Robbar

পোকামাকড়ের থেকে আমরা কী কী শিখি?

Published by: Robbar Digital
  • Posted:September 13, 2025 5:52 am
  • Updated:September 13, 2025 3:49 pm  
learning harmony of life from neighboring insects part two

মনে পড়ে আদিবাসী পুরাণের কথা। যেখানে মাটিকে চাদরের মতো ঢেকে রাখে ঈশ্বর আকাশ। আর পৃথিবী সাজিয়ে তোলে কেঁচো, মাছ, কাঁকড়ার যৌথ সর্জন। মনে পড়ে ফসলের গান। লক্ষ কোটি বছরের প্রাচীন আবাদ। চেয়ে দেখি, পাতা-কাটা পিঁপড়ের দল সবুজ পাতার কণা মুখে নিয়ে চলে যাচ্ছে মাটির গভীরে। চিবিয়ে, মণ্ড বানিয়ে তার বুকে বুনে দিচ্ছে ছত্রাকের বীজ। ফসল। উদ্বৃত্তের সম্ভাবনাহীন ফসল। যুগ যুগ ধরে বহুর সঞ্চিত ক্ষুধা নিবৃত্ত করে চলা ফসল।

আলোকচিত্র: গৌরবকেতন লাহিড়ী

গৌরবকেতন লাহিড়ী

২.

‘লিটল থিংস দ্যাট রান দ্য ওয়ার্ল্ড’।

ক্ষুদ্র। অতি ক্ষুদ্র। তবু এ পৃথিবীর বিপুল কর্মচক্র চলেছে তাদের সম্মিলিত শ্রমের পুণ্যে। স্থিত জলদেশের ধুলোময়লা ঝেড়েমুছে কেউ ক্রমাগত জোগান দিয়ে চলেছে শরীরসম্মত জল। মাটির বুনট আলগা করে কারা যেন ভাঙিয়ে চলেছে ফসলের ঘুম। কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন এঁকে পৃথিবীকে সুজলা সুফলা করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে কেউ কেউ। কেউ-বা খাদ্য-খাদক হয়ে রক্ষা করে চলেছে বাস্তুতান্ত্রিক হিসেবের জটিল গণিত।

‘লিটল থিংস দ্যাট রান দ্য ওয়ার্ল্ড’

বসন্ত মৌমাছিদের অনন্ত জেব্রাঋতু। কৈশোর ফুরিয়ে আসা ফুলেদের বর্ণ-গন্ধের মায়াবিস্তারের যথাকাল। উপমহাদেশে মৌমাছিদের সঙ্গে এ দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছে প্রজাপতি, কিছু প্রজাতির মথ, মাছি, বোলতা, ভীমরুল আর বিটলেরা। এসময় একখানা মৌচাক খুঁজে পাশে বসে পড়া গেলে চমৎকার মনঃসংযোগ অভ্যাস হয়। অবিরত যাওয়া আসা দেখা। দেখা, মৌচাক গঠনের আশ্চর্য দৃশ্যকাব্য– একের বিন্দু বিন্দু শ্রমে বহুর সম্মিলিত স্বর্গরচনা। একটু একটু করে শরীর নিঃসৃত মোম দিয়ে গড়ে তোলা ছ’ কোনা কুঠুরির নিখুঁত বিন্যাস। এ দেখাটুকুই আমার সম্বল, এ দেখাটুকুই ‘মধু’।

বসন্ত মৌমাছিদের অনন্ত জেব্রাঋতু

দেখাই, শেখার প্রথম আবেশ। বেশ কিছুকাল হল, আমাদের দেখা, কৌতূহলের মোহময় সরলতার সীমা অতিক্রম করে শিখে নিয়েছে বেচারামের কূটদৃষ্টির ভিন্নতর পথ। শিখে নিয়েছে, কীভাবে মৌচাকের সূক্ষ্ম স্থান-ব্যবহারের সূত্র জেনে নিয়ে সামাল দেওয়া যায় নাগরিক বর্জ্য-বিস্ফোরণের ‘ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই ছোট সে তরী’-র হাহাকার। শিখে নিয়েছে, কীভাবে মৌচাকের গঠন-উপাদানের নীলাভ নকশা চুরি করে বানিয়ে ফেলা যায় পলকা ওজনের মহাশক্তিধর স্পেসক্রাফট। অথচ এ দেখার থেকে বহু দূরে দাঁড়িয়ে, আমায় বিস্মিত করে  সুজান বাত্রার দেখা সলিটারি মৌমাছির মৌচাক বানানোর লিঙ্গবৈষম্যহীন কর্মবিভাজন। বিস্মিত করে থমাস সিলির গবেষণা। মৌমাছির মীমাংসাতত্ত্ব। একটি বৃহৎ বাস্তুচ্যুত মৌমাছি দলের সম্ভাব্য বাসা নিয়ে মতানৈক্য ও সমাধান সূত্র বের করার পদ্ধতি। ভাষাহীন, শ্রুতিহীন একদল শ্রমিকের দেহলির সংকেত বিনিময়। কোনও ‘এক’-এর সিদ্ধান্ত নয়, বরং সরেজমিনে তদন্ত করে আসা শ্রমিকদলের বিতর্কসিদ্ধ সমাধান। যে সমবেত, গণতান্ত্রিক মীমাংসা পদ্ধতি সিলিকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছিল ‘ফাইভ হ্যাবিটস অফ হাইলি এফেক্টিভ গ্রুপস’।

ভাষাহীন, শ্রুতিহীন একদল শ্রমিকের দেহলির সংকেত বিনিময়। আলোকচিত্র: জর্ডান রিসক্যাম্প

কৈশোরে, আমাদের কলোনির কবিতা শুনিয়েছিলেন গোপালচন্দ্র। পান থেকে চুন খসবে না এমন দায়িত্ব পালনের শৃঙ্খলা– একযোগে ঘর নিকোনো থেকে ছেলেপিলেদের মানুষ করা; খাবার আনা থেকে ঘরদোর পাহারা দেওয়া। ‘ইউসোশ্যালিটি’। যার উদাহরণ দিতে গেলে একই সারিতে রাখা হয় উইপোকা, মৌমাছি আর পিঁপড়েদের। উচ্চমানের সমাজব্যবস্থা যাকে বলে। শ্রম, কর্ম, দায়িত্ব, সেবা আর বণ্টনের পরিশীলিত বিন্যাস। কলোনির কবিতা। ব্যক্তিগত নয়, যুগ যুগ ধরে চলে আসা সামগ্রিক অস্তিত্বের কবিতা, যৌথতার কবিতা। আশ্চর্য এই যে, যৌথ লক্ষ্যের উদ্দেশ্যে এই সমন্বয় এবং কালেকটিভ শ্রম ব্যবহারের পদ্ধতি নকল করে মানুষ তৈরি করেছে ‘সোয়ার্ম রোবোটিক্স’। এমন অপূর্ব সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মনে পড়ে উইলসনের সেই বিখ্যাত রসিকতাখানা– ‘কার্ল মার্ক্স কেবল সঠিক প্রজাতিটিকে চিনতে ভুল করেছিলেন।’ 

সামগ্রিক অস্তিত্বের কবিতা, যৌথতার কবিতা। আলোকচিত্র: বিবিসি আর্থ

যে জীবন ফড়িঙের, মশামাছি, প্রজাপতি, মথ কিংবা বোলতার– সে জীবন আমায় ‘সারভাইভাল’ নিয়ে ভাবতে শেখায়। জল, পাতা কিংবা ঘাসের আড়ালে, কখনও অন্ধকার গুহার মতো কুঠুরিতে ডিম রেখে চলে যায় বহুপ্রজ স্ত্রী-টি। রেখে যায় পাতা কিংবা মৃত পোকা– উত্তরাধিকার, স্তন্য– অপত্যের প্রথম আহার। তার আগে বহুক্ষণ ধরে চলে আঁতুড় রচনা, নিরাপত্তার আয়োজন। তবু জনয়িত্রীর এই অনাসক্ত চলে যাওয়া দেখে উদাসীনতার পাঠ শিখে নেওয়া চলে। আমি দেখি– মিঠে নিম গাছ খুঁজে চলেছে ঘন কৃষ্ণবর্ণ মরমন, ছোট মাকড়সা পুরে খোড়লের মুখ মাটি দিয়ে এঁটে দিচ্ছে প্রসূতি ওয়াস্প, পাতার উপরে বসে গর্ভাগ্র বেঁকিয়ে একটি করে ডিম অচেনা জলের বুকে ঠেলে দিচ্ছে রেড মার্স হক। একাকী ফড়িং। আমাকে বহুবার মুগ্ধ করেছে তার অতিকায় আঁখির সৌন্দর্য, চমৎকার উড়ানভঙ্গিমা। মুগ্ধ করেছে ডানার আলপনা। ওই সাবেক ইসলামি স্থাপত্যের জাফরির কারুকার্য দেখে বিস্মিত হয়েছি। তবু তার জল-স্থল-অন্তরীক্ষময় জীবনাবর্তন– পরিবর্তনের গূঢ় সত্য, গোপনে শিখিয়ে যায়নি কি? দুপুরের পুকুরের ধারে ফড়িঙের বসে থাকা দেখে একবার মনে পড়েছিল বাশোর হাইকু–

ঘন লাল মরিচের শুঁটি
দু’ পাশে দু’ খানি ডানা জুড়লেই
চকিতে ফড়িং উড়ে যাবে

যেন বহুশতবর্ষ আগে, দেশ-কাল-অবস্থার অজেয় পরিখা ভেঙে এক পতঙ্গের কাছে দৃষ্টি ভিক্ষা চেয়েছিল এ বৌদ্ধ শ্রমণ। যেন ওই স্থিতপ্রজ্ঞ চকিত গতির আবেশমুগ্ধ ক্ষণিকের শিশু। আরেকবার একটি মৃত ফড়িঙের দেহের উপর একখানি বুভুক্ষু মাছির গ্রাসলীলা দেখে দালির ছবির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল জীবনানন্দীয় বিষাদ। আমরা শিখে নিয়েছিলাম মৃত্যু। শিখে নিয়েছিলাম ক্ষয়ের প্রকৃত ব্যাকরণ। কালধর্মের সহজ নিঠুর পাঠ।

অতিকায় আঁখির সৌন্দর্য, চমৎকার উড়ানভঙ্গিমা

আমাদের শেখার পথ প্রযুক্তির চন্দ্রস্পর্শাভিলাষের দিকে বেঁকে গেছে বলে, গৌণ ফলের মাছি কারাভাজ্জিওর ছবি থেকে উঠে আসে নোবেলের আলোকবর্তিকায়, ল্যাব-র‍্যাট হয়ে। বোলতার বাস্তুক্রিয়া শিখে নিতে হয় আমাদের, তুলো আর লিনেনের, কাগজের বিকল্প হিসেবে। গুবরে পোকার থেকে জেনে নিতে হয় নক্ষত্রের গতিপথ। যৌগিক আঁখির থেকে ইমেজিং, সন্ধিল হাঁটুর থেকে রাবার টেকনোলজি, ডানার বিন্যাস থেকে ড্রোন, জটিল বিষের থেকে রোগের ওষুধ, গন্ধের সংকেত থেকে বায়ো-সেন্সর। জেনে নিতে হয় কীটনাশকের আয়ুধ। জেনে নিতে হয় গণহত্যার প্রকৌশল। জার্মানি থেকে পোয়ের্তো রিকো, ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকা, পেসিফিক থেকে আটলান্টিক। জেনে নিতে হয় সভ্যতা প্ররোচিত গণবিলুপ্তির অন্তক করণ। আহা প্রাণ। আহা সামান্য জীবন। পর্যাপ্ত মেধার অভাব জীবজগতকে শিখিয়েছে ইন্দ্রিয়ের ত্বরিত ব্যবহার, অভিযোজনের দীর্ঘরাত্রির অধ্যাবসায়। আর ইন্দ্রিয়ের পুঁজিহীন মেধার প্রাচুর্য মানুষের সভ্যতাকে ঠেলে দিয়েছে ক্রমশ আত্মসর্বস্বতায়, ঘৃণার পুতিগন্ধময় একাকিত্বে।

তবু তার জল-স্থল-অন্তরীক্ষময় জীবনাবর্তন

ভয় করে। খবরের কাগজে পড়ি, কৃত্রিম পরাগমিলনের জন্য খুদে খুদে ড্রোন বানিয়েছে সভ্য মানুষ। খাতায়-কলমে হিসেব কষে তারা বের করেছে মৌমাছি পালনের চেয়ে অনেক সস্তা সেই খুদে ড্রোন পোষা। অর্থাৎ মৌমাছিদের ছুটি! ভয় করে। শুনি, শিগগির আবিষ্কৃত হবে মৃতসঞ্জীবনী– জৈব বর্জ্যের ম্যানুয়াল ডিকম্পোজিশন প্রযুক্তি। অর্থাৎ মৃতভুকদের ছুটি! ভয় করে। আমি আরণ্যক মানুষের দেওয়া জীবনের সংজ্ঞা মনে মনে বীজমন্ত্রের মতো গায়ে জড়িয়ে নিই। মনে পড়ে আদিবাসী পুরাণের কথা। যেখানে মাটিকে চাদরের মতো ঢেকে রাখে ঈশ্বর আকাশ। আর পৃথিবী সাজিয়ে তোলে কেঁচো, মাছ, কাঁকড়ার যৌথ সর্জন। মনে পড়ে ফসলের গান। লক্ষ কোটি বছরের প্রাচীন আবাদ। চেয়ে দেখি, পাতা-কাটা পিঁপড়ের দল সবুজ পাতার কণা মুখে নিয়ে চলে যাচ্ছে মাটির গভীরে। চিবিয়ে, মণ্ড বানিয়ে তার বুকে বুনে দিচ্ছে ছত্রাকের বীজ। ফসল। উদ্বৃত্তের সম্ভাবনাহীন ফসল। যুগ যুগ ধরে বহুর সঞ্চিত ক্ষুধা নিবৃত্ত করে চলা ফসল।

অভিযোজনের পুণ্য

ভাবি সভ্যতার কথা। ইনকা নয়, মিশর নয়, গ্রিক বা রোমান উত্থান-পতনের রোমহর্ষক মহাকাব্য নয়। আদিম পিঁপড়ে কলোনির কথা। কুঠুরি ঘর, কুঠুরি বারান্দা, সুড়ঙ্গ পথ; শিশুপিঁপড়ের পালন-পোষণের লেবাররুম থেকে খাদ্য সঞ্চয়ের বিপুল স্টোরেজের কথা। ভাবি আর আশ্চর্য হই– খাবার আনার পথশ্রম বাঁচানোর জন্য তারা ব্যবহার করে সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম পথটি। অথচ দূরত্ব পরিমাপের কোনও বোধ তাদের নেই, নেই তৃতীয় মাত্রার ধারণা। আছে অভিযোজনের পুণ্য, ফেরোমন। গন্ধ সংকেত। কোন পথে যেতে হবে, কোন কাজ করতে হবে, কোন পথে বিপদ– এ সবের জন্য গোটা কুড়ি সাংকেতিক গন্ধ। আর আছে যৌথ শৃঙ্খলা। বেলাইন করার জিনগত নিষেধাজ্ঞা।

দালির ছবির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল জীবনানন্দীয় বিষাদ

সভ্য মানুষ শৃঙ্খলা শেখে না, যা শেখে তার পোশাকি নাম ‘অ্যান্ট কলোনি অপটিমাইজেশন’। নকলনবিশি বিদ্যে দিয়ে গড়ে নেয় ভ্রাম্যমান সেলসম্যানদের যাত্রাপথ, গড়ে নেয় মেশিন লার্নিং থেকে সিকোয়েন্স লার্নিং। গড়ে নেয় ‘ন্যাচারালিস্টিক ফ্যালাসি’র সাম্প্রতিকতম মডেল। গড়ে নেয় বায়োমিমিক্রির আশ্চর্য লীলা: বিশেষ ক্ষমতাটিকে বেছে নাও। তারপর অনুকরণ করো। স্পিসিজ থেকে সুপার-স্পিসিজ হয়ে ওঠো। প্রজাপতির ডানা থেকে শিখে নাও সোলার প্যানেলের নকশা; ব্যবহার করো বারুদগর্ভ ট্যাঙ্কারের ছাদে। পাহাড়ি বিটলের থেকে শিখে নাও কীভাবে সাজাতে হবে করাতের শ্বদন্ত; যাতে আরও সুনিপুণ দক্ষতায় কাটা যায় গাছ। টাইগার মথের থেকে শিখে নাও কীভাবে এড়ানো যাবে সাউন্ড নেভিগেশন; গোপনে চালনা করো যুদ্ধবিমান।

সাবেক ইসলামি স্থাপত্যের জাফরির কারুকার্য

ভয় করে। শিক্ষার ভয়। সভ্যতার ভয়। মনে পড়ে ‘অপারেশন ক্রসরোডস’। মনে পড়ে, কানাডা সরকারকে পঞ্চাশ হাজার বর্গমাইল বনভূমি ছেড়ে দিয়েছিল আদিবাসীরা। পঞ্চাশ হাজার বর্গমাইল– ছ’ কোটি বাইসনের চারণক্ষেত্র– যা নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল পরবর্তী মাত্র ১০০ বছরে। চামড়ার জন্য, লোভনীয় সুস্বাদু জিভের মাংসের জন্য। জিভ কেটে, ছাল ছাড়িয়ে নিয়ে তাদের মৃতদেহ ফেলে ছড়িয়ে রেখে গিয়েছিল সভ্যতা। বিচ্ছিন্ন, একাকী মানুষের সভ্যতা। সেই রক্তভুক সভ্যতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মনে পড়ে, ব্ল্যাকফুট ইন্ডিয়ানদের সেই প্রচলিত কথাখানা–

‘জীবন হল রাত্তিরে জোনাকির দপ করে জ্বলে ওঠা। জীবন হল শীতের সময়ে বাইসনের নিঃশ্বাস। জীবন হল একটু ছায়া, যা ঘাসজমি পেরিয়ে যেতে যেতে সূর্যাস্তে হারিয়ে যায়।’

ভয় করে। ভাবি– এ শিক্ষার পাপ বয়ে আর কতটুকু ঘাসজমি পেরতে পারব!

পড়ুন: পোকামাকড়ের থেকে আমরা কী কী শিখি? প্রথব পর্ব