মেস রাতে ঘুমোয় না। এ আসলে পুরোপুরি সত্যি নয়, তবে, ৯০ শতাংশ খাঁটি। তবে মেসের ক্ষেত্রেই তা অপরাধ গণ্য কেন হবে? এই যে মুম্বইয়ের মতো শহর রাতে ঘুমোয় না বলে প্রশংসা কুড়োয়, সৃষ্টিশীল মানুষরা সব রাত জেগে অনির্বচনীয় মুহূর্ত আবিষ্কার করেন বলে আশ্চর্য হই আমরা, এই যে প্রশাসনিক প্রধানরা রাতে মাত্র একপোয়া ঘুমোন ভেবে শিহরিত হই, তার বেলা? ঘুমের শিশি শুধু মেসই ভাঙে! কেউ প্রশ্ন করতেই পারেন, রাত জেগে কোন মহাভারত মেসে রচিত হয়? আমাদের ধারণা, মেসকে সে দায়িত্ব দিলে ভারতের মহা অসুবিধা কিছু হত না।
গ্রাফিক্স: দীপঙ্কর ভৌমিক
১৭.
মেসবাড়ি বাড়ি নয়– এ আসলে এক ধরনের চিংড়ি-মাছ-বিতর্ক। তাতে কার কোন উদ্দেশ্য পূরণ হয় জানা নেই, তবে মালাইকারি তো ছাড়, আলু-পেঁয়াজ দিয়ে চিংড়ির ছাপোষা তরকারিরও কোনও বিকল্প নেই। মেসবাড়ির-ও। আমার ধারণা, শহুরে জীবন নিজস্ব ইনসিকিওরিটির কারণেই মেস-কে দুচ্ছাই করে! গ্রাম যত ভাঙে শহর তত ভরভরন্ত। এই যে খেলাটা বহুকাল চলছে, শহরের এই যে কুহক, তার মধ্যে মেস মূর্তিমান দ্রোহ। মেসের জীবন শহরের বিচ্ছিন্নতাকে স্বীকার করে না। আবার শহর ছাড়া তার গড়ে ওঠাও নেই। প্যারাডক্সে প্যারাডক্সে সূর্য ডোবে রক্তপাতে! শহর আর মেসের সম্পর্ক তবু তেমন মসৃণ হয় না। একরোখা মানুষের মতোই মেসের এই একবগ্গাপনা শহরের কোনওকালেই বিশেষ পছন্দ নয়। শহর, রাজনীতিবিদদের মতোই বুঝি ভাবে, আমার এখানে থাকবে-খাবে আবার আমারই বিরোধিতা করবে, এ কেমনধারা কথা! জবাবে মেস হাসে। সে জানে, ক্ষমতা-মদে নেশাতুর শহর ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে রাত দখল করে নেয় কবি আর মেসবাসিন্দারাই।
এ-কথা ঠিক যে, বড় শহর ছাড়া মেসবাড়ির জন্ম হয় না। বড় না হলেও শহর হতে হবে, তা মহকুমা হলেও সই। যেখান থেকে কাজের হদিশ মিলবে, বা কাজের খোঁজে আরও দূরে চলে যাওয়া যাবে। এবং যেখানে নিজের পরিচয় খানিক আড়াল হয়ে যাবে। জেগে থাকবে শুধু কাজের চরিত্র। এটা শহরের উপহার। এই জাতি-বর্ণভেদে ক্লিষ্ট সমাজে শুধুমাত্র কাজের খাতিরে ও কাজের পরিচয়ে মানুষের বেঁচে থাকার সুড়ঙ্গটুকু আছে বলেই শহরে সবাই আলো খুঁজতে চলে আসে। মেস সেই চরিত্র আত্মস্থ করেছে। তবে, শহর যেভাবে আবার মাটি-টাকার ভাগাভাগিটা করে রাখে, রাজপথ-ফুটপাথে শ্রেণিবৈষম্যের জিগিরটা জাগিয়ে রাখে, মেসের তা সহ্য হয় না। সে এক লহমায় মাটি আর টাকার অবস্থান রামকৃষ্ণ মহিমায় উলটে-পালটে দিয়ে জীবনযাপনের একটা সাধারণ চরিত্র তৈরি করে। কমিউনের ধাঁচে এই যে জীবনযাত্রা, তা বিপজ্জনকও বটে। কারণ, এক তো সেখানে মানুষের আস্থা সম্মিলনের শক্তি-বুদ্ধিতে। একক মানুষ একা নয়। দ্বিতীয়ত, মানুষ যদি একে অপরকে এমন বুক দিয়ে আজীবন আগলে থাকে তাহলে আর কল্লোলিনী কলহের হবে কী করে! গ্রাম্যতার ঘাড়ে বন্দুক রেখে শহর মোটামুটি নিজের এই চরিত্রকে গোপন রেখেই চলে। নইলে মনগড়া ঝগড়ায় তার জুড়ি মেলা ভার! একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে, বাসে, অটোয়, ট্যাক্সি ধরতে গিয়ে, শপিং মলে, বাজারে সর্বত্রই শহরের মানুষ কেবল একে-অন্যের পায়ে পা দিচ্ছে। পা মাড়িয়ে না চললে যেন শহরের রাস্তায় পা রাখা মুশকিল। ফলত যেখানে কল নেই শহরের সেখানেও কলতলা। অথচ উপমাটা টেনে আনা হয় গ্রামের অনুষঙ্গেই। শহর মানুষকে খেতে শুরু করলে মানুষ নিজেই নিজের আয়না ভেঙে ফেলে।
মেসের আবার এ সব কাজেই অনীহা। একে অন্যের জীবন থেকে ভাগ-যোগ-গুণ-বিয়োগ করে যে-জীবনটা সে নির্মাণ করে, সেখানে পায়ে পায়ে ঠোক্করের বদলে, পদাতিক গুণটিই স্পষ্ট। এই সামান্যীকরণেই শহরের আপত্তি। এক্ষেত্রে তাই লোকে যা করে, শহরও তার ব্যতিক্রম নয়। মেসের নামে কুৎসা করে। অপপ্রচার শুরু করে। আর বলতে থাকে, যা কিনা বাড়িই নয়, তা বাড়ির ছদ্মবেশ ধরে উচ্ছৃঙ্খলতার পসার বাড়াচ্ছে। এ যে ডাহা মিথ্যা, তা সকলেই জানেন। মেসের ইন ডিফেন্স অফ দ্য ডেকাডেন্স অনেক কথাই বলার থাকে, বলতেই পারে, উচ্ছৃঙ্খলতার দায় শহরের নিজেরও কিছুর কম নয়। একই কাজ শহরও করে। তা নাকি শহরের নিজস্ব জীবনযাত্রার! তাহলে মেসের দোষ কোথায়? তবু রাজা আর টুনটুনির ঘর এক হয়ে গেলে রাজাই বিপন্ন বোধ করে, ফলে হাঁকডাক করে ক্ষমতা জাহির করতে চায়। তখন নতুন নতুন খুড়োর কল। বাড়ির সঙ্গে মূল্য জুড়ে, এবং তা আয়ত্তের ভিতর দিয়ে শহর সফলতার এক রকম সংজ্ঞা নির্মাণ করে। আর মেস গোড়া থেকেই বিশ্বাস করে যে, মূল্য দিয়ে মূল্যবোধ কেনা যায় না। গায়ে গা লাগিয়ে থাকলে তবেই অন্যকে আর অপর মনে হয় না। শহর এই অন্তর্ঘাতের পালটা চাট্টি কুৎসাপত্র ছড়িয়ে দেয় প্রত্যেক মেসবাড়ির বারান্দায়।
……………………………………………..
শহুরে জীবন নিজস্ব ইনসিকিওরিটির কারণেই মেস-কে দুচ্ছাই করে! গ্রাম যত ভাঙে শহর তত ভরভরন্ত। এই যে খেলাটা বহুকাল চলছে, শহরের এই যে কুহক, তার মধ্যে মেস মূর্তিমান দ্রোহ। মেসের জীবন শহরের বিচ্ছিন্নতাকে স্বীকার করে না। আবার শহর ছাড়া তার গড়ে ওঠাও নেই। প্যারাডক্সে প্যারাডক্সে সূর্য ডোবে রক্তপাতে! শহর আর মেসের সম্পর্ক তবু তেমন মসৃণ হয় না। একরোখা মানুষের মতোই মেসের এই একবগ্গাপনা শহরের কোনওকালেই বিশেষ পছন্দ নয়।
……………………………………………..
সেরকমই একটি– মেস রাতে ঘুমোয় না। এ আসলে পুরোপুরি সত্যি নয়, তবে, ৯০ শতাংশ খাঁটি। তবে মেসের ক্ষেত্রেই তা অপরাধ গণ্য কেন হবে? এই যে মুম্বইয়ের মতো শহর রাতে ঘুমোয় না বলে প্রশংসা কুড়োয়, সৃষ্টিশীল মানুষরা সব রাত জেগে অনির্বচনীয় মুহূর্ত আবিষ্কার করেন বলে আশ্চর্য হই আমরা, এই যে প্রশাসনিক প্রধানরা রাতে মাত্র একপোয়া ঘুমোন ভেবে শিহরিত হই, তার বেলা? ঘুমের শিশি শুধু মেসই ভাঙে! কেউ প্রশ্ন করতেই পারেন, রাত জেগে কোন মহাভারত মেসে রচিত হয়? আমাদের ধারণা, মেসকে সে দায়িত্ব দিলে ভারতের মহা অসুবিধা কিছু হত না। যাই হোক, একলব্যের আঙুল কাটা আর মেসকে একঘরে করে রাখা– দুই-ই একই রকম কূটনীতি। সে সবের তোয়াক্কা না করেই মেস রাত জাগে, আমরাও জাগি। শরীরের ঘড়ি প্রথমে মুখভার করে, পরে মেনে নেয়। এই রাত জাগার সূত্রে অন্তত একটা তর্ক জিতে যেতে পারে মেস। এক, বাড়ি যদি না হয় তাহলে তার প্রতিবেশী এল কোথা থেকে? প্রতিবেশী মেস হয় বইকি! বিপদের দিন মেসের আপদরা সব এক হয়ে যায়। আমাদের পাশাপাশিই ছিল আর একটা মেস। রাস্তার ওপারে। রাত বাড়লে তাদের খেলাধুলো বাড়ে, সেই সূত্রে একটু চেঁচামেচি। তাতে গেরস্থ বাড়িঘর বিরক্ত হয় বটে। তবে, আমাদের ভালোই লাগে। জোনাকি না জ্বললে আর রাত কীসের! আমরাও তো জেগেই থাকি। একটা সময় আড্ডা হত জোরদার। পরের দিকে নিজের কাজকর্ম ঢুকতে শুরু করল। চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি-পর্ব। যে যে লাইনে যেতে চায়, সেই মতো আরও কিছু পড়াশোনা বেছে নিয়েছে। রাত জেগে তারই অনুশীলন। এমন সময় একদিন রাতের বেলা চোর এল।
পাড়ায় চুরি হচ্ছিল, আমরা শুনছিলাম। তবে মেসে চুরি হবে এমন আশঙ্কা আমাদের সেভাবে ছিল না। চুরি যাওয়ার মতো আছেটাই-বা কী! ফোন আর কমপিউটর, সেগুলো সামলেই রাখা হয়। জানলা দিয়ে ফোন চুরি করার আজব কায়দা বের হয়েছে শুনেছিলাম। ফোন আমরা জানলার নাগাল থেকে তাই দূরে রাখি। তা বলে দরজায় ছাপোষা ছিটকিনি পালটে খিল দেওয়ার ব্যবস্থা কেউ করেনি। পাশের মেস অনেক রাত অব্দি জাগে, আমরাও জাগি। মোটামুটি আমাদের একটা তালমিল হয়ে গিয়েছিল যে, ওরা থামলে আমরাও শুতে যাব। ঠিক এরকম সময়েই একদিন চোরের মিসটেক। তাদের হইহুল্লোড় থামতে, চোর ধরেই নিয়েছিল যে, এবার সকলে ঘুমিয়েছে। কিন্তু মেস ঘুমোতে ঘুমোতেও ঘুমোয় না। ওদের মেস থেকে সোজা দৌড় দিলেই আমাদের বাড়ির বাইরের গেট। সাধারণ গ্রিল, ধাপে ধাপে পা দিয়ে দিব্যি মাথায় চড়া যায়। আর মানুষের স্বভাবই অন্যের মাথায় চড়া। রাতবিরেতে আমরা তা ডিঙোতাম বলে অনেক সময় যাঁদের বাড়ি তাঁরা অসন্তুষ্ট হতেন। আমাদের ভার বইতে বইতে গ্রিল আর দেওয়ালের সম্পর্কও বেশ খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। চোর অবশ্য অন্যের সম্পর্ক নিয়ে মাথা ঘামায়নি। সে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়ে গ্রিল টপকে আমাদের মেসের রাস্তা ধরেছে। তার পিছনে পাশের মেসের একটি ছেলে। এদিকে যখনই ‘চোর চোর’ আওয়াজ উঠেছে, আমরাও ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছি। কেউ একজন গ্রিলের চাবি খুলে দিতে ওদের বাকি ছেলেরাও চলে এসেছে। সকলে মিলে খানিকটা ধাওয়া করে দেখা গেল সামনে অনন্ত অন্ধকারে দাঁড়িয়ে আছে গোটাকয় কলাগাছ। চোর পালাবে এই তো স্বাভাবিক, বুদ্ধি বাড়া বলতে মাঝখান থেকে দুটো প্রতিবেশী মেস পাশাপাশি চলে এসেছে।
ওরা শুয়েই পড়ছিল। একজন জেগে বারান্দার কোণে ধূমপান করছিল। চোর ওইখানেই একটু গন্ডগোল করে ফেলেছিল হিসাবে। আগুনের মৃদু জেগে থাকা সে খেয়াল করেনি। ফলত ব্যাট হাতে ওদের হইহই করে বেরিয়ে পড়া আর আমাদের মেসের সামনে চলে আসা। আক্ষেপ এই যে, গ্রিল পেরোতে না হলে চোরকে ধরে ফেলা কোনও ব্যাপারই ছিল না। আমাদেরই দু’খানা জানলার পাশ দিয়ে দরজার সামনের রাস্তা ধরে সে দৌড়ে পালিয়েছে। আমরা আর একটু ঠিক সময়ে বেরোলে ব্যাপারটা মোক্ষম হত। যাই হোক, দুই পক্ষই টাইমিং-এ ব্যর্থ হয়ে হতোদ্যম খানিক দাঁড়িয়ে থাকলাম। আর সেই সময় সকলের চোখ গেল শুভ-র দিকে। আমরা তাকে ‘বুবু’ বলে ডাকি। সবার খেয়াল হল সে হাতে একটা প্লাইউডের লম্বা টুকরো হাতে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের রান্নাঘরের পাশে অনেক দিন সেটা পড়েছিল। চোর ধরতে হাতে একটা কিছু নিয়ে বেরনো উচিত সমীচীন মনে করেই তার এই বিচক্ষণ কাজ। তাতে চোর রক্ষা পাবে না গৃহকর্তা আমরা জানি না, তবে সেই সময় খুব একচোট হাসাহাসি হল। সে নিজেও হাসছে আর বলছে, ‘চোর এসেছে বলে কথা! হাতে একটা কিছু না নিয়ে বেরোই কী করে!’
…………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
…………………………………..
তার পর থেকে যতদিন মেসে ছিলাম, আর চোর আসেনি। বোধহয় চোরমহলে খবর চাউর হয়েছিল যে, পাড়ায় রাত পাহারায় জেগে থাকে গোটাকয় মেস। আশেপাশের বাড়িও কি তাতে নিশ্চিন্ত ছিল না! অথচ মেস কেড়ে নিয়ে শহর আমাদের জন্য এখন যে আস্তানা বরাদ্দ করেছে সেখানে নিশ্চিন্তি কই! অহোরাত্র গ্রিলে তালা, এদিকে নজর, সেদিকে নজরদারি। সতর্কতার শেষ নেই। তা সত্ত্বেও যদি বিপদ আসে, আজ কি আর কেউ প্লাইউড হাতে এসেও দাঁড়াবে? বোধহয় না। মেসকে হারিয়ে শহর এই সব মুহূর্তে জিতে যেতে চায়, যায়ও হয়তো; তবু একলব্যের কাটা আঙুল কবে আর মহাভারতকে স্বস্তি দিয়েছে!
…পড়ুন মেসবালক-এর অন্যান্য পর্ব…
পর্ব ১৬। তুমি তো তেমন ফেরিওলা নও, চাকরি হবে কী করে!
পর্ব ১৫। বেকারদের মেসে বিশ্ব এসে মেশে
পর্ব ১৪। বেকারদের মেসে বিশ্ব এসে মেশে
পর্ব ১৩। মেস আমাদের শিখিয়েছে, দেশ অনেক রকম
পর্ব ১২। মেসবাসীর হিসাবশাস্ত্র এমন কুটিল যে স্বয়ং কৌটিল্যও তল পান না
পর্ব ১১। ছেড়ে যাওয়া ঘরে মেরা কুছ সামান থেকেই যায়
পর্ব ১০। বই বন্ধ করলেও, বন্ধ হয় না কিছু কিছু বই
পর্ব ৯। বোবার শত্রু নেই, বন্ধু তো আছে
পর্ব ৮। মেস কি কোনও নারীচরিত্রবর্জিত একাঙ্ক নাটক!
পর্ব ৭। যে ভাতের হোটেলে মাছকে ‘তেরা ক্যায়া হোগা কালিয়া’ বলতে হবে না, সেখানেই রোজের বেঞ্চি বুক করতাম
পর্ব ৬। মেসের বাড়ি না থাকলে দেশের বাড়িকে ঠিক চেনা যায় না
পর্ব ৫। মেসে থাকতে গিয়ে বুঝেছিলাম বিছানা আর বেডের মধ্যে বিস্তর তফাত
পর্ব ৪। ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ কখনও মেসে থাকেননি
পর্ব ৩। মেস আসলে জীবনের ক্রিকেট-সংস্করণ
পর্ব ২। আদরের ঘরের দুলালদের সদর চেনাল মেস
পর্ব ১। মেস এমন দেশ যেখানে বাঁধাকপির পৃথক আত্মপরিচয় চিবিয়ে নষ্ট করা যায় না