শান্তিদা কান্ত রায় মস্কোয় বসবাসকারী পুরনো ভারতীয়দের মধ্যে একজন। অল্পবয়স থেকে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। ১৯৫২ সালে প্রথম মস্কোয় এসেছিলেন শ্রীরামপুরের কমিউনিস্ট নেতা পাঁচুগোপাল ভাদুড়ির চিকিৎসাসূত্রে– তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হয়ে। সঙ্গে ছিল দেশে অর্জিত ডাক্তারি ডিগ্রি। এখানেই প্রেম, কিন্তু পরিণয় আরও কয়েক বছর পরে– খ্রুশ্শ্যোভের আমলে। বিবাহের আইন-কানুন খানিকটা শিথিল হলে রুশি বান্ধবীর আমন্ত্রণে ফিরে এসে মস্কোতেই পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে থাকেন।
৩০.
মস্কোয় বসবাসকারী আরও দু’-একজন ভারতীয়
মস্কোর হাসপাতালে কর্মরত একমাত্র ভারতীয় ডাক্তার– সম্ভবত একমাত্র বিদেশি ডাক্তারও– ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির মস্কো শাখার সম্পাদক ডাঃ শান্তি রায়। তখনকার দিনে সোভিয়েত ইউনিয়নের কোনও হাসপাতালে কর্মরত বিদেশি ডাক্তার অবশ্যই ব্যতিক্রমী ঘটনা। রাশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতিতে, এই বিশৃঙ্খলার মধ্যেও তিনি কিন্তু মোটেই দিশেহারা নন, দেশে ফিরে যাওয়ার কথা আদৌ ভাবছেন না। তাঁর কথায়, সব কিছু মানিয়ে নিতে হয়, নিজেই দেখবেন, আর খারাপ লাগছে না।
তিনিও মস্কোয় বসবাসকারী পুরনো ভারতীয়দের মধ্যে একজন। অল্পবয়স থেকে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। ১৯৫২ সালে প্রথম মস্কোয় এসেছিলেন শ্রীরামপুরের কমিউনিস্ট নেতা পাঁচুগোপাল ভাদুড়ির চিকিৎসাসূত্রে– তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক হয়ে। সঙ্গে ছিল দেশে অর্জিত ডাক্তারি ডিগ্রি। এখানেই প্রেম, কিন্তু পরিণয় আরও কয়েক বছর পরে– খ্রুশ্শ্যোভের আমলে। আগেই বলেছি ’৫২ সাল পর্যন্ত বিদেশিদের সঙ্গে সে দেশের মানুষের বিবাহের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। আইন-কানুন খানিকটা শিথিল হলে রুশি বান্ধবীর আমন্ত্রণে ফিরে এসে মস্কোতেই পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে থাকেন। স্ত্রী, দুই কন্যা আর নাতিকে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার।
উনিও মস্কোর সকলের দাদা। পুরো নাম শান্তিদা কান্ত রায়– তাই অমনিতেই শান্তিদা; তার ওপর মিষ্টভাষী, বন্ধুবৎসল ও পরোপকারী। মস্কোর বাঙালি মহলেই নয়, ভারতীয়দের মধ্যেও পরিচিত। বলাই বাহুল্য, জনপ্রিয়। তাঁর বাড়িতে অবশ্য তেমন একটা আড্ডা জমত না, কিন্তু কোথাও আড্ডা জমলে সময় পেলে উনি ঠিক চলে আসতেন। আমার বাড়িতেও অনেকবার এসেছেন। গানের গলাও ছিল ভারি মিষ্টি। তবে গানের সংখ্যা গুটিকয়েকের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। মনে হয় দেশ ছাড়ার পরে নতুন আর কিছু যোগ করতে পারেননি। বাঙালি রান্না পেলে কথা নেই– কবজি ডুবিয়ে ডাল-ভাত মেখে এমনভাবে খেতেন যে মনে হত যেন ওই খাবারেই তিনি বাড়িতেও অভ্যস্ত। শৌখিন খাবার ততটা নয়, বেশি পছন্দ করতেন ডাল, ভাত, মাছের ঝোল– আর ভাত চাই মোটা চালের– তা না হলে নাকি পেট ভরল বলে মনেই হয় না। অবশ্য মস্কোতে সরু চাল এমনিতেই কদাচিৎ মিলত। চটকে না খেলে জুত পেতেন না।
শান্তিদার পেশাটা অন্তত আমাদের দেশে রীতিমতো লোভনীয়– দেশে থাকলে অনেক টাকাপয়সা করতে পারতেন। কিন্তু পোড়া সমাজতন্ত্রে ওই জীবিকায় পেটে-ভাতে থাকা যায়, কলাটা মূলোটা মেলে– এর বেশি কিছু নয়। বিলাসিতা চলে না। এছাড়া আরও অনেক হ্যাপা আছে– রোগীর ভাল-মন্দ কিছু হলে রাত জেগে বই পড়ে বিশাল বিশাল রিপোর্ট লিখতে হয়। ইদানীং বাজার অর্থনীতির কল্যাণে মাইনে তিনশো থেকে বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি– ওভারটাইম নিয়ে অবশ্য। স্ত্রীও রোজগার করেন ওই পরিমাণ।
তিনি ‘যুব কমিউনিস্ট লিগের’ সদস্য ছিলেন, পরে কমিউনিস্ট পার্টির। একসময় কমস্মোল প্রাভ্দার সম্পাদক দপ্তরের কর্মী ছিলেন, এখন ‘ইয়ং গার্ড’ প্রকাশনালয়ের কর্মী।
বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবারের অবস্থার উন্নতি হয়েছে এমন নয়– বরং অবনতি হয়েছে, খরচ বেড়ে গেছে সাত আট গুণ। ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
আগে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা পড়াশুনা করতে এদেশে এলে তাদের কমিউনিজমে দীক্ষা দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগে যেতেন। কাজের পর সন্ধ্যাবেলা ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে মার্কসীয় পাঠচক্র পরিচালনা করতেন। পার্টি থেকে এই দায়িত্বই তাঁর ওপর ন্যস্ত হয়েছিল। পার্টির নেতারা চিকিৎসার জন্য এদেশে এলে তাঁদের দেখভাল তিনি করতেন। এখানে তাঁদের কারও মহাপ্রয়াণ ঘটলে শোকসভায় তাঁর ভাষণদান বাঁধা। চাকরি এমনই যে স্বদেশ যাওয়া কদাচিৎ হয়ে উঠত– টিকিট কেনার মতো সংস্থান নেই– কনফারেন্স ইত্যাদিতে যোগদানের জন্য পার্টির কেনা টিকিটে মাঝেমধ্যে দেশে যাওয়ার সুযোগ ঘটত। ইদানীং সেই সুযোগও নেই। পেনশন পাওয়ার বয়স অনেক আগে পেরিয়ে গেছে।
কর্তাদের দয়ায় আজও বহাল আছেন চাকরিতে– তবে টেনেটুনে আর বছর খানেক। তারপর?
মস্কোর পুরনো ভারতীয়দের মধ্যে একজন বর্ণময় ব্যক্তিত্ব ‘প্রগতি’র তামিল বিভাগের অনুবাদক সোমসুন্দরম্। তাঁর সম্পর্কে নামে উল্লেখ না করে কবি সমর সেন তাঁর স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘The first Indian translator in own batch to marry a Russian is a South Indian, a gay ex-army chap, proficient in Hindi and fond of quoting Sanskrit slokas…’ (অপ্রকাশিত অগ্রন্থিত সমর সেন (২) পৃ. ৯৬)।
হিন্দি এতটাই ভাল জানতেন যে, প্রথমে তিনি ‘বিদেশী ভাষায় সাহিত্য প্রকাশনালয়’-এর হিন্দি বিভাগের অনুবাদক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। কেননা তখন পর্যন্ত সেখানে কোনও তামিল বিভাগ ছিল না। এসেছিলেন পাঁচের দশকের গোড়ার দিকে। অসাধারণ পড়িত ব্যক্তি। কালিদাসের ‘মেঘদূত’, ‘শকুন্তলা’, ‘কুমারসম্ভব’ থেকে বিশুদ্ধ সংস্কৃত উচ্চারণে অনর্গল আবৃত্তি করতে পারতেন। শোনা যায়, বার্লিন থেকে মস্কোয় এসেছিলেন, বার্লিনে নাকি তিনি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্যতম সচিব ছিলেন। কিন্তু সে বিষয়ে তাঁর নিজের মুখ থেকে কখনও কিছু বলতে শোনা যায়নি। মস্কোর ভারতীয় জনসমাজের সমাবেশে কালিদাসের কাব্যের শ্লোক আবৃতি করে তিনি সকলকে মুগ্ধ করতেন। মস্কোয় আটের দশকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর জীবনাবসান ঘটে। শেষদিকে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন না। আলাদা একটা ফ্ল্যাট নিয়ে একাই থাকতেন। আমার কেবলই মনে হত উনি কোনও গোপন রহস্য জানেন। হয়তো অনেক কিছুই তাঁর বলার ছিল। তবে উনিও ভারতীয় নাগরিকই ছিলেন।
অনেকের ধারণা, ভারতীয় তো বটেই, বিদেশিরা, যারা কোনও সোভিয়েত নাগরিকের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ বা দীর্ঘকাল ওদেশে বসবাস করে আসছেন, তারা সোভিয়েত নাগরিক। কিছু ঘটনা একেবারেই তা নয়। সাধারণভাবে কর্মসূত্রে সোভিয়েত ইউনিয়েন বসবাসকারী বিদেশিরা সকলেই নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য এক ধরনের অস্থায়ী পারমিট (রেজিস্ট্রেশন) বা অনুমোদন পত্রের অধিকারী হতেন, যার ভিত্তিতে পরিচয়পত্র বা প্রমাণপত্রও পেতেন, মেয়াদ শেষ হলে, সরকারের আপত্তি না থাকলে, যথাসময়ে তার নবীকরণও হত। সাধারণত রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা প্রার্থীরাই সোভিয়েতে নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারতেন। মা-বাবার একজন কেউ সোভিয়েত নাগরিক হলে তাঁদের সন্তান-সন্ততিও সোভিয়েত নাগরিক বলে গণ্য হত। সেক্ষেত্রে আবার অভ্যন্তরীণ পাসপোর্ট নামে প্রচলিত পরিচয়পত্রে পিতৃকূল বিদেশি হলে জাতিসত্তা (nationality) হিসেবে, বিদেশি পরিচিতিটিও লেখা যেত: পিতৃপরিচয়ে ভারতীয় হলে ‘ভারতীয়’ বলেও উল্লেখ করা যেত– তা সে ‘ভারত’ নামে কোনও ভূখণ্ড বা রাজ্য সোভিয়েত ইউনিয়নের রাজ্যসীমার অন্তর্ভুক্ত না-ই বা হল!
প্রসঙ্গত, সোভিয়েত ইউনিয়নে বসবাসকারী প্রথমদিককার ভারতীয়দের কারও কারও পরিচয়পত্রে ভুলবশত হোক বা অন্য যে কারণেই হোক জাতি পরিচয়ে ‘ইন্ডিয়ান’ বা ‘ভারতীয়’-র জায়গায় ‘ইন্দুস্’ অর্থাৎ ‘হিন্দু’ শব্দটিরও উল্লেখ পেয়েছি। পরবর্তীকালে অবশ্য তা সংশোধিত, কিন্তু রুশিদের মুখে ‘ভারতীয়’ অর্থে ‘ইন্দুস’ শব্দের ব্যবহার এখনও অনেক সময় শুনতে পাওয়া যায়।
বিদেশি বংশোদ্ভূত সোভিয়েত পাসপোর্টধারীদের আরও একটি পরিচয় বহন করতে হত: সেটি রুশদেশে প্রচলিত, পরবর্তীকালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বত্র প্রচলিত প্রথানুযায়ী নাম ও পদবির মধ্যস্থলে পিতৃনামের উল্লেখ। অবনী মুখার্জীর সোভিয়েত পাসপোর্টে নাম ছিল অবনীন্দ্রনাথ ত্রৈলোক্যবিচ (ত্রৈলোক্য বা ত্রৈলোক্যনাথের পুত্র) মুখার্জী, আবার হীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সোভিয়েত পাসপোর্টে তাঁর পুরো নাম ছিল বীরেন্দ্রনাথ অঘোরনাথোবিচ (অর্থাৎ অঘোরনাথের পুত্র) চট্টোপাধ্যায়। বড়ই জটিল, দুরুচ্চার্য…. – যেমন নাম তেমনি পিতৃগম, পরন্তু পদবি তো বটেই। তাঁর নাম তাই সে দেশে তাঁর ঘনিষ্ঠমহলে অতি সংক্ষিপ্ত ‘চট্টো’-তে পরিণত হয়।
এদের মধ্যে দু’-একজন আবার তাঁদের আসল নামটাই পুরোপুরি পাল্টে ফেলতেন। মস্কোয় বসবাসকারী একজন বাঙালি বংশোদ্ভূত সোভিয়েত নাগরিক আবার তাঁর সোভিয়েত পরিচয়পত্রে নিজের নাম ও পদবি তো পাল্টালেনই, এমনকী পিতৃপরিচয়দ্যোতক অংশটি পর্যন্ত পাল্টে জ্যাক বেঙ্গলবিচ (অর্থাৎ বঙ্গসন্তান) লিট্টন নামে পরিচিত হলেন।
সোভিয়েত নাগরিকত্ব আমাদের সময়কার কোনও ভারতীয়েরই ছিল না– এমনকী, গোপেন চক্রবর্তীরও ছিল না। সেই সময়কার জীবিতদের মধ্যে একমাত্র একজনই– ওই জ্যাক লিট্টনই ছিলেন এর ব্যতিক্রম।
তাঁর সম্পর্কে কবি সমর সেন ১৯৫৮-র অক্টোবরে তাঁর স্মৃতিকথায় লিখছেন: Another Indian, a mid-twenties communist, has been here for over 25 years, but he still retains his Chittagong accent and his longing for India. If he could at least visit the country once. (His came is difficult because he is now a Russian Citizen). (অপ্রকাশিত অগ্রন্থিত সমর সেন, ২য় খণ্ড, পৃ. ৯৭)।
আরও স্পষ্ট করে লিখেছেন ওই একই সময়ে মস্কোতে অনুবাদক হিসেবে কর্মরত কামাক্ষীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী-রেখা চট্টোপাধ্যায় তাঁর মস্কোর স্মৃতিকথায়: “একদিন সকালে এক ভদ্রলোক দেখা করতে এলেন। ছোটখাটো কালো চেহারা। নাম বললেন জ্যাক লিটন। জ্যাক লিটন ওর ছদ্মনাম। আসল নাম হরেন্দ্রনাথ দত্ত। উনি চট্টগ্রামের লোক। টেররিস্ট দলের। তখন ধরপাকড় চলছিল। উনি কি করে যেন হিন্দুকুশ পেরিয়ে মস্কো এসে পৌঁছান। তারপর আর দেশে ফেরেন নি। হরেনবাবু বললেন, ‘আমার মা আছেন দেশে, দেখতে ইচ্ছে হয়।’ ‘এখন তো অনেক সুবিধে হয়ে গেছে একবার যান না কেন?’ ‘না আর যাব না। আমি এখন সোভিয়েত নাগরিক। বিয়েও করেছি রুশ মহিলাকে। ছেলেপিলেও আছে। দেশের লোক দেখলে আলাপ করতে ইচ্ছে হয়। তাই ছুটে ছুটে আসি।’ আমরা বললাম, ‘আমাদের সঙ্গে খেয়ে যান।’ উনি বললেন, ‘আরেক দিন খাব আজ যাই।’ আর কিন্তু আসেন নি উনি।” (রেখা চট্টোপাধ্যায়: স্মৃতিরেখার স্মৃতির ঝাঁপি, পৃ. ১০০)।
নামে অবশ্য তিনি একটু ভুল করেছেন: আসল নাম হীরেন্দ্রলাল দত্ত। আর জ্যাক লিট্টন তাঁর ছদ্মনামও ঠিক নয়– পরিবর্তিত নাম। পুরো নাম জ্যাক বেঙ্গলবিচ লিট্টন। বোঝা যাচ্ছে, তিনের দশকের গোড়ার দিকে কোনও এক সময় তিনি রাশিয়ায় এসেছিলেন। যতদূর শুনেছি টেররিস্ট আন্দোলনের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন, পরবর্তীকালে ওদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ লাভ করেছিলেন কি না জানা নেই। তবে পাঁচ-ছয় দশকেও সোভিয়েত ইউনিয়নে, বিশেষত মস্কোতে বসবাসকারী কোনও কোনও বাঙালির সঙ্গে তাঁর কিঞ্চিৎ যোগাযোগ ছিল: ১৯৬৬ সালে ননী ভৌমিক ও শুভময় ঘোষের সম্পাদনায় মস্কোর ‘সোভিয়েত এনসিক্লোপেদিয়া’ প্রকাশালয় থেকে যে রুশ-বাংলা অভিধান প্রকাশিত হয়, তিনি তার সংকলক ছিলেন। এছাড়া ১৯৫৬ সালে বাংলা থেকে রুশ ভাষায় রবীন্দ্রনাথের ‘রাশিয়ার চিঠি’র প্রথম যে অনুবাদ মস্কোর গস্পলিত্ইজ্দাত প্রকাশ করেছিলেন (অনুবাদ: মার্গারিতা কাফিতিনা) তিনি তার সম্পাদকও ছিলেন।
তিনি সে দেশের কোনও এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি.লিট. প্রফেসর– তবে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং কোন বিষয়ের, তা জানা নেই। মনে হয় পরবর্তীকালে ভারতীয়দের সঙ্গে তাঁর সংযোগ কোনও কারণে ক্ষীণ হয়ে এসেছিল। আমাদের সময়েও তিনি জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
…পড়ুন রুশকথা-র অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ২৯। পেরেস্ত্রৈকার শুরু থেকেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন গোপেনদা
পর্ব ২৮। দেশে ফেরার সময় সুরার ছবি সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পাননি গোপেনদা
পর্ব ২৭। বিপ্লবের ভাঙা হাট ও একজন ভগ্নহৃদয় বিপ্লবী
পর্ব ২৬। ননী ভৌমিকের মস্কোর জীবনযাত্রা যেন দস্তইয়েভস্কির কোনও উপন্যাস
পর্ব ২৫। ননীদা বলেছিলেন, ডাল চচ্চড়ি না খেলে ‘ধুলোমাটি’র মতো উপন্যাস লেখা যায় না
পর্ব ২৪। মস্কোয় শেষের বছর দশেক ননীদা ছিলেন একেবারে নিঃসঙ্গ
পর্ব ২৩। শেষমেশ মস্কো রওনা দিলাম একটি মাত্র সুটকেস সম্বল করে
পর্ব ২২। ‘প্রগতি’-তে বইপুথি নির্বাচনের ব্যাপারে আমার সঙ্গে প্রায়ই খিটিমিটি বেধে যেত
পর্ব ২১। সোভিয়েতে অনুবাদকরা যে পরিমাণ অর্থ উপার্জন করত, সে দেশের কম মানুষই তা পারত
পর্ব ২০। প্রগতি-র বাংলা বিভাগে নিয়োগের ক্ষেত্রে ননীদাই শেষ কথা ছিলেন
পর্ব ১৯। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় নাকি খুব ভালো রুশভাষা জানতেন, প্রমথনাথ বিশী সাক্ষী
পর্ব ১৮। লেডি রাণু মুখার্জিকে বাড়ি গিয়ে রুশ ভাষা শেখানোর দায়িত্ব পড়েছিল আমার ওপর
পর্ব ১৭। একদিন হঠাৎ সুভাষদা আমাদের বাড়ি এসে উপস্থিত ফয়েজ আহমেদ ফয়েজকে নিয়ে
পর্ব ১৬। মুখের সেই পরিচিত হাসিটা না থাকলে কীসের সুভাষ মুখোপাধ্যায়!
পর্ব ১৫। রুশ ভাষা থেকেই সকলে অনুবাদ করতেন, এটা মিথ
পর্ব ১৪। মস্কোয় ননীদাকে দেখে মনে হয়েছিল কোনও বিদেশি, ভারতীয় নয়
পর্ব ১৩। যিনি কিংবদন্তি লেখক হতে পারতেন, তিনি হয়ে গেলেন কিংবদন্তি অনুবাদক
পর্ব ১২। ‘প্রগতি’ ও ‘রাদুগা’র অধঃপতনের বীজ কি গঠনপ্রকৃতির মধ্যেই নিহিত ছিল?
পর্ব ১১। সমর সেনকে দিয়ে কি রুশ কাব্যসংকলন অনুবাদ করানো যেত না?
পর্ব ১০। সমর সেনের মহুয়ার দেশ থেকে সোভিয়েত দেশে যাত্রা
পর্ব ৯। মস্কোয় অনুবাদচর্চার যখন রমরমা, ঠিক তখনই ঘটে গেল আকস্মিক অঘটন
পর্ব ৮: একজন কথা রেখেছিলেন, কিন্তু অনেকেই রাখেননি
পর্ব ৭: লেনিনকে তাঁর নিজের দেশের অনেকে ‘জার্মান চর’ বলেও অভিহিত করত
পর্ব ৬: যে-পতাকা বিজয়গর্বে রাইখস্টাগের মাথায় উড়েছিল, তা আজ ক্রেমলিনের মাথা থেকে নামানো হবে
পর্ব ৫: কোনটা বিপ্লব, কোনটা অভ্যুত্থান– দেশের মানুষ আজও তা স্থির করতে পারছে না
পর্ব ৪: আমার সাদা-কালোর স্বপ্নের মধ্যে ছিল সোভিয়েত দেশ
পর্ব ৩: ক্রেমলিনে যে বছর লেনিনের মূর্তি স্থাপিত হয়, সে বছরই ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার সূচনাকাল
পর্ব ২: যে দেশে সূর্য অস্ত যায় না– আজও যায় না
পর্ব ১: এক প্রত্যক্ষদর্শীর চোখে রাশিয়ার খণ্ডচিত্র ও অতীতে উঁকিঝুঁকি