আমার বেরতে দেরি হয়েছিল। একবার ফলস স্টার্ট নিয়েছিলাম, সেটা আবার বেশি তাড়াতাড়ি, তখন সবে নয়, হাকলবেরি ফিন হব বলে মিসিসিপি-গঙ্গায় ভেসে যাওয়ার প্ল্যান করে বেরিয়েছিলাম। ডায়মন্ড হারবার থেকে ভেলা পেয়ে যাব নিশ্চয়, শুধু বাড়ি থেকে পালিয়ে ডায়মন্ড হারবারের ঘাটে পৌঁছনোর অপেক্ষা। কিন্তু যথারীতি আঘাটায় আটকালাম, বালিগঞ্জ স্টেশন অবধি পৌঁছতে পেরেছিলাম, তারপরই টিকিট কাকু ধরে ফেলল। এই মিসঅ্যাডভেঞ্চারের পরের প্রচেষ্টা ঘটেছিল পঞ্চাশে পা দিয়ে, মাঝে যত ধেই নৃত্য করি না কেন, নিরম্বু একা হয়ে পথে নামিনি। নামলাম বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর ২০১৫-তে, তাদের শ্রাদ্ধ বাদ দিয়ে কেবল শান্তি করার জন্য হিমালয়ের যেসব জায়গা তাঁদের প্রিয় ছিল, সেইসব ঘাটে বা আঘাটায়।
আকাশপজ্জন্ত ঠ্যাং– সে ঠ্যাং আপাতত বেদনার্ত; ব্যথা কোমরেও। ফলে লম্বা হাঁটাপথে পায়ের ওপর আর ভরসা রাখতে পারি না খুব, যদিও ‘ইচ্ছা কিঞ্চিৎ ভুবনভ্রমণের কিন্তু পাথেয় নাস্তি’-র বোধটা এখনও পুরোদস্তুর বিদ্যমান। তাই এইসব ব্যথা-বেদনাদের পটিয়ে-পাটিয়ে, রুকস্যাক আগের তুলনায় একটু হালকা করে, প্রায় খালি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঝেড়েঝুড়ে, পকেটে খুচরো পয়সা গুঁজে বেরিয়ে পড়ি একা-একাই। ভয়ানক টান একটা, কীসের টান জানি না বাপু, কিন্তু একা পথে বসার নেশা যার লেগেছে, সেই জানে এর মানে কী।
শব্দের সঙ্গে আমার একটা আলাদাই সম্পর্ক হয়ে থাকে সচরাচর, মানে অনুভবের মধ্যে যা আছে সেগুলোকে শব্দে গেঁথে ফেলতে ভালো লাগে, উচ্চারণ করে না বললেও হৃদয়ের মধ্যে শব্দগুলোকে ধরতে না পারলে মনে হয় অনুভবের মধ্যে কিছু খামতি থেকে গেল। এই যে আমার আকুল, উপচে পড়া, থইথই আবেগ জড়িয়ে আছে একলা পথ চলার সঙ্গে, শব্দে তার অনুরণন শুনতে চেয়ে তালিকা বানাতাম ছোটকালে– পথিক, যাত্রী, বাউল, উদাস, ভবঘুরে, ক্ষ্যাপা, ছন্নছাড়া, যাযাবর, এমনই অনেক নামে সাজাতাম নিজেকে। এবং না-দেখে পারতাম না যে এরা সবাই পুরুষমানুষ, অ্যাটলিস্ট এদের শরীরগুলো পুরুষচিহ্নিত। ফলে, নারীচিহ্নিত শরীর নিয়ে আমার কোনও চান্স নেই এই দলে নাম লেখানোর।
খুবই দুঃসময় তখন, সেইসব দিনে বাড়িতে বসে বসে কবিতা লিখতাম– মন আর নেই এখানে, মন চলে গেছে বৈশাখের ধুলোমাখা পথে, হু হু হলকায় পুড়তে পুড়তে ছুটে যাওয়া বাসের জানলায় মুখ রাখা সেই যাত্রীটির কাছে– অখাদ্য কবিতা, কিন্তু ঝাড়টা সেই জন্য খাইনি। বাড়ির লোকের মনে হয়েছিল এর পিছনে কোনও এক পুরুষ আছে, যে আমাকে ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে ভরা বৈশাখের গরমে! মানে এর মধ্যেও পুরুষ, আমি নিজেই যে লু ছোটানো হাওয়া খেতে কোথাও যেতে চাইতে পারি, হিসাবেই আসেনি তাদের।
এ ভারি মজার, একদিকে আমার পরিবার হল কট্টর ঘুরুন্তি, তারা বাঁই বাঁই ঘুরতে থাকে সমস্ত ছুটিতে, ব্রহ্ম আর পাহাড় সত্য– বাকি সব মিথ্যা– এই যুক্তিতে চলে, কিন্তু একা ঘোরার কনসেপ্ট তাদেরও ছিল না। বেড়ানো মানে গুষ্টিসুখ, সেটা দু’-চারজনেও হতে পারে, বা কুড়ি-পঁচিশজনেও। এক্ষেত্রে একা মানে বোকা। আমি তবু বোকা হতে চাইতাম, আর যবে থেকে দলে-দঙ্গলে পাহাড়ি পদযাত্রায় বেরিয়ে পড়ার সুযোগ হল তবে থেকেই দল ছাড়িয়ে, দিক হারিয়ে এদিক-ওদিক চলে যাওয়া শুরু করলাম। কেলেঙ্কারি যাকে বলে! প্রতিটি সাঁঝ-সকালে আমাকে দু’প্রস্থ ঝাড়া হত, একবার সময়ে ডেসটিনেশনে পৌঁছতে পারিনি বলে, আরেকবার আজ আবার দেরি করে পৌঁছলে মেরে তক্তা বানানো হবে বলে। সময়ে না পৌঁছলে টিমের সবাই চিন্তা করত, সেটা ন্যায্য, আবার আমারও যে রক্তের প্রত্যেক কণায় বাজছে রোড নট টেকেন– সেটাও বুঝতে হবে। আমি এদিক-ওদিক দিয়ে চোরাগোপ্তা উঠে বা নেমে যেতাম, দলের লোকেরা খেয়াল করত না, তারপর হারিয়ে যেতাম নিজের মতো। আবার যাই হোক করে আঘাটা থেকে ঘাটে ফিরতাম দেরি করে, ততক্ষণে তাঁবু-টাবু লাগানো হয়ে যেত, আমি কামচোরের তকমা গায়ে নিয়ে কিচেন টেন্টে ঢুকে আলু ছাড়াতে বসে যেতাম ভালো মানুষের মতো। এইভাবে চলেছে বহুকাল।
…………………………………………………..
আকাশপজ্জন্ত ঠ্যাং-ওলা নারী এইসব জেনেই পথে নামে, নানাভাবে ধর্ষণযোগ্য শরীরকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করে, কটু কথা, বাঁকা চাউনি, ঠকানোর এক্সট্রা চেষ্টা দূরে হাটানোর চেষ্টা করে। আবার এই শরীর কিছু সুবিধাও দেয়, আহা মেয়েমানুষ বলে বিগলিত কিছু মদ্দ মানুষ এক্সট্রা সুবিধাও দেয়। ভয় তো বাস করে নিজের ভেতরে সবচেয়ে বেশি, সেইটাকে ম্যানেজ করে নিতে পারলে মুক্তিই মুক্তি। একলা মেয়ের ঘোরাঘুরি সেই মুক্তিকে সবথেকে বেশি নম্বর দেয়, বাকি সব ম্যানেজ করে নেওয়ার খেলা।
……………………………………………………
তারপর তো একজন জীবনের দায়ে সঙ্গী হবে বলে জুটল। তার সঙ্গে কিছুকাল ঘাটে ও আঘাটায় নাচানাচি হল, তারপর জীবন ভাসিয়ে নিয়ে গেল একেবারে ঘাটশূন্য, দিকশূন্যতার দিকে, একা। এর মধ্যে যাদবপুরের তুলনামূলক সাহিত্যও ঘটে গেছিল নিজস্ব নিয়মে, সে সূত্রে ‘নবনীতাদির মৌরুসিপাট্টা তো আমাদেরই’-মার্কা গা জ্বালানো আঁতলামিও করেছি বিস্তর। কিন্তু ওঁর ভ্রমণ সংক্রান্ত লেখাগুলো পড়তাম যখন, খুঁজতাম আমার সে উদাস-বাউল, ছন্নছাড়া পথিকটিকে, সেইটা পেতাম না। উনি একজন প্রতিষ্ঠিত নারী, কাজ, কেরিয়ার ও সংসারের মায়াজালে জড়ানো নারী। যাঁর আছে প্রাক্তন স্বামী, বর্তমান সংসার, একাধিক সন্তান, অশক্ত-অসুস্থ-বৃদ্ধ মা, নিজের নানাবিধ শারীরিক সমস্যা, ইউনিভার্সিটিতে কাজের চাপ, অন্যান্য সাংস্কৃতিক ও সামাজিক দায়-দায়িত্ব– হাজার রকম খুঁটিনাটি ঝঞ্ঝাট, যা কোনও ভবঘুরেকে বইতে হয় বলে শুনিনি।
অর্থাৎ বেরিয়ে পড়া যায়, কিন্তু জেন্ডারের বোঝা এবং এক্সপেকটেশনের বোঝা, অন্যের এবং এমনকী নিজের কাছে নিজেরও, নামানো খুব সহজ নয়। তাই আমি নবনীতাদির লেখা যতই এঞ্জয় করি না কেন, ওঁর ভ্রমণ বৃত্তান্তের মধ্যে নিজেকে দেখতে পাই না। আমি ওই সংসার পরিবৃত, সমাজ সংস্কৃত মানুষটি নই, আমার জেন্ডার পারফর্মেন্সও নারীর নয় (পুরুষেরও নয়), যদিও শরীরটি নারীচিহ্নিত। আর শরীর ছাড়া আর কোনও রিসোর্সও আমার নেই, সেটা যা-চিহ্নিতই হোক না কেন। এইবার সেই নিঃসম্বল শরীর একা পথে নামলে কী হয়, সেইটাই দেখার বিষয়!
আমার বেরতে দেরি হয়েছিল তাই। একবার ফলস স্টার্ট নিয়েছিলাম, সেটা আবার বেশি তাড়াতাড়ি, তখন সবে নয়, হাকলবেরি ফিন হব বলে মিসিসিপি-গঙ্গায় ভেসে যাওয়ার প্ল্যান করে বেরিয়েছিলাম। ডায়মন্ড হারবার থেকে ভেলা পেয়ে যাব নিশ্চয়, শুধু বাড়ি থেকে পালিয়ে ডায়মন্ড হারবারের ঘাটে পৌঁছনোর অপেক্ষা। কিন্তু যথারীতি আঘাটায় আটকালাম, বালিগঞ্জ স্টেশন অবধি পৌঁছতে পেরেছিলাম, তারপরই টিকিট কাকু ধরে ফেলল। সে নানাবিধ ক্যাও হল, আমি ভ্যাক করে প্যান্টে হাগু করে ফেললাম উত্তেজনা ও ভয়ের চোটে, কেলেঙ্কারির আর অবধি নেই! মোট কথা ভেলায় ভেসে যাওয়া কেঁচিয়ে গেল, আমাকে চেপে ধরে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হল।
এই মিসঅ্যাডভেঞ্চারের পরের প্রচেষ্টা ঘটেছিল পঞ্চাশে পা দিয়ে, মাঝে যত ধেই নৃত্য করি না কেন, নিরম্বু একা হয়ে পথে নামিনি। নামলাম বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর ২০১৫-তে, তাদের শ্রাদ্ধ বাদ দিয়ে কেবল শান্তি করার জন্য হিমালয়ের যেসব জায়গা তাঁদের প্রিয় ছিল, সেইসব ঘাটে বা আঘাটায়। সত্যি-সত্যি দল ছাড়া, সঙ্গী ছাড়া, সম্বল ছাড়া, বেরিয়ে পড়েছিলাম শ্রবণকুমার হয়ে, মাজননী আর বাবনকে রুকস্যাকে ভরে নিয়ে গাড়োয়ালের পথে। কোথাও ছাই-টাই ছড়িয়ে পুণ্য করতে/করাতে নয়, জাস্ট একসঙ্গে নিয়ে পাহাড়ে গিয়ে ওদের শেষ চলমানতাটুকু সেলিব্রেট করতে। তার আগে বহুদিন যাবত স্থবির হয়ে ঘরে পড়েছিল ওরা আল্টিমেট বন্ধনমুক্তির আগে পর্যন্ত।
কেন যে আটকে ছিলাম নয় থেকে পঞ্চাশ– এই চল্লিশ প্লাস বছরগুলো, কে জানে! ২০২৪ জুড়ে একটা এডিটেড বইয়ের কাজ করেছি (‘২৫-এর বইমেলায় বেরচ্ছে), বিষয়– একলা মেয়ের ঘোরাঘুরি। নানা বয়সের, নানা ধরনের নারীচিহ্নিত শরীরের মানুষের সোলো ট্রিপের গল্প। তাদের গল্পগুলোর মধ্য দিয়ে, (তার মধ্যে নিজের গল্পও আছে) বোঝার চেষ্টা করেছি একলা নারীচিহ্নিত শরীর নিয়ে পথে বেরনোর মানে কী! সেই অর্থ খুঁজে পাইনি বলেই কি চল্লিশ বছর অপেক্ষা করেছিলাম?
‘আকাশপজ্জন্ত ঠ্যাং’ এমনই এক শব্দবন্ধ, যে মেয়ে কারও তোয়াক্কা না করে পথে বেরয়, তার নাকি আকাশপজ্জন্ত ঠ্যাং। আর সে মোটেও সতী নারী নয়। কারণ ‘সতী’ আর ‘পথিক’– এই দুটো শব্দের লিঙ্গ পরিবর্তন হয় না, পথিকের স্ত্রীলিঙ্গ নেই আর সতীরও পুংলিঙ্গ নেই। ওরা যে যার লিঙ্গে আটকে আছে। নারীর লিঙ্গভূমিকার কোথাও একলা ঘোরার কথা লেখা নেই, এবং নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার উপদেশ যিনিই দিয়েছেন, তিনিও কিন্তু ভবঘুরে হওয়ার মতো ফালতু বাসনা নিয়ে মাথা ঘামাতে বলেননি। ভবঘুরে নারী কারও কোনও কাজে লাগবে না, ভবঘুরে পুরুষের কথা আলাদা, তাঁরা মহান দার্শনিক হবেন, অমর কথাশিল্পী হবেন, উদাস প্রেমিক হবেন আর নারীরা হুতোশ খাবে। এর বাইরে কথা হবে না। কাজেই বেরতে হলে কী নবনীতাদি, আর কী বুবাইবোস, বিস্তর জল ঠেলতে হয়েছে সকল নারীচিহ্নিতকেই।
আকাশপজ্জন্ত ঠ্যাং-ওলা নারী এইসব জেনেই পথে নামে, নানাভাবে ধর্ষণযোগ্য শরীরকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করে, কটু কথা, বাঁকা চাউনি, ঠকানোর এক্সট্রা চেষ্টা দূরে হাটানোর চেষ্টা করে। আবার এই শরীর কিছু সুবিধাও দেয়, আহা মেয়েমানুষ বলে বিগলিত কিছু মদ্দ মানুষ এক্সট্রা সুবিধাও দেয়। ভয় তো বাস করে নিজের ভেতরে সবচেয়ে বেশি, সেইটাকে ম্যানেজ করে নিতে পারলে মুক্তিই মুক্তি। একলা মেয়ের ঘোরাঘুরি সেই মুক্তিকে সবথেকে বেশি নম্বর দেয়, বাকি সব ম্যানেজ করে নেওয়ার খেলা।
একটা ব্যক্তিগত ম্যানেজমেন্টের গল্প দিয়ে শেষ করি, আমার ‘যাপনযাত্রাঃ zারে কয় জগদর্শন কা মেলা’ বইতে বিশদে এ গল্প বলা আছে। সে ছিল দু’হাজার ষোলো, জুলাই মাস, গন্তব্য ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স। তখনও এই নারীচিহ্নিত শরীর বেশ আঁটো-ডাঁটো ছিল, লোকের চোখে পড়ত, মন্তব্যও শুনতাম অনেক বেশি। ওই পথে ঘাংঘারিয়া থেকে যাওয়া যায় হেমকুণ্ড সাহিব, ভারতের সর্বোচ্চ শিখ তীর্থ। ফলে এই পথে তীর্থযাত্রীর সংখ্যাও অনেক, গোবিন্দঘাট থেকে হাঁটাপথ শুরু হয়ে ঘাংঘারিয়া অবধি সবাই একসঙ্গে চলে, তারপর তীর্থপথ আর পুষ্পপথ আলাদা হয়ে যায়। এবং তীর্থযাত্রী পুরুষেরা সাধারণত ঘোড়ার পিঠে চড়ে যান, নারীরা ডান্ডি বা কান্ডি করে, অর্থাৎ মানুষের পিঠে চড়ে। সে যা হোক, তাঁরা তো চলেছেন, চলেছি আমিও বেঁটে প্যান্টুল পরা, সাদাচুলো ও হাফনেড়ি নারী, পায়ে হেঁটে। নারীগণ পথের মধ্যে চা খেতে নেমে চোরা দৃষ্টি ও চোরাতম হাসিতে আমাকে বিভূষিত করতে লাগলেন আর পুরুষগণের মধ্যে দেখা গেল বেশ হলচল তৈরি হচ্ছে। আকেলি অউরাত ক্যায়সে জায়েগি, ঘরওয়ালোঁ নে ক্যায়সে ছোড় দিয়া, ইত্যাদির হাত ধরে শুরু হয়ে– নাম কেয়া হ্যাঁয়, কাঁহা ঠেহেরেঙ্গে, ফোন নম্বর মিলেগা– ইত্যাদিতে পৌঁছতে পর বুবাইবোসের ধৈর্যচ্যুতি ঘটল (এই বস্তুটি বেশ বৃহদাকারে থাকা সত্ত্বেও, মানে খুবই পুশড হয়েছিলাম)। একটা লেভেলের পর– কেয়া কাম করতে হ্যাঁয়-এর উত্তরে বলতে শুরু করলাম– পুলিশ ট্রেনিং করওয়াতেঁ হ্যাঁয়। হাত-পা তখনও বেশ ভরপুর মাস্কুলার ছিল তখন, ফলে খুব বেকায়দা শোনায়নি মনে হয়, আর মিথ্যেও তো বলিনি। কারণ সেই সময় ‘স্যাফো ফর ইক্যুয়ালিটি’-র তরফে আমি আর আমার সহযোগীরা কলকাতায় থানার পর থানা ধরে পুলিশদের ক্যুয়ার-ট্রান্স বিষয়গুলো নিয়ে ট্রেনিং চালাচ্ছিলাম, যাতে ভায়োলেন্সের ক্ষেত্রে এই মানুষেরা পুলিশের সহযোগিতা পান। এত ডিটেল তীর্থযাত্রী পুরুষদের জানাইনি অবশ্যই, যা জানিয়েছিলাম তাতেই দিব্বি কাজ হয়েছিল।
একলা মেয়ের ঘোরাঘুরি এই রকমই, যা হওয়ার নয়, যা করার নয়, যেখানে যাওয়ার নয়, সেইসব অগম্যগমন। চলছে, কারণ বাড়ানো পা তো ফেরাব না!