কবি অর্শ নিয়ে খুব কষ্টে ছিলেন। যন্ত্রণাকাতর ছিলেন। যন্ত্রণামুক্তির জন্যে আয়োজিত অস্ত্রোপচার সফল হয়নি। একদিক থেকে সেটাই কবির মৃত্যুর প্রত্যক্ষ কারণ। এই তথ্যই আমরা জানি। কারণ এই তথ্য প্রচার করা আমাদের পক্ষে নিরাপদ। আমাদের তাঁকে খুন করার অপরাধ লুকিয়ে ফেলার পক্ষে সুবিধের। আমরাই তো সেই দলের সদস্য, যাদের মূল অ্যাজেন্ডাই ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রতিদিন হত্যা করা। যেখানে পাব, যে অবস্থায় পাব, তাঁকে এলোপাথাড়ি মেরে ফেলতে হবে। তাঁর দার্শনিক শরীরটা রগড়ে-নিংড়ে-মুচড়ে ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো করে নিশ্চিহ্ন করে উড়িয়ে ফেলার চেষ্টায় তো আমাদের কোনও কসুর ছিল না কোনওদিন!
চিৎপুর রোডের মাথার ওপর থেকে জনতার সমুদ্রে ভেসে আসছে এক তুলনারহিত রূপবান যুবকের মরদেহ। যুবক কিছুকাল আগেই ৮০-তে এসেছেন। ২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ। ইংরেজি ৭ আগস্ট, ১৯৪১। বৃষ্টিস্নাত কলকাতার রাজপথ রোরুদ্যমান জমাট জনতার থকথকে ভিড়ের পদতলে মেখে নিচ্ছে এমন এক শৈবাল প্রলেপ, যা আপনজনের অপরাধ লুকিয়ে রবি-বিলোপের অনড় ঐতিহাসিক তথ্যটি সরবরাহ করে যাবে আবহমানের রবীন্দ্র-জিজ্ঞাসুর নোটবুকে।
ঠাকুর দেহ রেখেছেন। কাতার দিয়ে বাঙালি আনত নেমে এসেছেন শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনে। শহর অবরুদ্ধ। তাঁর ভাষার গা বেয়ে আজ রক্ত পড়ছে। সেই অবস্থাতেই আমরি ভাষাখানা কেঁদেই চলেছে এক অপরিমেয় বন্ধুবিয়োগের অভিঘাতে। মহাপ্রস্থান-যাত্রার মন্দ্র ধারাভাষ প্রচারিত হচ্ছে আকাশবাণী কেন্দ্র থেকে, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে। বিস্ময়ের রেলিং ধরে ঝুলে পড়ছে অনুরাগীর দল। তারই ফাঁকে ফাঁকে আবেগরুদ্ধ স্মারকরক্ষা-প্রত্যাশী বাঙালির শ্রদ্ধামাখা হাত ক্রমাগত ছিঁড়ে নিচ্ছে কবির মাথা আর দাড়ির চুল, উপড়ে নিচ্ছে প্রতিবাদহীন হতবাক নখ! আবেগে একমেটে করে ফেলা মৃত শরীরটা নিমতলার শান-বাঁধানো মেঝের ওপর ঠাঁই করে মাথা ঠুকে ফেলে দিয়েছে শোকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত শ্মশানযাত্রীর দল।
তারপর থেকে প্রতি বছর বাঙালি পালন করবেন ঠাকুর বিসর্জনের এই মহেন্দ্র কৃত্য, এমনটাই ঠিক হয়ে গেল অলক্ষ্যে। আলোর মালা পরে কবির নশ্বর দেহ বিলুপ্ত হল একদিকে। অন্যদিকে এই দিনটাই বাঙালির শোকজনিত এক দিবসীয় পক্ষাঘাত উদযাপনের দিন হিসেবে সিলমোহর পেয়ে বসল। কবি অর্শ নিয়ে খুব কষ্টে ছিলেন। যন্ত্রণাকাতর ছিলেন। যন্ত্রণামুক্তির জন্যে আয়োজিত অস্ত্রোপচার সফল হয়নি। একদিক থেকে সেটাই কবির মৃত্যুর প্রত্যক্ষ কারণ। এই তথ্যই আমরা জানি। কারণ এই তথ্য প্রচার করা আমাদের পক্ষে নিরাপদ। আমাদের তাঁকে খুন করার অপরাধ লুকিয়ে ফেলার পক্ষে সুবিধের। আমরাই তো সেই দলের সদস্য, যাদের মূল অ্যাজেন্ডাই ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রতিদিন হত্যা করা। যেখানে পাব, যে অবস্থায় পাব, তাঁকে এলোপাথাড়ি মেরে ফেলতে হবে। তাঁর দার্শনিক শরীরটা রগড়ে-নিংড়ে-মুচড়ে ভেঙে গুঁড়ো গুঁড়ো করে নিশ্চিহ্ন করে উড়িয়ে ফেলার চেষ্টায় তো আমাদের কোনও কসুর ছিল না কোনওদিন! আমরা তো সুযোগ পেলেই বরফশীতল মৃত্যু উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছি কবির কাতর অস্তিত্বের ওপর দিয়ে। রবীন্দ্রনাথ যে কেবল একটা শরীরের নাম নয়, এই তথ্য কবির মতোই আমরাও জানতাম। তাই তো আমরা শিল্পীর প্রযত্ন নিয়ে পুরোহিতের নিষ্ঠা নিয়ে তাঁকে হত্যার কাজটা করে গিয়েছি। করছি আজও।
বারবার তাঁকে বিদূষণের মুখে পড়তে হয়েছে জীবৎকালেই। তাঁকে গাল না দিয়ে একবিন্দু জলপান করবেন না, এমন চিতর রানার পণ তাঁর সমকালে কৃতবিদ্য থেকে একাংশ আঁকাড়া জনতার প্রভূত পরিমাণে ছিল। ঠাকুরবাড়ির ছোকরা-ছুকরিদের জন্মকালে মুখধৃত সুবর্ণ চমসঃ, দুধ-মদের ফার্টিলাইজারে প্রশ্রয়প্রাপ্ত সুন্দর চেহারা, উদার বৈপ্লবিক পোশাক-টোশাক, সাম্রাজ্যবাদী শাসক চামড়ার সঙ্গে উঠবোস একটা সহজ শত্রুতা টেনে রেখেছিল আশপাশের সঙ্গে। রবিকে তার স্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সহ্য করতে হয়েছিল ভীষণভাবে। কালীপ্রসন্ন কাব্যবিশারদ, সতীশচন্দ্র সমাজপতি, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় প্রমুখ বড় মাথার বজ্জাতি কবিকে মরমে মেরেছিল বারবার। আমরা কবিকে রক্তাক্ত হতে দেখে সেদিন মজা পাইনি! তারপর ধরুন কবির বৌঠান পর্ব! তাঁকে পড়ি আর নাই পড়ি, তাঁর নতুন বৌঠানের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতাকে কবিবর-কেন্দ্রিক ক্রিয়েটিভ ইনস্পিরেশনের দিক থেকে আজও তো ‘চার্টবাস্টার’ বানিয়ে রেখেছি!
মুসোলিনির প্রশংসা শুনলাম কবির কলমে! হায় হায়, একি শুনলাম! অতঃপর! কী কর্তব্য? ইতিহাস সন্ধানের দরকার নেই। অচিরাত কবিকে দেগে দাও। রবীন্দ্রনাথ ফ্যাসিস্টতোষী। প্রকৃত ইতিহাস সন্ধান খুব বেশি শ্রমসাধ্য ছিল না। ১৯২৫ সালে রবীন্দ্রনাথ বুয়েনস আয়ারস থেকে ফেরার পথে গেলেন ইতালি। ইতালীয় সংস্কৃতজ্ঞ ও প্রাচ্যবিদ অধ্যাপক ফরমিকি ও ফরাসি ভারতবিদ মিসেস হগমান রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী হলেন। তখন ইতালিতে মুসোলিনির রবরবা ব্যাপার। ওদিকে ফরমিকি আর হগমান উভয়েই মুসোলিনির অনুরাগী। ইতালীয় জনতা ও মিডিয়া থেকে সরিয়ে কবিকে নিয়ে গেলেন মুসোলিনি সকাশে। মুসোলিনি শৈল্পিক উপহারে কবিকে বরণ করলেন। তাঁর ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হলেন কবি। মুসোলিনি জানালেন কবির সৃষ্টিসমূহ অনূদিত হবে ইতালীয় ভাষায়। এইসব শুনলে তো ভালো লাগারই কথা! ঠিক সেই সুযোগটাই নিলেন অধ্যাপক ফরমিকি। কবিকে দিয়ে লিখিয়ে দিলেন এক প্রশংসাবার্তা। পরের দিন কাগজগুলো ফলাও করে ছাপল সেই বার্তা। আমরা বিশ্বাস করলাম কবি ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। আমরা আবারও খুন করলাম রবীন্দ্রনাথকে। রোম্যাঁ রোলাঁ বুঝেছিলেন প্রিয়বন্ধুকে ভুল বোঝানো হয়েছে। কালক্ষেপ না করে পরের দিনই টেলিগ্রাম করে প্রকৃত সত্য বন্ধুকে অবগত করেন। কবি ভুল বুঝতে পেরে আর একটি বার্তা ছাপতে চেয়েছিলেন সংবাদপত্রে। আর হয়! মুসোলিনি কলকাঠি নেড়ে সে প্রযত্নে বালি ফেললেন। কবির বিদেশি বন্ধু কবিকে বিশ্বাস করেছিলেন সেদিন। আমরা করিনি। এই হত্যার দায় কি আমাদের ওপর বর্তায়নি?
আবার ধরুন তার আগে, ১৯১৬ সালে। জাপানি উগ্রজাতীয়তাবাদ কবিকে বিষণ্ণ করেছিল, সংক্ষুব্ধ করেছিল। উদিত সূর্য গুঁড়িয়ে গিয়েছিল প্রাজ্ঞ কবির অনুভবে। কবি তার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে নিজের আশঙ্কার কথা দ্বিধাহীন জানিয়েছিলেন। বিশ্বকবি হিসেবে সঠিক কাজই করেছিলেন কবি। কিন্তু জাপানি জাতীয়তাবাদী জনতার ও পাশাপাশি গদরপার্টি, রাসবিহারী বসু থেকে রামচন্দ্র ভরদ্বাজ, উঠে-পড়ে লেগেছিলেন কবির নামে অপপ্রচার করতে। এমনকি গদরপার্টি কবির প্রাণ হরণ করতে চেয়েছিলেন বলেও খবর প্রকাশিত হয়েছিল। আমরা কী করেছিলাম সেদিন? ‘Call’ পত্রিকায় কবির বিপক্ষে গদরপার্টির নেতা রামচন্দ্রের প্রচারকে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি আমাদের? আমরা হাতকাটা জীবন সিং বা এইচ সিং হাতেশিদের দলে ছিলাম না? শুনতে চাইনি গদরপার্টি প্রচারিত হিন্দু বিপ্লবের পক্ষে গদ্দারি করা বিজ্ঞানবিমুখ প্রাচীনপন্থী আধ্যাত্মিক কবির মৃত্যুসংবাদ?
আমরা কি বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ করেছিলাম যখন ফ্যাসিবাদের বিষে ডোবা জার্মানিতে তীব্রভাবে প্রচার চলছে রবীন্দ্রনাথ আসলে ইহুদি! আমরা কি চিৎকার করে উঠেছিলাম, যখন জার্মান কাগজে লেখা হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আসল নাম ‘রাব্বি নাথান টাগোর’ এবং এই ইহুদি ভদ্রলোক নাকি ওপেনহাইমার নামের এক ইহুদি মহিলাকে বিবাহ করার সূত্রে প্রচুর সম্পদের মালিক হয়েছেন? কই চিৎকার করিনি তো! খুন হতে দিয়েছি তো আমাদের ঠাকুরকে! আমাদের ঠাকুর তখন ‘ট্রেইটর’। আমরা তাতে সহমত। আমাদের তখন কবির থেকে বেশি হিটলার দরকার ছিল। কলমধারী মিনমিনে মিনসের থেকে লাঠিধারী আগুনখেকো পুরুষ দরকার ছিল।
আবার ধরুন সেই ঘটনা, কেতকী কুশারী ডাইসন তাঁর আর্জেন্টিনায় রবীন্দ্র-উদ্ধারের অঙ্গ হিসেবে সান ইসিদ্রোর ‘মিরালরিও’ বাড়িটাকে দেখতে চাইছেন। এই সেই বাড়ি, যেখানে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো রবীন্দ্রনাথের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন। ‘মিরালরিও’ কবির এই পর্বের অনেক ছবি, কবিতা, লেখার উৎসতীর্থ। স্বাভাবিকভাবেই রবীন্দ্রজিজ্ঞাসু সেই স্থাপত্য ছুঁতে চাইবেন। অথচ কেতকী আমাদের জানাচ্ছেন ওকাম্পো আর্কাইভের সুপারভাইজার অধ্যাপিকা মারিও রেনে কুরা তাঁকে জানিয়েছেন ওই বাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই তথ্যে সন্দেহ জাগায় কেতকী তাঁর সন্ধান জারি রেখেছেন। ওমা! অবাক করা বিষয় একই তথ্য ১৯৯০ সালে স্টেটসম্যান পত্রিকায় লিখছেন সেখানকার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত মণি চাড্ডা! এবং কেতকী আবিষ্কার করছেন সেই বাড়ির অবলুপ্তির ঘটনা একটি নির্লজ্জ মিথ্যা। ওকাম্পো স্মৃতি বিজরিত মূল বাড়িটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে প্রতিযোগিতাহীন রাখতেই এই মিথ্যার বেসাতি। আর এই তথ্য জানার পরেও আমরা মণি চাড্ডাদের একটাও প্রতিবাদপত্র ধরাইনি। আমরা রবীন্দ্র খুনে অভ্যস্ত যে!
আমরা প্রতিবাদপত্র ধরাইনি তাঁদের, যাঁরা পাশের দেশে সোশ্যাল মিডিয়ার শামুক খোলের মধ্যে বসে প্রচার করেছেন রবীন্দ্রনাথ হিন্দু মহিলার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে ষড়যন্ত্র করে নজরুলকে পাগল বানিয়ে তাঁর কবিতা নিজের বলে চালিয়েছেন। আসলে আমরা বহুদিন যাবৎ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বিড়ম্বিত, বিরক্ত। আমরা তাঁকে যত মোকাবিলা করে চুকিয়ে ফেলতে চাই, তিনি তত প্রাসঙ্গিকতার নতুন নতুন কারণ তৈরি করে আমাদের আরও বিরক্ত করে চলেন। যখন আমরা কংগ্রেস, তখন তিনি রাজনৈতিক স্বাধীনতার থেকেও বড় স্বাধীনতা যে আত্মচেতন, তার কথা বলে আমাদের চোখে স্বাধীনতা সংগ্রাম-বিরোধী তথা ব্রিটিশদের দালাল হয়ে ওঠেন।
যখন আমরা কমিউনিস্ট, তখন তাঁর লেখায় কমিউনিজমের মধ্যে সুপ্ত জবরদস্তির বিরোধিতা দেখে তাঁকে আমাদের বুর্জোয়া বলে মনে হয়। ঠিক একই সময় যাঁরা কমিউনিস্টদের সহ্য করতে পারেন না, তাঁরা তাঁকে কমিউনিস্ট বলে সন্দেহ করেন, রাশিয়া সফর বাতিল করার ছুতো খোঁজেন। আমরা যাঁরা হিন্দু মহাসভার, তাঁদের কাছে উনি বিপদজনক অহিন্দু, ম্লেচ্ছ। ম্লেচ্ছরা ওদিকে একইসময় তাঁকে হিন্দু দার্শনিক ভেবে সন্দেহ করছেন। ব্রাহ্মরাও সেই সন্দেহ সমর্থন করছেন।
সেকাল থেকে একাল, মুসলমানদের একাংশের কাছে তিনি কাফের, কালীর সেবক, আর লাল জুলাইয়ের পরে তো ওপার বাংলায় তাঁকে আক্রমণ করে বলা যায় না এমন কোনও শব্দই বাদ রাখেননি ইউনূস সাহেবের হস্তপদাদি। স্বাভাবিকভাবেই আমরা কবিকে খুন করতে করতে নিজেরা ঠিকা খুনির মতো অনুভূতিহীন থমথমে ঠান্ডা হয়ে গিয়েছি। সেই শীতলতা নিয়ে আমরা প্রতিদিন তাঁর দার্শনিক শরীরটা লক্ষ্য করে আক্রমন শানাই, গানের সুর-স্বরলিপি প্রতিনিয়ত বিকৃত করি, অন্যের উদ্ধৃতি তাঁর নামে প্রচার করি।
ইদানীং তাঁর প্রাণপ্রিয় বাংলা ভাষা বলতে, লিখতে, পড়তে না জানলেও চলে। বাংলা বানান বলে কিছু হয় না। ওপারে তাঁর গান জাতীয় সংগীত থেকে বাদ দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। এপারে শোনা যাচ্ছে বাংলা ভাষা বলেই কিছু হয় না। রবীন্দ্রনাথ নিহত হচ্ছেন প্রতিদিন। প্রতিমুহূর্তে। উদযাপনের জন্যে আমরা কেবল বাইশে শ্রাবণ দিনটা পছন্দ করেছি।
………………………..
ফলো করুন আমাদের ওয়েবসাইট: রোববার.ইন
………………………..