সুভাষ মুখোপাধ্যায় চেয়েছিলেন কথাগুলো নিজের পায়ে দাঁড়াক, মানে হাঁটতে শিখুক। আর এ-তো সবারই জানা, সারা দিন সারা দুনিয়া জুড়ে প্রতি মুহূর্তে যা জন্মাচ্ছে তার নাম ‘কথা’। এমনকী নৈঃশব্দ্যও একরকম কথা। ‘সেইরকম ভাবেও কি আমরা কথা বলতে পারি না, সুমন্ত?’ পারি না-পারি শিখতে দোষটা কোথায়!
ঈশপের গ্রিক সরল উপকথা হোক বা ভারতের জটিল কাহিনির পঞ্চতন্ত্র– শিয়াল বারবার ফিরে আসে। কখনও চাতুর্যের মুখোশ পরে, কখনও রাজনীতির মঞ্চে উপদেষ্টার আসনে বসে। দুটোতেই শিয়াল আমাদের শেখায় এক চিরন্তন সত্য: শক্তি সবসময় জিততে পারে না, বুদ্ধিই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে।
হেলিকপ্টার এবার উপরে উঠল। এবং পাহাড়ের চারপাশে ঘুরতে লাগল। এটা এমনি পাক খাওয়া নয়, প্রদক্ষিণ। সাতবার হেলিকপ্টারটা তুমুল শব্দে জঙ্গলেশ্বরীর থান প্রদক্ষিণ করল। মন্ত্রীর পুজো দেওয়া শেষ।
সিকিমের পথের ধারে পাথরের ওপর খোদাই করা একটা বুদ্ধমূর্তি দেখেছিলাম একবার। শ্যাওলায় জীর্ণ, ফাটল ধরেছে গায়ে, কিন্তু সেই একরত্তি ফাটলের মধ্যে থেকেও মাথা তুলে ফুটে রয়েছে লাল টুকটুকে উদ্ধত একটি গোলাপ। ভাঙা বিগ্রহের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ওই ছিল প্রকৃতির জীবন্ত প্রতিবাদ।
সময় জীবনানন্দের বাহুবন্ধনে অন্যরকম ভাবে ধরা দিল। এ রতিশয্যা বক্র-বাস্তবতার। কী আশ্চর্য প্রতিভায় যে জীবনানন্দ বুঝতে পারলেন, প্রচলিত সাহিত্যের ছাত্র হয়েও, গত শতাব্দীর ঠিক প্রথম দশকটিতেই গ্যালিলিও, নিউটন, যেমন কৃষ্ণদ্বৈপায়ন ব্যাস বা হোমার– পরিত্যক্ত হয়েছেন মহাকাব্যের সম্মানে।
উৎপল দত্তকে নিয়ে তথ্যচিত্র, কিন্তু বামফ্রন্ট সরকার অর্থসাহায্য করল না! বিস্মিত হয়েছিলাম। কিন্তু বিস্মিত হননি উৎপল দত্ত। উৎপলদা বললেন, ‘ওরা করবে না। ট্রটস্কি আর চারু মজুমদারকে এখনও ভুলতে পারেনি।’ তখন বুঝিনি। ছবিটা করতে গিয়ে পরিষ্কার হল।
দোলনা শুরু হওয়ার প্রায় বছর ১৫ আগে লীলা মজুমদার আশা করেছিলেন সমাজে এরকম ব্যবস্থা হবে যেখানে মায়েরা বাচ্চাদের রেখে চাকরি করতে যেতে পারবেন নিশ্চিন্তে। দোলনার ক্রেশের ৫০-এর বেশি বছর কেটে গিয়েছে। তবে কলকাতা শহরে এরকম ব্যবস্থা এখনও বিশেষ নেই।
ভারতীয় বিদ্যাচর্চা পুরোপুরি গুরু-শিষ্য কেন্দ্রিক। যার নিয়ম হল গুরুকে একাগ্রতার সঙ্গে শোনা, পূর্ণভাবে সমর্পণ, গুরু উপদেশে পূর্ণ বিশ্বাস, আর গুরুদত্ত নিয়ম ও পদ্ধতি অনুসরণ করা। এই ভাবেই ধীরে ধীরে বিদ্যার্থী মনের চেতন ও অবচেতন স্তরগুলোকে অতিক্রম করে বিদ্যার যথার্থ রূপ লাভ করতে সক্ষম হয়।
নানা নামের পুকুর নানা যুগের স্মৃতি বহন করে চলেছে। এমন অনেক জনজাতি ছিল, যারা গ্রাম থেকে লুপ্ত, যেমন– তুরুক পুকুর। মধ্যযুগের তুর্কিদের স্মৃতি উথলে ওঠে। কিংবা গর্দানমারীর পুকুর। গর্দানমারী নামক ঠগী বা ঠ্যাঙ্গারে দস্যুরা অতীতে এই পুকুরের পাড়ে তাদের আড্ডা গড়ে তুলেছিল।
স্ত্রী অ্যালেজান্দ্রা বিকেলের আলোয় তার ছায়ার টেবিলের কাছে চাইল ভাষা ও ভাব– একটি ভালবাসার চিঠির জন্যে। তার স্বামীর ৭৬তম জন্মদিনে এই চিঠিই হল তার একমাত্র উপহার, তার পাহাড়ের মতো স্থির, রক-সলিড স্বামীর জন্য!
A Unit of: Sangbad Pratidin Digital Private Limited. All rights reserved