেয়েদের শরীরের উপস্থাপনা এমনভাবেই হয় যে, আমরা– মেয়েরা এটা জেনে আর মেনে বড় হই যে, এই দুনিয়ায় আমার দাম সমাজের ঠিক করে দেওয়া সৌন্দর্যের মানদণ্ডে ঠিক হবে। কখন যেন আমরা নিজেদের শরীরের দাগ, গর্ত, মেদ, লোমের মতো স্বাভাবিকতাকে ভয় পেতে শুরু করি। আয়নায় নিজের প্রতিচ্ছবিকে এড়িয়ে যাই– যদি না সেই প্রতিচ্ছবি মেয়েদের সৌন্দর্যের আদর্শকে তুলে ধরে। সেলফি ফেসবুকে আপলোড করার আগে খুঁটিয়ে দেখি, ডাবল চিন বা পেটের ভুঁড়ির ভাঁজ দেখা যাচ্ছে কি না। মেয়েদের চেহারা নিয়ে অসহায়তা আর হীনম্মন্যতা বোধ থেকে লাভ করে পিতৃতন্ত্র আর ‘বিউটি ইন্ডাস্ট্রি’, ভারতে যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ‘সুন্দর’ থাকার পরম্পরায় মেয়েরা শুধুই পণ্য নয়; সুন্দর থাকার অনুশীলনকে ঘিরে যে বাজার রয়েছে তার উৎপাদক আর ভোক্তাও বটে। সামাজিক মাধ্যমে সৌন্দর্য-বিশেষজ্ঞ থেকে মফসসলের বিউটি পার্লারে মধ্যবিত্ত মেয়েদের শরীরকে চকচকে, লোমহীন করার সস্তা শ্রমিকদের বড় অংশ মেয়েরাই। সৌন্দর্য নির্মাণের সামাজিক কারখানায় মেয়েদের বিবিধ ভূমিকায় কখনও যৌনসামগ্রী হিসেবে, কখনও মজুরির প্রশ্নে শোষণ করা হয়। কিন্তু এই বিবিধ ভূমিকায় মেয়েদের লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাগুলো একে অন্যের থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে যায়। তাদের নিপীড়নের বিভিন্ন অভিজ্ঞতাগুলো যৌথতায় আসতে পারে না, বরং ‘সুন্দর’’ হয়ে ওঠার ব্যক্তি-কেন্দ্রিক সাফল্যের ভাষ্যগুলোয় আমাদের সামনে বেশি ঘুরে বেরয়।

আরেক উদাহরণ হল, নারীবিদ্বেষী রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের মেয়েদের সৌন্দর্যের বিষয় দৃষ্টিভঙ্গি। আর.এস.এস. মেয়েদের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্যের প্রশ্নকে ‘পশ্চিমি সংস্কৃতি’ হিসেবে চিহ্নিত করে ‘ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী’ বলে প্রচার করে। কিন্তু বিশ শতকের শেষের দিকে দুর্গা বাহিনীর মাধ্যমে মেয়েদের সংগঠিত করার সময় তারা মেয়েদের প্রসাধনী দ্রব্য ব্যবহার, বিউটি পার্লারে যাওয়া, জিনস পরাকে উৎসাহ দিয়েছে। তবে এই উৎসাহ ছিল শর্তাধীন। তাদের সংগঠনের মেয়েদের বয়ান অনুযায়ী, শুধুমাত্র সেই মেয়েদেরই জিনস পরতে উৎসাহ দেওয়া হত যাদের শরীরে জিনস মানানসই, নয়তো নির্দেশ ছিল অনুশীলনের মাধ্যমে তেমন মানানসই ফিগার বানাতে হবে। হাঁটুর উপর স্কার্ট বা প্যান্টের মতো শরীর দৃশ্যমান করে এমন পোশাকের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ ছিল। নয়া উদারবাদের সময়ে ভোক্তা হিসেবে মেয়েদের প্রসাধনীর ব্যবহারকে উৎসাহ দেওয়ার নেপথ্যে তাদের স্বার্থ ছিল ভারতের ব্যবসায়ী শ্রেণির অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি ও উৎপাদন বাড়ানো। একইসঙ্গে, মেয়েদের শরীরের উপর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের রাশ ছাড়েনি তারা।

যারা শোষণের কাঠামো ধরে রেখেছে, তারা মেয়েদের আওয়াজ বন্ধ করার পথ খুঁজে পায়নি, তাই আমাদের শরীর নিয়ে তৈরি করা অনিশ্চয়তা ও হীনম্মন্যতাকেই তারা ‘হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে যাতে নারীদের নিয়ন্ত্রণে রেখে সমাজে নিষ্ক্রিয় নাগরিক বানানো যায়। একথা স্পষ্ট যে, নারীত্বের প্রচলিত সৌন্দর্যের ধারণা আদপে নারীর অগ্রগতি আর ক্ষমতায়নের পরিপন্থী।

আমাদের দেশের প্রসঙ্গে যদি চর্চা করি– একথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, প্রচলিত সৌন্দর্যের ধারণা নিপীড়িত লিঙ্গ, জাতি, শ্রেণি ও সম্প্রদায়কে দমন করা আর উচ্চবর্ণের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার হাতিয়ার। ভারতীয় উপমহাদেশে জাতিব্যবস্থা গেঁড়ে বসার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চবর্ণ পুরুষদের গোঁফ রাখা পুরুষালি সৌন্দর্য আর জাতিগত গর্বের প্রতীক হয়ে থেকে রাজস্থানে গোঁফ রাখার অপরাধে দলিত পুরুষদের হত্যা অবধি হয়। উনিশ শতকের শুরুতে কেরলের ত্রাভাঙ্কোরে প্রচলিত ছিল স্তন-শুল্ক। যে কর অনুযায়ী, নিম্নবর্ণের নারীদের বুক খোলা রাখার নিদান ছিল। স্তন ঢাকার জন্য কর দিতে হত। ইঝাভা সম্প্রদায়ের এক দলিত নারী, নাঙ্গেলি ব্রাহ্মণদের এই নিষ্ঠুর নির্যাতনমূলক শুল্কের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে কেটে ফেলেছিলেন তার স্তন। এখনও তাঁর নাম জাতিগত অপমানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক। একই সময়ে, উনিশ শতকের বঙ্গীয় নবজাগরণে উচ্চবর্ণের নারীরা, বিশেষত ঠাকুর পরিবারের মহিলারা, ব্লাউজ পরাকে সভ্যতা আর আধুনিকতার প্রতীক হিসেবে প্রচার করতেন। যেসব নারী ব্লাউজ পরতেন না, তাঁদের অসভ্য ধরা হত। ঐতিহাসিকভাবেই যারা সমাজে ক্ষমতাবান তারা শুধু সৌন্দর্যের সংজ্ঞা ঠিক করেননি, এটাও ঠিক করেছে যে, কে সুন্দর হওয়ার যোগ্য আর কে নয়; আর এই সুন্দর হওয়ার প্রতিযোগিতায় নিয়ম কী কী। যেমন যে চওড়া গঠন, মাংসপেশি, উচ্চতা, লোম নারীর শরীরে কুৎসিত, তা পুরুষের শরীরে আদর্শ।

সুন্দর কে, সেটা কে ঠিক করে, আর কেন ঠিক করে, আর তাতে লাভটা কার– এটা ভাবতে গেলে দেখা যাবে যে, বদলাতে থাকা বা বিবর্তিত হওয়া সৌন্দর্যের মাপকাঠি আসলে বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক আর সাংস্কৃতিক ক্ষমতার কাঠামো আর সম্পর্কগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে। সৌন্দর্যের বিভিন্ন সময়ের আদর্শ পুঁজিবাদ, পিতৃতন্ত্র, বর্ণবাদ, জাতিবাদ, সক্ষমতাবাদ এবং পিতৃতান্ত্রিক লিঙ্গভিত্তিক ভূমিকাকেই শক্তিশালী করেছে। বর্তমান সময়ের সৌন্দর্যের ধারণাও সেভাবেই নয়া উদারবাদের আর ব্রাহ্মণ্যবাদী পিতৃতন্ত্রের দ্বন্দ্ব আর সহাবস্থানকে তুলে ধরে।

যেমন আজকের সময় ‘প্লাস সাইজ’ শরীরের, চওড়া বহরের, শ্যামলা মেয়েদের জন্য ‘বডি পজিটিভিটি’ বা ‘ব্ল্যাক ইজ বিউটিফুল’ ক্যাম্পেন আছে। আবার এই একই সময়কালে খবরের কাগজের ‘পাত্রী চাই’ বিজ্ঞাপনে উচ্চবর্ণের, মোটা টাকা উপার্জন করা ছেলেদের কাঙ্ক্ষিত জীবনসঙ্গীর বর্ণনা থেকে সামাজিক মাধ্যমের দেওয়ালে প্রথাগত সুন্দরী মেয়েদের জন্য হাহাকারও আছে।

একটা সময়ের পর যখন মেয়েরা সৌন্দর্যের মানদণ্ডকে প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের শরীরকে ভালোবাসার কথা বলছে, তখন নয়া উদারবাদের বাজার তাদের আত্মঘোষণাকে কুক্ষিগত করতে চেয়ে উৎপাদন করেছে নতুন পণ্য, যা ব্যতিক্রমী সৌন্দর্যের প্রচার করছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও মূলস্রোতের সৌন্দর্যের সংস্কৃতিতে বিনোদন জগৎ, বিউটি প্রেজেন্ট  বা সামাজিক মাধ্যমে সৌন্দর্যকে ঘিরে, আর এই শিল্পক্ষেত্রগুলিকে ঘিরে যে ক্ষমতার সম্পর্ক ও শোষণের দস্তুর, তাতে কি সত্যিই কোনও বদল হয়েছে?

মোটা আর কালো মহিলাদের নিয়ে হাসির খোরাক বানানো এবং শরীর নিয়ে কটাক্ষ করা শুরু হয়েছিল সাদা-কালো ছবির যুগ থেকেই, ‘টুনটুন’-এর মতো চরিত্র তৈরির মধ্য দিয়ে। সাম্প্রতিক সময় জনপ্রিয় কপিল শর্মা শো-সহ অন্যান্য জনপ্রিয় কৌতুক অনুষ্ঠানে দর্শককে হাসানোর বহুল ব্যবহৃত ছক হল ভারতী সিং, অর্চনা পূরণ সিং বা কুশা কপিলার মতো মহিলা বিদূষকদের ওজন নিয়ে পরিহাস করা।

যদিও ‘দম লাগাকে হাইসা’, ‘সাইজ জিরো’, ‘ফাটাফাটি’ বা ‘ডাবল এক্সেল’-এর মতো সিনেমায় মূল চরিত্রে ‘মোটা’ শরীরকে দৃশ্যমানতা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু গল্পগুলো আবর্তিত হয়েছে সৌন্দর্যের প্রথাগত আদর্শকে কেন্দ্র করেই, যেখানে মোটা মেয়েরা প্লাস অর্থাৎ মেয়েলি সৌন্দর্যের অনুমোদিত সীমার ‘অতিরিক্ত’ হিসেবে দৃশ্যমান হয়। পিতৃতন্ত্রের ছক অনুযায়ী, মেয়েরা সাধারণ গল্পের স্বাভাবিক চরিত্র হতে পারে না; তারা হয় কমিক রিলিফ, নয়তো বডি পজিটিভিটির বার্তাবাহক। প্রতিবন্ধী, মোটা, কালো মহিলাদের শরীর সবসময়ই মূলস্রোতের বাইরে রাখা হয়েছে, ব্যতিক্রম হিসেবে।

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রাসঙ্গিক থাকতে গিয়ে, সৌন্দর্য বজায় রাখতে গিয়ে অনেক মহিলা অভিনেতাই এমন ঝুঁকিপূর্ণ জীবনশৈলী বেছে নেন, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ শেফালী জরিওয়ালার মৃত্যু। বিভিন্ন পেশায় কাজ করা মেয়েদের দক্ষতাকে বিচার করার ক্ষেত্রে কীভাবে তাদের চেহারাকে বিচার্য ধরা হয় তার ভুরি ভুরি উদাহরণ আমাদের কাছে আছে। এমনকী, মহিলা রাজনীতিবিদদের ক্ষেত্রেও দেখা যায়, তাদের রাজনৈতিক বক্তব্য বা আদর্শকে খণ্ডন করার সবচেয়ে প্রচলিত উপায় হল তাদের চেহারা ও গায়ের রং নিয়ে কটাক্ষ করা।

ইতিহাসের কাল বেয়ে সৌন্দর্যের বদলাতে থাকা সংজ্ঞাকে বয়ে চলার দায় মেয়েদের উপরেই থেকে গেছে। ইউরোপীয় সমাজে করসেটের মধ্যে কোমরকে নির্দিষ্ট ইঞ্চিতে বেঁধে রাখা হোক, কিংবা মেদহীন ‘টোনড’ শরীর বা কাচের মতো ত্বক বানানোর রুটিন হোক। মেয়েদের সময়, অর্থ আর পরিশ্রমের বিনিময়ে সুন্দর হওয়ার প্রথা চলছে। কখনও গাজিয়াবাদের ঘটনাটির মতো অন্তরঙ্গ সম্পর্কে জুলুমবাজি করে, কখনও মিডিয়ার সুন্দর-অসুন্দরের উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতায়নের হাতছানি দিয়ে সুন্দর হওয়ার চাপ টিকিয়ে রাখা হয় মেয়েদের উপর।

এই চাপ থেকে মুক্তির উপায় কী? অনেকে বলবেন সৌন্দর্যের মানদণ্ডের বাইরে নিজেকে খোঁজা। তা একটা শুরু বটে। তবে একাকী কোনও একটি পথে এই মুক্তি সম্ভব নয়। শোষণের বঞ্চনার বাস্তবে গাঁথা ‘সৌন্দর্য’র সত্যিকে এড়িয়ে, তাকে অন্তরে-বাহিরে উৎখাত না করে ‘সুন্দর’কে আবিষ্কার করা কী আদৌ সম্ভব?