মিলান, এই চিঠি লিখলাম তোমার লেখার টেবিলে বসেই। আমি তো লেখক নই মিলান। তবু কী করে কোথা থেকে পেলাম এই ক’টি কথা লিখে ফেলার তাগিদ ও ক্ষমতা ও সাহস! এইবার চলে যাচ্ছি উত্তর ফ্রান্সে তোমার-আমার সেই প্রিয় ‘লে তুকেত’-সৈকতে, যে সমুদ্রসৈকতের রূপ ও টানের আলো ও রহস্য ছড়িয়ে আছে তোমার ‘আইডেনটিটি’ উপন্যাসে।
৭.
গত মঙ্গলবার কাঠখোদাই-এ লিখেছিলাম চেক-ফ্রেঞ্চ্ লেখক মিলান কুন্দেরার লেখার টেবিল নিয়ে, যে-কালো মুকুর মসৃণ টেবিলটি ১৯৭৫-এ ভেরা হ্রাব্যানকোভা তাঁর লেখক-স্বামী মিলান কুন্দেরাকে উপহার দিয়েছিলেন, সাজিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর লেখার ঘর প্যারিসের ছাদবাড়িতে। তখন আমার বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না পরের ‘কাঠখোদাই’ লিখতে হবে ভেরাকে নিয়ে!
ভেরা-র মৃতদেহ পাওয়া গেছে উত্তর ফ্রান্সের ‘লে তুকেত’-এর একটি হোটেল ঘরে, ১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার ভোরবেলা। এমন যদি হয়, উত্তর ফ্রান্সে আসার আগে প্যারিসে তাঁদের অ্যাপার্টমেন্টে ভেরা বসেছিলেন কিছু লেখার জন্য মিলান কুন্দেরার সেই আয়না পালিশ করা কালো টেবিলে! এই সেই লেখা:
প্রিয় মিলান,
এক বছর, দীর্ঘ এক বছর, তোমাকে দেখিনি। দীর্ঘ এক বছর আমাকে কেউ ডাকেনি ‘মার্ভেলাস ব্রুনেট’ বলে। তোমার ৯৪। আমার ৮৮। তবু তোমার চোখে আমি এখনও ছিলাম ‘মার্ভেলাস ব্রুনেট’, অপূর্ব কপিশ কেশের কৃষ্ণাক্ষী! সত্যিই মিলান, তুমি আমি দু’জনেই চেকোস্লোভাকিয়ার প্রাগের সন্তান। অথচ আমার চোখের তারা তোমার চোখের মতো স্বচ্ছ নীল নয়। আমার চুল কালো, তোমার চুলের মতো রুপোর ঝালর নয়। তোমার জন্ম প্রাগে ১৯২৯-এ। আমার জন্মও প্রাগে, ১৯৩৫-এ। আর আমাদের প্রথম দেখা ১৯৬৭-তে। তুমি তখন ৩৮। আমি ৩২। ছ’বছরের ছোট-বড়। কী ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দেখা হয়েছিল আমাদের মিলান! যে-সন্ধিক্ষণকে ইতিহাস বলছে, ‘দ্য প্রাগ স্প্রিং’। প্রাগের বসন্ত! আমরা দু’জনেই বিশ্বাস করেছিলাম সেই আকস্মিক ক্ষণস্থায়ী বসন্তবার্তা! যে-বসন্তবার্তা বলল, ঘটতে চলেছে চেকোশ্লোভাকিয়ার অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক তোলপাড়, পরিবর্তন, এবং নবজাগরণ! ১৯৬৮-র জানুয়ারিতে আমরা দু’জনে ভেসে গেলাম সেই ‘প্রাগ-বসন্তবার্তায়’। আলেকজান্ডার ডুবেকের নেতৃত্বে শুরু হল ‘ইকোনমিক এবং পলিটিকাল লিবারেশন।’ ১৯৬৮-র আগস্টে, মাত্র আট মাসের মধ্যে মরে গেল সেই প্রজাপতির মতো রঙিন, ক্ষণস্থায়ী বসন্ত। সোভিয়েত সেনারা আক্রমণ করল, ঢুকে পড়ল চেকোশ্লোভাকিয়ায়, তাদের বুকের তলায় পিষে দিল প্রাগ বসন্তের প্রজাপতির পাখা। আমি কেঁদেছিলাম তোমার বুকে। সেইদিন আমাকে প্রথম ডেকেছিলে ‘মার্ভেলাস ব্রুনেট’ নামে, বলেছিলে, এখুনি এত কান্না খরচ কোরো না অপূর্ব কপিশ কেশের কৃষ্ণাক্ষী।
–সত্যি তুমি পছন্দ করো আমার কালো চোখের তারা আর কালো চুল এই নীল চোখ আর রুপোলি চুলের দেশে?
–বিরল তোমার চুল আর চোখের তারার রং। তাই এত পছন্দ!
প্রাগের ক্ষণজীবী বসন্ত শেষ হল। আর আমরাও পড়লাম হুড়মুড় করে পরস্পরের প্রেমে! সময়টা ছিল ১৯৬৮-র সেপ্টেম্বর। আমরা দু’জনেই তখন বেশ গরিব। কিন্তু ইতিমধ্যেই মিলান, ১৯৬৭-তে, প্রকাশিত হয়েছে তোমার ‘দ্য জোক’ বইটি। তোমার প্রথম উপন্যাস। আমি তো পড়ে বিস্মিত। এবং বিহ্বলও বটে। এমন ভাষা ও ভঙ্গিতে, এমন একটি বিষয় নিয়ে লেখা যায় একটি উপন্যাস, যার নাম ‘ঠাট্টা’! কী ভয়ঙ্কর সাহস তোমার মিলান। এবং কী বিপজ্জনক মানুষ তুমি! যদি প্রেম করতেই হয়, তবে এমন বিপজ্জনক মানুষকেই তো চাই। তোমার ‘দ্য জোক’ উপন্যাসের নায়ক এক ছাত্র! যে তার বন্ধুদের সঙ্গে কমিউনিস্টদের নিয়ে গালে-জিভ দিয়ে নানা রকম ব্যঙ্গ, বিদ্রুপ, ঠাট্টা করে। কিন্তু মুখে-মুখে রটে গেল সেই তরুণ তুর্কির আপাত চটুল ঠাট্টাগুলো। এবং কমিউনিস্ট শাসকের কানে উঠল সেই সব বুদ্ধিদীপ্ত আপাত মজার ‘জোকস’। নেমে এল বিপর্যয় ওই ছাত্রটির জীবনে। কিন্তু মামুলি সরল গল্পে থামোনি তুমি, মিলান। তুমি কমিউনিস্ট চেকোশ্লোভাকিয়ার ধর্ম ও ভগবানের স্থান এবং যাথার্থ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছ! প্রশ্ন তুলেছ আমাদের প্রাচীন লোকগাথা ও লোকসংস্কৃতির ক্রমিক বিপর্যয় নিয়েও। প্রশ্ন তুলেছ আমাদের মনকেমন, অতীত ও স্মৃতি নিয়ে। ভগবান নিয়ে তোমার প্রশ্ন, ভগবানে তোমার তীব্র অনীহা ও অবিশ্বাস– আর কমিউনিস্টদের ধর্ম ও ভগবান বিরোধিতা এক জাতের নয়, এইটুকু বুঝতে পেরে তুমি যে শীঘ্র বিপন্ন হতে চলেছ, তা বুঝতে অসুবিধে হয়নি আমার। একদিন নদীর ধারে বসে প্রেম নিয়ে কথা বলছিলে আমার সঙ্গে। হঠাৎ বললে, “ভেরা, তুমি আর আমি, পরস্পরকে ভালোবাসি। আমাদের ভালোবাসা, তুমি যদি তার নিবিড়তম জায়গাটায় যাও, তাহলে তুমি ভালোবাসার নিঃসঙ্গতম জায়গাটাতে পৌঁছলে। দু’জন মানুষ, ভালবাসার এই নিবিড়তম, নিঃসঙ্গতম বিন্দুতে, পৃথিবী থেকে, চারধারের এই মানুষ, কাজ, ব্যস্ততার জঙ্গল থেকে নির্বাসিত।” তারপর বললে, “টু পিপল্ ইন লাভ, অ্যালোন, আইসোলেটেড, দ্যাট’স বিউটিফুল!” এইখানে মিলান তুমি কমিউনিস্টদের চোখে মারাত্মক বিপজ্জনক। তুমি সাধারণ মানুষ থেকে একেবারে নিজস্ব মৌলিক ভাবনায় সরে গেছ। তুমি সাধারণ মানুষের একজন নও। কমিউনিস্টরা সাধারণ মানুষকে ভাবনাহীন, প্রশ্নবিহীন, ব্যস্ত ছায়ায় পরিণত করছে। তুমি ছায়ার মধ্যে ছায়া হতে পারবে না মিলান। তুমি ওদের চোখে বিপজ্জনক। তুমি তোমার ‘দ্য জোক’ উপন্যাসে লিখেছ মিলান, ‘এভরি লাফ ইজ অ্যান অ্যাক্ট অফ ডিফারেন্স্ এগেনস্ট্ দোজ্ হু সিক টু কন্ট্রোল আস্!’ ওইভাবে পৃথিবীর আর কোনও লেখক ভেবেছে? লিখেছে? আর তুমি লিখেছ কমিউনিস্ট চেকোস্লোভাকিয়ার হৃদয়ে বসে অকপট অবলীলায়: ‘No great movement designed to change the world can bear to be laughed at or belittled.’ তোমার আত্মপ্রকাশের উপন্যাসে এই লেখা মিলান! তোমার বিপর্যয় ঘনিয়ে এল বলে। আমি তোমাকে একলা বন্দুকের সামনে দাঁড়াতে দেব না। পাশে থাকবই।
কিন্তু তবু কুসংস্কার তো। আর তোমার কাছে যা কুসংস্কার, আমার অশিক্ষার দান, তার ভরসাতেই আমি বেঁচে আছি। গেলাম এক জ্যোতিষের কাছে। যিনি হাত দেখতে জানেন, জানেন গণনা করতে ভাগ্যলিপি, আর জানেন সংখ্যারহস্যের গহনবার্তা।
–তুমি হেসে বললে, ভেরা, কী বলল তোমার জ্যোতিষ?
– আমি বললাম, সে বলেছে, তোমার আমার কারওর মৃত্যু হবে না বোহিমিয়ায়।
– তাই! কিঞ্চিৎ অবাক তুমি। বললে, অর্থাৎ দেশে মরব না। মানে, দেশ থেকে বিতাড়িত হতেই হবে! সামান্য একটা উপন্যাস লেখার জন্য দেশ থেকে ওরা আমাদের তাড়িয়ে দেবে।
–যদি না ছায়াদের মধ্যে আরও একটা প্রাণহীন প্রশ্নহীন ছায়া হয়ে মিশে যেতে চাও।
– সেটা অসম্ভব।
–তাহলে ফায়ারিং স্কোয়াড অথবা নির্বাসন, অনিবার্য!
–তোমার সম্বন্ধে কিছু বলেনি ওই জ্যোতিষ? কিঞ্চিৎ বিদ্রুপে তোমার প্রশ্ন।
–বলেছে। ১৩ তারিখটাকে আমি ভয় পাই। কেন জানিনা, ওই ১৩ সংখ্যাটার গায়ে মনে হয় আমার জীবনের শেষ মাইলফলক। জ্যোতিষ টেবিলের ওপর হাত রেখে অনেকক্ষণ ভাবল। বলল, ‘আমার এই টেবিল, এই হতকুৎসিত পুরনো টেবিল অলৌকিক শক্তির অধিকারী। টেবিলের ওপর হাত রাখো’, গণৎকারের কথা মতো আমি হাত রাখলাম। জ্যোতিষী আমার হাতের ওপর হাত রাখল, তারপর বলল, ‘তুমি একটা ঘরের মধ্যে। একা। ঘরের বাইরে অন্ধকার সমুদ্রের ডাক। তুমি এক অদ্ভুত টান অনুভব করছ। সমুদ্র তোমাকে ডাকছে। সেই একলা ঘরে অন্ধকার সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে, তুমি চলে যাচ্ছ, যেখান থেকে আর ফেরা যায় না, সেখানে। সেটা অনেক দূরের কোনও মাসের ১৩ তারিখের রাত। ১৪ তারিখ সকালবেলা তোমার দেহ পাওয়া যাবে সেই একলা ঘরে। প্রাণহীন দেহ।’
–তোমার পাশে আমি নেই? কেমন যে আর্তভাবে জানতে চাইলে তুমি।
–না, মিলান। তুমি নেই। তুমি চলে গেছ আমার চলে যাওয়ার ঠিক এক বছর আগে। সব জেনেছি জ্যোতিষীর কাছে। একটা কথা, ওরা শুধু তোমাকে, মিলান, তোমার দেশ থেকে তাড়াবে না। তোমার ভাষা থেকেও তোমাকে উপড়ে ফেলবে। তবু তুমি পরের ভাষায় সারভাইব করবে। মাতৃভাষায় না লিখেও অন্যের ভাষায় লিখে বিশ্বজোড়া খ্যাতি হবে তোমার। কিন্তু সমস্ত খ্যাতি ও সম্মান নিয়েও তুমি আজীবন নির্বাসিতই থাকবে।
–তোমার কাছ থেকেও? আবার তোমার কণ্ঠে অসহায় আর্তি।
–না, মিলান। জ্যোতিষী আমাকে বলেছে, কোনওদিন আমাকে ছাড়া থাকতে হবে না তোমাকে। কিন্তু জীবনের শেষ বছরটা আমার একাই কাটবে, কবে মৃত্যুর পরেও, আবার তোমাকে পাব, তার প্রতীক্ষায়।
আমার কথা শোনার পর অনেকক্ষণ নীরব তুমি। তারপর চোয়াল শক্ত করে বললে, নির্বাসন মেনে নেব না। লড়াই করব শেষ পর্যন্ত।
ঠিক কথা, লড়াই আমরা করেছিলাম। সহজে দেশ ছাড়িনি। ‘দ্য জোক’-এর পরে তুমি লিখলে ‘লাইফ ইজ এলস হোয়্যার।’ প্রকাশিত হল ১৯৭০-এ। পরের বছর লিখলে ‘ফেয়ারওয়েল ওয়ল্টজ্’। তারপর হাত দিলে ‘ফেয়ারওয়েল পার্টি’-তে! বিদায়ের ঘণ্টা তো মিলান নিজেই বাজিয়ে দিলে তুমি! ‘লাইফ ইজ এলস হোয়্যার’ থেকে ‘ফেয়ারওয়েল পার্টি’– সবই তো হেথা নয় হেথা নয়, অন্য কোথা, অন্য কোনও খানে!
ডাক এল তোমার ১৯৭৫-এ! কমিউনিস্টদের কঠিন তলব। ত্যাগ করো অলস মনন। ত্যাগ করো অলীক দর্শন। ত্যাগ করো স্বাধীন ভাবনা ও কথার অর্বাচীন রূপকথা। আমরা পরিবর্তে ত্যাগ করলাম মিলান দেশ ও ভাষা। প্যারিসে আসার পাঁচ বছরের মধ্যে ফরাসি ভাষায় লিখলে তুমি, ১৯৮০ সালে, ‘দ্য বুক অফ লাফটার অ্যান্ড ফরগেটিং’! তুমুল স্বাতন্ত্র্যের অসামান্য সাহিত্য: জনসাধারণের বোকামি হচ্ছে, সব কিছুর একটা উত্তর তাদের পেতেই হবে। কিন্তু উপন্যাসের প্রজ্ঞার প্রকাশ হল, প্রত্যেকটি ব্যাপারে তার প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। জীবনের শেষ পর্যন্ত, যখন নিদারুণ এবং দীর্ঘ অসুখে ভুগছ তুমি, তোমার সংশয়, অবিশ্বাস, জিজ্ঞাসা থামেনি মিলান। আমি একদিন তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা, ‘কুন্দেরা’ মানে কি শুধু সংশয় আর প্রশ্ন? তুমি যন্ত্রণার মধ্যেও হেসে বলেছিলে, কুন্দেরা মানে, ‘দ্য আনবেয়ারেবল লাইটনেস অফ বিয়িং’– অস্তিত্বের যে অসহনীয় অবস্থা ও যন্ত্রণায় আজীবন কষ্ট পেলাম।
মিলান, আমার লেখার প্রান্তে এসে পৌঁছলাম। আমি লিখতে বসেছি তোমার লেখার টেবিলে, সেই কালো রঙের আয়না পালিশ-করা টেবিল, যে-টেবিলে বসে তুমি লিখেছ একের পর এক বই, ‘ইম্মর্ট্যালিটি’, ‘স্লোনেস’, ‘আইডেনটিটি’, ‘ইগন্রেন্স’, ‘দ্য ফেস্টিভ্যাল অফ ইনসিগনিফিকেন্স’, এবং তোমার শেষ বই মিলান, রোগ যন্ত্রণার মধ্যে, ‘আ কিডন্যাপড্ ওয়েস্ট।’
…………………………………………..
ফলো করুন আমাদের ফেসবুক পেজ: রোববার ডিজিটাল
…………………………………………..
মিলান, এই চিঠি লিখলাম তোমার লেখার টেবিলে বসেই। আমি তো লেখক নই মিলান। তবু কী করে কোথা থেকে পেলাম এই ক’টি কথা লিখে ফেলার তাগিদ ও ক্ষমতা ও সাহস! এইবার চলে যাচ্ছি উত্তর ফ্রান্সে তোমার-আমার সেই প্রিয় ‘লে তুকেত’-সৈকতে, যে সমুদ্রসৈকতের রূপ ও টানের আলো ও রহস্য ছড়িয়ে আছে তোমার ‘আইডেনটিটি’ উপন্যাসে। না, মিলান, আমি একা একা উঠব না আমাদের শখের সৈকত-আবাসে। আমি উঠব সৈকতের পাশেই কোনও হোটেলে– একা। আর ক’দিন পরেই আমি ৮৯-তে পড়ব। কিন্তু আমার জ্যোতিষী বলেছে, আর অতটা পথ আমাকে যেতে হবে না। ১৩ সেপ্টেম্বর রাতটা আমার জীবনে শেষ মাইলফলক। যাত্রা শেষ হতে আর বেশি বাকি নেই। তুমি তো জানো মিলান, আমি আজও সমান অশিক্ষাপ্রসূত কুসংস্কারে বিশ্বাসী! সুতরাং আমাদের দেখা হচ্ছেই – খুব তাড়াতাড়ি। তোমার মনে আছে মিলান, তোমার ‘লেট দ্য ওল্ড ডেড মেক রুম ফর দ্য ইয়ং ডেড’ উপন্যাসে নায়ক-নায়িকাকে? ১৫ বছর বিচ্ছেদের পর তারা আবার ভাবছে পরস্পরের সঙ্গে প্রেম করার কথা– কীভাবে শুরু করবে, এত বছর পেরিয়ে?
আমাদের তো মাত্র এক বছরের বিচ্ছেদ ও বিরহ!
অনেক ভালবাসা ও চুমু
এখনও তোমার ‘মার্ভেলাস ব্রুনেট’ ভেরা।
…………………….. পড়ুন কাঠখোদাই-এর অন্যান্য পর্ব ……………………
পর্ব ৬: মানব-মানবীর যৌন সম্পর্কের দাগ লেগে রয়েছে কুন্দেরার লেখার টেবিলে
পর্ব ৫: বিয়ের ও আত্মহত্যার চিঠি– রবীন্দ্রনাথকে যা দান করেছিল লেখার টেবিল
পর্ব ৪: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের টেবিল আর তারাপদ রায়ের খাট, দুই-ই ছিল থইথই বইভরা
পর্ব ৩: টেবিলের গায়ে খোদাই-করা এক মৃত্যুহীন প্রেমের কবিতা
পর্ব ২: লেখার টেবিল ভয় দেখিয়েছিল টি এস এলিয়টকে
পর্ব ১: একটি দুর্গ ও অনেক দিনের পুরনো নির্জন এক টেবিল